স্বচ্ছতা-জবাবদিহি-সুশাসন ও দক্ষতার অনন্য দৃষ্টান্ত ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র
উম্মে সালমা রনি
উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও প্রোটোকল)
ব্যক্তি, সমাজ বা রাষ্ট্রীয় জীবনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চর্চা আমাদের নেই বললেই চলে। তাই সততা ও নিষ্ঠার নিদারুণ দুর্ভিক্ষ এখন বাংলাদেশে। সততার এ আকালে হতাশ দেশের আমজনতা, হতাশ বিদেশীরা, এমনকি হতাশা আমাদের সরকারেও। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের দুর্ভিক্ষে পানি-গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বহুকিছুর অভাবে ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত গোটা জাতি। তবে হতাশার এ অমানিশায়ও ড. মোহাম্মদ ইউনূস, ফজলে হাসান আবেদ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্রসহ কোনো কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে যাচ্ছে আশার দীপশিখা।
ন্যায়ভিত্তিক ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং আলোকিত জাতি গঠনে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র (Superior human being)। কেবলমাত্র স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই আলোকিত জাতি গঠন সম্ভব এ সত্যকে উপজীব্য করে প্রাথমিকভাবে নিজ প্রতিষ্ঠানে, অতঃপর ক্যাম্পাস-কর্মী, প্রশিক্ষণার্থী ও শিক্ষানবিশদের মাঝে এবং ক্রমান্বয়ে সমাজে, সরকারে ও জাতিতে এসবের নিরন্তর চর্চা ক্যাম্পাস’র সুদূরপ্রসারী কর্মপ্রয়াস।
সিএসডিসি’র মাতৃসংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকা; যার যাত্রা শুরু ১৯৮৪ সালে, আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার ও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন থেকে; ছাত্র-যুবক-শিক্ষক ও অভিভাবকদের মুখপত্র হিসেবে। শুধু পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে যাত্রা করলেও সময়ের দাবিতে শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নের বহুমুখী কার্যক্রমে ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হয় এর কর্মপরিধি, যা ধীরে ধীরে বিস্তৃত হয়েছে সমগ্র বাংলাদেশে। নব্বই’র দশকের শুরু থেকেই এটি রূপলাভ করে শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নের পূর্ণাঙ্গ ও ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠানে। ক্যাম্পাস’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ব্যাপক বাস্তবায়নের সুবিধার্থে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সিএসডিসি। সমাজে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আদর্শ প্রতিষ্ঠার অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে ক্যাম্পাস নিজ পরিবারে ও কর্মীদের মাঝে এসবের চর্চা করে আসছে। ক্যাম্পাস’র প্রতিটি কর্মসূচি ও পরিকল্পনায় অনুসৃত হয় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন; থাকে দক্ষতা, সততা তথা সত্য ও সুন্দরের নিদর্শন।
