বহুমুখী প্রতিভায় ভাস্বর, বর্ণিল গুণাবলির সৎ, ন্যায়নিষ্ট, কর্মযোগী ও স্পষ্টভাষী বিরল ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিত। একদিকে তিনি সফল অর্থমন্ত্রী, খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ, সরকারের প্রজ্ঞাবান সচিব, কুটনীতিবিদ, গবেষক, চিন্তাবিদ, লেখক ও সংগঠক; অন্যদিকে সহজ-সরল, ক্রীড়াপ্রেমী ও আমুদে মানুষ।
কর্মযোগী মুহিত ছিলেন বরাবরই মেধাবী ছাত্র। তিনি যেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন, তেমনি আবার প্রাইমারি ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্যও হয়েছিলেন। তাঁর এ ধরনের সাফল্য ও ব্যর্থতার কথা অকপটে বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সাথে `প্রিয় মানুষের মুখোমুখি` কলামে সাক্ষাৎকারে যা বর্তমান ছাত্র-সমাজের জন্য বিশেষ অনুকরণীয়। বরেণ্য এই ব্যক্তিত্বের শিক্ষা জীবনের বিচিত্র গল্প তাই তুলে ধরা হলো ছাত্র-যুবকদের প্রেরণার উদ্দেশ্যে।
মুহিত`র স্কুল জীবন
গৃহ শিক্ষকের কাছেই আমার পড়ালেখার হাতেখড়ি। আর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনে প্রবেশ গভর্নমেন্ট হাই ইংলিশ স্কুলে (বর্তমানে সিলেট সরকারি পাইলট স্কুল) তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির মধ্য দিয়ে। ১৮৪১ সালে স্থাপিত এটিই সিলেট শহরের প্রাচীনতম স্কুল যে স্কুলে আমার ভাই-বোনদের প্রায় সবাই এমনকি বাবা, দাদা, পরদাদাও পড়াশোনা করেছেন। আমার দাদা খান বাহাদুর আবদুর রহিম এ স্কুলে দু`বছর শিক্ষকতাও করেছিলেন।
সিলেট গভর্নমেন্ট হাই ইংলিশ স্কুলে আমার ভাই চতুর্থ শ্রেণি এবং আমি তৃতীয় শ্রেণির জন্য ভর্তি পরীক্ষা দিলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভাইকে নিলেন ক্লাস থ্রিতে আর আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। কেননা পরীক্ষার দু`টি বিষয় শ্রুতিলিখন ও অংক, কোনোটিতেই আমি পাস করলাম না। শ্রুতিলিখনেতো পেলাম লাড্ডু! এর কারণ পরীক্ষা দেয়ার নিয়মটি আমার মোটেই জানা ছিল না। গৃহশিক্ষক মুখে মুখে পরীক্ষা নিতেন, কিন্তু খাতা-কলমে নিতেন না। তাই পরীক্ষার খাতায় কীভাবে লিখতে হবে, তা না বুঝতে পারাতেই আমার এই ফল-বিপর্যয়। আব্বা আমার মেধা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতেন বিধায় তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে গিয়ে বললেন আপনিত` আমার মেধাবী ছেলেটিকে বাদ দিয়ে দিলেন। প্রধান শিক্ষক আমার ভর্তি পরীক্ষার প্রসঙ্গে বলায় আব্বা বললেন সেত` বাসায় স্কুলের মতো করে পড়ালেখা করেনি। তখন প্রধান শিক্ষক জানতে চাইলেন আমি কোন্ বিষয়ে ভালো? আব্বা বললেন, ইংরেজিতে ভালো।
হেড মাস্টার সাহেবের পরামর্শ অনুযায়ী আমাকে একদিন তাঁর কাছে নিয়ে গেলেন আব্বার মুহুরী আবদুর রাজ্জাক সাহেব। হেড মাস্টার আমাকে দেখে ইংরেজিতে প্রশ্ন করলেন What`s your father? আমি বললাম My father is a pleader. সাধারণত এরকম প্রশ্ন করলে অন্য ছেলেরা Father এর নাম বলে, কিন্তু আমি উত্তর সঠিক দেয়ায় দ্বিতীয় কোনো প্রশ্ন না করে ভর্তির অনুমোদন দিলে আমি এবং বড় ভাই দু`জনই একই ক্লাসে ভর্তি হয়ে গেলাম।
