ক্যাম্পাস শিক্ষা পুরস্কার (খসড়া নীতিমালা)
পটভূমিঃ সমাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও আলোকিত জাতি গঠনে নিবেদিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকা এবং ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র (CSDC)। বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের গুরুত্ব ও ভূমিকা উপলব্ধি করে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগত উৎকর্ষের লক্ষ্যে অনুসন্ধানী সংবাদ, প্রতিবেদন তৈরি এবং লেখালেখি ছাড়াও বার্ষিক নিয়মিত সেমিনার আয়োজন করে আসছে ক্যাম্পাস পত্রিকা। এসবের পাশাপাশি প্রবর্তন করেছে ‘ক্যাম্পাস শিক্ষা পুরস্কার’।
ক্যাম্পাস বিশ্বাস করে যে, শিক্ষাক্ষেত্রে মানোন্নয়নের প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে পারলে বর্তমান বেহাল অবস্থা দূর হবে। তাছাড়া দক্ষ, অনুকরণীয় ও আদর্শ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তাদেরকে অনুপ্রাণিত ও পুরস্কৃত করলে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হয়ে মানসম্মত শিক্ষার প্রচলনে এগিয়ে আসবে। এ বিবেচনায় আপাততঃ বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্য থেকে বছরে ৩টি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রেষ্ঠ একজন ভিসি বা প্রো-ভিসি, একজন শিক্ষা-উদ্যোক্তা, একজন শিক্ষক বা শিক্ষা-প্রশাসক (ট্রেজারার/রেজিস্ট্রার) কে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ক্যাম্পাস। পরবর্তীতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং স্কুল পর্যায়েও এ পুরস্কারের আওতা বৃদ্ধি করা হবে।
প্রাথমিকভাবে ক্যাম্পাস’র পক্ষ থেকে বার্ষিক শিক্ষা পুরস্কারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে পরবর্তীতে এ পুরস্কার জাতীয়ভাবে প্রদানের উদ্যোগের প্রতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের নীতি-নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে। সেক্ষেত্রে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রপতি শিক্ষা পুরস্কার, একুশে শিক্ষা পুরস্কার, স্বাধীনতা শিক্ষা পুরস্কার ইত্যাকার সম্মাননা বেসরকারি ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়মিতভাবে প্রদানের ব্যবস্থা গৃহীত হতে পারে।
ক্যাম্পাস’র মতে, এসব উদ্দীপনা ও প্রণোদনামূলক কার্যক্রম পরিচালনায় যেমনি অবাধ ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন, তেমনি অনুরূপ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলনে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম, বিশেষতঃ একাডেমিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে দক্ষতা, সততা ও নিপুণতার সঠিক মূল্যায়ন প্রয়োজন এবং এ মূল্যায়নে স্বচ্ছতা ও সুশাসনের স্বার্থে উদার নীতিমালা প্রণয়নও আবশ্যক। তাই ক্যাম্পাস শিক্ষা পুরস্কার সম্পর্কে উদার নীতিমালা প্রণয়ন এবং রেটিং পদ্ধতি তৈরিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান, ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও মতামত নেয়া হয়।
পুরস্কার কর্মসূচির প্রাথমিক রূপরেখাঃ
১। পুরস্কারের নামঃ ক্যাম্পাস শিক্ষা পুরস্কার।
২। পুরস্কারের সংখ্যা ও অগ্রাধিকারঃ আপাতত ৩টি সেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রেষ্ঠ একজন ভিসি বা প্রো-ভিসি, একজন শিক্ষা-উদ্যোক্তা, একজন শিক্ষক বা শিক্ষা-প্রশাসক (ট্রেজারার/রেজিস্ট্রার)। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বা ব্যক্তি উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে এবং শিক্ষা ও গবেষণা সম্প্রসারণে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন, পুরস্কারের মনোনয়নে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
৩। পুরস্কারের মেয়াদ ও মূল্যমানঃ প্রতিবছর একবার এ পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুরস্কারের মূল্যমান নির্ভর করবে দেশী-বিদেশী সংস্থাসহ অত্র পুরস্কার কর্মসূচির স্পন্সরদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণের ওপর।
৪। পুরস্কার নির্বাচন পদ্ধতিঃ
ক) পুরস্কার নির্বাচন কমিটিঃ পুরস্কার নির্বাচন কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন বিচারপতি বা জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট আইনজীবী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর, শিক্ষাবিদ, সচিব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা (সাবেক/বর্তমান), গণমাধ্যমের ব্যক্তিত্ব, ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যান বা এমডি, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট নাগরিক, ক্যাম্পাস’র চেয়ারম্যান এবং পুরস্কার কর্মসূচির স্পন্সর প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধানগণ।
উপরোক্ত ব্যক্তিবর্গকে ক্যাম্পাস শিক্ষা পুরস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে অবহিত করে পুরস্কার নির্বাচন কমিটিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হবে। কমিটি প্রয়োজনে কাউকে সদস্য হিসেবে কো-অপট্ করতে পারবে। উক্ত আহ্বানে যাঁরা সম্মত হবেন, তাঁদের নিয়ে এক বছরের জন্য কমিটি গঠিত হবে। ক্যাম্পাস’র মহাসচিব কমিটির সমন্বয়কারীর দায়িত্বে থাকবেন এবং কমিটির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে ক্যাম্পাস’র কার্যালয়।
খ) কমিটির সভাঃ পুরস্কার নির্বাচন কমিটির অন্ততঃ তিন সদস্যের সাথে আলোচনা করে সভার তারিখ ও সময় নির্ধারণ পূর্বক কমিটির সভা ডাকবেন সমন্বয়কারী। ক্যাম্পাস’র চেয়ারম্যান বা ভাইস-চেয়ারম্যান কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করবেন অথবা কমিটির সভায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে কোন সদস্য কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হবে এবং উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।