ক্যাম্পাস পরিবারঃ দেশ গঠন ও জাতি জাগরণমূলক ক্যাম্পাস’র নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য দক্ষ নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে রয়েছে একঝাঁক নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। সমাজ সেবামূলক বহুমুখী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত এই কর্মীবৃন্দ সৎ, দক্ষ ও প্রোএকটিভ এটিচিউড ধারণের ফলে কোনো বাধাকেই বাধা মনে করে না, অন্যের সমলোচনা বা গঞ্জনায়ও রিএক্ট করে না। সৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত মহৎ কার্যক্রম সম্পাদনে সাধারণত তারা কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হয় না। ক্যাম্পাস এ কাজের পরিবেশটাই এমন যে, এখানে কিছুদিন কাজ করলে স্পেশাল হয়ে যেতে হয়, যেকোনো ক্যাম্পাস-কর্মী নিজেই বুঝতে পারে যে, সে অন্যের চেয়ে আলাদা। সকল কাজে স্টাফরা পরস্পর পরস্পরকে আন্তরিক সহযোগিতা করার ফলে নবাগত স্টাফ বা কর্মীও অচিরেই হয়ে ওঠে দক্ষ, সৌহার্দপূর্ণ ও অনুকরণীয়।
ক্যাম্পাস’র স্টাফ -সভাঃ নীতি নির্ধারণ ও সকল কার্যক্রমে ক্যাম্পাস’র স্বচ্ছতার অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে সাপ্তাহিক স্টাফ-সভা। প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি ছাড়াও জীবনের এমন কোনো দিক বা দর্শন নেই, যে সম্পর্কে এ সভায় আলোচনা হয় না। ব্যক্তিগত-পারিবারিক-সামাজিক-প্রাতিষ্ঠানিক সকল ক্ষেত্রে নিজকে দায়িত্ববান, সৎ, স্বচ্ছ, সফল ও সুউন্নত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠার পুঙ্খানুপুঙ্খ দিকনির্দেশনা দেয়া হয় এ সভায়। ওপেন ডায়ালগের মাধ্যমে পারস্পরিক গঠনমূলক সমালোচনায় স্টাফ ও শিক্ষানবিশদের দোষত্রুটি চিহ্নিতকরণ ও সংশোধনের এরূপ নজির বিরল। এ সভার মূল উদ্দেশ্য প্রত্যেক মানুষকে উন্নততর মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। তজ্জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে যেমনি বলা হয়, তেমনি তার চর্চা ও অনুশীলনের দিকেও থাকে বিশেষ নজর। নিজ ধর্মের যথার্থ অনুসারী হওয়া, সর্বক্ষেত্রে প্রকৃত ও প্রাকৃত হওয়া, ক্ষমাশীল হওয়া, ধন্যবাদার্হ ও সকৃতজ্ঞ হওয়া, নিজ দায়িত্বের প্রতি ও অন্যের অধিকারের প্রতি সচেতন হওয়া, সকল ক্ষেত্রে যুক্তিভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক আচার-আচরণে অভ্যস্ত হওয়ার মাধ্যমে বিচারিক যোগ্যতা অর্জন প্রভৃতি গুণাবলী চর্চার শিক্ষা ক্যাম্পাস কর্মীগণ এই স্টাফ-সভা থেকেই পেয়ে থাকে।
স্টাফ-সভার সমালোচনা-পর্ব অত্যন্ত শিক্ষণীয়। এখানে ঊর্ধ্বতনদের দোষ-ত্রুটি সম্পর্কেও অধঃস্তনরা খোলামেলা আলোচনা করতে পারে। স্টাফদের জন্য রয়েছে পারস্পরিক মূল্যায়নপত্র যেখানে আচার-ব্যবহার, কাজের প্রতি আগ্রহ এবং গুণগত মান ও পরিমাণ, অফিস পোশাক, সত্য বলা, কাজে-কর্মে উদ্যম ও উদ্যোগ, দায়িত্ববোধ, কমিটমেন্ট, নিয়ম-শৃঙ্খলা, উত্তরদানে বা নির্দেশপালনে দ্রুততা, গুছিয়ে কথা বলা, সহজ-সরল চিন্তা ও কথার অভ্যাস, দ্রুত বোঝার ক্ষমতা, শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতা, ধর্ম-কর্ম, সত্য বলা ও কাজকর্মে সততার অভ্যাস, অন্যের সমালোচনা, পরচর্চা ও পরনিন্দা পরিহার ইত্যাকার নানা বিষয়ে প্রত্যেকে অন্য সকল স্টাফ ও কর্মীকে নাম্বারিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে থাকে। এতে যেমনি জানা যায় কার কোন্ পয়েন্টে দুর্বলতা আছে, তেমনি ঐ বিষয়ে তার সচেতনতা ও সংশোধনের সুযোগও রয়েছে। অন্যের পেছনে বা অগোচরে নয় বরং সর্বসমক্ষে অন্যের ভালো-মন্দ উভয় দিক সম্পর্কে সমান আলোচনার মাধ্যমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আত্মোন্নয়নের এক অনন্য নিদর্শন ক্যাম্পাস’র সাপ্তাহিক স্টাফ-সভা।
