ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম নামে এক বৈদ্যুতিক মিটারের মাধ্যমে কমবে বিদ্যুত ব্যবহারের খরচ। মোবাইল বা কম্পিউটার দিয়ে বিদ্যুতের খরচ, ব্যবহারের পরিমাণ ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলো করা যাবে নিয়ন্ত্রণ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) দুইজন শিক্ষার্থী এবং ইন্টেলিজেন্স মিটারের আবিষ্কারক। এরা হলেন, রুয়েট’র যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কে এম নাজমুল হাসান সজীব ও সর্বার্থ গোস্বামী প্রীতম।
তারা জানান, বাংলাদেশে এনালগ মিটারের পরিবর্তে ডিজিটাল মিটার ব্যবহার শুরু হলেও ইন্টেলিজেন্স মিটারের বেশ পার্থক্য আছে। ডিজিটাল মিটারগুলো বিদ্যুৎ খরচ পরিমাপ করতেই সীমাবদ্ধ। আমাদের এ মিটারগুলো গ্রাহক প্রতিমাসে কতটুকু বিদ্যুৎ খরচ করতে চাই, সেটা এই সফটওয়ারকে জানিয়ে দিলে বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলোর লোড লিমিট করে খরচটা বেঁধে দেয় মানের আশেপাশে রাখবে, কোন বৈদ্যুতিক যন্ত্র কতটুকু সময় ধরে চলছে সেটা নির্ধারণ করবে, ইনপুট ভোল্টেজ কতো এবং ওভারলোডেড কিনা সেটা নির্ধারণ করে, বিদ্যুতের মান পরিমাপ করে, এটা খুব সহজে ব্যবহার উপযোগী একটা সফটওয়ারের মাধ্যমে মানগুলো গ্রাহকের কম্পিউটার বা ফোনে দেখা যাবে।
এছাড়া সফটওয়ার ব্যবহার করে ঘরের এসি, ফ্যান, ওয়াটার হিটার, লাইট ইত্যাদি কন্ট্রোল করা যাবে। মিটারটি থেকে বিভিন্ন মান যেমন কারেন্ট, ভোল্টেজ, কতো কিলোওয়াট খরচ হলো, বিল ইত্যাদি দেখার জন্য বানানো হয়েছে একটি সফটওয়ার। এ সফটওয়ারটি সব অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করা যাবে। সফটওয়ারটি গ্রাহককে জানিয়ে দিবে কীভাবে বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করলে বৈদ্যুতিক বিল তুলনামূলক কম হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো জানান, ইন্টেলিজেন্স মিটারটি এখন তৈরি করতে খরচ হচ্ছে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এটাকে বড় পরিসরে তৈরি করে বাজারজাত করতে পারলে উৎপাদক খরচ এক হাজারে নামিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা।
উদ্ভাবকরা জানান, বর্তমানে বৈদ্যুতিকক্ষেত্রে যে ১৫ শতাংশ নন টেকনিক্যাল লস হয়, তা এই সিস্টেম ব্যবহারে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে সরকারের প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাঁচবে, যা দিয়ে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত মেইন গ্রীডে যুক্ত করা যাবে। এতে নতুন করে আরো ২ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আনা যাবে।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রাম থেকে শহর সারা দেশে এই সুবিধা পেতে এন্ড্রোয়েড মোবাইল, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ করা যাবে। এছাড়াও যাদের ইন্টারনেট, এন্ড্রোয়েড সুবিধা নেই তাদের জন্যে মোবাইলের ম্যসেজের মাধমে এসব সুবিধা দেয়া হবে।