কর্মক্ষেত্রে যোগ-বিয়োগের হিসাব-নিকাশ রেখে স্মৃতির রোমন্থনে মিললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে কাটানো মুহূর্তগুলো নাচে-গানে আর আড্ডায় স্মরণ করলেন তাঁরা।
সম্প্রতি তাঁদের দশম পুনর্মিলনীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) প্রাঙ্গণ পরিণত হয় হিসাব বিজ্ঞানের অগ্রজ-অনুজদের মিলনমেলায়।
উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের স্মৃতিগাথা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আয়োজনের শুভ সূচনা করেন।
এলামনাইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক হারুন অর রশীদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা যে ক্যাম্পাসে বেড়ে উঠেছি, সেখানে আমরা আবার জড়ো হয়েছি নতুনভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে। আজতো আমাদের নতুন রংয়ে রাঙানোর দিন।
এরপর টিএসসি অডিটোরিয়ামে হয় উদ্বোধনী আলোচনা অনুষ্ঠান, যেটা সাবেক শিক্ষার্থী আর শিক্ষকদের বক্তৃতায় রূপ নেয় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে। সেখানে সম্মাননা দেয়া হয় বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত ১০ জন সাবেক শিক্ষার্থীকে।
উদ্বোধন করে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের এ সময়ে বড় সঙ্কট মানব সম্পর্কের ক্ষেত্রে। মানুষের মধ্যে সম্পর্ক না থাকার কারণে আমাদের শিক্ষা সেভাবে কাজে লাগছে না।
‘একাউন্টিং’ দিয়ে ‘একাউন্টিবিলিটি’ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে সাবেক শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক।
অনুষ্ঠানে সম্মাননা পাওয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বক্তব্য দিতে গিয়ে কমার্স বিভাগ থেকে কমার্স ফ্যাকাল্টি করার ক্ষেত্রে ১৯৭২ সালের আন্দোলন প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ৪২ বছর অস্ট্রেলিয়ায় থাকার পর বাংলাদেশে এসে আমি এখন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। আজ মনে হচ্ছে নিজের বাড়িতে এসেছি। আমি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে আছি, সেটাকে যদি ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে পারি সেটাই হবে আমার দেশের জন্য কিছু করা।
বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক শান্তি নারায়ণও তার শিক্ষা ও শিক্ষকতা জীবনের বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, বলা হয়ে থাকে শিক্ষার মান খারাপ হয়ে গেছে। আমি সেটা মনে করি না, বরং কেউ বললে তাতে ডিফেন্ড করি। শিক্ষার মান যে ঠিক আছে তার বড় প্রমাণ হচ্ছে, আমাদের শিক্ষার্থীরা পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখানকার ভিত্তি নিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারছে।
সভাপতির বক্তব্যে একাউন্টিং এলামনাই এসোসিয়েশন সভাপতি একেএম কামরুল ইসলাম জানান, সংগঠনের ১৭০০ সদস্যের মধ্যে একটি বড় অংশ পরিবার-পরিজন নিয়ে এ পুনর্মিলনীতে অংশ নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মঈনুদ্দিন খান, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মজিবউদ্দিন আহমেদ, একাউন্টিং বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল হাকিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ, পুনর্মিলনী আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বক্তব্য দেন।