১। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং কারা এই পরিষদের সদস্য?
উত্তরঃ ধারা- ৫ পরিষদ প্রতিষ্ঠা। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামে একটি পরিষদ থাকিবে, যাহা নিম্নরূপ সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা ঃ-
(১) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
(২) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, পদাধিকারবলে;
(৩) জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক, পদাধিকারবলে;
(৪) বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক, পদাধিকারবলে;
(৫) শিল্প মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(৬) কৃষি মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(৭) মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(৮) খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(৯) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(১০) জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(১১) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(১২) জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান, পদাধিকারবলে;
(১৩) পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(১৪) ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সভাপতি, পদাধিকারবলে;
(১৫) ঔষধ শিল্প সমিতির সভাপতি, পদাধিকারবলে;
(১৬) কনজুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সভাপতি, পদাধিকারবলে;
(১৭) জাতীয় প্রেসকাবের সভাপতি, পদাধিকারবলে;
(১৮) ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এর পরিচালক, পদাধিকারবলে;
(১৯) সরকার কর্তৃক মনোনীত তিনজন বিশিষ্ট নাগরিক;
(২০) সরকার কর্তৃক মনোনীত বাজার অর্থনীতি, ব্যবসা, শিল্প ও জনপ্রশাসনে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অন্যূন দুইজন মহিলা সদস্য সমন্বয়ে চারজন সদস্য;
(২১) সরকার কতৃর্ক মনোনীত একজন শিক্ষক প্রতিনিধি;
(২২) সরকার কতৃর্ক মনোনীত একজন শ্রমিক প্রতিনিধি;
(২৩) সরকার কতৃর্ক মনোনীত একজন কৃষক প্রতিনিধি; এবং
(২৪) মহাপরিচালক, যিনি উহার সচিবও হইবেন।
২। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য পদের মেয়াদ কত দিন?
উত্তরঃ ধারা- ৬ সদস্য পদের মেয়াদ। (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে পরিষদের কোনো মনোনীত সদস্য তাহার মনোনয়নের
তারিখ হইতে দুই বৎসর ছয় মাসের জন্য সদস্য পদে বহাল থাকিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান সত্ত্বেও মনোনয়নকারী কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় উহার প্রদত্ত কোনো মনোনয়ন বাতিল করিয়া উপযুক্ত নূতন কোনো ব্যক্তিকে মনোনয়ন প্রদান করিতে পারিবে।
৩। প্রতি কত মাস অন্তর একটি পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হইবে?
উত্তরঃ ধারা- ৭(৩) প্রতি ২ (দুই) মাসে পরিষদের কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
৪। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভায় চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে কে সভায় সভাপতিত্ব করিবেন?
উত্তরঃ ধারা- ৭(৫) চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
৫। পরিষদের কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা পরিষদ গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিষদের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে কি না?
উত্তরঃ ধারা- ৭(৮) না, শুধুমাত্র কোনো সদস্যপদে শূন্যতা বা পরিষদ গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিষদের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
৬। এ আইন অনুসারে পরিষদের কাজগুলো কি কি?
উত্তরঃ ধারা- ৮ পরিষদের কার্যাবলি। পরিষদের কার্যাবলি হইবে নি¤œরূপ, যথাঃ
(ক) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন এবং উহা বাস্তবায়নে মহাপরিচালক ও জেলা কমিটিকে নির্দেশনা প্রদান;
(খ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় প্রবিধানমালা প্রণয়ন;
(গ) ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ সম্পর্কে সরকার কর্তৃক প্রেরিত যে কোনো বিষয় বিবেচনা করা এবং মতামত প্রদান;
(ঘ) ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন ও প্রশাসনিক নির্দেশনা প্রণয়নের বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান;
(ঙ) ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করিবার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ;
(চ) ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণের সুফল এবং ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্যের কুফল সম্পর্কে গণসচেতনতা গড়িয়া তুলিবার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ছ) ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা;
(জ) অধিদপ্তর, মহাপরিচালক এবং জেলা কমিটির কার্যক্রম তদারকি ও পর্যবেক্ষণ; এবং
(ঝ) উপরোক্ত দায়িত্ব পালন ও কর্তব্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ।
৭। উক্ত পরিষদের তহবিল কিভাবে গঠিত হয়?