আমাদের স্কুলে একটা অদ্ভুত Democracy ছিল। প্রায় সব ছাত্রই খালি পায়ে স্কুলে যেত। কিন্তু আমরা দু`ভাই শার্ট ইন করে, জুতা-মোজা পরে স্কুলে যেতাম। হাতে গোনা আরও ক`জন এইরকম পোশাক পরতো। এটা নিয়ে ক্লাসের ছেলেদের মধ্যে হাসাহাসি হতো, মাঝেমধ্যে ছেলেরা আমাদের জুতা-মোজা খুলে নিত। অগত্যা আমরাও পরিপাটি ড্রেস ছেড়ে দিয়ে সবার মতো করে স্কুলে আসা-যাওয়া শুরু করলাম।
আমাদের ছোটবেলায় লেখার জন্যে দোয়াতের কালি এবং পালকের কলম ব্যবহার করতে হতো। কিন্তু আমি এটাকে সামাল দিতে পারতাম না, কাপড়-চোপড়ে কালি লেগে যেত। তাই প্রায় প্রতিদিনই বাসায় ফিরলে বুবুর বকাবকি শুনতে হতো। বকাবকি করলেও বুবুই প্রতিদিন কাপড়-চোপড় ঠিক করে দিতেন।
তৃতীয় শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণিতে ওঠার জন্যে আমি হেলাফেলা করে ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলাম ঠিকই, কিন্তু রেজাল্ট ভালো হলো না। আমার পজিশন ১৬ নম্বরে; আর ভাই ৯ কি ১০ নম্বরে স্থান পেলেন। রেজাল্ট শুনে আব্বা আমাকে বেশ বকাঝকা দিলেন। আমি ভাবলাম সব সাবজেক্টে ৮০ বা তার কাছাকাছি নম্বর পেয়ে পাস করেছি; তারপরও আব্বা কেন বকাবকি করছেন, সে হিসাব আমি কোনোভাবেই মিলাতে পারছিলাম না। আসলে পরীক্ষা মানে যে কম্পিটিশন এটা আমার মাথায় তখনও ঢোকেনি।
চতুর্থ শ্রেণিতে উঠে আমার একটা যুগান্তকারী Experience হলো। আমাদের শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানালেন ডিপিআই সাহেব আমাদের স্কুল পরিদর্শন করবেন; বিভিন্ন ক্লাসে ঘুরবেন, ছাত্রদেরকে বিভিন্ন প্রশ্ন করবেন। এজন্য শিক্ষকগণ ছাত্রদেরকে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তিনি আমাকে এও বললেন তুমি ইংরেজি বক্তৃতার কথা চিন্তা করে রাখো। যদি সুযোগ পাই, তাহলে ডিপিআই সাহেবকে বলব তোমার বক্তৃতা শুনতে। যথারীতি আমি মনে মনে বক্তৃতার বিষয় ঠিক করে রাখলাম।
ডিপিআই সাহেব এলেন, যথারীতি ইন্সপেকশন হয়ে গেল। তখন শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম ডিপিআই সাহেবকে বললেন স্যার, আমার ক্লাসে একজন ছাত্র আছে, যে ইংরেজিতে বক্তৃতা করতে পারে। আপনি যদি অনুমতি দেন, তাহলে তাকে ডাকতে পারি। একটু নার্ভাস হলেও আমি ভরসা পেলাম এ কথা ভেবে যে, ডিপিআইএ`র সঙ্গী ইন্সপেক্টর সাহেব আমার পরিচিত; তাঁকে আমি দাদা বলে ডাকি। আমি ডিপিআই সাহেবের সামনে দাঁড়িয়ে গট্গট্ করে ইংরেজিতে নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দিলাম। সেদিন থেকে আমি খুব বিখ্যাত হয়ে গেলাম। স্কুলে আমার কদরও রাতারাতি বেড়ে গেল। সারা স্কুলই এখন জানলো যে, আমি ইংরেজিতে ভালো।
ক্লাস ফাইভে শ্রেণি শিক্ষক সারা ক্লাসের ছাত্রদের দুইভাগে ভাগ করলেন নিয়মিতভাবে পড়াশোনায় প্রতিযোগিতা প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে। দল হলো ক্লাসে ডানে যারা বসে তাদের একটি, আর অন্যটি বামে যারা বসে। তখন আমি ছিলাম বাম দলে; আর এই দলের অন্য এক সদস্য ছিলেন সুখময় চক্রবর্তী। পরবর্তীকালে তিনি ভারতের নামকরা অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক হন এবং প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি মাত্র ৬০ বছরের কম বেঁচেছিলেন। আমাদের দলে যেসব ছাত্র লেখাপড়ায় দুর্বল ছিল তাদের রীতিমতো কোচিং করাতে ব্রত হই আমরা দুই বন্ধু। দুর্বল ছাত্ররা এই সুযোগে আমাদের প্রায় গুরুর মতো মনে করতো, ছুটির দিনেও পড়াশোনার জন্য বাড়িতে আসতো।