অনুবাদ নয় আমাদের মৌলিক বই প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদেরও অমনোযোগ রয়েছে। এখন আমি বাংলার শিক্ষক হয়ে পদার্থবিজ্ঞানের বই লিখতে পারব না। এ জন্য যিনি যে বিষয়ের শিক্ষক তাঁকে সেই বিষয়ের দায়িত্ব নিতে হবে- বলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। সম্প্রতি বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান হলে বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষাস্তরে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের বর্তমান অবস্থা ও সমস্যা শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০টি বিষয়ে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০টি বিষয়ে পড়ানো হয়। কিন্তু এসব বিষয়ের বেশির ভাগেরই বাংলায় মৌলিক বই নেই। নির্ভর করতে হয় অনুবাদের ওপর। কিন্তু একটি বই অনুবাদ করতে বছর লেগে যায়, সেই বই বাজারে আসতে আরো সময় লাগে। তত দিনে বিশ্ব আরো পাঁচ বছর এগিয়ে যায়। ফলে সব সময়ই উচ্চশিক্ষায় পিছিয়ে থাকে বাংলাদেশ। মূলত শিক্ষকদের অবহেলা ও মনোযোগের অভাবেই বাংলায় উচ্চশিক্ষার মৌলিক বই পাওয়া যাচ্ছে না।
সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। তিন পর্বে বিভক্ত দিনব্যাপী এই সেমিনারের আয়োজকও ছিল বাংলা একাডেমি।
উদ্বোধনী পর্বে মূল প্রবন্ধে বাংলা একাডেমির পরিচালক অপরেশ কুমার ব্যানার্জী উচ্চশিক্ষার পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে বেশ কিছু সমস্যা তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে-পাঠ্যপ্স্তুক প্রণয়নে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের অনাগ্রহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাড়া অন্য লেখকের গ্রন্থ উচ্চমানের হলেও সেটি রেফারেন্স হিসেবে গ্রহণ না করার মানসিকতা, বাংলা ভাষায় প্রণীত গ্রন্থ পাঠদানে শিক্ষকদের নিষ্ক্রিয়তা ও অনীহা, বিদেশি গ্রন্থের ওপর নির্ভরশীলতা, যথোপযুক্ত পরিভাষার অভাব, ব্যাপকহারে গাইড বই প্রকাশ, সঠিক মানের পাঠ্যগ্রন্থ নির্বাচনে শিক্ষকদের অহেতুক দীর্ঘসূত্রতা।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বাংলা একাডেমির তিনটি গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্বে বক্তব্য দেন ঢাবি উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।