করোনা ভাইরাস থেকে জীবন রক্ষায় স্বাস্থ্য শিক্ষা গবেষণা সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য শীঘ্রই উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করা হবে। করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ, দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং পরীক্ষা করার কিট আবিষ্কার ও গবেষকদের দক্ষতা অর্জনে তদারকি করবে এই কমিটি।
এ লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। তবে করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণার জন্য এই অর্থ অপ্রতুল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন করতে হলে গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন বলে তারা মনে করছেন। জানা গেছে, সমন্বিত স্বাস্থ্য বিজ্ঞান গবেষণা পরিচালনার জন্য এই কমিটিতে স্বাস্থ্য খাতে অভিজ্ঞ গবেষক, পুষ্টি বিজ্ঞানী, জনস্বাস্থ্য ও সমাজ বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, পরিবেশবিদ ও সুশীল সমাজ ও অন্যান্য উপযুক্ত প্রতিনিধিদের রাখা হবে। প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনার মতো ভবিষ্যতে অন্য মহামারী দেখা দিলে তা মোকাবেলায় টেকসই পদ্ধতি আবিষ্কার এবং রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে যথাযথ গবেষণার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এ কারণে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও গবেষণার কাজে আমাদের জোরালোভাবে সম্পৃক্ত হতে হবে। তিনি বলেন, গবেষণা উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকার একটি সমন্বিত স্বাস্থ্য বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিল গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সংক্রান্ত কার্যক্রম ১৩ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বাস্তবায়ন করছে। প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য স্বাস্থ্য খাতে মোট বরাদ্দ ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা জিডিপি’র ১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং মোট বাজেট বরাদ্দের ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
বাংলাদেশে যে রোগগুলো বেশি হয় সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া গবেষণার জন্য সময়মতো অর্থ ছাড় একটি বড় বিষয়। এখন করোনা কাল চলছে। এ সময় দ্রুত অর্থ ছাড় করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা এ প্রসঙ্গে বলেন, সময় মতো বরাদ্দ পাওয়া যায় না। বাজেট দেয়া হয় জুন মাসে। সেটা ছাড় করতে দুই-তিন মাস চলে যায়। যখন টাকাটা পাওয়া যায়, তখন সময়মতো টাকা খরচ করার সময় থাকে না। খুব তাড়াহুড়া হয়ে যায়। যার কারণে কাজ যে মানের হওয়া দরকার, তেমন কাজ আমরা করতে পারি না। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজন কোথায়, কোন ক্ষেত্রে কতটুকু দরকার সেটা যাচাই করে বরাদ্দ হয় না। এটা একটা সমস্যা। বাজেট যখন করা হয়, পূর্ববর্তী বছরের যে টাকাটা থাকে, সেখান থেকে কিছু পার্সেন্ট বাড়িয়ে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, সরাসরি স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নিয়োগ না করে আমলাদের দ্বারা স্বাস্থ্য খাত পরিচালনা করা হচ্ছে বলে দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কারে নজর থাকছে না। যাদের স্বাস্থ্য খাতে মাঠপর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাদের নীতি নির্ধারক হিসেবে নিয়োগ দেয়া উচিত। অনেকের স্বাস্থ্য খাতে মাঠপর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। দেখা গেল হঠাৎ করে এক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বদলি হলো। আগে বিষয়টা জানতে হবে, তারপর বাস্তবায়ন।