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সদরুদ্দিন চৌধুরী ক্লাস-ক্যাপ্টেন ছিলেন। যিনি পরবর্তী জীবনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হন। ক্যাপ্টেন হিসেবে ভালোই ছিলেন, কিন্তু অনেক সময় দুষ্ট ছেলেদের ছাড় দিতেন; এটি আমার পছন্দ ছিল না। আমি আপত্তি করলে কর্তৃপক্ষ সদরুদ্দিনকে ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আমাকে ক্যাপ্টেন বানালেন। কিন্তু আমি ক্যাপ্টেন হিসেবে একেবারে ব্যর্থ! কারণ ক্যাপ্টেনদের অনেক কিছুতে কম্প্রোমাইজ করতে হয়; কিন্তু আমি কোনো কিছুতেই কম্প্রোমাইজ করতাম না। ফলে আমি ব্যর্থ ও আন-পপুলার হলাম এবং ক্যাপ্টেনশীপ থেকে পদত্যাগ করলাম। প্রতিজ্ঞা করলাম আর কোনোদিন ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব নেব না। ফলশ্রুতিতে সদরুদ্দিন আবার ক্যাপ্টেন হলেন। কেননা, সারাক্লাসে তিনিই ছিলেন এ বিষয়ে সবচেয়ে উপযুক্ত এবং তিনি এই দায়িত্ব সপ্তম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পালন করেন।
আমি ক্লাস এইটে রেজাল্টটা একটু ভালোই করলাম। এ সময় আমি হাজী মোহাম্মদ মহসীন স্কলারশিপ পেলাম। ৪ বছর এ বৃত্তি চলল। দু`বছর ৩ টাকা করে, পরবর্তী দু`বছর ৪ ও ৫ টাকা করে। আমি বৃত্তির টাকা খরচ না করে আমার সেভিংস একাউন্টে জমা করলাম। ১৯৪৫ সালে ৭ম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালীনই আমার নামে সেভিংস একাউন্ট খোলা হয়েছিল, যা প্রথমে অভিভাবকের সহায়তায় অপারেট করা হতো। পরে ঢাকায় পড়ার সময় নিজে অপারেট করা শুরু করি। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় শিক্ষকদের মূল্যায়নে দেখা গেল আমি অংকে একটু কাঁচা। অন্যান্য বিষয়ে প্রায়ই সর্বোচ্চ নম্বর অথচ অংকে কম নম্বর এটা মেনে নেয়া যায় না বিধায় হেড মাস্টার সাহেব আমার জন্য বিশেষ কোচিংয়ের ব্যবস্থা করলেন। ফলশ্রুতিতে আমি অংকেও পারদর্শী হয়ে উঠলাম। ক্লাস নাইন থেকে টেন এ ওঠার সময় আমি সেকেন্ড হলাম, আর প্রথম হলেন ভবানী শংকর। এরপর ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিলাম ১৯৪৯ সালে; স্কুল থেকে ৮৮ জন ছাত্র পরীক্ষা দিল, আমার পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল রাজা গিরিশ চন্দ্র হাইস্কুল। তখন সারা সাবডিভিশনে একটা সেন্টারেই পরীক্ষা হতো। আমার বন্ধু-বান্ধবদের খুব আশা ছিল যে, আমি খুব ভালো রেজাল্ট করব। হেড মাস্টার আব্দুল গফুর চৌধুরী (প্রাক্তন চীফ জাস্টিস মাহমুদুল আমিন চৌধুরীর বাবা) উনি নিশ্চিত ছিলেন আমার একটা প্লেস থাকবে, কিন্তু রেজাল্ট ভালো হলো না। অংক আর ইতিহাসে লেটার মার্কসহ শুধু ফার্স্ট ডিভিশন; এতে সবাই হতাশ হলেও আমি ভেঙে পড়িনি। মার্কশিট এলো দেখা গেল আমি ভালোই করেছি। আমি সেই সেন্টারে প্রথম হলেও এডিশনাল ম্যাথমেটিক্সে ৩০ মার্কের পর আমার মাত্র ১৮ মার্ক যোগ হওয়ায় এ ফলাফল বিপর্যয়।
মুহিত`র কলেজ জীবন
