বয়ঃসন্ধিকালে মানুষের মনোজগতে বিশাল এক পরিবর্তন আসে। আগের মত ছোট্টটি নেই, আবার ঠিক বড়দের দলেও অপাংক্তেয়- ঠিক যেন রবীন্দ্রনাথের গল্পের ফটিকের মতো- পৃথিবীর কোথাও সে ঠিক খাপ খাইতেছে না!
এই সময়ে শরীরে বিভিন্ন হরমোনের ক্ষরণে আবেগের এক বিস্ফোরণ ঘটে কিশোর-কিশোরীদের মনপটে। এই আবেগের প্রাধান্য নির্ধারণ করে দেয় পরিণত বয়সে একটি মানুষের ব্যক্তিত্ব। তাই সময় থাকতেই রাশ ধরতে হবে ক্ষতিকর আবেগগুলোর, একটি সুন্দর আগামীর প্রতিশ্রুতির জন্য।
জীবনে একটু আধটু উদ্বেগ থাকা ভালো, তা না হলে ক্লাসের ফাঁকিবাজ ছাত্রটির পরীক্ষার আগের রাতেও পড়তে বসা হতো না! কিন্তু এটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে গেলে মুসিবত। আমাদের এক বন্ধু পরীক্ষা নিয়ে এতো টেনশনে ছিল যে এক্সাম হলে প্রশ্ন হাতে আসার আগেই হাত পা কাঁপাকাঁপি হয়ে মূর্ছা পেয়ে চিৎপটাং! সুতরাং বুঝতেই পারছো, টেনশন কখনো ভাল ফল নিয়ে আসে না। সবকিছু সহজ ভাবে নিতে শেখো। একটা পরীক্ষা খারাপ হলে পৃথিবী উল্টিয়ে যাবে না। একবার কোন কাজে ব্যর্থ হলে অথবা ভুল করলে সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ো না। টেনশন করে যে সময়টুকু নষ্ট হতো, সেটা কাজে লাগাও প্রস্তুতিতে। পরেরবারের জন্য কোমর বেঁধে লাগো, টেনশন বাপ বাপ করে পালাবে।
আমরা প্রায়ই টেনশনে পড়ে যাই আমাদের ক্যারিয়ার নিয়ে, ভবিষ্যত নিয়ে। এই টেনশন থেকে মুক্তি পেতে চাইলে ঝটপট ঘুরে এসো ১০ মিনিট স্কুলের এই এক্সক্লুসিভ প্লে-লিস্ট থেকে!
আমাদের সবারই দু`একজন বন্ধু আছে যাদের কিচ্ছু “ভাল্লাগেনা!” দুনিয়ার কোন কিছুতে তাদের সন্তুষ্টি নাই। তাদের ঘুমাতে ভাল্লাগেনা, খাওয়াদাওয়া করতে ভাল্লাগেনা, খেলাধুলাও ভাল্লাগেনা- মোটকথা তাদের জীবনটাই একটা তেজপাতা হয়ে দাঁড়িয়েছে! এমনটা হলে খুব মুশকিল। একটা একঘেয়েমির চক্করে পড়ে গেলে তখন কোনকিছুতেই আর উৎসাহ আসে না। সুতরাং প্রতিদিন নতুন কিছু করার চেষ্টা করো। দৈনন্দিন বোরিং কাজগুলোই কিভাবে ইন্টারেস্টিং করে তোলা যায় সেটা চিন্তা করো। বই পড়তে ভালো লাগছে না? ঢুঁ মেরে আসো একফাঁকে টেন মিনিট স্কুলে! শেখার সাথে যখন যুক্ত হয় আনন্দ, জীবন কি তখন নীরস থাকতে পারে?
বেড়িয়ে আসুন নিজের খোলস থেকে!
কর্পোরেট জগতে চাকরির ক্ষেত্রে কিছু জিনিস ঠিকঠাক রাখা অত্যন্ত জরুরি।
বিস্তারিত জানতে ঘুরে আসুন ১০ মিনিট স্কুলের এক্সক্লুসিভ এই প্লে-লিস্টটি থেকে।
চৈনিক প্রবাদে আছে, “হাসতে যদি না জানো তবে ব্যবসা করতে যেয়ো না!” সত্যিই তো, বদমেজাজি রামগরুড়ের ছানাদের কেইবা পছন্দ করবে! বয়ঃসন্ধিকালে খুব তুচ্ছ কারণেও হুটহাট মাথায় রক্ত উঠে যায় রাগের তোড়ে, অনেকের চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেওয়ারও বাতিক আছে। এ ব্যাপারটিকে একদম প্রশ্রয় দেওয়া চলবে না। রেগে গেলে তো হেরে গেলে! তোমার যদি কোন কারণে রাগ হয়, ঠান্ডামাথায় ভেবে বের করো কেন হচ্ছে রাগ, কি করলে রাগটা প্রশমিত হবে। রাগারাগি কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে এড়িয়ে যাওয়া। আমার একজনকে দেখলেই খুব রাগ উঠতো। এক বন্ধু বললো, “তুই ওকে রাগানোর সুযোগ দিচ্ছিস কেন? ওর দিকে না তাকালেই তো হয়!” আসলেই, জগতের সবকিছু তোমার মনমতো হবে না, কিন্তু তা নিয়ে মাথা গরম করার কি দরকার! পাত্তা না দিলেই তো হয়!
