সৎ ব্যক্তিদেরকে পুরস্কার প্রদান এবং দুদক চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা
২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ন্যায়ভিত্তিক ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং আলোকিত জাতি গঠনের লক্ষ্যে ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র (সিএসডিসি) পরিচালনা করছে মাল্টিডায়মেনশনাল কর্মসূচি। সুদীর্ঘ ৩০ বছরের কর্মঅভিজ্ঞতায় ক্যাম্পাস’র নিকট প্রতীয়মান যে, জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজের অন্তরায় হচ্ছে অসততা ও দুর্নীতি। তাই জনসাধারণকে ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার করে তুলতে ক্যাম্পাস’র অন্যতম কর্মসূচি সততা পুরস্কার ও সততা জাগরণী কার্যক্রম।
ক্যাম্পাস মনে করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতার পাশাপাশি সৎকর্ম ও সৎ জীবনযাপনকে উৎসাহিত করাও জরুরি। সমাজের সৎ ব্যক্তিদের যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বীকৃতি প্রদান করলে কেবল সামাজিক দায়বদ্ধতাই পালন হয় না, এর মাধ্যমে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করাও সহজ বলে ক্যাম্পাস’র বিশ্বাস। সে লক্ষ্যেই ২১ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাস অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান সৎ, নিষ্ঠাবান ও কর্মযোগী এক ব্যক্তিত্বের সংবর্ধনা এবং তিন অঙ্গনের তিন নিষ্ঠাবান ব্যক্তিত্বকে সততা পুরস্কার প্রদান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের নয়া চেয়ারম্যান মোঃ বদিউজ্জামান। তাঁর ন্যায় সৎ, সহজ-সরল, নিষ্ঠাবান, দক্ষ, স্বচ্ছ ও চৌকস কর্মকতাকে দুদক চেয়ারম্যান হিসেবে অভিনন্দিত করে সংবর্ধনা দেয়া হয়। সভাপতিত্ব করেন ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাসচিব এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এম হেলাল।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ফাউন্ডার ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী; স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি ড. এম ফিরোজ আহমেদ; আইইউটি এবং আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির সাবেক ভিসি ড. এম আনোয়ার হোসেন; ইউআইটিএস এর সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম এ আজিজ; বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্যানেল সদস্য, বিআইডিএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ; দুদক’র মহাপরিচালক ড. মোঃ শামসুল আরেফিন; খাজা ইউনুস আলী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার এম এ রশিদ খান; লালবাগ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জাহাঙ্গীর আলম; দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার সম্পাদক কে এম বেলায়েত হোসেন; মডার্ন হারবাল গ্রুপের এডভাইজর তারিক বীন সেন হোসেন; প্রোএকটিভ এটিচিউড বিষয়ে গবেষক ও সুবক্তা ড. আলমাসুর রহমান; শিশু সংগঠক ও কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার উপদেষ্টা সদস্য মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ।
সততা পুরস্কার গ্রহণের অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নূরুল হুদা; ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ-দৌলা; ইংরেজি ভাষার গবেষক এবং ক্যাম্পাস ফ্রি ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পারসন এম জি কিবরিয়া।
