করোনা মহামারিতে মন্দাবস্থা কাটিয়ে গতিশীল হতে শুরু করেছে পুঁজিবাজার। করোনায় হঠাৎ থমকে যাওয়া পুঁজিবাজার আবারও প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে। লোকসান কাটিয়ে মুনাফায় ফিরছেন বিনিয়োগকারীরা। আর লাভজনক মনে করায় পুঁজিবাজারে বাড়ছে নতুন নতুন বিনিয়োগকারী।
পুঁজিবাজারে মূলধন বিনিয়োগ করতে চাইলে প্রচলিত ব্যাংকের মতো একটি হিসাব খুলতে হয়, যাকে বেনিফিসারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট সংক্ষেপে বিও হিসাব বলা হয়। প্রতিটি বিও হিসাবে ব্যাংক হিসাব সংযুক্ত থাকে। স্টক এক্সচেঞ্জ অনুমোদিত ব্রোকারেজ হাউসে এই হিসাব খুলে টাকা জমা দিতে হয়। আর টাকা জমা হলে শেয়ার কেনাবেচা করা যায়। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেড এই হিসাব সংরক্ষণ ও দেখভাল করে।
সূত্র জানায়, একটি বিও হিসাব খুলতে বিনিয়োগকারীকে ফি দিতে হয় ৪৫০ টাকা, যার মধ্য থেকে ২০০ টাকা সরকারের কোষাগারে জমা হয়।
সিডিবিএলের তথ্যানুযায়ী, পুঁজিবাজারে এখন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা (১৮ আগস্ট পর্যন্ত) ২৩ লাখ ১৫ হাজার ৭৫৪টি। কোম্পানির হিসাব বাদ দিয়ে নারী-পুরুষ মিলে বিও হিসাবের সংখ্যা ২৩ লাখ দুই হাজার ৪৯৫টি। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪০ বিও হিসাব পুরুষের আর ছয় লাখ চার হাজার ১৫৫টি হিসাবধারী নারী। কোম্পানির বিও হিসাব ১৩ হাজার ২৫৯টি।
চলতি আগস্টের ১১ কার্যদিবসে (সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া) পুঁজিবাজারে ১৬ হাজার ৬১৪টি বিও হিসাব বেড়েছে। অর্থাৎ নতুন করে ১৬ হাজার বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে বিও হিসাব খুলেছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে হিসাব খোলার দিক থেকে নারীদের চেয়ে এগিয়ে আছেন পুরুষরা। একই সঙ্গে যৌথ হিসাব খোলার চেয়ে ব্যক্তি বা একক হিসাব খোলার পরিমাণ বেশি।
পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পর থেকে বাড়ছে বিও হিসাব খোলার পরিমাণও। প্রতিদিনই নতুন নতুন বিও হিসাব যুক্ত হচ্ছে। আগস্টের প্রথম ১১ দিনে ১৩ হাজার ৬৮৪ জন পুরুষ এবং দুই হাজার ৮৪৩ জন নারী নতুন বিও হিসাব খুলেছেন। একক বিও হিসাব খুলেছেন ৯ হাজার ৮৪২ জন আর পুঁজিবাজারে ছয় হাজার ৬৮৮টি যৌথ হিসাব যুক্ত হয়েছে। এই সময়ে কোম্পানি বিও বেড়েছে ৮৭টি। রেগুলার, ক্লিয়ারিং, প্রিন্সিপাল ও অমনিবাস হিসাবের মধ্যে রেগুলার হিসাব বেড়েছে।
ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে পুরুষের তুলনায় নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কম। তবে আগের চেয়ে এই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। নারীরা নিরাপদে সঞ্চয়পত্র বা অন্য কোনো মাধ্যমে বিনিয়োগ করলেও পুঁজিবাজারে আসতে চায় না। তবে এখন নতুন করে তারাও আসছে।
মিডওয়ে সিকিউরিটিজের ক্লায়েন্ট হালিমা বেগম বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব দিকেই নারীরা পিছিয়ে। কারণ উপযুক্ত পরিবেশ না থাকা। আবার নারীর বিনিয়োগের সুযোগও অনেক কম। এ কারণে পুঁজিবাজারে নারীরা বিনিয়োগে কম আগ্রহী। তা ছাড়া শেয়ার কেনাবেচা করতে ব্রোকারেজ হাউসে আসার ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা থাকায় অনেকে আগ্রহী হন না।