ক্যাম্পাস’র প্রোএকটিভ সেমিনারে শিখলাম সাফল্যের মূল মন্ত্র

নার্গিস বেগম
শিক্ষার্থী, ইংলিশ এন্ড স্মার্টনেস কোর্স ফর লিডারশিপ এবং ডায়নামিক কম্পিউটার ট্রেনিং



জীবনে কে না সফল হতে চায়! আমরা সবাই সফল মানুষ হতে চাই। কিন্তু এই সফল হওয়ার জন্য কোন পথে এগোতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে তা আমরা অনেকেই জানি না। আর এই সফল হওয়ার পথ দেখাতে আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত মোটিভেশনাল স্পিকার ড. আলমাসুর রহমান। যিনি বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের মাঝে সফলতার বীজ বপন করেছেন। তাঁর মত এমন একজন মহান ব্যক্তির সরাসরি বক্তব্য শুনতে পেরে আমার নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হয়েছে।

ড. আলমাসুর রহমান প্রথমেই একটি সুন্দর ছোট মজার জোকস দিয়ে কথা বলা শুরু করলেন। তার জোকস শুনে আমরা সবাই খুব হেসেছি। এখান থেকে শিখতে পারলাম যে, যে কোনো কাজ শুরুর আগে মুড ভাল রাখতে হবে। মুড অফ, হিয়ারিং ইজ অফ অর্থাৎ মন ভালো বা প্রফুল্ল না থাকলে কাজে সফলতা আসে না। তাঁর কাছ থেকে সফলতার সুন্দর একটি সংজ্ঞা শিখতে পেরেছি। তিনি প্রচলিত সংজ্ঞার বাইরে গিয়ে নিজে একটি চমৎকার সংজ্ঞা দিয়েছেন। সেটি হলো- ‘আনন্দের সাথে যা প্রাপ্তি তাই সফলতা।’ অন্যায় করে, ঘুষ খেয়ে, দুর্নীতি করে মানুষ ‘আরাম’ ও ‘শারীরিক মজা’ পেতে পারে; কিন্তু সে কখনও সুখ, শান্তি ও তৃপ্তি পাবে না। তাই সফল হওয়ার জন্য আমরা অন্যায়ের পথ বেছে না নিয়ে কল্যাণের পথকে বেছে নেয়ার শিক্ষা লাভ করছি।

সফল হতে হলে প্রথমে কাজের অ্যামবিশন থাকতে হবে। তারপর কাজের জন্য সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে, পরিকল্পনা করতে হবে। সবশেষে যেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাহলো অ্যাকশন বা কাজে লেগে যাওয়া। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা সফল না হই, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। শত চেষ্টা করার পরও যদি আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে না পৌঁছতে পারি, তাহলে আমাদের হাল ছেড়ে দিয়ে লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়ালে হবে না। তখন আমাদের লক্ষ্যকে পরিবর্তন না করে নিজের চেষ্টাকে পরিবর্তন করতে হবে। এটাই হচ্ছে আসল শিক্ষা। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই। অনেক ঘটনা ঘটে থাকে চারপাশের মানুষের সাথে। যাকে আমরা নতুন অভিজ্ঞতা হিসেবে ধরে নেই। কিন্তু ড. আলমাস ভিন্ন আঙ্গিকে শেখালেন যে, অভিজ্ঞতা সেটা নয়, যেটা আমাদের জীবনে ঘটে। অভিজ্ঞতা হচ্ছে সেটা, যেটা থেকে আমরা শিক্ষা লাভ করি।

মানবজাতি সর্বদাই বাঁকা পথে চলতে পছন্দ করে। সর্বদা নেতিবাচক জিনিসকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই এই জগতে আমাদের মাথা থেকে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা দূর করতে প্রথমেই নিজের মনকে সহজ-সরল করতে হবে। মনের গতি সোজা না হলে, পৃথিবীর আঁকা-বাঁকা রাস্তার সাথে তাল মিলিয়ে চলা যাবে না। তাহলে ছিটকে পড়ে অতলে তলিয়ে যেতে হবে। ড. আলমাস বলেছেন- ‘সবসময় নিজের উপর আস্থা, বিশ্বাস রাখবে।’ আমাদের মন নিয়ত পরিবর্তনশীল। আর এই পরিবর্তনশীল মনকে বোঝানো সবচেয়ে কঠিন কাজ। এই সেমিনার থেকে শিখতে পেরেছি যে, সব কাজের ক্ষেত্রেই নিজের উপর পূর্ণ আস্থা রাখতে হবে। মানুষ যদি নিজের প্রতি কনফিডেন্স রাখতে পারে, তাহলে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত প্রত্যেক Organ তাকে পজিটিভ ইন্সপিরেশেন বা অনুপ্রেরণা দেবে। আমি এখন দৃঢ় প্রত্যয়ে বলতে শিখেছি- It is possible, I must do it. নিজের মনকে প্রতিদিন এ কথা বলতে পারলে কোনো কাজে বিফল হওয়া বা হতাশ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।

ড. আলমাসুর রহমান-এর সেমিনারে অংশগ্রহণ করে আমার ভিতর সবকিছুকে পজিটিভলি গ্রহণ করার ক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলে আমি মনে করি। এ বিষয়ে আমাদেরকে আরও অনেক অনুপ্রাণিত করেছেন ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. এম হেলাল। তিনি বলেছেন, কম্পিউটারের Delete I Insert অপশনের মত নিজের মস্তিষ্ক থেকে নেগেটিভ চিন্তা উবষবঃব এবং পজিটিভ চিন্তা Insert করতে হবে। একটি অর্ধেক ভর্তি গ্লাসে পানি দেখে দুই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায়। যারা পজিটিভ চিন্তাধারার অধিকারী তারা বলেন, গ্লাসে অর্ধেক পানি আছে আর যারা নেগেটিভ চিন্তাধারার অধিকারী তারা বলেন, অর্ধেক গ্লাস খালি আছে। এই খালি বা শূন্যতা থেকেই তাদের জীবনেও শূণ্যতা নেমে আসে। জীবন ভরে যায় শূণ্যতার হাহাকারে। তাই আমাদেরকে জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে, সবধরনের কাজে পজিটিভ চিন্তাধারার অধিকারী হতে হবে।

আর ক্যাম্পাস, এটি এমন একটি নাম যার কথা না বললেই নয়। ক্যাম্পাস’র প্রতিটি কর্মকান্ডই শিক্ষণীয়। জনকল্যাণধর্মী ক্যাম্পাস’র যে সকল কর্মীরা আছেন, তারাও সবাই খুব আন্তরিক। আমি ক্যাম্পাস’র ডায়নামিক কম্পিউটার কোর্স এবং ইংলিশ ফর লিডারশিপ কোর্সের একজন শিক্ষার্থী। এখানে প্রত্যেক ট্রেইনারই খুব সুন্দরভাবে আমাদেরকে হাতে কলমে বুঝিয়ে দেন। আমি ক্যাম্পাস’র সাথে জড়িত হতে পেরে নিজেকে খুব গর্বিত মনে করি আর ক্যাম্পাস’র সার্বিক কল্যাণ কামনা করি।

-প্রথম প্রকাশঃ আগস্ট, ২০১৮