ডিজিটাল ইয়াং-স্টার পুরস্কার নীতিমালা
তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশের মাধ্যমে সমাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ক্যাম্পাস বিগত ৭ বছর থেকে নিয়মিত ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে। সে ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল সোসাইটি গড়ার প্রয়াসে চালু করেছে ডিজিটাল ইয়াং-স্টার পুরস্কার। যুব সমাজে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি হতাশামুক্ত উচ্ছল, উজ্জ্বল জাতি গঠনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মোটামুটিভাবে নিম্নোক্ত নীতিমালার ভিত্তিতে ডিজিটাল ইয়াং-স্টার পুরস্কার প্রদান করা হবে।
১। ডিজিটাল ইয়াং-স্টার পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন প্রার্থীকে ক্যাম্পাস পরিচালিত ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং সম্পন্ন করতে হবে;
২। ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং ক্লাসে ১০০% উপস্থিতি এবং ট্রেনিং শেষে পরীক্ষায় ‘এ+’ অথবা ‘এ’ গ্রেডধারীকে পুরস্কারের বিবেচনায় অগ্রাধিকার দেয়া হবে;
৩। প্রার্থীকে ব্যক্তিজীবনে সৎ, দক্ষ এবং প্রো-একটিভ ও পজিটিভ এটিচিউডের অধিকারী হতে হবে। তার কাজ-কর্মে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সময়ানুবর্তিতা ও ন্যায়-নিষ্ঠা থাকতে হবে;
৪। দেশপ্রেম, সমাজসেবা, জাতি জাগরণমূলক চিন্তা ও মনোভাব তৈরিতে ক্যাম্পাস’র সমাজ সচেতনতা কার্যক্রম এবং শিক্ষানবিশ কর্মসূচিতে কমপক্ষে ১৫ কর্মদিবস অংশগ্রহণের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে তার জন্য দুপুরের লাঞ্চ ও বিকেলের নাস্তার ব্যবস্থা থাকবে;
৫। ফিল্ড ওয়ার্ক ও মার্কেটিংয়ের অভিজ্ঞতালাভের জন্য অন্ততঃ ১০ কর্মদিবস শিক্ষানবিশ হিসেবে থাকতে হবে;
৬। অনুষ্ঠান আয়োজন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ক্যাম্পাস’র আয়োজকদের সাথে অন্ততঃ ৫টি অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে জড়িত থাকতে হবে; এক্ষেত্রে অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময়ের ৪ ঘন্টা পূর্বে উপস্থিত থেকে আয়োজনের সার্বিক বিষয় অবলোকন ও আয়োজককে সহযোগিতা করতে হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে অনুরূপ অনুষ্ঠান আয়োজনের পূর্ব-প্রস্তুতি নিয়ে দেখাতে হবে যে, এরূপ অনুষ্ঠান আয়োজনে তিনি সক্ষম;
৭। উন্নততর মনন ও চিন্তা, সুস্থ-সবল দেহ এবং দীর্ঘায়ু লাভের উদ্দেশ্যে প্রতি শনিবার বিকেলে ক্যাম্পাস অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মেডিটেশন, ইয়োগা এবং আকুপ্রেশার সেশনে অংশগ্রহণে প্রয়াসী হতে হবে;
৮। ক্যাম্পাস’র শিক্ষানবিশ কর্মসূচি এবং সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যারা ইতোমধ্যে অংশগ্রহণ করেছেন বা করছেন, সাধারণতঃ তারা পুরস্কারের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচ্য। তবে এরূপ কার্যে অতীতে বিশেষ কারণে অংশগ্রহণ করতে না পারলেও বর্তমানে বা আগামীতে অংশগ্রহণে নিশ্চয়তা প্রদানকারীও পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হতে পারেন;
৯। ডিজিটাল ইয়াং-স্টার নির্বাচিত হলে প্রার্থীকে অবশ্যই ক্যাম্পাস’র সমাজসেবা, দেশ গঠন ও জাতি জাগরণমূলক কার্যক্রমে সাধ্যমত সময় ও শ্রম দিতে হবে;
১০। দেশে তথ্য-প্রযুক্তি ও কম্পিউটার-জ্ঞান বিকাশের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত স্টারের পরিবার ও পরিচিত জনদেরকে ক্যাম্পাস’র ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করানোর দায়িত্ব বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে তাকে পুরস্কার গ্রহণের পূর্বে কমপক্ষে ১০জনকে এবং পরবর্তী ২বছর প্র্রতিমাসে অন্ততঃ ১জনকে কম্পিউটার ট্রেনিংয়ে ভর্তি করানোর দায়িত্ব পালন করতে হবে;
১১। ডিজিটাল স্টারের জনসংযোগ ও কর্মদক্ষতার পরীক্ষা হিসেবে শিক্ষা উন্নয়ন ও যুব উন্নয়নে নিবেদিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার জন্য কমপক্ষে ৫জন পাঠক ফোরাম সদস্য সংগ্রহ করতে হবে;
