আমি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি জুনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগদান করে এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এম হেলাল স্যারের আন্তরিক প্র্রশিক্ষণের বদৌলতে আমি আজকের এ অবস্থানে আসতে পেরেছি।
ক্যাম্পাস এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে আসলে কেবল ইচ্ছাশক্তি দিয়েই সমাজের উচ্চ আসনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। আমি যখন এখানে যোগদান করি তখন অফিসিয়াল কাজকর্মের এ-বি-সি জানা ছিল না এবং ঢাকা শহরের পূর্ব-পশ্চিম কোন কিছু সম্পর্কে ধারণা ছিল না। ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক মহোদয়ের পরামর্শ ও সহযোগিতায় অনেক কিছু শিখেছি। উনি আমাকে হাতে ধরিয়ে সব কাজ শিখিয়েছেন- এটা এভাবে নয়, ওভাবে কর। যা হয়ত একজন পিতা তার সন্তানের জন্য করেন। তাঁর এ দানের প্রতিদান আমি কখনো দিতে পারব না, কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেও শেষ করতে পারব না। তবে আমি ওনার এই শেখানোর উছিলায় যা কিছু ভাল কাজ শিখেছি তার একটি নেক যেন ওনার আমলনামায় আল্লাহ দান করেন। আর উনি আমাকে যা কিছু ভাল কাজ শিখিয়েছেন মৃত্যু পর্যন্ত তা যেন আমি ধরে রাখতে পারি, সবার কাছে এ দোয়া চাচ্ছি।
শুধু আমি নই, ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠানে যখনই যারা এসেছে তারাই সোনার মানুষে পরিণত হয়েছে। আজকের যুব সমাজ কি করে সমাজের বুকে নিজেকে একজন ন্যায়ভিত্তিক ও যুক্তিভিত্তিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে, কিভাবে নিজেকে দায়িত্ববান ও কর্মদক্ষ করে গড়ে তুলবে সে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে ক্যাম্পাস, যা আজকের সমাজে খুবই দুর্লভ। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেখানে অভিজ্ঞ ও দক্ষ ছাত্র-যুবক নিয়োগ করতে চায়, কিন্তু শিক্ষার্থী অবস্থায় কিভাবে তারা অভিজ্ঞ ও দক্ষ হবে, তা বিবেচনা করে না; সেখানে ক্যাম্পাস সাধারণ ছাত্র-যুবকদেরকে পকেটমানি, সম্মানী ও বেতন দিয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কিভাবে সে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে উন্নতি করতে পারে, কিভাবে কর্মদক্ষতা অর্জন করতে পারে সে বিষয়ে সহযোগিতা দিতে সর্বদাই চেষ্টা করে যাচ্ছে। অফিসের সময় নষ্ট করে সবাইকে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, কাউন্সেলিং, প্রো-একটিভ প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।
এখানে ন্যায়-অন্যায়ের মূল্যায়ন করা হয়, ভালকে ভাল এবং মন্দকে মন্দ বলার চর্চা করা হয়। শুধু পার্থিব বিষয়েই শিক্ষা দেয়া হয় না, এখানে যারা আছেন বা আসছেন তাদের সবাইকে যায় যার ধর্ম পালনে উৎসাহিত করা হয়। যিনি মুসলমান তাকে নামাজ পড়তে হয়। নামাজ না পড়লে কি ক্ষতি হয় তা তাকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে ব্যাখ্যা করে বুঝানো হয়।
প্রিয় পাঠকের কাছে আমার জিজ্ঞাসা- শুধু লেখার জন্য নয়, সত্যিকারভাবে আপনাদের কাছে প্রশ্ন- এরকম একটি প্রতিষ্ঠান এ সমাজে কয়টি আছে, যা খুঁজে বের করতে পারবেন! তাই আপনাদেরকে বলছি, আপনারা এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এম হেলাল সাহেবের জন্য দোয়া করবেন। উনি যেন আগামীতেও মানুষকে তাঁর জ্ঞান ও চিন্তালব্ধ পরামর্শ ও উপদেশ দিয়ে সোনার মানুষে পরিণত করতে পারেন। উনি হয়তো প্রতিটি মানুষের কাছে যেতে পারবেন না বা সবাই উনার কাছে আসতে পারবেন না, কিন্তু উনার যে প্রবল ইচ্ছাশক্তি, সাহস ও ভাল নিয়ত আছে, এজন্য আল্লাহ তাঁকে কবুল করুন (আমিন)। কারণ নিয়ত হচ্ছে সব কাজের মূল, নিয়ত ভাল থাকলে সে কাজ সফল হবেই।
সমাজে দু’ধরনের মানুষ আছে এবং থাকবে- কেউ হয়তো এ প্রতিষ্ঠানকে ভালবাসে, কেউ আবার ঈর্ষা করে। ঈর্ষার কারণও কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানের উৎকর্ষতা এবং ব্যতিক্রমী কর্মযজ্ঞ, যা অন্যদের করার যোগ্যতা ও সামর্থ্য নেই। আমি পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে এ প্রতিষ্ঠানের উন্নতি কামনা করছি, যাতে আমার মত শত সন্তান এখানে এসে নিজের দায়িত্বজ্ঞান, জবাবদিহিতা সম্পর্কে বুঝতে পারে, পরচর্চা-পরনিন্দার কুফল সম্পর্কে জানতে পারে। কিভাবে আত্মোন্নয়ন করে নিজেকে সাফল্যের শিখরে তুলতে হয়, তা শিখতে পারে। মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা- হে আল্লাহ, তুমি এই প্রতিষ্ঠানকে এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত কর, এটি যেন বাংলাদেশের মানুষের কাছে ভাল কাজের দৃষ্টান্ত হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে।
আমি এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা ও কর্ণধার হেলাল স্যারের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি- আল্লাহ যেন দুনিয়া ও আখেরাতে তাঁকে উত্তম পুরস্কার দান করেন এবং এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িতদেরকে উত্তম কাজ করার তাত্তফিক দান করেন, আমিন।
আমি সুলেখক নই, তাই আমার ভাষার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।
মোঃ কামাল হোসেন
সহকারী পরিচালক