॥ পূর্ব প্রকাশিতের পর -৩২ ॥
॥পর্ব ২॥
ফোন-ফ্রেন্ড-ফেসবুক
অপরাধ করে স্বাস্থ্যহানি ও আয়ুক্ষয়
অ-প-রা-ধ এমনই এক নির্মম বিষয়, যার বাহ্যিক ক্ষতি ও শাস্তি যতটা হয়, তারচে’ ঢের বেশি ক্ষয় হয় অন্তর্জগতে। বাহ্যিক ক্ষতির মোকাবেলায় অধিকাংশ মানুষ প্রয়াসী হয় সে অপরাধ ঢেকে রাখতে, তৈরি করে নানা অজুহাত-ওজর-আপত্তি; এমনকি নিজের করা অপরাধ অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়। আবার কখনো-সখনো ধরাশায়ী হলে বা কোনো শাস্তি পেলে তাতে হয়ত বাহ্যিক ক্ষতিপূরণ হয়; কিন্তু অন্তরের গভীরে প্রোথিত অন্তর্জ্বালা তথা অপরাধবোধ ও পিছুটান চলতে থাকে নিরবধি।
ব্রেনে খোদাই হয়ে যাওয়া অপরাধের রেকর্ডতো সহজে মুছে ফেলা যায় না! তাই নিজের অজান্তেই অন্তর্জগতে সুপ্তভাবে চলতে থাকা প্রায়শ্চিত্তের প্রক্রিয়ায় হৃদয় ও মস্তিষ্কে ঘটে ছন্দপতন, দেখা দেয় স্বাস্থ্যহানি, তৈরি হয় অসুখ-বিসুখ। যে অসুখের কারণইতো উদঘাটিত হয় না, প্রেসক্রাইবড হবে কীসের ভিত্তিতে তাই এ রোগের উপশমে ব্যর্থ হন ডাক্তার-বৈদ্যও। প্রেসক্রিপশনবিহীন অবিরাম চিকিৎসার এ পর্বে স্বজনরা বলে বেড়ান, ওর অসুখের কোনো কারণ ও প্রতিকার খুঁজে পাচ্ছেন না ডাক্তাররা...।
এভাবে অদৃশ্য তুষের আগুনে জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয় অপরাধীর জীবন-যৌবন, ক্রমহ্রাসমান হয় আয়ুষ্কাল। অথচ নিরপরাধের জীবনতরী সুস্থ ও স্বাভাবিক পথে বয়ে চলে নিরবধি। সুস্থ ও ব্যালেন্সড সেই জীবনতরী পৌঁছে যায় গন্তব্যে, এমনকি পদার্পণ হয় গৌরবোজ্জ্বল শতবর্ষেও।
অপরাধের পরিণতি সম্পর্কে উক্ত ধারণা আমার একান্ত নিজস্ব, যা প্রিয় পাঠকের সাথে শেয়ার করলাম। আর সুউন্নত দেশের অত্যাধুনিক বিজ্ঞান-ল্যাবরেটরিতে ৫০ বছর ধরে ঝানু গবেষকদের গবেষণার ফলাফল?
কার্ডিফ ও টেক্সাস ইউনিভার্সিটির গবেষকগণ লন্ডনে বসবাসকারী ৪০০ পুরুষের ওপর দীর্ঘমেয়াদি এক গবেষণা পরিচালনা করেছেন। গবেষণাটি শুরু হয় ১৯৬১ সালে, যখন ঐ পুরুষদের বয়স ছিল ৮/৯ বছর। অপরাধ করছে এবং অপরাধ করছে না এমন দু’ধরনের মানুষের ওপর তখন থেকেই শুরু হয় পর্যবেক্ষণ। তাদের ওপর ধারাবাহিকভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখা গেছে যারা অপরাধ করছে, টিনএজে তাদের স্বাস্থ্য অপরাধ না করাদের চেয়ে বেশ ভালো রয়েছে। কিন্তু ৪৮ বছরে পৌঁছার পর ব্যাপারটি উল্টে গেছে। দেখা গেছে, অপরাধ করা ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য অপরাধ না করা ব্যক্তিদের তুলনায় অনেক খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। অন্যদিকে যথেষ্টই শান্ত ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে অপরাধ না করা ব্যক্তিদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো প্রমাণিত হয়।
এ থেকে বোঝা যাচ্ছে অপরাধ করার পরিণতি শুধু তাৎক্ষণিক খারাপ ঘটনা ঘটানোতেই সীমাবদ্ধ থাকে না, অপরাধ সংঘটনকারীর ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে। ক্রিমিনাল বিহেভিয়ার এন্ড মেন্টাল হেলথ সাময়িকীতে এসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকদের মতে এ গবেষণা থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষের উচিত, টিনএজ বা শিশু-কিশোর অবস্থাতেই অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা। এতে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য স্বাস্থ্যহানিসহ আর্থিক-সামাজিক ও জাতীয় অন্যান্য ক্ষতি থেকে দেশ ও সমাজকে বাঁচানো সহজ হবে।
এতো গেল এ নগণ্যের কথা এবং গবেষকদের ৫০ বছরের গবেষণার ফল। এবার পাঠকের মতামত! কেউ কেউ হয়ত বলবেন অপরাধ করে স্বাস্থ্যহানি ও আয়ুক্ষয় সম্পর্কে নিশ্চিত হলাম; কিন্তু আমাদের মধ্যে যারা জেনে না জেনে, বুঝে না বুঝে, ইচ্ছায় অনিচ্ছায় ইতোমধ্যেই অনেক অনেক অন্যায় ও অপরাধ করে ফেলেছি তাদের কী হবে?