উত্তরঃ ধারা- ৯ পরিষদের তহবিল। (১) পরিষদের কার্যাবলি পরিচালনার জন্য উহার একটি নিজস্ব তহবিল থাকিবে এবং নিম্নবর্ণিত উৎসসমূহ হইতে প্রাপ্ত অর্থ উক্ত তহবিলে জমা হইবে, যথা ঃ-
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(খ) সরকারের অনুমোদন ক্রমে কোনো বিদেশি সরকার, সংস্থা বা কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(গ) কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(ঘ) পরিষদের অর্থ বিনিয়োগ হইতে প্রাপ্ত মুনাফা; এবং
(ঙ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
(২) পরিষদের তহবিল বা উহার অংশবিশেষ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে।
(৩) তহবিলে জমাকৃত অর্থ পরিষদের নামে তৎকর্তৃক অনুমোদিত কোনো তফসিলী ব্যাংকে জমা রাখা হইবে।
(৪) প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিল রক্ষণ ও উহার
৮। জেলা ভোক্তা অধিকার কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিব কে?
উত্তরঃ ধারা- ১০(ক) জেলা প্রশাসক, পদাধিকারবলে, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;
ধারা- ১০(জ) জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত তাহার কার্যালয়ে কর্মরত অন্যূন সহকারী কমিশনার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা, যিনি উহার সচিবও হইবেন।
৯। জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটিতে সিভিল সার্জন ও পুলিশ সুপার সদস্য হইতে পারেন কি? কিভাবে?
উত্তরঃ ধারা- ১০(ঘ) সিভিল সার্জন, পদাধিকারবলে;
ধারা- ১০(ঙ) পুলিশ সুপার, পদাধিকারবলে;
১০। কত দিন অন্তর জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠেয়?
উত্তরঃ ধারা- ১২ (২) জেলা কমিটির সভা উহার সভাপতি কতৃর্ক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে ঃ তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি মাসে জেলা কমিটির কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
১১। জেলা কমিটির সভায় কতজন উপস্থিত হইলে কোরাম হইবে?
উত্তরঃ ধারা- ১২ (৪) অন্যূন ৫ (পাঁচ) জন সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম গঠিত হইবে।
১২। উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটির কার্যাবলি কি কি?
উত্তরঃ ধারা- ১৩ উপজেলা কমিটি, ইউনিয়ন কমিটি ইত্যাদি। (১) অধিদপ্তর, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনবোধে, প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ কমিটি এবং প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়ন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রত্যেক উপজেলা কমিটি ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন?
(ক) সদস্য সংখ্যা, সদস্যদের মনোনয়ন, যোগ্যতা, অপসারণ ও পদত্যাগ সংক্রান্ত বিধানাবলি; এবং
(খ) দায়িত্ব, কার্যাবলি এবং সভার কার্যপদ্ধতি, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
১৩। এ সংক্রান্ত জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি তহবিল গঠন করিতে পারে কি? যদি পারে তবে কিভাবে?
উত্তরঃ ধারা- ১৪ জেলা কমিটি ইত্যাদির তহবিল। (১) প্রতিটি জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি এবং ইউনিয়ন কমিটির একটি করিয়া তহবিল থাকিবে।
(২) জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি এবং ইউনিয়ন কমিটির তহবিল রক্ষণ, উহার অর্থ ব্যয় এবং তৎসংক্রান্ত বিষয়াদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৩) এই আইনের অধীন মামলা, ল্যাবরেটরি পরীক্ষার খরচসহ জেলা কমিটির প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যয় প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি বা ক্ষেত্রমত, ইউনিয়ন কমিটির তহবিল হইতে নির্বাহ করা যাইবে।
১৪। পরিষদের তহবিল কে নিরীক্ষা করিতে পারিবেন, কিভাবে?
উত্তরঃ ধারা- ১৬(২) বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব নিরীক্ষক নামে অভিহিত, বা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি প্রতি বৎসর পরিষদের তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও পরিষদের নিকট পেশ করিবেন।
১৫। বার্ষিক প্রতিবেদন বলিতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ ধারা- ১৭ বার্ষিক প্রতিবেদন। পরিষদ প্রতি বৎসর ৩০ জুনের মধ্যে পূর্ববর্তী ৩১ ডিসেম্বরে সমাপ্ত এক বৎসরের স্বীয় কার্যাবলির বিবরণ সংবলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, উহা জাতীয় সংসদে উত্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
অধিক জানতে-
ড. মোঃ শাহাদাৎ হোসেন
পরিচালক (যুগ্মসচিব)
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর
১ কারওয়ান বাজার, টিসিবি ভবন, (৮ম তলা), ঢাকা। ফোনঃ ০২-৮১৮৯০৪৪