আমার দৃষ্টিতে ক্যাম্পাস

নাজনীন সুলতানা, ক্যাম্পাস’র কম্পিউটার ট্রেইনি

যুব-সমাজের উন্নয়নে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র। কয়লা খনিতে যেভাবে হীরক উৎপন্ন হয়, ঠিক সেভাবে ক্যাম্পাস আমাদের ছাত্র সমাজের মধ্য থেকে উজ্জ্বল সম্ভাবনাকে বের করে নিয়ে আসতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেজন্য ক্যাম্পাস’র রয়েছে নানামুখী ডায়নামিক কর্মসূচি, যার একটি ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং। ট্রেনিংয়ের সুবাদেই এ সংস্থার সাথে আমি সম্পৃক্ত হয়েছি এবং এখন এর সম্পর্কে আমার ধারণা অত্যন্ত ইতিবাচক। তথ্য-প্রযুৃিক্তর এই যুগে টিকে থাকতে হলে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের বিকল্প নেই। তাই যুব সমাজকে তথ্য-প্রযু্িক্ততে দক্ষ করে তুলতে ক্যাম্পাস’র সাহায্যের হাত সর্বদা বাড়ানো আছে। অন্য কোথাও বিনামূল্যে এত সুন্দরভাবে এ ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় বলে আমার জানা নেই। এখানকার পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর ও শিক্ষাবান্ধব। ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকেই অত্যন্ত আন্তরিক ও সহযোগী মনোভাবের, যারা আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা যোগান।
ক্যাম্পাস এ শুধুমাত্র যে কম্পিউটার শেখানো হয় তা নয়, এর কর্মসূচি বহুমুখী ও বহুবিধ। এখানে একজন শিক্ষার্থী আত্মবিশ্বাসী ও স্বাবলম্বি হবার প্রেরণা লাভ করে। সততা, নিয়মানুবর্তিতা ও সত্যবাদিতার গুণাগুণ ধারণ করে ছাত্র-সমাজকে এগিয়ে নিতে ক্যাম্পাস আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আমি এখান থেকে শিখেছি যে ‘আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম, সঠিক উপায়ে শিক্ষাগ্রহণ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে সফলতার চাবিকাঠি’। এই সমাজে টিকে থাকতে হলে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে, নিজেদেরকে সেভাবে তৈরি করতে হবে। আর সেজন্য দরকার আধুনিক শিক্ষা, যা কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ছাড়া সম্ভব নয়। ক্যাম্পাস’র মাধ্যমে আমি সহজেই এসব শেখার সুযোগ পেয়েছি এবং ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের প্রবেশপথ খুঁজে পেয়েছি।
যুব সমাজের উন্নয়নের মাধ্যমে ক্যাম্পাস দেশের স্বার্থে, দেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করছে। তাইতো ক্যাম্পাস’র সাথে সম্পৃক্ত হয়ে আমি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি, আমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর নতুন পথ খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিত্ব ও চিন্তা-চেতনা ভিন্ন; তাই সমাজে তাদের অবস্থানও হয় ভিন্ন ভিন্ন স্তরে। যেমন একটি ক্লাসে অনেক ছাত্র-ছাত্রী থাকে এবং তারা একই শিক্ষকের দ্বারা একই বিষয় সম্পর্কে একই সাথে অবগত হয়, কিন্তু সেই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে উন্নত মানুষ হন ক’জন? এই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে নিজকে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করার মন্ত্র বা মূল বাক্য বলে দেয় ক্যাম্পাস। সময়ের সাথে, যুগের সাথে মানিয়ে যুব সমাজের নানা সমস্যাকে তুলে ধরে তা সমাধানের দিকনির্দেশনা দেয়া হয় এখানে। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয় ক্যাম্পাস এ। ওয়ার্কশপ-সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে অনেক Message দেয়া হয়। আমার শিক্ষাজীবনে এই মূলমন্ত্রগুলোর প্রয়োগ অনেক ফলপ্রসূ হয়েছে।
কথার জাদু ও শব্দের চমৎকার ব্যবহারে মানুষের চিন্তা ও মন-মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব, সেজন্য কোনো অস্ত্র বা গোলাবারুদ ছাড়াই ক্যাম্পাস সুশৃঙ্খল সমাজ গড়ে তুলতে যুব সমাজের চিন্তার দৈন্য দূর করে মানসিক বিকাশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি যে, একটি মানুষ থেকে অন্য মানুষের মধ্যে জ্ঞানের আলো, তাদের চিন্তাচেতনা আর উপলব্ধিগুলো ছড়িয়ে যাবে এবং সুন্দর একটি সমাজ গড়ে উঠবে। ক্যাম্পাস’র যাত্রা আরো বেগবান হোক, সুন্দর হোক এবং সফল হোক এটাই আমার কাম্য।
প্রথম প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ২০১০