ক্যাম্পাস এবং আমার ইচ্ছা পূরণ

সঞ্জয় কুমার বণিক
ক্যাম্পাস’র শিক্ষানবিশ

ক্যাম্পাস নামটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের ছবি। আমার মানসপটেও সেরকমই একটি ছবি ভেসে উঠেছিল। কিন্তু পত্রিকায় দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী যখন ক্যাম্পাস এ এলাম, তখন আমার ধারণা পাল্টে গেল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এখানেও সমাজ বিনির্মাণের কারিগর তৈরি করা হয়। কিন্তু দু’টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পদ্ধতি পুরোপুরি ভিন্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পদ্ধতি হচ্ছে তাত্ত্বিক আর ক্যাম্পাস’র শিক্ষা পদ্ধতি ব্যবহারিক। আর ব্যবহারিক জ্ঞান না থাকলে সফল হওয়ার প্রচেষ্টা সহজে আলোর মুখ দেখে না। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে যে বড় ধরনের গলদ রয়েছে, তা ক্যাম্পাস-এ এসে প্রচন্ডভাবে অনুভব করতে শুরু করি। এ প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস আগ্রহভরে জানার পরই আমার বোধোদয় হয় যে, একজন মানুষ চাইলে হাজার মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে। আর সে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্য যদি হয় ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও আলোকিত জাতি গঠনের তবে সে প্রয়াস আলোর মুখ না দেখে পারে না। দেশ ও সমাজের কল্যাণে এসব ব্যতিক্রমী কর্মযজ্ঞ পরিচালনায় যে মানুষটির ভূমিকা মুখ্য, তিনি হলেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এম হেলাল স্যার।
  আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় অসংখ্য অসংগতি পরিলক্ষিত হলেও প্রতিবাদ জানাবার ভাষা যেন কারুরই নেই। এসব অসংগতি দূর করার দৃঢ় সংকল্পই ‘ক্যাম্পাস’ গঠনের মূল কারণ। ক্যাম্পাস পত্রিকাই আজ থেকে প্রায় তিন দশক আগে এ অসংগতিগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে শুরু করেছিল, যা এখনও অব্যাহত। আমার ইচ্ছে ছিল সমাজের জন্য কিছু করা। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও আমার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আশার কথা হলো, ক্যাম্পাস’র সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমার সে ইচ্ছেটা কিছুটা হলেও আলোর মুখ দেখেছে। আরেকটি ইচ্ছে ছিল ঢাকা মহানগরী পুরোপুরি ঘুরে বেড়ানো, সেটাও ক্যাম্পাস’র মাধ্যমে পূরণ হয়েছে। এছাড়াও আত্মোন্নয়নমূলক প্রোএকটিভ এটিচিউড সেমিনারে অংশ নিয়ে নিজের আচরণগত সমস্যা দূর করতে চেষ্টা করছি। ক্যাম্পাস’র এসব কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়াটা শুরু হয়েছিল এখানে ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং নেয়ার মাধ্যমে। ক্যাম্পাস’র সাহচর্য ছাড়া আমার ইচ্ছেগুলো পূরণ করতে পারতাম কিনা জানি না।
মুখে অনেক ভালো ভালো কথা বললেও ভালো কাজ আর করা হয়ে ওঠে না। ক্যাম্পাস নিজেদের কাজের মাধ্যমে ভালো কাজের যে নিদর্শন রাখছে এবং আমাদেরকে ভালো কাজের যে শিক্ষা দিচ্ছে তার বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে হবে আমাদের কাজের মাধ্যমে। কীভাবে দায়িত্ব নিতে হয় এবং তা পালন করতে হয়, তা ক্যাম্পাস থেকেই শিখেছি। ক্যাম্পাস’র সব শিক্ষাই আমাকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে।
পরিশেষে ক্যাম্পাস’র একটি স্লোগান তুলে ধরছি- Our target is to alleviate poverty of thought and to create a knowledge based society তাই দেশ ও জাতির উন্নতির স্বার্থে আমাদের সকলেরই উচিত নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটানো এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও আলোকিত জাতি গঠনের কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
প্রথম প্রকাশঃ জানুয়ারি ২০১১