ক্যাম্পাস থেকে আমার অর্জন
রুহুল আমিন
ক্যাম্পাস’র শিক্ষানবিশ
বই কেনায় আমার যতটা আগ্রহ, বই পড়ার ক্ষেত্রে ততটা নয়। তবু বই মেলায় ঘুরতে খুব ভালো লাগত। এভাবেই ঘুরতে ঘুরতে ঢাকা আন্তর্জাতিক বই মেলা ২০১০ আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিল।
দিনটা ছিল ১১ই ডিসেম্বর ২০১০, শনিবার। সেদিনও একটা বই কিনেছিলাম; আর মনে মনে পরিকল্পনা করছিলাম মেলার সবগুলো স্টল ঘুরে দেখার। একের পর এক স্টল দেখতে দেখতে চলে আসি ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস’ এর স্টলে। এখানে শুনলাম ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের কথা। ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিই, কোর্সটি করব।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অফিসে আসি, ভর্তি হই, ক্লাসও শুরু করি। দ্বিতীয় ক্লাসেই ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এম হেলাল স্যার বললেন ক্যাম্পাস’র বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে। ক্যাম্পাস’র অন্যতম কর্মসূচি সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করা। আর তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন অফিস-আদালতে সচেতনতামূলক বিভিন্ন বাণী সংবলিত ক্যালেন্ডার, লিফলেট, ডেস্কসিøপ, স্টিকার প্রভৃতি পৌঁছাতে হয়। কলেজ ইউনিভার্সিটির ছাত্র-যুবকরা শিক্ষানবিশ হিসেবে এ কাজে অংশ নেয়। আমিও উৎসাহী হলাম।
এরপর তিনদিন ক্যাম্পেইন করলাম। ক্যাম্পেইনকালীন সকলের ব্যাপারেই রিপোর্ট হয়। দেখা গেল আমার রিপোর্ট খুব খারাপ; কারণ আমি ভালোভাবে কথা বলতে পারি না। সেটা পরীক্ষা করার জন্য স্যার আমাকে টিম লিডার সম্পর্কে বলতে বললেন। কিন্তু বলতে গিয়ে আমার ঠোট কাঁপতে রাগল এবং আমি কিছুই বলতে পারলাম না। স্যার তখন আমাকে বললেন, তুমি অবশ্যই ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় যাবে এবং সেখানে ক্যাম্পাস’র স্টলে থাকবে। দুই দিন পর আমাকে রিপোর্ট করবে ‘আমি ঠিকমতো কথা বলতে পারি’।
শুরু হলো আমার মেলায় থাকা অর্থাৎ স্টলে কাজ করা। বাণিজ্য মেলা শেষ করে ফেব্রুয়ারির বইমেলাতেও কাজ করলাম। এরই মধ্যে একটু একটু করে উপলব্ধি করছি আমার জড়তা ভাঙছে, আমি আগের চেয়ে পরিষ্কার করে কথা বলতে পারি। এত বছরেও যা সম্ভব হয়নি, অবশেষে তা-ই হলো! এটি আমার জীবনের অনেক বড় পাওয়া, বিরাট অর্জন; যা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এ যোগ দেয়ার ফলেই সম্ভব হয়েছে। ধন্যবাদ ক্যাম্পাসকে।
প্রথম প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ২০১১