বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির। এখন প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ আছে। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের এই বিভাগে লোক নিয়ে থাকে। চাহিদা বাড়ছে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোকের। এ বিভাগে কাজ করতে হলে আগে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর বিভিন্ন মেয়াদি প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির ওপর এমনই এক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
দেশের সুবিধাবঞ্চিত মুসলমান মেধাবী যুবসমাজের শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ২০০৩ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি তথ্যপ্রযুক্তির নানা বিষয়ে বিনা ফিতে বিভিন্ন মেয়াদি প্রফেশনাল ডিপ্লোমা প্রদান করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত ৪ হাজার ২০ জন প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই দেশে-বিদেশে তথ্যপ্রযুক্তি পেশায় কাজ করছেন। প্রতিবছর চারটি ধাপে এখানে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। এখন ২৭তম রাউন্ডের আবেদনপ্রক্রিয়া চলছে। আবেদন করতে হবে ৩১ মার্চের মধ্যে। তাই যাঁরা তথ্যপ্রযুক্তিতে নিজের পেশা গড়তে চান, তাঁরা করতে পারেন এই ডিপ্লোমা কোর্সটি।
যেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ
এখানে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর কয়েকটি বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স করানো হয়। আর্কিটেকচারাল অ্যান্ড সিভিল ক্যাড, কম্পিউটার অ্যাসিস্ট্যাড অ্যানিমেশন, ডেটাবেইস ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, এন্টারপ্রাইজ সিস্টেমস অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ডিজাইন, নেটওয়ার্কিং টেকনোলজিস এবং ওয়েব প্রেজেন্স সল্যুশনস অ্যান্ড ইমপি-মেনটেশনস বিষয়ে।
আবেদন প্রক্রিয়া ও যোগ্যতা
এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হলে আবেদনকারীকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কমপক্ষে দ্বিতীয় বিভাগ বা ২.২৫ জিপিএ পেয়ে স্নাতক পাস হতে হবে। আর এখানে আবেদন করতে হলে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। প্রতি ধাপে ৩০০ জন করে বছরে ১ হাজার ২০০ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। এমসিকিউ পদ্ধতিতে ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরে পরীক্ষা হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থীদের চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত করা হবে। এই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। প্রশিক্ষণ শুরু হবে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে। সপ্তাহে ছয় দিন চার ঘণ্টা করে। প্রশিক্ষণ দেয়া হবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে মনোনীত প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোয়। প্রশিক্ষণ দেবেন দেশের বড় বড় আইটি প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠানটির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সৈয়দ রায়হান বাশার জানান, দেশে এখন প্রায় অনেকেরই তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানের অভাবে ভালো কোনো চাকরি হচ্ছে না। তাই নিজেকে দক্ষ করে তোলার জন্য এই প্রশিক্ষণটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রফেশনাল কোর্সটির আগে দুই মাসের ফান্ডামেন্টাল কোর্স করতে হবে। এতে ভালো করতে পারলে পরে এক বছরের মূল প্রফেশনাল কোর্সগুলোয় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। রায়হান বাশার আরও জানান, এই প্রফেশনাল কোর্স করার সময় প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা করে ভাতা হিসেবে দেয়া হয়ে থাকে। কোর্স শেষে তাদের সার্টিফিকেট দেয়া হবে।
কাজের ক্ষেত্র
তথ্যপ্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক, বিমা, বায়িং হাউস, আইটি ফার্ম, এনজিও ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। সবচেয়ে চাহিদা আছে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন সফটওয়্যার কোম্পানিতে। এতে ভালো বেতনের পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও পাওয়া যায়। এ ছাড়া নিজে ব্যবসা করেও ভালো আয় করা সম্ভব। অর্থাৎ যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার আছে, সেখানেই তাঁরা কাজের সুযোগ পান।
আরও জানতে
কোর্স-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেনঃ
ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বাংলাদেশ, ইসলামিক সলিডারিটি এডুকেশনাল ওয়াকফ (আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ), আইডিবি ভবন, পঞ্চম তলা, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭, ফোন: ৯১৮৩০০৬।