ফার্স্ট ডিভিশনে ম্যাট্রিক পাস করে এমসি কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে আমি সমস্যায় পড়লাম। আমি আর্টসে ভর্তি হব, কিন্তু যে শিক্ষক ভর্তি করবেন তিনি বললেন তুমি অংকে লেটার পেয়েছো, তুমি সায়েন্সে ভর্তি হও। আমি নিজের এবং বাবার ইচ্ছার কথা জানিয়ে আর্টসে ভর্তি হতে চাইলাম। কিন্তু শিক্ষক নাছোড়বান্দা, তিনি আমাকে আর্টসে ভর্তি করবেন না। শিক্ষক বললেন আমি তোমার আব্বার সাথে কথা বলব। আমার আব্বা তখন কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য, সবাই তাঁকে চেনেন। অংকের শিক্ষক আমাদের বাসায় এলেন এবং আব্বার সাথে কথা বললেন। আমার আব্বা বললেন ওতো আর্টসে ভর্তি হতে চায়। শিক্ষক তখন আমাকে ভর্তি করিয়ে নিলেন, কিন্তু শর্ত দিলেন অংকও নিতে হবে; আমি তাই করলাম। শিক্ষক সস্নেহে বললেন, আমার ক্লাস ফাঁকি দিতে পারবে না। অন্য কোনো ক্লাসের সাথে যদি Conflict হয়, তা Change করতে পারবে; তবে আমারটা নয়।
কলেজের দিনগুলো খুব আনন্দে কেটেছে আমার। কলেজে অধ্যয়নকালীনই টেনিস খেলাটা শুরু করি আমি, খুব ভালো খেলতাম। স্কুলের চেয়ে কলেজে ডিবেটিংয়ে অংশগ্রহণও বেড়ে গেল। তাছাড়া যেখানেই সংস্কৃতির ছোঁয়া, সেখানেই আমি। এতে আমি কলেজের মধ্যমণিতে পরিণত হলাম। আমাকে ছাড়া কলেজের কোনো অনুষ্ঠান হয় না। জর্জ বার্নাড শ` এর মৃত্যুতে Condolence মিটিং হলো, সে মিটিংয়ে একমাত্র ছাত্রবক্তা ছিলাম আমি। আমার সে বক্তৃতা উপস্থিত শ্রোতাদের এমনি নাড়া দেয় যে, পরবর্তীকালে সেই বক্তৃতা প্রবন্ধ আকারে কলেজ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। ঐ বক্তৃতাই আমাকে প্রিন্সিপাল আবু হেনার ঘনিষ্ঠ করে তোলে। প্রিন্সিপাল হেনা আমাকে ডেকে নিয়ে তাঁর ছেলেই বানিয়ে দিলেন, পরবর্তী জীবনে অনেকদিন তিনিই ছিলেন আমার গাইড।
কলেজে একটা মজার আন্দোলন হয়েছিল, আমি বন্ধুদের নিয়ে সে আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলাম। ঘটনাটা হলো কয়েকজন শিক্ষক মিলে এমসি কলেজের নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমিসহ ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে সেই সাম্প্রদায়িক উদ্যোগ বন্ধ করেছিলাম। ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকেই জড়িত ছিলাম আমি। আমার আব্বা-আম্মা মুসলিম লীগার হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তাই আমার পক্ষে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় থাকা ছিল স্বাভাবিক।
১৯৫১ সালে আমি আইএ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি এবং সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে ১ম স্থান অর্জন করে কলেজে হৈ-চৈ ফেলে দেই।
আমি আগে থেকেই নিশ্চিত ছিলাম যে, এমন রেজাল্টই করব। আর্টস সাবজেক্টে আমার অংক ছিল, যাতে ৯৩% নম্বর পেয়েছি, আর্টসের অন্যান্য বিষয়গুলোতে ৬০, ৭০, ৮০ পেয়েছিলাম প্রি-টেস্টে। কাজেই এ রেজাল্ট অন্যরা করতে পারবে না এ ছিল আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আমি কোনো বিষয়ে ৭০/৮০ এর নিচে পাইনি। আমার Rival ছিল গোলাম মোস্তফা, সে সেকেন্ড স্ট্যান্ড করে। আমি তাকে ৪৭ নম্বরের ব্যবধানে পরাজিত করি। তবে আশ্চর্য হলো বাংলায় আমি পেয়েছিলাম মাত্র ৪৬, অথচ আমার ধারণা ছিল বাংলায় আমি অনেক ভালো। ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র থাকাকালীন আমি বিএ ক্লাসের খাতাও Examine করেছি। (চলবে)