বিদেশে শিক্ষা গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের অনাপত্তি সনদের (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) প্রয়োজনীয়তা বাতিলের ১২ বছর পরও ভোগান্তি পোহাচ্ছে ভারতের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, পুরো ভারতে এ সমস্যা নেই। কেবল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘অনাপত্তি সনদ’ ছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন দিচ্ছে না। বিপাকে পড়া ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শতাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী কয়েক দিন ধরে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে অনাপত্তি সনদের জন্য ভিড় জমাচ্ছে।
একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি সনদ চাওয়া হয়নি। ভর্তির সময়ও বিশ্ববিদ্যালয় তা চায়নি। এখন নিবন্ধনের জন্য তা চাওয়া হচ্ছে। প্রযুক্তির যুগে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষার সনদ যাচাই করা যায়। এর পরও ভারতের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেভাবে বাংলাদেশিরা ছাড়পত্রের জন্য হয়রানির শিকার হচ্ছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
জানা যায়, অতীতে অনাপত্তি সনদ দেয়ার ব্যবস্থা থাকলেও ২০০৩ সালের ৫ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শাখা-১৩ থেকে প্রকাশিত পরিপত্রে বিদেশে অধ্যয়নের জন্য এ ধরনের সনদ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা বাতিল করা হয়। সেখানে বলা হয়, ‘যেহেতু বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নিজ খরচে ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদেশে অধ্যয়ন করতে যায় এবং ওইসব ছাত্রছাত্রীকে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই সংশ্লিষ্ট দূতাবাস ভিসা দিয়ে থাকে, সেহেতু বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের ব্যক্তি উদ্যোগে বিদেশে অধ্যয়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নেই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় একটি সূত্র জানায়, পশ্চিমবঙ্গে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনই সহজে সমাধান করতে পারে। যে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজগুলোতে এ সমস্যা হচ্ছে তাদের কর্তৃপক্ষ জানে না যে, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অধ্যয়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আর অনাপত্তি সনদপত্র নেয়ার প্রয়োজন নেই। ২০০৩ সালের পরিপত্রের মাধ্যমেই এর প্রয়োজনীয়তা বাতিল করা হয়েছে।
আরো জানা যায়, বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে শিক্ষার্থী ও তাদের ভর্তি-সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করেই ভিসা দেয়া হয়। বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন বর্তমানে শিক্ষার্থীদের একজন একজন করে অনাপত্তি সনদ দিচ্ছে।