ক্যাম্পাস’র থিম সং দেশ ও জাতি জাগানিয়া গান দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়; দ্বৈতকণ্ঠে পরিবেশন করেন অর্থনীতিবিদ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ড. নাজনীন আহমেদ এবং ক্লোজআপ ওয়ান তারকা মেহেদী হাসান। এরপর মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে ক্যাম্পাস কার্যক্রমের ওপর নির্মিত ডক্যুমেন্টারি প্রদর্শন করেন ক্যাম্পাস’র উপ-সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান।
প্রধান অতিথি মোঃ বদিউজ্জামানের সুস্থ, সুন্দর, দীর্ঘ ও সতেজ জীবন কামনা করে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করেন ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এম হেলাল। মোঃ বদিউজ্জামানের নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার আন্দোলন জোরদার করার প্রদীপ্ত কামনায় এবং ব্যক্তিগত দক্ষতা ও নিষ্ঠার জন্য তাঁর হাতে ক্যাম্পাস’র সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন ক্যাম্পাস পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্য প্রথিতযশা ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী।
দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার দৃপ্ত শপথের প্রতীকরূপে দুদক চেয়ারম্যানের হাতে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়। এতে সহযোগিতা করেন ক্যাম্পাস’র শিক্ষানবিশ মাহীর ও সুইটি। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন শিক্ষানবিশ আনতারা রাইসা এবং নাজমূল হুসাইন।
সমাজের সৎ ব্যক্তিদের স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে সততা ও ন্যায়নীতিকে উৎসাহিত করতে এরপর সততা পুরস্কার প্রদান করা হয় তিন অঙ্গনের তিন স্বনামখ্যাত ব্যক্তিত্বকে। তাঁরা প্রধান অতিথির কাছ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও ২৫ হাজার টাকা উপহার এবং ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদকের কাছ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন। এসবের পাশাপাশি ক্যাম্পাস’র সৌজন্যে তাঁদের দেয়া হয় চার তারকা হোটেল, আধুনিক র্ফাস হোটেল এন্ড রিসোর্টে ১ দিন ১ রাত বিনাব্যয়ে তথা কমপ্লিমেন্টারি থাকার সুযোগ।
সৎ ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রথমে পুরস্কার দেয়া হয় চিকিৎসা ও প্রকৌশল বিভাগ থেকে প্রকৌশলী জনাব মোঃ নূরুল হুদাকে। নূরুল হুদার পরিচিতিতে তুলে ধরা হয় দেশের সেবা খাতের বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তথা রাজউক’র সুযোগ্য চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ নূরুল হুদা। পরিকল্পিতভাবে রাজধানীকে গড়ে তুলতে রাজউক’র ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; আর এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের নেপথ্যে আছেন প্রকৌশলী নূরুল হুদা। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও সুদক্ষ পরিচালনায় ঢাকা দিন দিন পরিগ্রহ করছে দৃষ্টিনন্দন অবয়ব। সততা ও ন্যায়নীতির ঝান্ডা উড্ডীন রাখতে তাঁকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার কারণে তাঁর চাকরির মেয়াদ এ পর্যন্ত তিনবার বৃদ্ধি করতে হয়েছে। দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী এই সততার স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে ব্যাপক জনমনে সৎ জীবনযাপনকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করতে ক্যাম্পাস’র পক্ষ থেকে তাঁকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এরপর সরকারি প্রশাসন ক্যাটাগরি থেকে পুরস্কৃত হন ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ-দৌলা। তাঁর পরিচিতিতে বলা হয় বাংলাদেশের বহুল আলোচিত ব্যক্তিত্ব ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ-দৌলা। তিনি সততা, দক্ষতা ও ন্যায়নীতির মূর্ত প্রতীক। