বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি প্রতিনিধিত্বকারী নয়টি দেশের শিক্ষা ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রীদের ই-নাইন ফোরামের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
দায়িত্ব পাওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এটা বাড়তি চাপ, এই চাপটা নিতেই হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার গুণগত মান অর্জনের ওপর জোর দিতে হবে।
সম্প্রতি রাজধানীর রেডিসন ব্লুুতে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ই-নাইন ফোরামের প্রথমদিনে একটি সেশন শেষে শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ এ কথা জানান।
‘মিনিস্টেরিয়াল প্যানেল: প্রায়োরিটিজ অ্যান্ড পারসপেকটিভস অন এডুকেশন-২০৩০’ সেশনে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী।
ই-নাইন ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি এই নয়টি দেশে। আবার এসব দেশেই অ্যাডাল্ট লিটারেসি সবচেয়ে কম। এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে ই-নাইন ফোরাম গঠিত হয়। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পর নাহিদ বলেন, বাংলাদেশ এখন চেয়্যারম্যান। এটা আমাদের সম্মানের বিষয়। চেয়ারম্যান পদ পাওয়াটা দেশের জনগণ এবং বাংলাদেশের জন্য সাফল্য। আমরা মনে করি, আমাদের এখন অনেক কাজ।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ওপর ই-নাইন দেশগুলোর যে আস্থা, তা রক্ষা করতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যেন আস্থার সঙ্গে চলতে পারি, এটাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য।
নাহিদ বলেন, সদস্য দেশগুলোর সাধারণ সমস্যাগুলোর বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বাড়তি চাপটা নিতেই হবে। আমাদের জোর দিতে হবে কোয়ালিটির দিকে, নারী শিক্ষার সমতার দিকে। সদস্য দেশগুলোকে নিয়ে এগোলে সবাই লাভবান হবো, বাংলাদেশ আরও বেশি লাভবান হবে।
তিনি বলেন, সব দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ কোয়ালিটি এডুকেশন। সেটার ওপর আমাদের জোর দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষক।
ইউনেস্কোর এডুকেশন ফর অল কর্মসূচির আওতায় গঠিত ‘ই-নাইন ফোরাম’র সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ব্রাজিল, চীন, মিশর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া ও পাকিস্তান। অন্য দেশগুলোর শিক্ষা ও উন্নয়ন মন্ত্রীরা অংশ নিলেও আসেনি মেক্সিকোর প্রতিনিধি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে লক্ষ্যে কাজ করবে ই-নাইনভুক্ত নয় রাষ্ট্র। আগামী দুই বছর এর নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কোর শিক্ষাবিষয়ক একটি বড় কার্যক্রম ই-৯। আগামী দুই বছর এর নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যমাত্রায় বাংলাদেশসহ ই-৯ ভুক্ত দেশগুলোকে এগিয়ে যেতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী শিক্ষায় বাজেট বাড়ানোর জন্য আমরা একটি প্রস্তাবনা দিয়েছি। তবে ই-নাইন প্রকল্পের জন্য আলাদা কোনো বাজেট দরকার হবে না। পাশাপাশি ইউনেস্কো এ বিষয়ে সার্বিক সহায়তা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। ই-নাইনভুক্ত দেশসমূহে ৭০ শতাংশ বয়ষ্ক নিরক্ষর জনগোষ্ঠী। এই চ্যালেঞ্জকে সামনে নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব।
ইউনেস্কোর সহকারি পরিচালক কিয়ান তান বলেন, শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। শিক্ষাক্ষেত্র বাংলাদেশের অর্জন অন্য দেশের জন্য অনুসরণীয়। এই অধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে অধিক জনসংখ্যাভুক্ত নয়টি দেশকে ই-নাইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব দেশে উন্নত শিক্ষা প্রদানে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে সকল সহায়তা অব্যাহত থাকবে।