বিশেষ খবর



Upcoming Event

স্বাস্থ্যজয়ে বৈজ্ঞানিক বহু আবিষ্কার নো টেনশন, ডু ফুর্তি -৪১

ক্যাম্পাস ডেস্ক বিশেষ নিবন্ধ

॥ পূর্ব প্রকাশিতের পর -৪১ ॥
আসছে ভার্চুয়াল চিকিৎসা
মানসিক চাপের কারণে অনেক রোগীর অবস্থার বেশ অবনতি হয়ে থাকে। এ ধরনের চাপের শিকার রোগীদের মধ্যে শিশুরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কানাডার গবেষকরা বলছেন, কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে থাকা রোগীদের সহায়তা দিতে এক ধরনের ভার্চুয়াল জগৎ তৈরির পরিকল্পনা করছেন তারা; যেখানে রং-বেরংয়ের ‘পরী’ রোগীদের সঙ্গে হাসবে, খেলবে, সেবা দেবে। মন্ট্রিলের সেন্ট-জাস্টিন হসপিটাল এবং সোসাইটি ফর আর্টস এন্ড টেকনোলজির গবেষকরা সম্মিলিতভাবে এ ভার্চুয়াল জগৎ তৈরির চেষ্টা করছেন। গবেষক দলের সদস্য প্যাট্রিক ড্যুব জানিয়েছেন, মানুষের অনুভূতির ব্যাপারটি বেশ বিচিত্র। ব্যথার অনুভূতির সঙ্গে মানুষের চিন্তা-চেতনার ধরনের একটি মিল রয়েছে। আগুনে পুড়ে আহত হওয়া একটি শিশুর চারপাশে যদি প্রযুক্তির সাহায্যে দৃষ্টিবিভ্রম ঘটিয়ে এমন দেখানো যায় যে সে একটি বরফের গাদার মধ্যে রয়েছে, তবে তার প্রদাহের অনুভূতি কমে আসবে।
আবার হাসপাতালের বিছানায় থাকা একটি অসুস্থ শিশুর চারপাশের দেয়ালে যদি তার বাসায় নিজের ঘরের দেয়ালের চিত্র ফুটিয়ে তোলা যায়, তবে সে ভাববে সে এখনো নিজের বাসায়ই রয়েছে। এতে দুঃখবোধ কিছুটা কম হবে।
ফিরে পাবেন সব স্মৃতি
পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন আমরা যে অসংখ্য তথ্য-অভিজ্ঞতা-জ্ঞান লাভ করি, তার সবকিছুই জমা হয় মস্তিষ্কে। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে মস্তিষ্ক থেকে এর অধিকাংশই হারিয়ে যায়। এ নিয়ে মানুষের আফসোসের শেষ নেই। তবে বিশ্বের শীর্ষ ভবিষ্যবাদী বিজ্ঞানী রেমন্ড কার্জওয়েইল জানিয়েছেন, মাত্র ২০ বছরের মধ্যে স্মৃতি ফিরে পাওয়ার প্রযুক্তি আবিষ্কার করা সম্ভব হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী কার্জওয়েইল জানান, স্মৃতি রক্ষা বা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য বিশ্বে এ মুহূর্তে সম্ভাব্য অনেক প্রযুক্তিই বিদ্যমান। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে আমরা এমন সব ন্যানোরোবটিক কম্পিউটার আবিষ্কার করে মানুষের রক্তে স্থাপন করতে পারব, যা আমাদের শরীরের অনেক রোগের উপশম করতে পারবে। এ প্রযুক্তি আমাদের প্রাত্যহিক কাজকর্মের ক্ষমতা বাড়াবে এবং আমাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন উপাদান ব্যাকআপ করতেও সক্ষম হবে। এটি ঠিক কম্পিউটারের কোনো ফাইল ব্যাকআপের মতো কাজ করবে। অর্থাৎ হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি চিন্তা, প্রতিটি অভিজ্ঞতা এবং প্রতিটি জিনিস যা আমাদের আলাদা মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে, তা ফিরে পাওয়া যাবে।
স্মৃতির সন্ধানে
মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, মস্তিষ্কের যে কোষে স্মৃতি সংরক্ষণ করা থাকে তা আবিষ্কারের প্রান্তসীমায় তারা পৌঁছে গেছেন। এমনকি কোন্্ কোষ কী ধরনের স্মৃতি সংরক্ষণ করে এবং কতদিন তা সুরক্ষিত থাকে সেসব সমস্যার সমাধান তারা অচিরেই করতে পারবেন। বিজ্ঞানীরা একটি জিন খুঁজে পেয়েছেন, যা স্মৃতিকে সংরক্ষণ করে এবং এ জিন থেকে উৎসারিত বিশেষ রসায়ন স্মৃতিকে মস্তিষ্কের বিশেষ কোষে পৌঁছে দেয়। একক স্মৃতি সংরক্ষণে মস্তিষ্ক কোষ (নিউরন) বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, জ্ঞানের এ দিকটি বিশদভাবে উদঘাটিত হলে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার কারণ বা মস্তিষ্কের জটিল আচরণগুলো অনুধাবনে বিশেষ সাহায্য করবে। এমনকি স্মৃতির পরিবর্তন বা নতুন করে স্মৃতি তৈরি করার ক্ষেত্রে এ গবেষণা ব্যাপক সহায়ক হবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন।
চিন্তা নিয়ন্ত্রণের নয়া পদ্ধতি
মানবদেহ সত্যিই বিচিত্র এবং রহস্যময়। তবে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রহস্যময় হলো মস্তিষ্ক। রহস্যঘেরা এ মস্তিষ্ক নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণার অন্ত নেই। বিস্ময়কর হলেও সত্য, এবার তারা মানব মস্তিষ্কের তরঙ্গের গতিবিধি দিয়ে কম্পিউটার চালনা কিংবা কোনো বস্তুর নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করার কাজে সফল হয়েছেন! মজার ব্যাপার হলো আপনি যেমনটি ভাববেন, ঠিক সেভাবেই তাল মিলিয়ে একটি বস্তু বা জিনিস সহজেই এদিক-ওদিক নড়াচড়া করানো সম্ভব হবে। জার্মানীর টুবিনজেন ইউনিভার্সিটির স্নায়বীয় মনোবিজ্ঞানী নিলস বিরবাওম্যার মস্তিষ্কের তরঙ্গকে কাজে লাগিয়ে অসাধ্য এ কাজটি সম্ভব করেছেন। মানুষের মস্তিষ্ক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নানা বৈদ্যুতিক তরঙ্গ সৃষ্টি করে সেসবের মাধ্যমে চিন্তা, স্মৃতি, সচেতনতা এবং আবেগ-অনুভূতির প্রক্রিয়া চালায়। বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে মানুষের মাথার খুলির ওপর বহুমুখী ইলেকট্রোড লাগিয়ে ইলেকট্রো-এনসেফালোগ্রাফি অর্থাৎ ইইজি’র মাধ্যমে এসব তরঙ্গ-সংকেত ধরতে সক্ষম হয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, ধারণকৃত এসব সংকেতের মাত্রা বৃদ্ধি করে তা কম্পিউটারে পাঠিয়ে সেই ব্যক্তির ইচ্ছা পাঠ করতেও তারা সক্ষম হয়েছেন। এ পদ্ধতিটি ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) নামে পরিচিত। এ পদ্ধতিতে মানুষ স্বাভাবিক উপায়ে ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ না করে অর্থাৎ কথা না বলে কিংবা হাত-পা নাড়াচাড়া না করে শুধু চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমেই বাইরের জিনিস বা বিষয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে সম হচ্ছে। নিলস বিরবাওম্যার তার গবেষণায় থট ট্রানসেøশন ডিভাইস বা টিটিডি নামে একটি যান্ত্রিক কৌশল প্রয়োগ করেন। প্যারালাইজড হলে মানুষের অনুভূতি লোপ পায়। গবেষণায় তিনি প্যারালাইজড হওয়া অক্ষম রোগীর মাথার খুলির ওপর ইলেকট্রোডের টুপি পরিয়ে দেন। এর ফলে টিটিডি তার মস্তিষ্ক থেকে সেøা কর্টিক্যাল পটেনসিয়াল বা এসসিপি সংকেতগুলো ধরে নেয়। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইতোমধ্যে ৩ জন প্যারালাইজড রোগী সহজেই লিখতে পারছে!