৫। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তারিত তথ্য (যা রেটিংয়ের জন্য প্রয়োজন) এবং ভিসি, প্রো-ভিসি, চেয়ারম্যান, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার -এর বিস্তারিত জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হবে।
৬। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য-তালিকা পুরস্কার নির্বাচন কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। সভার সিদ্ধান্তক্রমে পরবর্তী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরস্কারের জন্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে নির্বাচন করা হবে। এ ব্যাপারে কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
৭। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী বা দেশে-বিদেশে প্রথিতযশা কোন ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে ক্যাম্পাস শিক্ষা পুরস্কার প্রদান করা হবে।
৮। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করবে ক্যাম্পাস। সঙ্গতকারণেই অনুষ্ঠানের সভাপতি, প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি নির্বাচনসহ ইত্যাকার আনুষ্ঠানিকতার কাজ ও দায়িত্ব পালন করবে ক্যাম্পাস।
৯। পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত প্রত্যেককে ন্যূনতম একটি করে সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হবে। তাছাড়া সম্ভব হলে নগদ অর্থ বা উপহার-সামগ্রী প্রদান করা হবে। দেশী বা বিদেশী কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে ঐ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের উপহারও বাড়তি পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হবে।
১০। শিক্ষা পুরস্কার প্রাপ্তদের সাক্ষাৎকার এবং সেরা ৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা থাকবে।
১১। অত্র পুরস্কার প্রদান কর্মসূচিতে ক্যাম্পাস কেবল আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। একটি সেবাধর্মী, অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্যাম্পাস’র নিজস্ব আর্থিক সীমাবদ্ধতাহেতু সমাজ হিতৈষী ও কল্যাণকামী ব্যক্তিত্বদেরকে স্পন্সর হিসেবে সম্পৃক্ত করে এই মহতী কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
এটি একটি খসড়া নীতিমালা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ ও মতামতের ভিত্তিতে
পুরস্কার নির্বাচন কমিটির সভায় এ নীতিমালা চূড়ান্ত হবে।
ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্যঃ |
রেটিং পয়েন্ট |
১। বোর্ড অব গভর্র্নস -এর চেয়ারম্যানের যোগ্যতা ও সামাজিক অবস্থান |
১ |
২। ভিসি (শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা এবং প্রকাশনা ও গবেষণার বিবরণ) |
২ |
৩। প্রো-ভিসি (শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা এবং প্রকাশনা ও গবেষণার বিবরণ) |
১ |
৪। ট্রেজারার (শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা, বর্তমান পদে যোগদানের তারিখ) |
১ |
৫। রেজিস্ট্রার (শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা, বর্তমান পদে যোগদানের তারিখ) |
১ |
শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী সংক্রান্ত তথ্যঃ |
|
৬। পূর্ণকালীন ও খ-কালীন শিক্ষকদের তালিকা |
৬ |
৭। পিএইচডি বা অনুরূপ বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের তালিকা (বিস্তারিত তথ্যসহ) |
৪ |
৮। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের বিবরণ |
১ |
৯। বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা |
২ |
১০। বর্তমানে বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা |
১ |
১১। বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত |
৪ |
১২। ভর্তির যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া |
২ |
১৩। ছাত্রবৃত্তি (সংখ্যা ও ধরন) |
২ |
একাডেমিক তথ্যঃ |
|
১৪। অনুষদ ও বিভাগের বিবরণ (সামাজিক ও মানবিক বিষয়সহ) |
৪ |
১৫। একাডেমিক কাউন্সিলের বিবরণ |
২ |
১৬। পরীক্ষা পদ্ধতি ও ফলাফল |
৩ |
১৭। দেশ-বিদেশে শিক্ষা ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা (বিস্তারিত তথ্যসহ) |
২ |
১৮। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য অর্জন |
৪ |
শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম, গবেষণা ও প্রকাশনা সংক্রান্ত তথ্যঃ |
|
১৯। লাইব্রেরি (লাইব্রেরীর সুযোগ-সুবিধা, বই ও জার্নাল সংখ্যা) |
১০ |
২০। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আইটি সুবিধা (কম্পিউটার ল্যাব, নেটওয়ার্কিং প্রভৃতির বিবরণ) |
৫ |
২১। ২০০৮ ও ’০৯ সালে আয়োজিত সেমিনার, সিম্পোজিয়া ও ওয়ার্কশপ -এর তথ্য |
২ |
২২। গবেষণা ল্যাবের সুযোগ-সুবিধার বিবরণ |
৬ |
২৩। প্রকাশনা সংখ্যা (বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত পুস্তক ও জার্নালের বিবরণ) |
৫ |
২৪। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণাপত্র |
৪ |
২৫। ২০০৮ ও ’০৯ সালের সম্পাদিত গবেষণা প্রকল্পের বিবরণ |
৪ |
২৬। শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম (খেলাধূলা, অডিটোরিয়াম, ক্লাব ও ফোরামের বিবরণ) |
৬ |
২৭। এলামনাই কার্যক্রম |
১ |
অবকাঠামো সংক্রান্ত তথ্যঃ |
|
২৮। স্থায়ী ও অস্থায়ী অবকাঠামোর বিবরণ |
৫ |
২৯। শ্রেণীকক্ষের মান ও সুযোগ-সুবিধার বিবরণ |
৬ |
৩০। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা |
১ |
৩১। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা |
১ |
৩২। বিবেচনাযোগ্য অন্য কোন বিশেষ বিশেষত্ব |
১ |
|
সর্বমোট ১০০
|