ক্যাম্পাস’র নীতি-নৈতিকতাঃ ৩ দশক পূর্ব থেকে তথা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ক্যাম্পাস ধূমপানমুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের কোনো স্টাফ ধূমপান করে না এবং মিথ্যা বলে না; এমনকি তারা কৃত্রিম ও অস্বচ্ছ কথা বা আচরণ থেকে বিরত থাকায়ও প্রয়াসী। তারা নৈতিক গুণাবলী সমৃদ্ধ এবং কাজে-কর্মে অত্যন্ত স্বচ্ছ, সৎ ও কর্মঠ। ক্যাম্পাস’র স্টাফ থাকাকালীন কেউ অযৌক্তিক আচরণ করেছেন বা তাদের আচরণে কেউ মনঃক্ষুণœ হয়েছেন এ ধরনের ঘটনা বিরল।
নামাজ পড়া ও ধ্যানচর্চার জন্য দু’টি নির্ধারিত স্থান রয়েছে ক্যাম্পাস কার্যালয়ে। এখানে পুরুষরা নিয়মিত জামায়াতে নামাজ পড়েন। মহিলাদের জন্যও রয়েছে আলাদাভাবে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা। প্রতি বৃহস্পতিবার বাদ মাগরেব ধর্মীয় বিষয়ে আলোচনা ও জেকের হয়। তাছাড়া ক্যাম্পাস সদস্যদের এবং সমাজ ও দেশের যেকোনো সমস্যায় এখানে সমবেত দোয়া হয়। এখানে নিয়মিত ব্রিফিং এর ব্যবস্থা রয়েছে, যার মাধ্যমে মানবিক ও ধর্মীয় বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত জ্ঞানলাভের প্রভূত সুযোগ রয়েছে, যা ধর্ম ও কর্ম পালনে সহায়ক হয়। তবে এখানে ধর্মীয় বিষয়ে কোনো বাড়াবাড়ি, গোঁড়ামি বা জবরদস্তি নেই। শুধু ধর্ম চর্চায়ই নয়, যেকোনো ব্যক্তিগত বিষয়ের চর্চায়ও এখানে কোনো বাধা নেই। অর্থাৎ ক্যাম্পাস পরিবার সর্বদা ব্যক্তির সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী। একের সমস্যায় অন্যরা যেমনি সমবেদনা জানায়, তেমনি একের আনন্দ-সংবাদে সকলে মিলে করে মিষ্টিমুখ। নীতি-নৈতিকতা লালনে এবং জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে ক্যাম্পাস কর্মীরা সততই অন্যদের অনুকরণীয়।
ক্যাম্পাস’র লেনদেনঃ ক্যাম্পাস’র স্বচ্ছতার জ্বলন্ত প্রমাণ এ প্রতিষ্ঠানের লেনদেন। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি ক্যাম্পাস’র কাছে টাকা প্রাপ্য হলে তা পরিশোধিত হয় অবিলম্বে। এজন্য কোনো পাওনাদার প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে কখনই ধরনা দিতে হয় না ক্যাম্পাস’র নিকট। প্রাপককে ক্যাম্পাস অফিসে এসে টাকার জন্য বসে থাকতে হয় না, বরং ক্যাম্পাস কর্মীরাই প্রাপকের প্রাপ্য অর্থ পৌঁছে দেয় তার কাছে। এজন্য প্রাপকদের কাছে ক্যাম্পাস’র রয়েছে ব্যাপক সুনাম।
ক্যাম্পাস’র প্রতিটি লেনদেন নথিভুক্ত করা হয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রতিদিন হিসাব সংক্রান্ত কাগজপত্র আপডেট করতে সচেষ্ট। প্রশ্নাতীত স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের জন্য রয়েছে নিয়মিত ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল অডিট সিস্টেম।
আত্মোন্নয়নঃ ক্যাম্পাস কার্যালয়ে পরিচালিত হয় নিয়মিত ধ্যান কার্যক্রম। এর মাধ্যমে এ প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষানবিশ ও প্রশিক্ষণার্থীরা নিজ উন্নয়নে একক ও সম্মিলিত ধ্যান করার সুযোগলাভ করে। সম্মিলিত ধ্যানের ফলে এবং প্রোএকটিভ সেমিনারে নিয়মিত অংশগ্রহণের কারণে ক্যাম্পাস পরিবারের সবাই মানবিক গুণসমৃদ্ধ, সৎ সাহস ও দৃঢ় মনোবলের অধিকারী। তারা প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসী হওয়ায় আকস্মিক কোনো ঘটনায় ভেঙে পড়ে না এবং সকল কাজে স্বচ্ছ ও জবাবদিহি হতে অনুপ্রাণিত হয়। যেকোনো কাজ তাদের কাছে সহজ হয়ে যায় এবং সঠিক ও সফলভাবে তা করতে পারে।
