জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা সম্পূর্ণ নকলমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। ৩০ জুলাই বিকেলে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সভায় এ কথা জানান মন্ত্রী।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, যে কেউ ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস বা ফাঁসের গুজব ছড়ালে, লাইক দিলে বা শেয়ার করলে আইসিটি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুধু জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাই নয় সব ধরনের পরীক্ষাতেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ পেলে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও মন্ত্রী জানান।
গত দুই-তিনটি পাবিলক পরীক্ষায় ফেসবুকের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও সমালোচনা করেন অনেকে। এসব বিষয়ে এবার আগেভাগেই সচেতন মন্ত্রণালয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস বা যে কোনোভাবে প্রশ্ন ফাঁসের গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে থেকেই সারাদেশের কোচিং সেন্টার, ফটোকপি মেশিনের দোকানে নজরদারি থাকবে। বিজিপ্রেস ও বিভিন্ন বোর্ডের প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও মডারেটরদের ওপরও বিশেষ নজর রাখা হবে।
শিক্ষক নামধারী যেসব ব্যক্তি প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন বা পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র খুলে মোবাইলে ছবি তুলে ফেসবুক বা হোয়াটসআপে দেন তাদের ‘মহান শিক্ষকতা পেশা’ ছেড়ে চোরের পেশায় নাম লেখাতেও পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
এসব অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন নাহিদ।
বিজিপ্রেসের গোপনীয় শাখায় কর্মরত এবং প্রতিটি শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেটরদের প্রত্যেকের ছবি, মোবাইল নম্বর, বাসার ঠিকানা ও টেলিফোন নম্বর, বাসার অন্য সদস্যদের মোবাইল ফোন নম্বর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার হাতে হস্তান্তর করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় আরও জানানো হয়, যে কেউ ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস বা ফাঁসের গুজব ছড়ালে, লাইক দিলে বা শেয়ার করলে আইসিটি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রশ্নপত্র ছাপানোকালীন প্রতিদিন বিজিপ্রেসের সিসি টিভি ক্যামেরার ছবি পর্যালোচনা করা হবে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ১ নভেম্বর থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা শুরু হবে। ২০১৫ সালের এ পরীক্ষা ১ নভেম্বর থেকে শুরু হলেও এখনও সূচি নির্ধারণ করা হয়নি। এবার প্রায় ২০ লাখ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে বলে সভায় জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত শিক্ষাসচিব অরুণা বিশ্বাস, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন, মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সুবোধ চন্দ্র ঢালী, স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তা, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দিক, পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিজিপ্রেসের কর্মকর্তারা।