আলঝেইমার শনাক্তকরণে নতুন দিশা
মানুষের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা জমা হয় মস্তিষ্কের স্মৃতিভান্ডারে। সেই স্মৃতিভান্ডার এলোমেলো হয়ে গেলে জীবনটাই অথর্ব হয়ে পড়ে। এমনই বিস্মরণ রোগের নাম আলঝেইমার। এই স্মৃতিখেকো ঘুণপোকা রোগটি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা সম্ভব হয়, তবে নতুন দিশা মিলতে পারে এর নিরাময় ব্যবস্থায়। জার্মানীর কিছু গবেষক এবার সেই সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছেন। আলঝেইমারে আক্রান্ত হওয়ার আগেই রোগটি দেখা দেয়ার সম্ভাবনা পরীক্ষা করতে পূর্বে টাও নামের একটি প্রোটিনের সাহায্য নেয়া হতো। জার্মানীর টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি মিউনিখের গবেষকরা এবার নতুন আরেকটি প্রোটিন আবিষ্কার করেছেন। সলিউবল এমাইলইড প্রিকার্সার প্রোটিনের বেটা (এসএপিপিবেটা) নামের নতুন এই প্রোটিনের সঙ্গে আগের প্রোটিনের সমন্বয় ঘটিয়ে গবেষকরা আলঝেইমার রোগটিকে কয়েক বছর আগেই শনাক্ত করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। নিউরোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে আলঝেইমার রোগটি প্রকাশ ঘটার আগেই সম্ভাব্য শনাক্তকরণের যেসব পরীক্ষা পদ্ধতি রয়েছে, তারমধ্যে নতুন এই পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি কার্যকর। গবেষকরা এখন ৮০ শতাংশ ঘটনায় বলতে পারছেন যে, কার আলঝেইমার হবে এবং কার হবে না।
অন্ধত্ব চিকিৎসায় নয়া দিগন্ত
দৃষ্টিহীন চোখে দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ চিকিৎসার নাম এমব্রায়ো স্টেম সেল থেরাপি অর্থাৎ চোখের ক্ষতিগ্রস্ত রেটিনায় ইনজেকশনের মাধ্যমে মানব ভ্রুণের কোষাণু প্রবেশ করিয়ে চিকিৎসা। যুক্তরাষ্ট্রে দু’জন এবং যুক্তরাজ্যে একজন রোগীর চোখে পরীক্ষামূলকভাবে এ থেরাপি দিয়ে ভালো ফল পাওয়া গেছে। এতে অন্ধত্ব চিকিৎসায় আশার আলো দেখছেন চক্ষু চিকিৎসকরা।
চশমার প্রয়োজন ফুরিয়ে যাচ্ছে
চোখের চিকিৎসায় এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। দূরের দৃষ্টি নিয়ে যাদের সমস্যা আছে, তাদের জন্য রয়েছে সুখবর। ব্রিটেনের চক্ষু চিকিৎসকরা এমন এক কৌশল উদ্ভাবন করেছেন, যার ফলে দূরের বা কাছের দৃষ্টিশক্তি নিয়ে যারা সমস্যায় আছেন, তারা এখন থেকে নির্ভাবনায় থাকতে পারেন; বহন করতে হবে না কোনো চশমা। নতুন কৌশলে চক্ষু বিজ্ঞানীরা সমস্যাগ্রস্ত চোখের কর্নিয়ায় একটি মাইক্রোস্কোপিক রিং পরিয়ে দেবেন। এ রিং পরানোর ফলে প্রতিফলিত আলো রেটিনা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে।
এক ইনজেকশনেই ঘুচবে অন্ধত্ব
দৃষ্টিহীনদের জন্য সুসংবাদ, শিগগিরই দৃষ্টিশক্তি ফেরানোর ইনজেকশন বাজারে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার একদল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, জন্মগত এবং বয়সের সঙ্গে সম্পর্কিত দৃষ্টিহীনতার চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে আবিষ্কৃত ইনজেকশনটি। এএকিউ নামক রাসায়নিক দিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। প্রধান গবেষক ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রিচার্ড ক্র্যামার বলেন, দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে ইলেকট্রনিক চিপ বা জিন থেরাপির পরিবর্তে নতুন চিকিৎসা পদ্ধতিটি ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া ইনজেকশনটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে যার যতটুকু পরিমাণ রাসায়নিক (এএকিউ) ব্যবহারের দরকার তাকে ততটুকুই দেয়া যাবে। আবার অন্যান্য থেরাপি পদ্ধতির সংমিশ্রণেও ইনজেকশনটি ব্যবহার করা যাবে।
