বিশেষ খবর



Upcoming Event

আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে পরিমার্জিত বই

ক্যাম্পাস ডেস্ক শিক্ষা সংবাদ
img

সম্প্রতি মাধ্যমিক স্তরের ছয়টি বিষয়ের পাঠ্যবই পরিমার্জন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিলেন দেশের শিক্ষাবিদরা। সচিবালয়ে এ অনুষ্ঠানে তারা নবম-দশম শ্রেণির গণিত, উচ্চতর গণিত, বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও জীব বিজ্ঞানের পরিমার্জিত বই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের হাতে তুলে দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীদের হাতে পরিমার্জিত বই তুলে দেয়া হবে। এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এমসিকিউ তুলে দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদসহ পাঠ্যবই পরিমার্জন কমিটির সদস্যরা নতুন ছয়টি পরিমার্জিত পাঠ্যবই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জমা দেন। এর আগে পাঁচটি অর্থাৎ বাংলা সাহিত্য, ইংলিশ ফর টুডে, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, বাংলাদেশ ও বিশ্ব সভ্যতা এবং অর্থনীতির পরিমার্জিত বই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করেছিলেন শিক্ষাবিদরা। এ নিয়ে পরিমার্জিত বইয়ের সংখ্যা হলো ১১টি। শীঘ্রই হিসাববিজ্ঞানের পরিমার্জিত বই পাওয়া যাবে জানান শিক্ষামন্ত্রী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটির সমন্বয়ক চৌধুরী মুফাদ আহমদ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা প্রমুখ।
শিক্ষাবিদদের সুপারিশের ভিত্তিতেই মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা করে পাঠ্যপুস্তক আরও সুখপাঠ্য, আকর্ষণীয় ও সহজ করতে গত ৮ জানুয়ারি দু’টি কমিটি করেছিল সরকার। একটি কমিটিকে ২০১২ সালের পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা করে পাঠ্যবই আরও পাঠযোগ্য করার সুপারিশ এবং আরেক কমিটিকে নবম-দশম শ্রেণির কয়েকটি বই পরিমার্জন করে সুখপাঠ্য, আকর্ষণীয় ও সহজ করার দায়িত্ব দেয়া হয়। মাধ্যমিক স্তরের পরিমার্জন হওয়া ১১টি বই হাতে পাওয়ার কথা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে মাধ্যমিকের অন্যান্য শ্রেণির বইগুলোও পরিমার্জন করা হবে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমি সাহস করে ছয়টি বই পরিমার্জনের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। এখন এগুলো যারা ছাপাবে, তাদের হাতে ধরিয়ে দেয়া যাবে। পেইজ মেকিং কিংবা আর কিচ্ছু করতে হবে না। কিছু অনুরোধ ছিল যে বইগুলো রঙিন করতে হবে। উনারা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) অনুমোদন দিয়েছেন, এজন্য হয়তো তাদের কিছু বেশি ফান্ড লেগেছে। বলেছিলাম বিজ্ঞানের কিছু বিষয় আছে, সেগুলো ব্যাখ্যা করতে কিছু জায়গা বেশি দিতে হয়, কাজেই বইয়ের সাইজ বড় হতে পারে। উনারা আমাদের সেই ফ্রিডম দিয়েছেন।
অধ্যাপক জাফর ইকবাল আরও বলেন, একটা ছেলে বা একটা মেয়ে বইটা হাতে নিলে তার মনটা ভাল হয়ে যায় যে, আহ কী সুন্দর বই! এটা আমার সারা জীবনের স্বপ্ন ছিল। আমার স্বপ্নটা নিজে নিজে করতে পারতাম না, যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বাধীনতাটা না দিত। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি যাতে এটা নির্ভুল হয়। (বই) হাতে তুলে দিলে তাদের (শিক্ষার্থী) মনটা ভাল হয়ে যায়, তাহলে আমাদের পরিশ্রমটা সার্থক হয়েছে। আমরা পরিশ্রমের কোনো ঘাটতি করিনি। গত ১০ মাস আমি কোনো দিন রাত ২টার আগে ঘুমাইনি। অধ্যাপক কায়কোবাদ বলেন, শিক্ষার মান উন্নত করতে চাইলে খুব ভাল মানের পাঠ্যপুস্তক করতে হবে। ভালমানের পাঠ্যপুস্তক প্রণিত হলে অবশ্যই শিক্ষার মান ভাল হবে।
এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন বলেছেন, এবারের যে কাজটি করা হয়েছে তা অনেক বড়। আমার মনে হয় সেটি সকল মহলে প্রশংসিত হবে এবং আমাদের ছাত্ররা উপকৃত হবে। এ সময় সচিব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) তুলে দেয়ার পক্ষে নিজের মত দেন। শিক্ষা সচিব বলেন, এমসিকিউটা বোধহয় পরিপূর্ণভাবে উঠিয়ে দেয়া উচিত, এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আমরা নিশ্চয়ই আগামীতে আপনাদের (শিক্ষাবিদ) সঙ্গে বসব।
উল্লেখ্য, এবার থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশ থেকে ১০ নম্বর কমিয়ে তা সৃজনশীল অংশে যোগ করা হয়েছে। ফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষা শুরুর পর প্রথমেই নেয়া হচ্ছে এমসিকিউ অংশের পরীক্ষা। পরে নেয়া হচ্ছে লিখিত অংশ। সচিব বলেন, আমাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ে সমালোচনা হয়, আমরা জবাব দিতে পারি না। যেমন ধরুন- আমাদের প্রশ্নপত্র নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়, কেউ কেউ এমনও লিখেছেন মন্ত্রী, সচিব, উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন আউট করে দিচ্ছেন। বোর্ডের চেয়ারম্যানেরও প্রশ্নপত্র দেখার সুযোগ থাকে না জানিয়ে বলেন, শিক্ষকরাই প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকেন। পরীক্ষার হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পরীক্ষা নেয়া যায় কি না- সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। এতেও শিক্ষাবিদদের সহযোগিতা নিতে হবে।
এমসিকিউ প্রশ্ন তুলে দেয়ার পক্ষে মত দিয়ে তিনি আরও বলেন, বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষককে যে কোনো উপায়ে কনভিন্স করে ওই কক্ষের সমস্ত ছাত্রছাত্রী যেন ত্রিশ মার্কস পেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। একজনকে বলে দিচ্ছেন তিনি আবার পাস করে দিচ্ছেন। এটা অর্থের বিনিময়ে হচ্ছে বলে আমাদের কাছে রিপোর্ট আসছে। রাজধানীর রাজউক কলেজে লিখিত ও এমসিকিউয়ের নম্বরের কথা উল্লেখ করে সচিব বলেন, সেখানকার ১০ জন ছাত্র ফেল করেছে, কারণ তারা এমসিকিউতে ৭-৮ পেয়েছে। তারা অভিযোগ করে বলেছে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষক তাদের খাতা নিয়ে গেছে। নিশ্চিয় কোনো কারণ ছিল নইলে খাতা নিয়ে গেল কেন? এরপরেও ঢাকা বোর্ডকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি যে, তারা কী ৩০ নম্বরের উত্তর দিয়ে ৮ পেয়েছে, নাকি ১০ নম্বরের উত্তর দিয়ে ৮ পেয়েছে।
শিক্ষা আইনের খসড়া শীঘ্রই মন্ত্রিসভায় তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সচিব সোহরাব হোসাইন। তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, প্রায় ছয় বছর ধরে শিক্ষা আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। যে আইনের অভাবে আমরা অনেক কিছু করতে পারি না, সেটি বোধহয় মন্ত্রিসভায় তোলার জন্য মোটামুটি রেডি হয়ে গেছে। খুব কঠিন কঠিন কিছু বিষয় আছে সেখানে, আপনাদের সাহায্য লাগবে, আপনাদের লেখালেখিতেও সাহায্য লাগবে। বেশ কঠিন কিছু বিষয় আছে, যেটা অনেক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য আমরা সকল মহলের মতামত, সকলের সমর্থন, সবকিছু নেয়ার চেষ্টা করেছি। সেগুলো মন্ত্রিসভারও বিভিন্ন সদস্য অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখবেন, কারণ বিষয়টি সবাইকে স্পর্শ করবে।


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img