ক্যাম্পাসঃ আমার গর্ব
মো: কামরুজ্জামান
উপ-সহকারী পরিচালক
ক্যাম্পাস পরিবারের সাথে আমার পরিচিতি বা সম্পর্ক মাত্র ৩/৪ মাস হলেও মনে হয় যেন অনেক দিনের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। নতুন এই পরিবেশে এসে আজ পর্যন্ত কোনো একাকিত্ব অনুভব করিনি।
আমার চাকরি করার ব্যপারে ছোটবেলা থেকেই অনীহা ছিল। আমি যেখানে জন্মগ্রহণ করেছি, পড়ালেখা করেছি, সেই স্থানটি (বাবুরহাট, নরসিংদী) কাপড় ও টেক্সটাইল ব্যবসার জন্য খুবই প্রসিদ্ধ। আমার ছোটবেলার বন্ধু-বান্ধব ও সহপাঠীদের বেশিরভাগ ব্যবসার সাথে জড়িত। তাই বিভিন্ন সময়ে বন্ধুদের দেখাদেখি ব্যবসা করার জন্য মন ছটফট করত। তখন থেকেই জানতাম, আমি ব্যবসায়ী হব। বাড়িতে এ নিয়ে অনেক সময় বাবার সাথে আলাপও করতাম। কিন্তু বাবা-মার একান্ত ইচ্ছাই আমাকে পড়ালেখা করার ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলে। তাদের সে অনুপ্রেরণা না থাকলে আমার পড়ালেখা তেমন হতো না এবং পরবর্তীতে চাকরির প্রতিও আগ্রহী হতাম না।
প্রথম যেদিন ক্যাম্পাস অফিসে চাকরির জন্য আসি এখানকার গাছ-গাছালি দিয়ে সাজানো মনোরম পরিবেশ, সুসজ্জিত লাইব্রেরি, জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক নানা বাণীতে পরিপূর্ণ ব্যানার-ফেস্টুন ও স্টিকার দেখে আমি অভিভূত হয়ে যাই। সে সময়ই ক্যাম্পাস সম্পর্কে আমার মনে একটি ভালো ধারণা জন্মে এবং এখানে চাকরি পেলে করব বলে মন স্থির করে ফেলি।
ক্যাম্পাস ছাত্র ও যুব সমাজের জন্য নানা ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদেরকে সত্য ও ন্যায়ের পথে দীক্ষা দিচ্ছে। ক্যাম্পাস পরিচালিত কর্মসূচি বহুমুখী ও বহুবিধ। এর রয়েছে ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং কর্মসূচি, যা ছাত্র-যুবকদের তথ্য-প্রযুক্তিতে জ্ঞানলাভের সুযোগ করে দিচ্ছে, রয়েছে ফ্রি মেডিটেশন ও ফ্রি ইয়োগা যার মাধ্যমে মন নিয়ন্ত্রণ, আত্মোন্নয়ন ও শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আরও রয়েছে ক্যাম্পাস সামাজিক সচেতনতা আন্দোলন, ক্যাম্পাস সততা পুরস্কার কর্মসূচি প্রভৃতি। আর এসব ব্যতিক্রমী কাজের মাধ্যমে যিনি ক্যাম্পাস কর্মীসহ ছাত্র-যুবকদেরকে আধুনিক বিশ্বের উপযোগী করে গড়ে তোলার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন, তিনি আর কেউ নন এ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এম হেলাল।
হেলাল স্যার এমন একজন মানুষ, যিনি সবসময়ই আমাদেরকে আধুনিক ও উন্নততর ধ্যান-ধারণার সাথে সম্পৃক্ত করেন এবং নতুন নতুন কাজে উদ্ধুদ্ধ করেন। আমি স্যারকে যতটুকু দেখেছি ও জেনেছি, তাতে বুঝেছি যে তিনি সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে এবং অন্যায়, মিথ্যা, ঘুষ-দুর্নীতিসহ সকল প্রকার অবিচার ও অসদাচরণের বিপক্ষে তার দৃঢ় অবস্থান। আল্লাহ তাকে সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী ও দীর্ঘজীবী করুন এই কামনা করি।
আমার চাকরি শুরুর প্রথম দিনগুলোতে আমি অনেক কাজই সঠিকভাবে গুছিয়ে করতে পারতাম না। সব কিছুই নতুন মনে হওয়ায় কাজে ভুল-ত্রুটি হতো। কিন্তু স্যারের কাছে যাওয়ার পর তিনি সেই ভুলগুলো ঠিক করে দেন এবং নতুন নতুন আইডিয়া দিয়ে কাজের দিক নির্দেশনা দেন। শত ঝামেলার মাঝেও তাঁকে এ পর্যন্ত বিরক্ত বা রাগ হতে দেখিনি। যেকোনো পরিস্থিতি তিনি প্রোএকটিভ এটিচিউড বা ঠান্ডা মাথায় নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেন। তিনি প্রায়ই বলেন, সততা ও আত্মবিশ্বাস থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো কোনো ব্যাপারই নয়। তাঁর মতে জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন পরিশ্রমীর পেছনে টাকা উড়ে বেড়ায়, আর অলস ও বোকাদেরকে টাকার পেছনে মরিচিকা হয়ে দৌড়াতে হয়।
ক্যাম্পাস’র সাথে সম্পৃক্ত হয়ে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় যে লাভটা হয়েছে, তা হলো সময়মতো জামাতে নামাজ পড়া। ক্যাম্পাস অফিসে জামাতে নামাজের জন্য সুব্যবস্থা রয়েছে এবং ক্যাম্পাস’র সহকারী পরিচালক কামাল সাহেব অত্যন্ত সুমধুর কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াত করে নামাজ পড়ান, যা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। ক্যাম্পাস এ আসার আগে নামাজের ব্যাপারে নিয়মিত ছিলাম না, কিন্তু এখন নিয়মিত নামাজ আদায় করছি।
ক্যাম্পাস এ রয়েছে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ। এখানে সহকর্মীরা খুব আন্তরিক ও কর্মঠ; প্রত্যেকে একে অপরকে সাহায্য করে। এরকম একটি পরিবেশে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। ক্যাম্পাস, আমি তোমার জন্য গর্বিত।