টেলিভিশন রাখবে স্বাস্থ্যের খবর
প্রতিদিন সকালে উঠেই চুলোয় কেটলি চাপানো টেরি মুনরোর প্রথম কাজ। কেটলির পানি ফুটে ওঠার ফাঁকে তিনি বেশ কিছু কাজ সেরে নেন। রক্তের শর্করা, রক্তচাপ এবং ওজন পরিমাপ করেন। সেই হিসাব গিয়ে রেকর্ড হয় টেলিভিশনে। আর অভিজ্ঞ নার্সরা দূরে বসেও বিশেষ ব্যবস্থায় এসব তথ্য দেখে টেরিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। এভাবেই ৬৭ বছরের টেরি তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখছেন। টেরির মতো অনেকেই এখন টেলিহেলথ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ফুসফুসে সমস্যা, বাত ও বিষণœতার মতো রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে টেলিহেলথ অনেক বেশি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাজ্যের কেন্ট, কর্নওয়াল ও লন্ডন বরোহ অব নিউহ্যাম এর ৩ হাজারের বেশি রোগীকে পরীক্ষামূলক এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া রোগীকে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে আসতে হয় না। এতে তাদের সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়। এ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকার রোগীদেরও সহজেই চিকিৎসা করা যায়। এ পদ্ধতিতে রোগী রোগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পায় এবং তারা এ বিষয় নিয়ে অভিজ্ঞ হয়।
শ্রবণশক্তির জিন শনাক্ত
বিজ্ঞানীরা এমন এক জিন আবিষ্কার করেছেন, যেটি প্রাণিদেহে শ্রবণশক্তি সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। এফজিএফ ২০ নামের এ জিন শনাক্ত করা হয়েছে ইঁদুরের দেহে। দেখা গেছে এটি ইঁদুরের দেহ থেকে সরিয়ে নেয়ার পর প্রাণিটি সুস্থ আছে, তবে একদম শুনতে পায় না। এ জিন আবিষ্কারের ফলে শ্রবণশক্তি হারানো রোগীদের চিকিৎসার বিষয়ে গবেষণার আরও একধাপ অগ্রগতি ঘটল। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা বলছেন, নির্দিষ্ট কিছু কোষ অকার্যকর হয়ে পড়ার কারণে বৃদ্ধ বয়সে শ্রবণশক্তি হারানোসহ জিনগত বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়। ইঁদুরের দেহে শনাক্ত করা এ জিন মানবদেহেও আছে। একে কাজে লাগিয়ে শ্রবণশক্তি সৃষ্টিকারী নতুন কোষ মানবদেহে জন্মদান হয়ত সম্ভব হবে।
তোতলারাও কথা বলবে স্পষ্ট
এখন থেকে তোতলা ব্যক্তিরাও স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারবে। এ সুযোগ করে দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তারা মোবাইল ফোন আকারের বহনযোগ্য ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন। সহজে ব্যবহারযোগ্য ব্যাটারিচালিত এ ডিভাইসের সাহায্যে তোতলারা আগের তুলনায় স্পষ্ট কথা বলতে পারবে। মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রেগ স্নাইডারের দীর্ঘদিন ধরে তোতলামির সমস্যা। তিনি কথা বলার সময় এক ধরনের কম্পনের সৃষ্টি হতো এবং তা প্রতিধ্বনির মতো ফিরে আসত; ডিভাইসটির মাধ্যমে তার এ তোতলামি কমানো সম্ভব হয়েছে।
