রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাকে।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালায়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব শাহনাজ সামাদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানা যায়।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর (সংশোধিত) ১৩ (১) এর ধারা অনুযায়ী চার বছরের জন্য বিশ্ববদ্যিালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ মার্চ বিগত প্রশাসনের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন ও উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহানের মেয়াদ শেষ হয়।
পরে দীর্ঘ ৪৭ দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান নিয়োগ পেলেও চার মাস পর উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেন তিনি।
বিশিষ্ট অনুজীববিজ্ঞানী ও প্রাণিবিদ্যা বিশারদ ড. আনন্দ কুমার সাহা ১৯৫৭ সালে মাগুরা জেলার মহাম্মদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি যশোর বোর্ড থেকে ১৯৭২ সালে এসএসসি ও ১৯৭৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৯ সালে প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে বিএসসি (সম্মান) ও ১৯৮০ সালে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। অনার্সে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম ও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণি অর্জন করেন।
১৯৮৭ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগ দেন ও ২০০২ সালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। ২০০২ সালে তিনি ভারতের পুনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবায়োলজিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এর আগে ১৯৯১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল আপন টাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যায় এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর পঠন-পাঠনের ক্ষেত্র হচ্ছে, অনুজীববিদ্যা ও আনবিক জীববিজ্ঞান। অধ্যাপনায় যোগদানের আগে তিনি ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ফুড-ফাইবার-ফুয়েল শীর্ষক সুইস-বাংলাদেশ গবেষণা প্রকল্পে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং সেপ্টেম্বর ১৯৮৩ থেকে মে ১৯৮৪ পর্যন্ত জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা ফেলো হিসেবে কাজ করেন।
এ যাবত প্রফেসর সাহার ৫৩টি গবেষণা প্রবন্ধ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ৯টি এমফিল ও পিএইচডি গবেষণা তত্ত্বাবধান করেছেন ও বর্তমানে তিনজন গবেষক তাঁর তত্ত্বাবধানে গবেষণারত আছেন। এছাড়া তিনি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মাস্টার্স পর্যায়ের গবেষণাও তত্ত্বাবধান করেছেন।
প্রফেসর সাহা প্রণীত দু’টি পুস্তকের মধ্যে জাতির জনকের বিভিন্ন কর্মকা-ের আলোকচিত্র-সম্বলিত ‘ছবি কথা বলে’ শীর্ষক পুস্তকটি এক অনন্য দলিল হিসেবে সমাদৃত হয়েছে। তিনি ২০১০ সাল থেকে িি.িড়ঁৎসঁলরন.নষড়মংঢ়ড়ঃ.পড়স শীর্ষক একটি ব্লগও পরিচালনা করে থাকেন। ব্লগটি এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লক্ষ বার ভিজিট করা হয়েছে।
অধ্যাপনার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে তিনি রাবি’র নির্বাচিত সিনেট সদস্য, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, যশোর বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রাণিবিদ্যা সমিতির আঞ্চলিক সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা সমিতির সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়কের দায়িত্বসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি অন্য কয়েকটি পেশাজীবী, বুদ্ধিবৃত্তিক ও বিজ্ঞান বিষয়ক সংগঠনের সদস্য।