বিশেষ খবর



Upcoming Event

ক্যাম্পাসঃ আমার প্রিয় কর্মস্থল

ক্যাম্পাস ডেস্ক ক্যাম্পাস ফ্যামিলি
img

‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস’ -এমন একটি নাম, যা শুনে অনেকেই প্রথমে মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। আবার অনেকে এ নাম শুনে বলে- ‘ও, ক্যাম্পাস পত্রিকা!’অর্থাৎ ক্যাম্পাস সম্পর্কে অনেকেরই ভাল ধারণা রয়েছে। জ্ঞানভিত্তিক ও যুক্তিভিত্তিক সমাজ এবং আলোকিত জাতি গঠনে নিবেদিত একটি প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র (CSDC), যার বহু কার্যক্রমের একটি হলো শিক্ষাঙ্গনের একমাত্র নিয়মিত পত্রিকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

২০০৮ সালে ক্যাম্পাস পরিচালিত ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং নিতে এসে এখানকার আরেকটি ব্যতিক্রর্মী কর্মসূচি শিক্ষানবিশ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করি। সেখান থেকেই ভাললাগার শুরু এবং এ প্রতিষ্ঠানের সাথে পথ চলা। আমি এখানে কাজ করছি খুব বেশি দিন নয়, দু’ বছর মাত্র। এটি সম্পূর্ণ জনসেবাধর্মী ও স্বচ্ছ। এখানকার প্রতিটি কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পূর্বে স্টাফ মিটিংয়ে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ফলে সকল কার্যক্রম সম্পর্কে সবার স্বচ্ছতা থাকায় কোন বিষয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগার অবকাশ নেই।

CSDC’র মহাসচিব এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক জনাব এম হেলাল স্যার আমাদের সকলের জন্য একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। আমাদের কর্মজীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিজীবনেও তিনি একজন গার্ডিয়ানের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তাঁর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও পরিচালনায় এখানকার কর্ম-পরিবেশ খুবই চমৎকার। এখানে ভাল কাজের জন্য যেমন পুরস্কৃত করা হয়, তেমনি অন্যায় কাজের কোন সুযোগই নেই। হেলাল স্যারের কাছ থেকে একজন উন্নততর মানুষ (Superior human being) হওয়ার যে টিপস পাওয়া যায়, তা একেবারেই বিরল প্রাপ্তি। আমার দেখা তাঁর অনেক গুণের মধ্যে সবচেয়ে ভালো লাগে আতিথেয়তা। তিনি অত্যন্ত অতিথিপরায়ণ এবং প্রকৃতিপ্রেমী।

ক্যাম্পাস অফিসের পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর এবং মনোরম। সবুজ গাছ দিয়ে রুচিশীলভাবে সাজানো পুরো অফিস। প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো এই অফিসটায় আমার সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে টবের গাছ এবং বনসাইগুলো। আমাদের অফিসে কোন ভিজিটর এলে প্রকৃতি দিয়ে সাজানো এমন পরিবেশ দেখে মুগ্ধ হন এবং অফিস-রুচির প্রশংসা করেন।

ক্যাম্পাস’র একটি অন্যতম কার্যক্রম হচ্ছে ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং। আমি এই ট্রেনিংয়ের ব্যবহারিক ক্লাস নিয়ে থাকি। এখানে যেকোন বয়সের লোক কম্পিউটার ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারে। নানান বয়সী ট্রেইনী নিয়ে আমার সময়ের একটা বড় অংশ কাটে। আমি সারা মাস ধরে হাতে ধরিয়ে তাদেরকে কম্পিউটার শিখাই। ট্রেনিং শেষে পরীক্ষায় যখন দেখি- কেউ ভাল করছে বা A+ পেয়েছে,তখন খুব ভাল লাগে। আমি অনুভব করি কাউকে কিছু শেখানোর বা সৃষ্টির অপার আনন্দ! আবার ট্রেইনীদের মাধ্যমে কোর্স-পূর্ববর্তী ও কোর্স-পরবর্তী মূল্যায়ন ফরম পূরণ করানো হয়, যেখানে তারা ট্রেইনার সম্পর্কে স্বাধীন মতামত দিয়ে থাকে। এ ফরমে ট্রেইনীদের বিভিন্ন মন্তব্য মাঝে-মধ্যে খুব উপভোগ্য হয়।

আগেই বলেছি, আমাদের অফিস খুব সাজানো-গোছানো। একবার একটি সেমিনারে শ’খানেক লোকের সমাবেশ হল। সেমিনারে আগত সকলকে টবসহ গাছ উপহার দেয়া হচ্ছিল। একই রকম হওয়ায় কেউ একজন ভুল করে অফিসের একটি টব নিজের মনে করে নিয়ে যায়। এগুলো দেখে রাখা যেহেতু আমার দায়িত্ব, তাই টব হারিয়ে সেদিন দায়িত্ব অবহেলার দায়ে স্যারের কিঞ্চিৎ বকুনি শুনতে হয়। তবে এতে নিজ দায়িত্বের প্রতি সর্বদা সতর্ক থাকার ব্যাপারে একটা শিক্ষাও পেয়েছিলাম।

এবারে আমার কর্মজীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনার কথা বলি। এ অফিসের সকল স্টাফের যার যার নিজের হাতে তৈরি করা একটি করে নিত্য-কর্মপঞ্জিকা রয়েছে। কয়েক মাস ধরে প্রত্যেকে প্রত্যেকেরটা আবার একে অন্যেরটা বার বার মূল্যায়ন করে অনেক ঘষামাজার পর চূড়ান্ত রূপ নেয় কর্ম-পঞ্জিকা। এ পঞ্জিকা তৈরি হওয়ার আগে সম্পাদক মহোদয় একদিন স্টাফ মিটিংয়ে বলেন- যার নিত্য-কর্মপঞ্জিকা সবচেয়ে সঠিক এবং সবার নিকট গ্রহণযোগ্য হবে, তাকে পুরস্কৃত করা হবে। আমার এত এত সিনিয়র এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কলিগ থাকতে আমি এ পুরস্কার পাবো না বলেই ভেবেছিলাম। অথচ আমাকে অবাক করে একদিন স্টাফ-সভায় সম্পাদক মহোদয় ঘোষণা করেন, এ নিত্য-কর্মপঞ্জিকা তৈরিতে আমি প্রথম হয়েছি এবং এক হাজার টাকার শুভেচ্ছা-পুরস্কারটাও আমি পাচ্ছি। এটি আমার কর্মজীবনের একটি স্মরণীয় এবং উৎসাহব্যঞ্জক ঘটনা।

এগুলো ছাড়াও ক্যাম্পাস’র বহুমুখী কার্যক্রমের সাথে জড়িত বিভিন্ন ঘটনা রয়েছে, যা লিখে শেষ করা যাবে না। সবশেষে বলা যায়- ক্যাম্পাস এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা সর্বদা সময়ের দাবিতে কাজ করে। আমি আমার প্রিয় কর্মস্থল ক্যাম্পাস’র সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।

স্বর্না শারমিন
সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img