প্রতিমাসের ১ম ও ৩য় শনিবার অপরাহ্নে ক্যাম্পাস স্টাফ ও শিক্ষানবিশ ছাড়াও আগ্রহী যে কেউ বিনামূল্যে পরিচালিত এ সম্মিলিত ধ্যানে অংশগ্রহণ করতে পারে। ইতোমধ্যে সমাজের অনেকেই ক্যাম্পাস’র সম্মিলিত ধ্যানের মাধ্যমে আত্মোন্নয়নে সক্ষম হয়েছেন এবং এরূপ সফল মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাড়িতে বা গাড়িতে ধ্যানচর্চা করার সুবিধার জন্য ক্যাম্পাস রিসার্চ সেলের আওতায় প্রকাশিত হয়েছে ৪টি সিডি।
মানসিক-শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতা ঃ ক্যাম্পাস এমনই ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান, যেখানে স্টাফদের শারীরিক সুস্থতার দিকেও নজর দেয়া হয়। আত্মোন্নয়নের পাশাপাশি ক্যাম্পাস স্টাফদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য এখানে রয়েছে যোগব্যায়াম ও প্রাণায়াম কর্মসূচি; রয়েছে প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি আকুপ্রেশার-রিফ্লেক্সোলজি-রেইকি চর্চা। স্টাফদের পাশাপাশি বাইরের যে কেউ এতে অংশগ্রহণ করতে পারে। এর মাধ্যমে স্টাফদের মানসিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতা এবং সক্ষমতাও বজায় থাকে; সুস্থ দেহে সজীব মন নিয়ে ক্যাম্পাস কর্মীরা উন্নততর মানুষ হবার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এ সকল চর্চা তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
এছাড়া কম্পিউটার মেরিডিয়ান ডায়াগনস্টিক (সিএমডি) এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতায় ও রোগের পূর্বাবস্থা জানায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছে ক্যাম্পাস।
তাছাড়া স্টাফদের জন্য ক্যাম্পাস কার্যালয়ে রয়েছে স্পেশাল ফিটনেস এন্ড রিলাক্সেশন মেশিন, ফুট ম্যাসেজার, আকুপ্রেশারের হাতিয়ার ইত্যাদি। এসবের মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রেই যেকোনো সময়ে তারা নিজকে রিলাক্সড করতে এবং স্ট্রেসহীন রাখতে পারে।
খাবার গ্রহণে স্বাস্থ্য সচেতনতাঃ খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে ক্যাম্পাস পরিবার অত্যন্ত সচেতন। তারা ভাজা-পোড়া খাবারের চেয়ে সবজি, ফলমূল, সিদ্ধ খাবার ও হারবাল খাদ্যই বেশি খেয়ে থাকে এবং অন্যদেরকেও এ ধরনের খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করে। কোক-ফান্টা জাতীয় পানীয় বা রঙিন ও কেমিক্যাল জাতীয় খাবার বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাদ্যদ্রব্য নিজেদের মধ্যে এমনকি বাইরের গেস্টদের মধ্যেও পরিবেশিত হয় না।
ক্যাম্পাস সততা পুরস্কারঃ ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধের মাধ্যমে ন্যায়-নীতিবোধের জাগরণে সমাজের সৎ ব্যক্তিত্বদের পুরস্কৃত করতে ক্যাম্পাস সততা পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে। ক্যাম্পাস বিশ্বাস করে, সৎ ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করলে তারা যেমনি উৎসাহী হবেন, তেমনি অন্যরাও সৎ হতে অনুপ্রাণিত হবেন; সৎ ও ন্যায়-নিষ্ঠদের মাথা উঁচু করে দিলে অসৎরা নিন্দিত ও লজ্জিত হবে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অসততারোধের এ কনসেপ্ট থেকেই ক্যাম্পাস চালু করেছে সততা পুরস্কার কর্মসূচি। এ কর্মসূচির বিভিন্ন ধাপে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বগণকে এর সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া এ সংক্রান্ত স্বচ্ছতার জন্য আলাদা ব্যাংক একাউন্টও রয়েছে।
