সততার আদর্শে গড়া প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকা

মোঃ আবুল কালাম (রাজু)
ট্রেইনী, ব্যাচ-১৫০



ক্যাম্পাস হলো এমন একটি হিরাখন্ড -যা সারাক্ষণ ঝলমল করে, কিরণ দিতে থাকে। ক্যাম্পাসকে যদি বাতিঘরের সাথে তুলনা করি, তাহলেও ভুল হবে না। একটি ছোট প্রদীপ দিয়ে হাজার প্রদীপে আলো সরবরাহ করা হলে যেমন ঐ প্রদীপ থেকে আলো কমে না বরং আলো আরো বাড়তে থাকে; ঠিক একইভাবে ক্যাম্পাস সততার আদর্শে গড়া এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে আমাদের মতো হাজার হাজার ছাত্র-যুবক পাচ্ছে সঠিক পথের আলোর দিশা; আর ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে সকল মানুষের চোখের মণি হিসেবে। ৩যুগ অবধি ক্যাম্পাস এরূপ ব্যতিক্রমধর্মী কল্যাণকর কাজ করতে সক্ষম হয়েছে একমাত্র পজিটিভ চিন্তাভাবনা পোষণ করছে বলে।

বিখ্যাত দার্শনিক Kant বলেছেন, সততার সঙ্গে সুখের সম্পর্ক এবং অসৎ কাজের সঙ্গে দুঃখের সম্পর্ক। ক্যাম্পাসও আমাদেরকে যুগোপযোগী নানা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সততার চর্চা করায় এবং ইতিবাচক চিন্তার পরিবর্তিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে। তাই আমাদের উচিত ক্যাম্পাস’র আদর্শ ধারণ করে নৈতিকতার সাথে বেড়ে ওঠা এবং সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে বেড়ে উঠতে সহায়তা করা। তাহলে ক্যাম্পাস’র প্রচেষ্টা সার্থক হবে। ক্যাম্পাস বলতে সাধারণত আমরা বুঝি, প্রাকৃতিক পরিবেশে শিক্ষার্থীদের বেড়ে ওঠার অন্যতম একটি প্রাঙ্গণ। তবে আজ যে ক্যাম্পাস’র কথা বলছি, সেটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান -যা নিয়ম-নীতি ও আদর্শের চাদরে মোড়ানো অন্যতম একটি ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি প্রবচন হলো- ‘তুমি অধম, তাই বলে আমি উত্তম হইবনা কেন’? আমার পাশের বন্ধুটি অপকর্মের সাথে জড়িত বলে আমি অপকর্মে লিপ্ত হবো, তা হতে পারে না; আমাকে ভালো হতেই হবে। আর ক্যাম্পাস নামক প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে সেই শিক্ষা দিয়ে আসছে। আগে এ কথা কখনোই শোনা হয়নি যে- ‘তুমি তোমার চিন্তা-চেতনাকে পজিটিভ করে নাও, অবশ্যই তুমি সফলতা অর্জন করবে’।

ক্যাম্পাস নামক প্রতিষ্ঠানে নেতিবাচক চিন্তার কোনো স্থান নেই। তাঁদের বিশেষ উক্তি হলো- নিজেকে একজন ভালো, সৎ, আদর্শ এবং ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সবসময়, সকল বিষয়ে পজিটিভ চিন্তা করতে হবে এবং চিরতরে মাথা থেকে নেগেটিভ চিন্তাকে উবষবঃব করতে হবে।

আধুনিক বিশ্বে সবচেয়ে বড় সমস্যা বেকারত্ব; আর বেকার যুব-সমাজকে এগিয়ে নিতে অর্থাৎ বেকারত্ব দূর করতে একাডেমিক শিক্ষার সাথে কারিগরি শিক্ষা একান্ত জরুরি। বর্তমানে আমাদের দেশে গ্রাজুয়েশন করে লক্ষ লক্ষ যুবক কর্মের সন্ধানে হতাশ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, হাতের কাজ জানা থাকলে হয়তো তাদের এমন হতাশ হয়ে বেঁচে থাকতে হতো না। ক্যাম্পাস এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী কাজ করে যাচ্ছে। তারা সার্টিফাইড ছাত্র-যুবকদেরকে কোয়ালিফাইড করে গড়ে তুলতে নিরলস কাজ করছে। জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণ করাই যেন ক্যাম্পাস নামক প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক সদস্যের উদ্দেশ্য। তাদের চিন্তাধারায় কিছু না কিছু ভিন্নতা থাকে। তাদের চিন্তাধারার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে অচিরেই একটি উন্নততর দেশ উপহার দেয়া সম্ভব। আমরা সকলে যদি দৃঢ়বদ্ধ হই যে- দেশের সকল জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করব; তাহলে প্রথম কাজ হচ্ছে আমার নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে। যে পরিবর্তনের মাধ্যমেই আমি অন্যকে পরিবর্তন করতে সক্ষম হবো। যে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগবে গ্রাম-শহর-নগর পর্যন্ত। গড়ে উঠবে ব্যতিক্রমী বাংলাদেশ। যেখানে প্রত্যেকটি মানুষ হবে সচেতন, থাকবে না বেকারত্ব, দূর হবে হতাশা, থাকবে না কোন ভয়, বিশ্বকে করব মোরা জয়।

(মতামত লেখকের নিজস্ব)