আমার দুই বন্ধু দাওয়াত খেতে গেছে। একজন খোদাই ষাঁড়ের মত আর অপরজন তালপাতার সেপাই। খেতে বসে মোটা বন্ধু টেবিলের পোলাও কালিয়া ডেকচি সব নিজের দখলে এনে সাবাড় করে দিচ্ছে। এদিকে চিকন বন্ধু অপর টেবিলে ভদ্রতার খাতিরে কিছু বলতে পারছে না, তার পছন্দের মাংসের পিস চোখের সামনে তুলে নিয়ে গেল আরেকজন! ঘটনা দেখে মোটা বন্ধু বললো, “খেতে এসেছিস, সাবড়ে দে! কে কি ভাবলো সেটাই যদি ভাবিস বসে বসে তাহলে খাবি কখন?” সত্যিই, কোন কাজ থাকলে সেটা ঝটপট শুরু করে দিবে। কে কি ভাবলো না ভাবলো, কেউ লজ্জা দিলো কি না দিলো সেটা ভেবে মনে জটপাকানোর মানে হয়না। পাছে লোকে কি ভাববে সেটাও যদি তুমিই ভাবো তাহলে লোকে ভাববে কি?
কোন সমস্যায় আটকে গেছ? প্রশ্ন করার মত কাউকে খুঁজে পাচ্ছ না? ঘুরে এসো আমাদের লাইভ গ্রুপ থেকে!
প্রত্যেকবার পরীক্ষার আগের রাতে সিলেবাসের পাহাড় দেখে মনে হয়, ইশ! যদি প্রতিদিন একটু একটু করে পড়তাম তাহলে কতই না ভাল হতো! অতঃপর পরীক্ষা শেষে যথা তথা! প্রতিদিনের কাজগুলো জমতে জমতে পরীক্ষার আগে আবার দুঃস্বপ্নে রূপ নেয়! অথচ প্রতিদিনের কাজ অল্প অল্প করে নিয়মিত সেরে ফেললে জীবনটা কতো নির্ঝঞ্ঝাট হয়ে যায়! ফাঁকিবাজির অভ্যাস আমাদের সবার ভেতরেই আছে, এটাকে একবারে ঝেঁটে তাড়ানো সহজ নয়! কিন্তু তোমার যেটা করতে হবে – প্রতিদিন একটু একটু করে কাজ এগিয়ে নিতে হবে। ক্লাসে গল্প করার ফাঁকে ক্লাসনোটটাও একটু একটু তুলতে হবে। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন না হোক, অন্তত সপ্তাহান্তে পড়ে কমপ্লিট করে ফেলতে হবে, যাতে পরীক্ষার আগের রাতে মূর্ছা যেতে না হয়! তুমি একটা কিছু শিখতে চাও, সেটার পিছনে নিয়মিত সামান্য করে হলেও সময় দিতে হবে। এভাবে প্রতিদিন ছোট্ট ছোট্ট অর্জনের নুড়িপাথর একদিন সাফল্যের এক পর্বতে পরিণত হবে, তুমি নিজেই অবাক হয়ে যাবে নিজের কীর্তিতে – সামান্য ফাঁকিবাজি কমানোর এত্তো গুণ!
তুমি এখন আর আগের মত ছোট্টটি নেই যে, বাবা মা সব হাতে ধরে করিয়ে দেবেন। এখন তোমার স্বাধীনতা বেড়েছে, সেই সাথে কাঁধে এসেছে দায়িত্ববোধের ভার। সুতরাং নিজের কাছে নিজের সততাটা বজায় রাখো। ছোট থাকতে আমাদের অনেকেই স্কুলে প্রথম সারির শিক্ষার্থী ছিল, বড় হয়ে দেখা গেছে কতদূর ছিটকে পড়েছি সেখান থেকে! কারণ আর কিছুই নয়, ছোটবেলায় বাবা মা সবসময় সাথে লেগে থাকতেন, নিয়মিত রুটিন করে পড়তে বসাতেন, পড়া আদায় করিয়ে ছাড়তেন। এখন মাথার উপর সেই নিয়ন্ত্রণের ছড়ি নেই বলে অনেকেই আমরা তাল হারিয়ে ফেলি, নাটাই ছেঁড়া ঘুড়ির মতো দিগ্বিদিক উড়তে গিয়ে ছিটকে পড়ি সম্ভাবনার দুয়ার থেকে। সুতরাং নিজেই নিজের মুরুব্বি বনে যাও! “অমুক চ্যাপ্টার কমপ্লিট করার আগে কোন ঘুম নয়!” “অমুক ম্যাথ সলভ করার আগে স্মার্টফোন হাতেও নিবো না!” এমন ছোটখাটো টার্গেটের বেড়াজালে বেঁধে নাও নিজেকে। টার্গেট সফল হলে নিজেই নিজেকে ছোটখাটো পুরস্কার দাও! তুমি হয়তো চকলেট খেতে খুব পছন্দ করো, চ্যাপ্টারের শেষ পাতায় চকলেটটা রেখে দিতে পারো, চ্যাপ্টার কমপ্লিট করলে চকলেটটা খাওয়া যাবে – এই আনন্দেই দেখতে দেখতে ফিনিশ হয়ে যাবে চ্যাপ্টার! জ্ঞানের ক্ষুধা নিবৃত্ত হলো, এবার উদরপূর্তিও হচ্ছে চকলেটে – যাকে বলে মধুরেণ সমাপয়েৎ!