কম্পিউটার প্রশিক্ষণঃ তথ্য-প্রযুক্তি বিকাশের মাধ্যমে সমাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ক্যাম্পাস ছাত্র-যুবকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে গত ১১ বছর থেকে বিনামূল্যে নিয়মিত কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী এখান থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়েছে। কেবল তাই নয়, বেসিক ট্রেনিং প্রদানের পাশাপাশি ক্যাম্পাস’র রয়েছে এডভান্সড কম্পিউটার ট্রেনিং। এর ফলে আগ্রহী ছাত্র-যুবকরা বিনামূল্যে কম্পিউটার সম্পর্কে অধিকতর জানার ও শেখার সুযোগ পাচ্ছে।
এছাড়াও ক্যাম্পাস একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যেখানে স্টাফ এবং শিক্ষানবিশদের জন্যও রয়েছে বিশেষ ও নিয়মিত কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা। এখানে স্টাফদেরকে কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক জ্ঞানের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে সফল ও সুন্দরভাবে কাজ করার জন্য বিভিন্ন এডভান্সড ট্রেনিং দেয়া হয়। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ট্রাবল শুটিং ও কম্পিউটার ব্যবহারের বিবিধ টিপস এমনভাবে দেয়া হয়, যেন স্টাফরা নিজ নিজ কাজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠে। এখানে কোনো বিভাগকেই কম্পিউটার কাজের জন্য আইটি বিভাগের ওপর নির্ভর করতে হয় না। এভাবে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্যাম্পাস’র দক্ষতা ও স্বচ্ছতা।
ট্রেইনী ও শিক্ষানবিশদের কর্তৃক ক্যাম্পাস কার্যক্রমের মূল্যায়নঃ ট্রেইনী ও শিক্ষানবিশ হিসেবে যারা ক্যাম্পাস এ আসে, তাদের স্বাধীন মতামত, মূল্যায়ন ও পরামর্শ প্রদানের সুব্যবস্থা রয়েছে। এ বিষয়ে তাদেরকে কোর্স-পূর্ব ও কোর্স-পরবর্তী মূল্যায়নপত্র পূরণ করতে হয়। এসব গোপনীয় মূল্যায়নপত্রে প্রশিক্ষকের যোগ্যতা-সহযোগিতা-সহমর্মিতা এবং ক্যাম্পাস’র স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন থাকে। তাদের মতামত ও মূল্যায়নের গোপনীয়তা রক্ষার সুযোগ থাকায় ছাত্র-যুবকরা অনায়াসে ক্যাম্পাস’র স্টাফ ও প্রশিক্ষকদের সম্পর্কে অভিযোগ, অনুযোগ বা মতামত দিয়ে থাকে।
ক্যাম্পাস’র কার্যক্রমে উৎকর্ষ আনয়নে এবং স্বচ্ছতা বা জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় এটি ক্যাম্পাস’র অনন্য ও দূরদর্শী পদক্ষেপ হিসেবে সুধীজন সমাদৃত। দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও পরিদর্শনকারিদের কর্তৃক ক্যাম্পাস’র এই মূল্যায়ন পদ্ধতি বহুল প্রশংসিত।
ত্রাণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতাঃ মানবিক ও সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই পরিচালিত হয় ক্যাম্পাস’র ত্রাণ কার্যক্রম। দুর্গত মানুষদের মধ্যে ক্যাম্পাস অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ করে থাকে। কে কত পরিমাণে ত্রাণের অর্থ দিয়েছে, কে কতটুকু ত্রাণ সংগ্রহ করেছে, কোথায় কীভাবে ত্রাণ বন্টিত হয়েছে এসবের সবিস্তারিত তথ্য ও প্রতিবেদন পত্রিকান্তরে মুদ্রিত হয়। তাতে কারুর কোনো কিছু লুকানোর, গোপন করার বা অস্বচ্ছতার সুযোগই থাকে না। তাছাড়া অধিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে এ কর্মসূচির জন্য রয়েছে পৃথক ব্যাংক একাউন্ট।