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, টাস্কফোর্স চেকপোস্ট, চোরাচালান বিরোধী অভিযানসহ প্রশাসন ক্যাডারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যশোরে চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে কোটি কোটি টাকার চোরাচালানী পণ্য রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেন এবং বিপুল প্রশংসিত হন। ২০০৫ সালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদানের পর শুরু হয় তাঁর ভেজালবিরোধী আন্দোলন অভিযাত্রা ‘মোবাইল কোর্ট’। এর মধ্য দিয়ে তিনি সর্বমহলে যেমনি প্রশংসিত হয়েছেন, তেমনি তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা-সততা-কর্তব্যপরায়ণতা দলমত নির্বিশেষে প্রশংসা কুড়িয়েছে সবার। অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়েও কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ-দৌলা।
শিক্ষা ও সমাজসেবা ক্যাটাগরি থেকে মোঃ গোলাম কিবরিয়াকে সততা পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাঁর পরিচয় উপাখ্যানে বলা হয় সমাজ সেবায় নিবেদিতপ্রাণ একজন ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব জনাব গোলাম কিবরিয়া। ১ম শ্রেণিতে মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করতে গিয়ে বুঝতে পারেন ইংরেজি ভাষা না জানার বিড়ম্বনা। জ্ঞানের বিকাশ এবং যুব সমাজের দক্ষতা উন্নয়নে ইংরেজির গুরুত্ব উপলব্ধি করে তিনি হয়ে যান ইংরেজির শিক্ষক। ইংরেজি ভাষার প্রতি আকর্ষণ তাঁকে উদ্বুদ্ধ করে এ ভাষা শেখা ও শেখানোর ক্ষেত্রে গবষেণায়। শুরু করেন নিজস্ব পদ্ধতিতে ইংরেজি শেখানো। দেশের তরুণ সমাজকে ইংরেজি না জানার দুরবস্থা থেকে মুক্তি দিতে নিজে চাকরিতে না ঢুকে ঘুরে ঘুরে বিনা পয়সায় এখন ইংরেজি শেখাচ্ছেন। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর ন্যায় দেশের তরুণ সমাজকে দক্ষ ও সমৃদ্ধকরণের কাজে নিবেদিত রয়েছেন। সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাঁর দায়িত্ব ও কর্ম সম্পাদনের পাশাপাশি ব্যতিক্রমী সমাজ সেবাকে উৎসাহিত করতে তাঁকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথিসহ উপস্থিত সকলে বিপুল করতালির মাধ্যমে পুরস্কারপ্রাপ্ত এই তিন ব্যক্তিত্বকে অভিনন্দিত করেন। এরপর শুরু হয় বক্তৃতাপর্ব।
মোঃ বদিউজ্জামান
প্রধান অতিথি দুদক চেয়ারম্যান মোঃ বদিউজ্জামান বলেন দুরূহ ও কঠিন কাজের দায়িত্ব কেন যে আমার ওপর অর্পিত হয়, তা কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ডিজি হিসেবে কর্মরত ছিলাম; সেখানে অন্যান্য কাজের পাশাপাশি দুদক’র ফাইল দেখেছি। একসময়ে দুদক প্রধান তথা মহাপরিচালক ছিলাম। নতুন বিচারিক ব্যবস্থায় ন্যায়পাল পদ সৃষ্টির পর তাঁকে সহায়তার জন্য আমাকে নিযুক্ত করা হয়। এরপর দুদক’র কমিশনার হিসেবে কাজ করছি। দুর্নীতি দমনে কাজ করতে গিয়ে আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে যে, যারা দুর্নীতিবাজ তারা অন্যের দুর্নীতির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করেন, নিজের দুর্নীতি সম্পর্কে টুঁ শব্দটিও করেন না। আইনের ফাঁক-ফোকরে অনেকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে পার পেয়ে যান। ২০১০ সালে বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন পাসের পর দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে এর বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করি। দুর্নীতি এখন আর দেশীয় সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যাও বটে। ৯ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী দুর্নীতি বিরোধী দিবস হিসেবে পালিত হয়। দেশে আমরা ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে প্রচার অভিযান পরিচালনা করি।
দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করা সত্যিকার অর্থে একটি কঠিন কাজ। কারণ দুর্নীতির ব্যাপারে নিউজ অনেক হয় কিন্তু তদন্তে নামলে দেখা যায় কতটা সত্যি আর কতটা মিথ্যা।
উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিগণ যখন দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকেন তখন তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই এখন আমাদের চেষ্টা চলছে দুর্নীতি বন্ধের নয়, বরং দুর্নীতি প্রতিরোধের। এজন্য সরকারের পাশাপাশি সুশীল সমাজ ও সাধারণ জনগণের সহযোগিতা কাম্য। তাছাড়া পাঠ্যপুস্তকেও এ ব্যাপারে সচেতনতামূলক পাঠ থাকা উচিত।
প্রধান অতিথি মোঃ বদিউজ্জামান আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা সদস্য পদ প্রার্থীদের জনগণের সামনে হাজির করাতে চাইছি। তারা নির্বাচিত হলে কী কী কাজ করবেন সে প্রতিশ্রুতি জনগণকে দেবেন। সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ভোটারদের সামনে তাদের দাঁড়াতে হবে। এর মাধ্যমে প্রার্থী ও সাধারণ জনগণের মাঝে দূরত্ব যেমন কমবে, তেমনি পরবর্তীতে দুর্নীতির সুযোগও কম থাকবে।
সততা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অভিনন্দন জানিয়ে মোঃ বদিউজ্জামান আরও বলেন যে তিনজন আজ পুরস্কৃত হলেন তারা সাদামনের মানুষ; তাঁরা নীতি ও আদর্শের জন্য কাজ করে চলেছেন। ক্যাম্পাস’র কর্ণধার এম হেলাল অত্যন্ত সজ্জন ও ন্যায়-নীতিবান। তার মেধা ও দেশপ্রেম অতুলনীয়। তিনি নীতি ও আদর্শের চর্চার মাধ্যমে উন্নত জাতি গঠনে ব্যক্তিগতভাবে ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। সমাজে সততা জাগরণের লক্ষ্যে ক্যাম্পাস’র উদ্যোগে আয়োজিত আজকের এ অনুষ্ঠান ও সততা পুরস্কার কর্মসূচি অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
প্রকৌশলী নূরুল হুদা
সততা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব রাজউক’র চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নূরুল হুদা তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, রাজউক’র পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন। ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামের জন্য ক্যাম্পাসকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তিনি বলেন, দু’টি শক্তিশালী গ্রুপের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আল্লাহর রহমতে আমি আজও রাজউকে টিকে আছি। আমার কাজে বাধা দিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়ার পরও আমি বলেছি আমি দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করছি; আপনাদের হাতে আমার মৃত্যু যদি লেখা থাকে, তাহলে তা-ই হবে। আমি মিথ্যার সাথে আপোশ করতে পারব না। আমাকে রাজউক’র দায়িত্ব থেকে সরানোর জন্য পত্র-পত্রিকায় নানা খবর প্রকাশ হয়েছে। জাতীয় স্বার্থে আমি অনিয়মের সাথে আপোশ করিনি। রাজউক’র রাজস্ব বৃদ্ধি করেছি ২শত ভাগ। আমি পরিকল্পিতভাবে রাজউক’র মধ্যে পরিবর্তন এনেছি।
প্রকৌশলী নূরুল হুদা আরও বলেন, ক্যাম্পাস’র সততা পুরস্কার পেয়ে আমি সাংঘাতিকভাবে অভিভূত হয়েছি। সরকারের সকল ডিপার্টমেন্ট যদি সচেতনভাবে এগিয়ে আসে, তাহলে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে। সততা, নিষ্ঠা, স্বচ্ছতা ও সুনামের সাথে কাজ করলে তখন দুদক’র আর প্রয়োজন হবে না। জঙ্গীবাদমুক্ত, মাদকমুক্ত, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়তে আমরা ক্যাম্পাস’র সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করব এ হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।