অপরাধের নিরব শাস্তি থেকে মুক্তির ইচ্ছা থাকলে তার উপায়ও আছে। কথায় বলে, যত মুশকিল তত আসান। অবুঝ-সবুজ শিশু-কিশোর বয়সে অপরাধে জড়িয়ে পড়া অস্বাভাবিক নয় কিন্তু। তবে অন্তরাত্মার মুক্তির লক্ষ্যে সে অপরাধবোধ কাটিয়ে নিজকে ঝঁঢ়বৎরড়ৎ যঁসধহ নবরহম তথা বিশেষ মানুষরূপে তৈরির অবারিত সুযোগও রয়েছে। কৃত অপরাধের অন্তর্দহন থেকে নিষ্কৃতি তথা আপন ভুবনের কারাবাস থেকে মুক্তির বিভিন্ন সমাধান ও কলাকৌশল জানতে প্রতি শনিবার বিকালে ক্যাম্পাস অডিটোরিয়ামে আসুন। অথবা ক্যাম্পাস’র নিজস্ব গবেষণায় প্রকাশিত এতদবিষয়ক সিডি সংগ্রহ করে বাড়িতে বসে শুনুন। এতে আপনি নিজেই আপনার ব্রেনকে আলফা লেভেলে নিয়ে তারপর নেতিবাচক ও দুঃখজনক অতীত বর্জনের টেকনিক (Disowning the negatives of past and planning for bright & successful future) প্রয়োগ করে নব উজ্জীবন ও উদ্দীপনায় দেহ-মনে ছন্দ তৈরি করে ভারসাম্যময় সফল ও সার্থক জীবনলাভ করতে পারেন।
আর পিছুটান নয়; ভুল করে ভুলে সৃষ্ট অপরাধের গ্লানি, হীনম্মন্যতা বা সংশয়-সন্দেহ নয়। আসুন, গতানুগতিকতা ও শম্বুক গতির পথ পরিহার করে মহাজাগতিক শক্তি বা ঝঢ়রৎরঃঁধষ ঢ়ড়বিৎ এ বলীয়ান হই এবং নিরোগ ও সুস্থ জীবনতরী বেয়ে ছুটে যাই দ্যুলোক ভূলোক গোলক ভেদিয়া..।
ফোনের অপেক্ষায় স্বাস্থ্যহানি
বর্তমান প্রযুক্তির যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থা এত সহজ যে, চাইলেই কাক্সিক্ষত মানুষের সাথে সংযোগ ঘটে যায়। আর এই যোগাযোগের কাজটি দ্রুত করে মোবাইল ফোন। কিন্তু কোনো ক্ষেত্রে যদি ফোনে কারও জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৬ মিনিটের বেশি, তাহলেই ঘটে যত বিপত্তি।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানান ফোনে কারুর জন্য অপেক্ষমাণ মানুষটি এমন এক পরিস্থিতিতে পড়ে, যা তার স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে ফোন করতে গিয়ে যদি কারুর ফোন লাইন পেতে অথবা কারুর ফোনের জন্যে ৫ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের বেশি অপেক্ষা করতে হয়, তবে অপেক্ষমাণ ব্যক্তির স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। গবেষকরা জানান জরুরি ফোন করতে গিয়ে যখন এভাবে অপেক্ষা করতে হয়, তখন সৃষ্ট বিরক্তি তার স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। বিলম্বের কারণে উদ্রেক হয় হতাশা আর অস্থিরতা। ফলে দেহে রক্তের চাপ অনেক বেড়ে যায়, শুরু হয় স্বাস্থ্যগত নানা বিপত্তি।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ রজার হেন্ডারসন বলেন এমন পরিস্থিতিতে অপেক্ষাকারীর হার্টবিট বাড়তে থাকে, শরীরে ঘাম ঝরে এবং প্রচ- মাথাব্যথা হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্বাস্থ্যের অবস্থা এতই খারাপের দিকে যাবে যে, অদূর ভবিষ্যতে দীর্ঘস্থায়ী কোনো মারাত্মক রোগের কবলেও পড়তে পারে। বিশেষ করে মাথাব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত জটিলতা এবং পাকস্থলীর সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
মোবাইল ফোনঃ স্বাস্থ্যনাশক বোমা;
মস্তিষ্কে টিউমার ও ক্যান্সারের কারণ