সমাজ সচেতনতামূলক কর্মসূচিঃ ক্যাম্পাস বিশ্বাস করে এদেশের মানুষকে সামাজিকভাবে সচেতন করতে পারলে সকল কাজ-কর্মে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব যা কল্যাণ-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত। এ চিন্তা থেকেই ক্যাম্পাস চালু করেছে সমাজ সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি। এ কর্মসূচির আওতায় ক্যাম্পাস সমাজ ও জাতি জাগরণমূলক নানা বিষয়ের ওপর কার্যকর নানা সেøাগানে বিভিন্ন স্টিকার, ডেস্ক-সিøপ, লিফলেট, ক্যালেন্ডার, পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন ইত্যাকার মুদ্রণ করে স্বঅর্থায়নে সমগ্র দেশব্যাপী প্রচার করে আসছে। এর মাধ্যমে ঘুষ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠাই ক্যাম্পাস’র লক্ষ্য। ক্যাম্পাস কর্মীরা এসব কার্যক্রম অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে করে থাকে এবং অন্যদেরও এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করে। কারণ এসব অপরাধ থেকে জাতি মুক্ত হতে পারলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আলোকিত জাতি গঠন সম্ভব।
তাছাড়া জবাবদিহিমূলক জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠা এবং যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ক্যাম্পাস’র পক্ষ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য সংবলিত স্টিকার মুদ্রণ করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয়। যেমন ‘সৎ প্রার্থীকে ভোট দিন, শেষ করুন দুর্দিন’; ‘আসন্ন নির্বাচনে সৎ ও দেশপ্রেমী প্রার্থীকে জয়যুক্ত করুন’; ‘অসৎ ও দুর্নীতিগ্রস্তদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রতিরোধ করুন’; ‘দুর্নীতিগ্রস্ত বা সন্ত্রাসীকে নির্বাচিত করে নিজকে অপরাধী করবেন না’; ‘ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ, বয়কট করি আজ’; ‘দুর্নীতি ও সন্ত্রাস আপনার শত্রু, এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন’; ‘ঘুষ-দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পরিবার ও সমাজে বয়কট করুন’; ‘ঘুষ-দুর্নীতির অর্থ বর্জন করুন, পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে খায়’; ‘সন্ত্রাস ও দুর্নীতির অভিশাপ থেকে দেশ রক্ষায় এগিয়ে আসুন’; ‘ঘুষ নেবনা, ঘুষ দেব না’; ‘অন্যায় করবে না, অন্যায় বলবে না, অন্যায় শুনবে না’ ইত্যাদি।
ওয়েব-পোর্টালঃ ক্যাম্পাস’র সাংগঠনিক ও পরিচালন-দক্ষতার অন্যতম নিদর্শন ওয়েব পোর্টাল অন এডুকেশন এন্ড ডেইলী নিডস (www.dailyneeds.com.bd)। উপ-মহাদেশের বৃহৎ ওয়েব-বন্দর এটি। বাংলাদেশের ৭২ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডাটাবেজ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনের নানা প্রয়োজনীয় বিষয় এমনকি রংমিস্ত্রী, কাঠমিস্ত্রী, যেকোনো বয়সী বা পেশাজীবীর যেকোনো বিষয়ের ডাটা এখানে রয়েছে। ওয়েবের এ বন্দর এক নাগাড়ে রাত-দিন ২৪ ঘন্টা ব্রাউজ করলে শেষ করতে সময় লাগবে ৬২ দিন। এমন একটি বিশাল ওয়েব পোর্টাল তৈরি সম্ভব হয়েছে কেবলমাত্র ক্যাম্পাস কর্মীদের দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার কারণে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থাঃ স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা বিধানে ক্যাম্পাস কার্যালয়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপিত হয়েছে বহুবছর পূর্বেই। ফলে ক্যাম্পাস কার্যালয়ে যেমনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হয়েছে, তেমনি বৃদ্ধি পেয়েছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থাকার কারণে কেউ ইচ্ছে করলেই এখানে এসে অন্যায় কিছু করে চলে যেতে পারে না। তাছাড়া প্রবেশ পথে নিরাপত্তা রক্ষীর নিকট রাখা পরিদর্শন বইয়ে আগন্তুকের নাম-পরিচয় ও আগমনের উদ্দেশ্য লিখে এবং স্বাক্ষর করে ক্যাম্পাস কার্যালয়ে প্রবেশ করতে হয়।
অনুষ্ঠান আয়োজনে স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যাম্পাসঃ সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সাংবাদিক সম্মেলন, চা-চক্র বা ভোজসভা আয়োজনে স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যাম্পাস। এজন্য অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নেয়ার প্রয়োজন হয় না। এক সাথে ২০০ লোকের খাবারের আয়োজন ও পরিবেশনায় ক্যাম্পাস’র স্টাফগণ সিদ্ধহস্ত। কারণ ক্যাম্পাস কিচেনের খাবার পরিবেশনায় যা যা প্রয়োজন, তার প্রায় সব কিছুই রয়েছে ক্যাম্পাস কার্যালয়ে। এটি ক্যাম্পাস’র তাৎক্ষণিকতা ও দক্ষতার আরেক পরিচয়।
দেশীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতি লালনঃ দেশীয় কৃষ্টি বা সংস্কৃতি লালনেও ক্যাম্পাস দক্ষতা ও দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়ে আসছে। এজন্য ক্যাম্পাস’র রয়েছে নিজস্ব সাংস্কৃতিক দল। এ দলের কর্মীগণ বাঙালির নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও দেশপ্রেম লালনে সদা প্রস্তুত। তারা সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি ও অভিনয়ের মাধ্যমে সমাজের অনাচার, অন্যায়, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাস’র মনোভাব তুলে ধরে এবং এসবের অবসানে মানুষকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে আহ্বান ও উদ্বুদ্ধ করে।
ক্যাম্পাস’র নেতৃত্বঃ যেকোনো ক্ষেত্রেই নেতৃত্বের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতি জাগরণ ও দেশ গঠনের মহতী ও দুঃসাধ্য লক্ষ্যকে সামনে রেখে পরিচালিত হচ্ছে ক্যাম্পাস কার্যক্রম। আর এ সকল কার্যক্রমের পেছনে রয়েছেন একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব; যার দূরদর্শী পরিকল্পনা, দক্ষ নেতৃত্ব ও তত্ত্বাবধানে এগিয়ে চলেছে ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র এর মহাসচিব এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এম হেলাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেও পঠিত বিষয় সংশ্লিষ্ট সহজ বা লোভনীয় চাকরিতে সম্পৃক্ত হননি। তিনি জীবনের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন সমাজ-জাগরণ ও দেশপ্রেমে উজ্জীবনের দুঃসাধ্য কাজ। গণমানুষের জন্য কাজ করাকে কর্মের মূলধারা বা জীবনের ব্রত বলে তিনি মনে করেন। ছাত্র-যুব সমাজে বিরাজিত হতাশা দূর করে তাদের মধ্যে দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচি ব্যতিক্রমী ও অনন্য। আর তাই আশি’র দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নির্বাচিত নেতা হিসেবে শিক্ষা ও সমাজ সেবামূলক কর্মযজ্ঞের পাশাপাশি তার প্রতিষ্ঠিত ক্যাম্পাস এখন জন-জাগরণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত।