রোকন উদ-দৌলা
সততা পুরস্কারপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ-দৌলা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন ২০০৬ সালে আমার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন আমাকে পুরস্কার দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল, কিন্তু সরকারি কর্মকতা হিসেবে আইনগত জটিলতার কারণে তা আমাকে না দিয়ে অন্য একজনকে দেয়া হয়েছে। এরপর আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়ার কথা হয়েছিল, কিন্তু তাও আমার ভাগ্যে জোটেনি। এ ব্যাপারে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে ক্যাম্পাস আমাকে সততা পুরস্কারে ভূষিত করল। ক্যাম্পাস’র সততা পুরস্কার সমাজ-প্রগতিতে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে আমি আশাবাদী।
রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নূরুল হুদার পুরস্কার প্রাপ্তিতে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ-দৌলা বলেন, রাজউক’র অনেকগুলো প্রকল্প দুর্নীতিমুক্তভাবে সম্পন্ন করেছেন প্রকৌশলী নূরুল হুদা। হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়িত করে নগরবাসীর নিঃশ্বাস নেয়ার জায়গা করেছেন। ঢাকাকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে রাজউক চেয়ারম্যান যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা সুফল বয়ে আনবে।
মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া
ক্যাম্পাস পরিচালিত ফ্রি ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পারসন, সমাজসেবী ব্যক্তিত্ব এম গোলাম কিবরিয়া নিজ অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন সমাজের কাজ করতে গিয়ে অনেকের সাথে পরিচয় হয়, সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করতে চেয়েছি। এক পর্যায়ে ক্যাম্পাস কর্মসূচিতে জড়িত হই। ক্যাম্পাস’র পরিবেশ ও ব্যতিক্রমী কর্মযজ্ঞ আমাকে মুগ্ধ করেছে। ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এম হেলাল কোনো ব্যবসায়িক বা মুনাফা সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িত না থেকেও বিনামূল্যে একের পর এক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন সমাজকে।
তিনি বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে প্রদত্ত সম্মাননা আমার মরহুম নানা এবং যারা সততা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জড়িত তাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করলাম।
প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পাস’র উদ্যোগে সততা পুরস্কার প্রদান সত্যি সাহসী উদ্যোগ। বর্তমান সমাজে সৎ, দেশপ্রেমিক মানুষের সন্ধান পাওয়া দুষ্কর। প্রকৌশলী নূরুল হুদা ছাত্রাবস্থা থেকে আমার পরিচিত, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি শুধু সৎই নন, দক্ষ ও ডায়নামিক।
ড. মান্নান আরও বলেন ক্যাম্পাস’র সম্পাদক এম হেলালের সকল উদ্যোগ সফল হবে, কারণ জাতি গঠনে ও দেশ উন্নয়নে তার লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী। ক্যাম্পাস অফিসে পা রাখলে অন্যরকম অনুভূতি জাগে। মনে দৃঢ় আশাবাদ জাগে আমরা ভিক্ষুক হয়ে বাঁচতে চাই না, ক্যাম্পাস স্বনির্ভরতার যে বাণী ছড়িয়ে যাচ্ছে তাতে নতুন আশায় উজ্জীবিত হয়ে শপথ নেব দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত সোনার বাংলা আমরা গড়বই গড়ব!