মাত্র ২৫ পয়সায় কথা বলুন সারারাত; কথা বলতেই থাকুন; কথা বলার উৎসবে মেতে উঠুন এরূপ লোভনীয় বা নেশাযুক্ত বিজ্ঞাপন-চমকে বিশ্বাসী ও নির্ভরশীল হয়ে বহু মানুষ বিশেষত তরুণ প্রজন্ম বখে যাচ্ছে। ছেলেতে-মেয়েতে এক অসুস্থ সম্পর্ক তৈরি হয়ে তরুণ-তরুণীরা দিশেহারা ও সর্বহারা হয়ে পড়ছে। বাবা-মায়ের কোনো সেলফোন থাকুক বা না থাকুক একজন সন্তানের হাতে একাধিক ফোন; বিভিন্ন পকেটে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফোনসেট এবং ব্যাগে ব্যাগে বিভিন্ন অপারেটরের নানা সিমকার্ড নিয়ে ঘুরে ঘুরে এখন তারা হয়ে পড়ছে উ™£ান্ত ও ভবঘুরে।
সেলফোন ও সিমকার্ডের এ অসুস্থ নেশা থেকে তরুণ প্রজন্মকে উদ্ধারের এমনকি সচেতন-সতর্ক করার কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। কল্যাণকামী কিছু অভিভাবকের টিজিং-বিরোধী আন্দোলনের জন্য তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু টিজিংয়ের মূলোৎপাটন তথা ছাত্র-যুব সমাজের অবক্ষয় রোধে তাদের দূরদর্শিতার অভাব দেখে হতাশা জাগে। আর অধিকাংশ অভিভাবকেরতো লেশমাত্র দায় নেই ছাত্র-যুব সমাজের প্রতি।
সেলফোন ব্যবসা করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো এদেশ থেকে বছরে কত টাকা যে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে, সেই হিসাব সরকার এবং অর্থ-কড়ি নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের কাছেই থাকার কথা। আমি কেবল ভাবছি দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ বংশধরদের বিভ্রান্তি ও পাগলামির পরিণাম-ফল নিয়ে।
সেলফোন কোম্পানির ‘ইব ঈড়হহবপঃবফ’ বিজ্ঞাপন-আহ্বানে সাড়া দিয়ে তথা আফিমরূপী নেশার ঘোরে পড়ে নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধ থেকে উরংপড়হহবপঃবফ হয়ে পড়ছে এদেশের ছাত্র-ছাত্রী, যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণীরা। এতে পারস্পরিক অস্বাভাবিক ও অনৈতিক সম্পর্কের ভয়াবহতার পাশাপাশি তাদের নিজ নিজ স্বাস্থ্যহানির ভয়াবহতাও কম নয়। ‘সারাদিন-সারারাত’ মোবাইল ফোনে কথা বলার পরিণামের বিষয়ে আমার উক্ত মতামতের সাথে যারা দ্বিমত করবেন, তাদের সাথে বিতর্কে না গিয়ে মোবাইল ফোনে অত্যধিক কথা বলায় স্বাস্থ্যহানিও যে অনিবার্য, সে প্রসঙ্গেই শুধু থাকি। ...এবং তা কিন্তু আমার নিজের কথা নয়, এমনকি ভবের হাটের কথাও নয়; খোদ যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীদের গবেষণা-ফলের কথা।
স্বাস্থ্যের ওপর মোবাইল ফোনের প্রভাব নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। অনেক গবেষণায়ই বেরিয়ে এসেছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে শরীরের ওপর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাবের কথা।
বিজ্ঞানীরা মোবাইল ফোনকে তুলনা করেছেন টাইম বোমার সঙ্গে। তাদের ভাষায়, মোবাইল ফোন হলো ‘হেলথ টাইম বোমা’ বা ‘স্বাস্থ্যনাশক সময় নিয়ন্ত্রিত বোমা’। বিজ্ঞানীরা তাই প্রযুক্তির এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের জন্য জনসাধারণকে সতর্ক করার ব্যাপারে বিভিন্ন দেশের সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীরা প্রায় ২০০টি গবেষণায় মোবাইল ফোনকে মস্তিষ্কের টিউমার ও ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। অন্যদিকে ব্রাজিলের সাও পাওলো ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা জানান মোবাইল ফোনের ব্যবহার মানুষের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।
