সুইডেন উত্তর ইউরোপের আধুনিক একটি দেশ। শান্ত পরিবেশ,বিশ্বস্বীকৃত গবেষণাকর্ম, আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রচুর স্কলারশিপ,গ্রুপ ওয়ার্ক, স্বাধীন চিন্তার সুযোগ-এসবের জন্য উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সুইডেন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।বর্তমানে এখানে প্রায় ৮০টি দেশের শিক্ষার্থীরা পিএইচডি গবেষণারত।গ্লোবাল কম্পিটিটিভনেস রিপোর্ট ২০১০-২০১১ এ দ্বিতীয়স্থান অধিকারী সুইডেনে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরাও নিতে পারেন বিশ্বমানের উচ্চতর ডিগ্রি।
পড়ার বিষয়ঃ
পরিবেশ বিজ্ঞান, ভাষা শিক্ষা,কৃষি গবেষণা ও ইঞ্জিনিয়ারিং- এসব বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য সুইডেনকে আদর্শ বলা হয়।তবে এর পাশাপাশি আরো কিছু বিষয় উল্লেখযোগ্য। বিষয়গুলো হলো- এমবিএ,টেলিকমিউনিকেশন, আইন,ম্যাথমেটিক্স, জনস্বাস্থ্য, আর্টঅ্যান্ড ডিজাইন, মেডিক্যাল,অর্থনীতি, ভূগোল, হিউম্যান
রিসোর্স, হেলথ কেয়ার ম্যানেজমেন্ট, ফিল্ম ও মিডিয়া,লাইফ সাইন্স ইত্যাদি।
ভাষা ও শিক্ষাব্যবস্থাঃ
সুইডেনের অফিসিয়াল ভাষা সুইডিশ হলেও প্রায় ৮৯% মানুষ ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারে।তাই সেখানে ইংরেজিকে সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ বলা হয়।এখানে সুইডিশ ও ইংরেজি –উভয়ই মাধ্যমেই পড়াশুনা করা যায়।অনার্স পর্যায়ে সুইডিশ ভাষা জানলে ভালো। তবে মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সুবিধা হলো প্রায় ৬০০’র বেশি বিষয় ইংরেজি ভাষায় পড়া যায়।সুইডেনে অনার্স৩/৪ বছর, মাস্টার্স বিষয় ভেদে ১/২ আবার কোনোটাতে ৩ বছরও লেগে যায়। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন মেয়াদীনন-ডিগ্রি প্রোগ্রাম, ডিপ্লোমা,পিএইচডি, পোস্ট-ডক্টোরাল ও কিছুপ্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম। National Agency for Higher Vocational Education- এই প্রতিষ্ঠানের অধীনে প্রশিক্ষণমূলক প্রোগ্রাম করানো হয়।বর্তমানে শ্রম-বাজারে এসব প্রশিক্ষণের ব্যাপক চাহিদা লক্ষ করা যায়।
প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা-
Myndigheten for yrkeshogskolan
Box- 145
SE-721 05 vasteras, Sweden.
Email: info@yhmyndigheten.se
Web: www.yhmyndigheten.se/
English যোগ্যতাঃ
ভর্তির শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয় ও বিষয়ভেদে বিভিন্ন ভাবে শিক্ষার্থীর যোগ্যতা যাচাই করা হয়। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একাডেমিক ফলাফল দেখে আবার কখনো বা ভাষাগত যোগ্যতা দেখে। সুতরাং ভাষা ও বিগত পরীক্ষাগুলোর ফলাফল উভয়ই ভালো হওয়া দরকার।সুইডিশ ভাষার জন্য আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট (কলাভবন, ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়) থেকে কোর্স করতে পারেন।অপরদিকে, ইংরেজি ভাষার দক্ষতাস্বরূপ TOEFL বা IELTS এর প্রাপ্ত নাম্বার দেখা হয়।TOEFL পরীক্ষার মোট ১২০ নাম্বারে নূন্যতম ৮৫ নাম্বার এবং IELTS পরীক্ষার ৯.০ পয়েন্টের মধ্যে নূন্যতম ৬.৫ পেতেহবে।এ ক্ষেত্রে অনলাইনে বসেও IELTS ও TOEFL পরীক্ষায় নিজের যোগ্যতা যাচাই করতে পারেন।
বিস্তারিত জানতে- www.ielts.org, www.ets.org/toefl/
IELTS পরীক্ষার কেন্দ্র-
British Council Dhaka
5, Fuller road, -1000
Tel no.+88 02 8618905
Web: www.britishcouncil.org/
bangladesh
TOEFL পরীক্ষার কেন্দ্র-
1. American Alumni Association
House 145, Street 13B, Banani
Dhaka 1213
Phone: +88029881669
2. Grameen Star Education Center
69/B, Panthopath, Dhaka
আবেদনের সময়ঃ
সুইডেনে বছরে দুটি সেমিস্টার।একটির মেয়াদ আগস্টের শেষ থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত। অপরটি মধ্য জানুয়ারি থেকে জুনের শুরু পর্যন্ত।বিদেশে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র ও ভিসা নিয়ে প্রায় ৬ মাস এমনকি এক বছর ও সময় লেগে যায়।তাই যে সেমিস্টারে ভর্তি হতে আগ্রহী সেই সময়ের দিকে খেয়াল রেখে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
পড়াশুনা ও থাকার খরচঃ
শুরুতেই অনলাইনে আবেদন পত্রের জন্য প্রায় ৯০০ SEK (১০৫৫৭ টাকা) ব্যয় করতে হয়। তাছাড়া বিষয় ভেদে অনার্স, মাস্টার্সে বছরে ন্যুনতম৮০,০০০ SEK থেকে ১,৪০,০০০ SEK (৯,৩৮,৪০০টাকা-১৬,৪২,২০০টাকা)-এর মধ্যে খরচ পড়ে। এছাড়া থাকা,খাওয়া ও অন্যান্য খরচ বাবদ বছরে প্রায় ৭৩৯৯ SEK (৮৫৬২৯ টাকা) খরচহয়।
পার্টটাইম জবঃ
যদিও অধিকাংশ শিক্ষার্থী- যারা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যান তারা শুরুতেই পার্টটাইম জবের খোঁজ করতে থাকেন। তবে পড়াশুনার ক্ষতি করে পার্টটাইম জব করা ঠিক নয়।তাছাড়া সুইডেন সরকার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বছরে প্রায় ৫০০’র বেশি স্কলাপশিপ দিয়ে থাকে, যেগুলোর অনেকেই পড়াশুনা সহ থাকার খরচও বহন করে।তাই সুইডেনে পার্টটাইম জবের তেমন প্রয়োজন পড়ে না।তবে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা বা ২০ ঘন্টার পার্টটাইম জব করতে পারেন।বিভিন্ন ধরনের জবের মধ্যে রয়েছে-
১. বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন।এই কাজে এক দিনে প্রায় ১২০ SEK থেকে ১৮০ SEK (১৪০৭ টাকা-২১১১টাকা) আয় হয়।
২. বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে কাজ করা।এতে মাসে ৭০০০ SEK থেকে ৮০০০SEK (৮২,১১০ টাকা-৯৩,৮৪০ টাকা) আয় হয়।
৩. সপ্তাহের কয়েক দিন, খোলা বাজারে কাপড় বিক্রি করলে মাসে ৭০০০ SEK থেকে ৯০০০ SEK (৮২,১১০টাকা-১,০৫,৫৭০ টাকা) আয় হয়।