১২। ডিজিটাল ইয়াং-স্টারের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে তাকে ক্যাম্পাস আয়োজিত বিভিন্ন সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিশিষ্ট বক্তাদের বক্তৃতা শুনতে হবে। ডিজিটাল স্টার পুরষ্কার গ্রহণের পরও বছরে এরূপ অন্ততঃ ২০টি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক;
১৩। পরিবারে ও সমাজে নিজের অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার প্রসার ঘটানোয় প্রয়াসী হতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর সে দায়িত্ব পালনের অগ্রগতি সম্পর্কে ক্যাম্পাসকে রিপোর্ট করতে হবে;
১৪। উপরোক্ত বিভিন্ন শর্ত ও পর্ব সম্পাদনের পর প্রতিযোগী স্টাররা পরস্পর পরস্পরের পারফরমেন্স/দক্ষতার মূল্যায়ন করবে, যা তাদের বিচারিক ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এবং তাদের এ মূল্যায়ন ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুরস্কারের জন্য ব্যক্তি নির্বাচনে সহায়ক হবে। তবে প্রতিযোগী স্টারদের পারস্পরিক মূল্যায়নের এ বিষয়টি কেবল প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য;
১৫। উপরোক্ত ক্ষেত্র ছাড়াও কম্পিউটার বা তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে, এমন ব্যক্তি অথবা ডিজিটাল সোসাইটির জনমত তৈরিতে বা তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশে অন্য কোনরূপ অবদান রাখায় সক্ষম এরূপ বিশেষ ব্যক্তিকেও ডিজিটাল ইয়াং-স্টার পুরস্কার প্রদান করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে মোট পুরস্কার সংখ্যার এক চতুর্থাংশের বেশি প্রদান করা যাবে না;
১৬। ক্যাম্পাস কর্তৃক নির্বাচিত ডিজিটাল ইয়াং-স্টারকে পুরস্কার হিসেবে যদি কম্পিউটার বা অনুরূপ কোন পণ্য প্রদান করা হয়, তাহলে তিনি নিজ ব্যবহারের অঙ্গীকারেই তা গ্রহণ করবেন। এরূপ গৃহীত কম্পিউটার বা পণ্য তিনি কোনক্রমেই বিক্রয় বা হস্তান্তর করতে পারবেন না; তার ব্যবহারের প্রয়োজন না থাকলে তিনি তা ক্যাম্পাস’র ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে ফেরত দিয়ে দেবেন;
১৭। ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্ট কোন কার্যক্রমে জড়িত থাকাকালীন কোন শিক্ষানবিশ বা কোন ডিজিটাল স্টার বিশেষ কোন দক্ষতা ও পারদর্শীতা দেখাতে পারলে বা বিশেষ কোন অবদান রাখতে পারলে সে বিশেষ ক্ষেত্রে তিনি পুরস্কৃত, এমনকি আর্থিক সুবিধা পেতে পারেন;
১৮। পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত ইয়াং-স্টারকে পুরস্কার গ্রহণের পূর্বে এরূপ অঙ্গীকারনামা প্রদান করতে হবে যে, তিনি ডিজিটাল ইয়াং-স্টার নীতিমালা জানেন ও মানেন। তাছাড়া তিনি আগামী ১ বছর ক্যাম্পাস’র সমাজ কল্যাণমূলক কার্যক্রমে বিশেষতঃ জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এবং ডিজিটাল ইয়াং-সোসাইটি গড়ার কর্মসূচিতে নির্দ্বিধায় ও নিঃসংকোচে অংশগ্রহণ করবেন;
১৯। ১৮ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখিত অঙ্গীকারনামা প্রদানে যদি কেহ সম্মত না হন, তবে তাকে অবশ্যই পুরস্কার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পুরস্কার গ্রহণ করার পর অত্র নীতিমালা বা অঙ্গীকারনামায় উল্লেখিত কোন শর্ত ভঙ্গ করলে তিনি চুক্তি-ভঙ্গকারীর অপরাধে অভিযুক্ত হবেন এবং তার কর্তৃক গৃহীত পুরস্কার ফেরত দেয়াসহ আনুষঙ্গিক/সংশ্লিষ্ট ক্ষতিপূরণ আদায়ে ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে;
২০। ডিজিটাল ইয়াং-স্টার পুরস্কার প্রদান একটি ধারাবাহিক কর্মসূচি। ইয়াং-স্টার হিসেবে আবেদনকারী ট্রেইনী আবেদন-পরবর্তী সেশনে পুরস্কারের জন্য মনোনীত না হলে তার সুযোগ শেষ হয়ে যায় না। কাজ অব্যাহত রাখার মধ্য দিয়ে তিনি পরবর্তী সেশনগুলোতে পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হতে পারেন।
২০। পুরস্কারের জন্য ডিজিটাল ইয়াং-স্টার নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি বাছাই কমিটি থাকবে, যারা প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের তালিকা প্রস্তুত করে ক্যাম্পাস’র প্রধান নির্বাহীর নিকট হস্তান্তর করবেন। ক্যাম্পাস’র প্রধান নির্বাহী কর্তৃক সে তালিকা যাচাই-বাছাই ও সংযোজন-বিয়োজন সাপেক্ষে তা সিএসডিসি’র কার্যনির্বাহী পরিষদে উপস্থাপিত হবে।
উক্ত নীতিমালা ২-২-২০১০ তারিখের ইসি সভায় অনুমোদিত।