প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন
আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন আমাদের দেশে সততার কদর নেই; আবার অনেকে সৎ হলেও জীবিত অবস্থায় সম্মান পান না। বিশেষ গোষ্ঠীর লোক না হলে এদেশে সম্মান লাভের সুযোগ নেই। কিন্তু আজকের অনুষ্ঠানটি ব্যতিক্রমী। এ উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে হবে। দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে সংগ্রাম হবে নিরন্তর। যারা দেশের নিয়ন্তা তাদেরকেই দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। আমাদের একজন ছাত্র প্রকৌশলী নূরুল হুদা সততার জন্য আজকে পুরস্কৃত হলেন। এটি আমাদের জন্য গর্ব ও গৌরবের বিষয়। প্রকৌশলী নূরুল হুদার মধ্যে ছাত্রাবস্থায়ই নেতৃত্বের গুণ লক্ষ্য করা গিয়েছিল। পরবর্তী জীবনেও তিনি তা অব্যাহত রেখেছেন।
প্রফেসর আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, দুর্নীতির মূল হলো প্রাইমারি শিক্ষা এখানে হাত দিতে হবে, সংস্কার করতে হবে। প্রাইমারি শিক্ষার্থীদেরকে দুর্নীতি সম্পর্কে সচেতন করতে পারলে দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের ভিত্তি রচিত হবে।
প্রফেসর ড. এম ফিরোজ আহমেদ
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. এম ফিরোজ আহমেদ বলেন, ক্যাম্পাস’র আজকের আয়োজনে চমক আছে; এটি একটি ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান। সমাজে সৎ ব্যক্তি অনেক আছেন, কিন্তু সাহস করে এগিয়ে আসতে পারেন না। আমার ছাত্র প্রকৌশলী নূরুল হুদা সৎ ব্যক্তি হিসেবে পুরস্কৃত হওয়ায় আমি গর্বিত। সমাজের বিভিন্ন স্তরে কীভাবে দুর্নীতি হয় এটি আমি বুঝতে পারি না; অথচ দুর্নীতি সারা দেশে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ছে। একে রোধ করতে হলে এখনি সবাইকে আন্দোলনে নামতে হবে। ক্যাম্পাস দু’যুগ আগে যে আন্দোলনের সূচনা করেছিল, তাকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রবল গণআন্দোলনের রূপ দিতে হবে; এখানেও ক্যাম্পাস থাকবে নেতৃত্বের ভূমিকায়।
প্রফেসর ড. এম এ আজিজ
প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও ইউআইটিএস’র সাবেক ভিসিপ্রফেসর ড. এম এ আজিজ বলেন, ক্যাম্পাস তার বহুমুখী কর্মসূচির আলোকে অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কিন্তু আজকের অনুষ্ঠান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এরূপ মহতী উদ্যোগ নেয়ার জন্য এম হেলালকে স্যালুটেশন, অভিনন্দন।
ড. আজিজ আরও বলেন সততা আমাদের মধ্যে এখনও আছে, কিন্তু অভাব আছে সাহসের। সৎ হবার পাশাপাশি সাহসী হতে হবে। একজন সৎ, স্বচ্ছ ও সাহসী লোক রাজউক পরিচালনা করছেন। প্রতিটি সংস্থার পরিচালকগণ যদি এরূপ সাহস নিয়ে আসেন, তাহলে সমাজের পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।
এম এ রশিদ খান
খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার এম এ রশিদ খান বলেন ক্যাম্পাস আয়োজিত আজকের অনুষ্ঠান দেশ ও সমাজের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ক্যাম্পাস দুর্নীতি দমনে যে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে তা বাস্তবায়নে ও লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। অন্যদিকে দুদক সারা দেশব্যাপী দুর্নীতি বিরোধী যে কর্মসূচি পরিচালনা করছে তার বাস্তবায়ন ও লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্যও সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। দুদক যদি এ কাজে ক্যাম্পাস’র নিঃস্বার্থ সহযোগিতা নেয় তাহলে দু’য়ে মিলে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করা সহজ হবে। আশা করি আজকের প্রধান অতিথি দুদক চেয়ারম্যান বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখবেন।
