বিশেষ খবর



Upcoming Event

প্রশ্ন প্রণয়ন ও বণ্টন সবই হবে ডিজিটাল

ক্যাম্পাস ডেস্ক শিক্ষা সংবাদ

বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ বেশ পুরনো। অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে একাধিকবার। তাই ফাঁস ঠেকাতে এবার পুরো প্রশ্ন প্রণয়ন পদ্ধতিই বদলে ফেলছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাক-প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। আগে নয়, প্রশ্ন ছাপানো হবে পরীক্ষার দিন সকালে। নিয়োগ পরীক্ষায় এ পদ্ধতি সফল হলে প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) পরীক্ষায়ও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।
২০১৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৭ জেলার পরীক্ষা বাতিল করেছিল মন্ত্রণালয়। ২০১০ সালে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায়ও প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পেয়েছিল মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া গত বছরের পিএসসি’র প্রায় প্রতিটি পরীক্ষায়ই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ছিল। ২০১৩ সালের পিএসসি পরীক্ষায় দুটি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পায় মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। তারা বাংলা বিষয়ের ৫৩ শতাংশ এবং ইংরেজির ৮০ শতাংশ প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করে।
গত ডিসেম্বরে পিএসসিতে যখন প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে, তখনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিকল্প ভাবনা শুরু করে। তারা বিজি প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে সনাতন উপায়ে প্রশ্ন বণ্টন পদ্ধতি বাদ দিয়ে নতুন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করে। শেষে ঠিক হয়, নতুন পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়ন করা হবে। ইতোমধ্যেই বুয়েট থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়নের জন্য একটি সফটওয়্যারও তৈরি করে নেয়া হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে বসানো হয়েছে একটি সার্ভার। ৯ থেকে ১০ এপ্রিল ৬৪ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা), জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের একজন করে কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে ঢাকায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, ‘এবার সবই হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে।
পরীক্ষার দিনই প্রশ্ন ছাপা হবে। এ জন্য আগে সকাল ১০টায় নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হলেও এখন থেকে তা শুরু হবে বিকেল ৩টায়। আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আমরা সফলভাবে শেষ করতে পারলে পিএসসিতেও এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছি।’ মন্ত্রণালয়ের এই অতিরিক্ত সচিব আরো বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই একটি প্রশ্ন ব্যাংক তৈরি করেছি। সেখান থেকে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ৮০টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন বাছাই করা হবে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এ প্রশ্নগুলো নিয়ে ৯টি সেট করা হবে। পুরো কাজ সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এরপর পরীক্ষার দিন সকালে একটি সেট মেইলের মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে নির্ধারিত কমিটির কাছে পাঠানো হবে। তা ডাউনলোড করার জন্য পাসওয়ার্ড লাগবে। পাসওয়ার্ড দুটি ভাগ করে দুজনের কাছে পাঠানো হবে।
শুধু ডাউনলোড করলেই হবে না ফন্ট বোঝার জন্যও আলাদা একটি সফটওয়্যার লাগবে, যা ওই পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে খুলতে হবে। এরপর প্রশ্ন ফটোকপি করে দুপুর ২টার মধ্যে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। পরীক্ষার দিন ওই এলাকার সব ফটোকপির দোকান বন্ধ রাখা হবে।’
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, একটি পাসওয়ার্ডকে দুই ভাগে ভাগ করে পরীক্ষার দিন সকাল ৯টায় ডিসি ও শিক্ষা কর্মকর্তার মোবাইলে পাঠানো হবে। পাসওয়ার্ডের এ দুই অংশকে এক করে প্রশ্ন ডাউনলোড করতে হবে। শুধু একবারই প্রশ্ন ডাউনলোড করা যাবে। কোনো জেলায় প্রশ্ন ডাউনলোড হলে মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসেই জানা যাবে। আর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সার্ভারেও সংকেত আসবে।
সব জেলায় ডাউনলোড শেষ হয়ে গেলে সার্ভার বন্ধ হয়ে যাবে। ডাউনলোড করা ফাইল বিশেষ সফটওয়্যার ছাড়া খোলা যাবে না। পরীক্ষার আগের রাতে ওই সফটওয়্যার ডিসি অফিসে পাঠানো হবে। এরপর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এক কপি প্রশ্ন প্রিন্ট করে তা ফটোকপি করা হবে।
এবারের প্রাক প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আড়াই লাখ প্রার্থী অংশ নেবেন। পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় প্রায় ৩০ লাখ পরীক্ষার্থী। প্রাক প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হচ্ছে জেলা শহরে, আর পিএসসি পরীক্ষা ইউনিয়ন পর্যায়েও নেওয়া হয়।
সে ক্ষেত্রে পিএসসি’র মতো এত বিপুলসংখ্যক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা এই পদ্ধতিতে নেয়া সম্ভব হবে কি না- এ ব্যাপারে জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা যদি এবারের নিয়োগ পরীক্ষায় সফল হই তা হলে পিএসসিতেও একই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে পারব। কারণ, আমাদের অধিকাংশ স্কুলেই মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম রয়েছে। যেসব স্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্র সে সব স্কুল তুলনামূলকভাবে উন্নত। এখন ডিসি অফিস প্রশ্ন প্রণয়নের কেন্দ্রবিন্দু হলেও তখন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে এ প্রশ্ন প্রণয়ন করা যেতে পারে।’
ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়নের প্রশিক্ষণ পাওয়া পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, ‘আমরা প্রশিক্ষণ পেয়েছি, হাতে-কলমে শেখানো হয়েছে। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না, সঠিকভাবেই নিয়োগ পরীক্ষা শেষ করতে পারব।’


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img