ডেইলি মেইলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিজ্ঞানীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, সরকারগুলো এই ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যার ব্যাপারে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা বলেন, মোবাইল ফোনের কারণে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে শিশুরা।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সিগারেটের মোড়কে যেমন স্বাস্থ্য সমস্যার কথা লেখা থাকে, ঠিক তেমনি মোবাইল ফোনের গায়ে কিংবা দোকানে ‘মোবাইল ফোন ব্যবহারঃ স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’ এ ধরনের সেøাগান লেখা উচিত।
স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে যুক্তরাজ্য সরকার এরই মধ্যে ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলছেন, মানব ভ্রূণের ওপর মোবাইল ফোনের তরঙ্গের ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে; গর্ভাবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের ব্যাপারেও তাই সীমা বেঁধে দেয়া উচিত।
কলিগের বকবকানিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি
কর্মক্ষেত্রে আপনার পাশের আসনে বসা সহকর্মী কি ব্যক্তিগত কিংবা অফিসের কর্মকর্তাদের ব্যাপারে বা রাজনীতি নিয়ে খুব বকবক করেন? আপনার সামনেই আঙুল নাচিয়ে, কাঁধ ঝাঁকিয়ে, ঠোঁট বাঁকিয়ে বা কপালে চোখ তুলে হতাশা প্রকাশ করেন? এই প্রশ্নের উত্তর যদি হয় হ্যাঁ, তাহলে আপনি নির্ঘাত স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। কারণ এক সহকর্মীর মানসিক চাপ ও হতাশা অফিসের অন্য সহকর্মীদের মাঝে সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়ায়। মানসিক চাপ সংক্রমণের এই ঝুঁকি নারীদের ক্ষেত্রে বেশি। যুক্তরাজ্যের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজির অধ্যাপক ইলাইন হাটফিল্ড পরিচালিত মনোসমীক্ষা বিষয়ক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে।
প্রফেসর হাটফিল্ড বলেন মানুষের নেতিবাচক আচরণ ও হতাশার কুপ্রভাব সংক্রামক ব্যাধি সর্দি-কাশির মতোই দ্রুত ছড়ায়। সহকর্মীর বাজে আচরণ, হতাশা ও মনঃস্তাপ তার কাছের মানুষটিকে প্রথম ভাবিয়ে তোলে এবং চিন্তিত করে, যা ক্রমশ মানসিক চাপ বা হাইপারটেনশনে পরিণত হয়। এ কাজটি হয় খুব সূক্ষ্মভাবে; কোনো প্রকার জানান না দিয়েই। এ কারণে যুক্তরাজ্যের কর্মক্ষেত্রগুলোতে চাকরিজীবীদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
অফিস-কর্মীদের এই মানসিক চাপের সমস্যাকে ‘দ্য ব্ল্যাক ডেথ অব টুয়েনটি ফার্স্ট সেঞ্চুরি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাজ্যের গবেষণা প্রতিষ্ঠান চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব পার্সোনেল। দেশটিতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের নিয়োগকর্তারা কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপজনিত এই স্বাস্থ্যঝুঁকি কীভাবে সহনীয় স্তরে রাখা যায় বা কমানো যায়, তা নিয়ে চিন্তা শুরু করেছেন।
উল্লেখ্য, এই গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের সঙ্গে ব্রিটেনের বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানীরা ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন।
চলবে।