ড. মোঃ শামসুল আরেফিন
দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক ড. মোঃ শামসুল আরেফিন বলেন, ভালো লাগার অনুভূতিতেই ক্যাম্পাস’র অনুষ্ঠানে এসেছি। সৎ মানুষের মূল্যায়ন দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাঁরা রোল মডেল হিসেবে কাজ করবেন। তিনি বলেন, আমাদেরকে অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। শুধু সৎ নয়, সাহসীও হতে হবে; সেই সাথে প্রয়োজন দক্ষতা। সততা শেখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। অফিসের কাজে, সমাজের কাজে সৎ থাকতে পারলে কমিউনিটি ফিলিংস গড়ে উঠবে, তখন আর ‘আমার’ ‘আমার’ এ ব্যক্তিস্বার্থ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না। দায়িত্বশীলতা থাকলে সৎ পথে চলা যায়।
ড. আরেফিন বলেন দুদক চেয়ারম্যান লড়াই করে চলেছেন বন্ধুর পথে, প্রতিনিয়তই বাধা আসছে। কিন্তু তিনি নির্বিকার থেকে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন; তাঁর জীবন থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তিনি বলেন ক্যাম্পাস সমাজে সততার যে ঝান্ডা উড়িয়েছে, আমরাও সে আন্দোলনের সাথে একাত্ম হতে পারি; পরস্পরের কর্মসূচিতে সহায়ক শক্তি হতে পারি।
ড. নাজনীন আহমেদ
ক্যাম্পাস’র পক্ষে স্বাগত বক্তৃতা করেন ক্যাম্পাস’র অনারারী রিসার্চ ডিরেক্টর ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ। তিনি বলেন, আজকের দিনটি ক্যাম্পাস’র এগিয়ে যাওয়ার দিকনির্দেশক দিন। আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ক্যাম্পাস’র সততা পুরস্কার আন্দোলনকে উজ্জীবিত করেছেন দুদক চেয়ারম্যান, রাজউক চেয়ারম্যান এবং বেশ কয়েকজন মান্যবর ভাইস-চ্যান্সেলর। আমাদের আয়োজন ক্ষুদ্র হলেও এর গুরুত্ব অনেক বেশি। ক্যাম্পাস আজ সমাজের তিন অঙ্গনের তিনজন সৎ ব্যক্তিত্বকে সততা পুরস্কারের সম্মাননা দিচ্ছে। ক্যাম্পাস এ মহতী উদ্যোগের সূচনা করেছে মাত্র; এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সরকার এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে নিতে হবে।
ড. নাজনীন ক্যাম্পাস’র আদর্শ ও শিক্ষা সম্পর্কে বলেন ক্যাম্পাস কার্যালয়ে কেউ মিথ্যা কথা বলেন না, এ নিয়ম ভঙ্গ হলে তাকে আর্থিক জরিমানা দিতে হয়। ক্যাম্পাস ক্যালেন্ডার-স্টিকার-লিফলেট প্রচারের মাধ্যমে ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্যাম্পাস’র অবস্থান অনেক স্বচ্ছ ও বলিষ্ঠ। ক্যাম্পাস বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের ব্রেন থেকে খারাপ প্রোগ্রাম বের করে ভালো প্রোগ্রাম ইনসার্ট করার কৌশল শেখায়।
ড. নাজনীন বলেন, ক্যাম্পাস’র এ বছরের ক্যালেন্ডারের সেøাগান হলো সর্বক্ষেত্রে সৎ ও যোগ্য দেশপ্রেমীকে নেতা-নেত্রী নির্বাচিত করুন। ক্যাম্পাস দুর্নীতি বিরোধী যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তাতে দুদক’র সহায়তা যুক্ত হলে তা আরও বেগবান হবে। দেশের সকল প্রান্তে দুর্নীতি বিরোধী সেমিনারের আয়োজন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া সহজ হবে। আমরা দুর্নীতিমুক্ত সুন্দর দেশ গড়ব, গড়ব সোনার বাংলাদেশ; ছাত্র-তরুণদের এই হোক জীবনের মূলমন্ত্র।
কে এম বেলায়েত হোসেন
দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার সম্পাদক কে এম বেলায়েত হোসেন বলেন ক্যাম্পাস আজ সৎ মানুষকে স্বীকৃতি ও সম্মাননা প্রদান করল, এজন্য তাদেরকে স্বাগত জানাই। ভালো মানুষের ভালো কাজের স্বীকৃতি মিললে ভালো কাজে উৎসাহ বৃদ্ধি পাবে, মানুষ উদ্বুদ্ধ হবে। রাজউক চেয়ারম্যান রাজউক থেকে সব দুর্নীতি দূর করতে পারেন। তাঁর সদিচ্ছা ও সাহস আছে, তিনি তাঁর দায়িত্বে আন্তরিক। আমি মিডিয়ার লোক, মিডিয়ায় মন্দ খবর দিতে চাই না। এতসব উন্নয়নের খবর, সম্ভাবনা ও সাফল্যের খবর থাকতে মন্দ খবর দিয়ে কাগজ ভরাব কেন! ভালো খবরের মাধ্যমে পাঠকের মনকে চাঙ্গা করে তুলব। ক্যাম্পাস’র আজকের অনুষ্ঠানের খবরও একটি ভালো খবর। আজ ভালো মানুষকে, সৎ, নিষ্ঠাবান ও দক্ষ মানুষকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। অনেক ভালো মানুষ, সৎ মানুষ আছেন যাদের খোঁজ পাওয়া যায় না। তাঁদেরকে খুঁজে নিতে হবে, সততার স্বীকৃতি দিয়ে পুরস্কৃত করতে হবে। আমরা শুধু সৎ মানুষের জানাযায় অংশগ্রহণ করব না; তাঁদের ভালো কাজেও পাশে থাকব, সাহস জোগাব।
এম হেলাল
সভাপতির ভাষণে ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাসচিব এম হেলাল বলেন নিজ দেশের সমস্যা সমাধানের জন্য বিদেশের কাছে ধরনা দেয়ার নীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। জাতির মর্যাদা আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান। ক্যাম্পাস গবেষণা সেল ইউনিয়নভিত্তিক উন্নয়ন এবং এলাকাভিত্তিক স্কুলিং -এ দু’টি বিষয়ের ওপর মডেল তৈরি করে সরকারের উচ্চ ও নীতিনির্ধারক মহলে তাঁদের অবগতি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু ২/৩ জন ছাড়া অন্যরা এখনও সাড়া দেননি। আজ এ ছোট্ট আয়োজনের মাধ্যমে যাঁকে সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে সেই দুদক চেয়ারম্যানকে একজন সহজ-সরল ও সৎ মানুষ হিসেবে দেখে আসছি। সততা পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্যে প্রকৌশলী নুরুল হুদা সফল আমলা হিসেবে নয়, তিনি তাঁর অঙ্গনে সততা ও ন্যায়ের ঝান্ডা উড্ডীন রেখেছেন। ক্যাম্পাস ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সৎ মানুষকে সমাজে কোণঠাঁসা করে রাখা হয়, মানুষ তাদের উপহাস করে, তাদেরকে নিগৃহীত হতে হয়। আজকের সততা পুরস্কার প্রাপ্তগণও অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছেন; কিন্তু দমে যাননি। কারণ সততা কেবল লালনের বিষয়ই নয়, সততা প্রমাণ করেও দেখাতে হবে।
এম হেলাল আরও বলেন, আজ মাত্র তিনজন ব্যক্তিত্বকে পুরস্কৃত করা হলো; এ প্রক্রিয়া চলতে থাকবে। দুর্নীতির কীটদষ্ট সমাজেও মানুষকে সৎভাবে গড়ে তোলা সম্ভব। দুর্নীতিতে আমরা আর চ্যাম্পিয়ন হব না। আমরা সমাজে এমন আন্দোলন গড়ে তুলব, যাতে সৎ ব্যক্তিগণ সমাজের সাপোর্টলাভ করে। ক্যাম্পাস সততা পুরস্কার দিয়ে উদাহরণ স্থাপন করেছে; ক্যাম্পাস চায় বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর সততা পুরস্কার দেয়া হোক। তিনি আরও বলেন, সমাজে সৎ মানুষ কোণঠাঁসা হয়ে থাকেন, আমরা সৎ মানুষদের পুরস্কৃত করার মাধ্যমে সততার ঝান্ডা উড্ডীন রাখব।
এম হেলাল বলেন সৎ মানুষের তালিকা পাঠাতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর, পরিদপ্তরে চিঠি দিয়েছিলাম। অনেক জায়গা থেকে উত্তর এসেছে আমাদের এখানে এ ধরনের কোনো যোগ্য ব্যক্তি নেই। আমরা বিস্মিত হয়েছি, তবে হতাশ হইনি। ভেবেছি কাউকে না কাউকে, কোথাও না কোথাও থেকে শুরু করতে হবে; বসে থাকলে চলবে না। আমরা তাই সততা পুরস্কার আন্দোলন শুরু করেছি। ক্যাম্পাস’র এবারের আহ্বান সর্বক্ষেত্রে সৎ ও যোগ্য দেশপ্রেমীকে নেতা-নেত্রী নির্বাচিত করুন। এ চেতনা লালন করতে পারলে ২০২০ সালের মধ্যে ন্যায়ভিত্তিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং আলোকিত জাতি গড়ে উঠবে। ক্যাম্পাস’র সেই আলোকিত পথে অভিযাত্রায় সবার আন্তরিক সমর্থন ও সহযোগিতা একান্ত কাম্য।