ক্লাস ওয়ানে ভর্তি পরীক্ষার কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন -যখনই একটি শিশুর ভর্তির বয়স হয়ে যাবে, সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্কুলে ভর্তি করাতে হবে। এটা তার অধিকার। যে শিশুটি ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হবে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে তাকে ভর্তি হতে হবে কেন! ।
রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, শিশু যদি ছাপানো প্রশ্নপত্র পড়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার মতো জ্ঞানই অর্জন করে ফেলে, শিশুকে যদি লিখতে পড়তে শিখেই স্কুলে ভর্তি হতে হয়, তাহলে আর স্কুলে পড়াবে কি?
শিশুদের ওপর বই এবং পড়াশোনাকে বোঝা হিসেবে চাপিয়ে না দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বইয়ের বোঝা, তেমন পড়ার বোঝা এবং হোমওয়ার্ক। এতো বেশি হোমওয়ার্ক দেয়া হয় যে, যেদিন স্কুলে ঢুকলো তার পর দিনই স্কুল সম্পর্কে শিশুদের ভীতি সৃষ্টি হয়ে যায়। এ বিষয়টাও একটু দেখা দরকার।
একটা বাচ্চা ৫ বছর বয়সে স্কুলে গেলো, তখনই তাকে সব বিদ্যা শিক্ষা দিতে হবে তা নয়।
শিশুদের যেন পড়াশোনার প্রতি অনিহা সৃষ্টি না হয় বিষয়টি খেয়াল রাখার কথা বলে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাচ্চারা তাড়াতাড়ি শেখে। কিন্তু আগেই যদি বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়, তাহলে ধীরে ধীরে পড়াশোনার প্রতি একটা অনীহা সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে।
এলাকাভিত্তিক সরকারি স্কুল করার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত ও ১৬ কোটি মানুষকে মানবসম্পদে রূপান্তরের মাধ্যমে মানবপুঁজি হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সংশ্লিষ্টদের তিনি বলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন-২০১৪ এর আলোকে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করুন, ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করুন। আপনাদের সকল কাজে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সর্বোচ্চ সমর্থন ও সহযোগিতার দ্বার অবারিত থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ে তোলা। জাতির পিতা বিশ্বাস করতেন, একটি শিক্ষিত প্রজন্ম ছাড়া সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক রুহুল আমিন সরকার, ঢাকায় ইউনেস্কোর আবাসিক প্রতিনিধি বিয়াট্রিস কালডুন প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মেছবাহ উল আলম।