অন্যের সমালোচনা বা ঈর্ষায়ও ক্যাম্পাস’র স্বচ্ছতাঃ ক্যাম্পাস’র ডায়নামিক, ব্যতিক্রমী ও দক্ষ কার্যক্রমে ঈর্ষান্বিত ও পরশ্রীকাতর হয়ে অন্ধকারের জীবরা কখনও কখনও মিথ্যা ও প্রতারণামূলক কল্পকাহিনী লিখে বেনামে বা কাল্পনিক নামে লিফলেট আকারে প্রচার করে থাকে। এমনকি ইমেইল পাঠিয়েও বিভিন্ন মানুষকে বিভ্রান্ত করে। বেনামী এসব উড়ো চিঠিতে কী ধরনের ডাহা মিথ্যা থাকে তা অধিকাংশ মহলই বোঝেন বা আঁচ করতে পারেন, তাই তারা বিভ্রান্ত হন না। কিন্তু দু’চারজন আছেন, যারা এসব ডাহা মিথ্যায়ও বিভ্রান্ত হন। তাছাড়া এরূপ বেনামী বা উড়ো চিঠিতে গঠনমূলক কোনো অভিযোগ থাকে না যে, তার উত্তর দেয়া যায়। তারপরও ক্যাম্পাস নিজ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিশ্চয়তায় এরূপ বেনামী লিফলেটেরও প্রতিটি পয়েন্টের ব্যাখ্যা করে যে সকল কর্তৃপক্ষ লিফলেট পেয়েছে বলে জানা যায়, তাদেরকে পাঠিয়ে থাকে; এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে পত্রিকান্তরেও তা প্রকাশ করে থাকে। এরূপ লিফলেট এতই মিথ্যা ও অবাস্তব যে, আজ পর্যন্তও কোনো কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস’র নিকট এরূপ লিফলেট সম্পর্কিত কোনো বিষয়ের ব্যাখ্যা চায়নি বা কারণ দর্শাতে বলেনি। এমনকি কোনো কোনো লিফলেটের ওপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গোয়েন্দা তদন্ত করেও তাতে এমন কোনো কিছু পায়নি যে সম্পর্কে ক্যাম্পাস’র ব্যাখ্যা চাইতে পারে। বরং লিফলেটের নেপথ্য হোতা ও প্রচারকদের খুঁজে বের করা এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নজির বিদ্যমান।
একটিমাত্র অপরাধের জন্যও যেখানে প্রচলিত আইনের আশ্রয়ে শাস্তি দেয়ার সুযোগ রয়েছে, সেখানে ক্যাম্পাস’র বিরুদ্ধে পাতার পর পাতা হাজারটা মিথ্যা কথা বেনামে লিখে অযাচিত প্রচার করা হীন ও নোংরা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সচেতন, চিন্তাশীল ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিত্বগণ এরূপ সামাজিক অবিচারকে হৃদয়ঙ্গম করে ক্যাম্পাস’র প্রতি আরও সদয়, সহমর্মী ও সমব্যথী হয়ে সহযোগিতা বাড়িয়ে দেন। কিন্তু সমস্যা হয় এসব মিথ্যা ও বিভ্রান্তিতে পড়া দু’চারজনকে নিয়ে, যারা এ ধরনের উড়ো চিঠি পান এবং পড়েন; কিন্তু সত্য-মিথ্যার অনুসন্ধান করেন না, ওদিকে ক্যাম্পাস’র নিকটও কিছু জানতে চান না। তাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আন্দোলনে বিশ্বাসী ক্যাম্পাস এ মুষ্টিমেয় বিভ্রান্তদের বিভ্রান্তি বা সংশয় দূর করতে অনুরূপ উড়ো চিঠিরও প্রত্যেক কথার জবাব লিখে এমনকি পত্রিকায় ছাপিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের মুখোশ উন্মোচনে প্রয়াসী হয়।
আসলে আলো কখনো অন্ধকারকে ভয় করে না, বরং অন্ধকারই ভয় করে আলোকে। ভয় করে বলেই মিথ্যা ও বিভ্রান্তির ওপর ভর করে আস্ফালন করে। কিন্তু শেষতক ধোপে টেকে না; বরং হিতে বিপরীত হয়। কারণ সময় যত বেশিই লাগুক না কেন, অবশেষে সত্যেরই জয় হয়।
শেষ কথাঃ উপরোল্লিখিত বৈশিষ্ট্যমন্ডিত কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে, সুশাসন নিশ্চিত হবে, দুর্নীতির কালিমা থেকে মুক্ত হবে দেশ, গড়ে উঠবে উচ্ছল-উজ্জ্বল প্রোএকটিভ জাতি এ প্রত্যাশা ও বিশ্বাস অন্যসব দেশপ্রেমীদের মতো ক্যাম্পাস পরিবারেরও।
প্রথম প্রকাশঃ জুন ২০১০