প্রতিষ্ঠানের আদর্শ বস হয়ে ওঠা সহজ কাজ নয়। যাবতীয় চাপ সামলানোর পরও পরিচালনা, অগ্রগতি এবং কর্মী বাহিনীর সন্তুষ্টি অর্জনে দায়বদ্ধতা একমাত্র আপনার। প্রত্যেক কর্মীর ভিন্ন মানসিকতা এবং আচরণ বুঝে তাল মিলিয়ে চলা দুষ্কর। তাই পৃথিবীতে যাঁরা প্রতিষ্ঠানের নেতা হিসেবে সফল হয়েছেন, তাঁদের গতানুগতিক কয়েকটি গুণ দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। সাধারণ বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে আরো কিছু অভ্যাসের মিশেল ঘটান সফলকামীরা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন সফল বসদের এমনই সাতটি মূল্যবান অভ্যাসের কথা।
১. সরাসরি যোগাযোগ রাখাঃ প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক কর্মীর সঙ্গে বসের সরাসরি যোগাযোগব্যবস্থা দারুণ কার্যকর ফল বয়ে আনে। এর মাধ্যমে এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে ওঠে, যেখানে সব সমস্যার খোলামেলা সমাধান হতে পারে। কর্মীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা পেতে এবং তাঁদের মাঝে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে খোলামেলা যোগাযোগব্যবস্থা প্রথম শর্ত।
২. কর্মী বাহিনীর শ্রোতা হয়ে ওঠাঃ একবার কর্মীদের সঙ্গে নিজের আলোচনার পরিবেশ উন্মুক্ত করে নিতে পারলে তাঁরা নির্দ্বিধায় মনের কথা বলবেন। কর্মীর বক্তব্যের মনোযোগী শ্রোতা হয়ে ওঠা আপনার গুরুদায়িত্ব। এতে মেধাবী কর্মীদের কাছ থেকে নিয়মিত সৃষ্টিশীল পরামর্শ পাবেন। বুঝতে পারবেন কর্মীদের মনে কী কাজ করছে এবং তাঁরা কী উপায়ে কাজ করতে চান। তাঁদের চিন্তাধারা, মূল্যবোধ ও কর্মোদ্দীপনাকে সম্মান দিন।
৩. কর্মীদের শক্তি-সামর্থ্য খুঁজে বের করুনঃ প্রতিদিন যখন আপনার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য দিনের কাজের তালিকা কমিয়ে আনা, তখন এর মাধ্যমে দায়িত্বরত কর্মীর যোগ্যতা পরিমাপের চেষ্টা করুন। দলে কাকে কোন দায়িত্ব দিয়ে আপনি সবচেয়ে ভালো ফল পেতে পারেন, তা সহজেই বুঝে ফেলবেন।
৪. ভালো কাজে পুরস্কৃত করুনঃ কর্মীদের কাজ অনুযায়ী তাঁদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অনেকভাবেই এটাকে বাস্তবায়ন করা যায়। সম্মানী অর্থ, বোনাস বা প্রশংসাপত্র প্রদান ইত্যাদি করা যেতে পারে। কর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনার পুরোটুকু নিংড়ে নিতে এটি বেশ কার্যকর পদ্ধতি।
৫. সবার মাঝে আসাঃ বস হিসেবে আপনার নিজেকে সবার থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার দরকার নেই। কর্মী বাহিনীর সঙ্গে আন্তরিকতা গড়ে তুলতে এবং নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিষ্ঠানের সাধারণ কর্মীদের মাঝে নিজেকে নিয়ে যেতে হবে।
৬. ইতিবাচক থাকুনঃ এটি এমন এক বৈশিষ্ট্য, যা আপনার প্রতি সবাইকে আশাবাদী করে তোলে। বসের এই স্বভাব কর্মীদেরও ইতিবাচক করে তোলে। নিজের কাজের প্রতি তাঁদের আন্তরিকতা ও ভালোবাসা জন্মায়। যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রে কর্মীরা সহসা নিরাশ হন না।
৭. পরিশ্রমী হোনঃ এর কোনো বিকল্প নেই। তবে বস হিসেবে যে আপনাকে সারা দিন পরিশ্রম করতে হবে, তাও বলা হচ্ছে না। আবার যথেষ্ট ধকলও সামলাতে হয় আপনাকে। এ ক্ষেত্রে কাজের চাপের বিষয়টি লুকাবেন না। যা নিয়ে কাজ করছেন বা কী করতে চান, তা কর্মীদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখবেন না। কারণ, সবাই আদর্শ নেতাকে স্বচ্ছ দেখতে চান।