হৃদরোগ চিকিৎসায় নবযুগ
পরীক্ষাগারে কৃত্রিম রক্তনালি, শিরা ও ধমনি তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা ল্যাবরেটরিতে রক্তনালি তৈরির মূল তিনটি কোষ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে মানবদেহে স্ট্রোক, হার্ট এটাক এবং হৃদরোগে ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালি বা ধমনি চিকিৎসায় নবযুগের সূচনা হবে বলে দাবি করেছেন এ গবেষণা প্রকল্পে নিয়োজিত যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাক্তার সঞ্জয় সিনহা জানান আবিষ্কৃত রক্তনালি ব্যবহার করে স্ট্রোক, হার্ট এটাক এবং চর্বি জমে রক্তনালির ছিদ্র সরু হয়ে যাওয়া রোগের চিকিৎসা হবে। এ ধরনের রক্তনালি বাইপাস হার্ট সার্জারিতে ব্যবহার করা যাবে।
হৃদরোগ ঠেকাবে নাকের ড্রপ
ব্যথায় বুক চেপে ধরে আর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া নয়; হৃদরোগ ঠেকাতে মাত্র একটি নাকের ড্রপই যথেষ্ট। এ ড্রপ ধমনির চর্বি গলিয়ে মরণ ব্যাধিকে রুখে দেবে। হৃদরোগের কারণগুলোকে প্রতিরোধ করতে বেশ কয়েকবছর ধরে গবেষণা করছেন সুইডেনের লুনড ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক। তারা সম্প্রতি একটি ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন, যা নাটকীয়ভাবেই ধমনির চর্বি কাটিয়ে দেয়। ভ্যাকসিনটি ইনজেকশন বা নাকের স্প্রে হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। নতুন ভ্যাকসিন সম্পর্কে ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের মেডিকেল ডিরেক্টর প্রফেসর পিটার ওয়েইসবার্গ বলেন, এটি অনেক প্রতিশ্রুতিশীল।
টিকা ঠেকিয়ে রাখবে হৃদরোগ
বর্তমানে হৃদরোগের চিকিৎসা বলতে অস্ত্রোপচার বা নিয়মিত ঔষধ সেবন, আর ঝুঁকিতে থাকলে নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণ প্রচলিত আছে। তবে আশার বার্তা শুনিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এবার আগেভাগেই হৃদরোগ ঠেকিয়ে দেয়ার টিকা আবিষ্কার করছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের সেডারস-সিনাই হার্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক প্রিদিমান শাহ এবং সুইডেনের লুনড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নিলসনের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী এ টিকা আবিষ্কারের কাজ করছেন। গবেষকরা জানান, হৃদযন্ত্রের রক্তনালিতে চর্বি জমে সংকুচিত হয়ে গেলে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকি দেখা দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, বিকল্প রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থার মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের রক্তনালিতে চর্বি জমানোই ঠেকানো সম্ভব। শরীরে ইনজেকশন আকারে এন্টিবডি প্রয়োগ করলে তা হৃদযন্ত্রের রক্তনালিতে চর্বি জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করতে পারে। তাতে হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকিই তৈরি হবে না।
হার্ট এটাক আর হবে না
কোলেস্টেরলের মাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ত ২১টি জিন আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা। এটিকে হার্ট এটাক প্রতিরোধে যুগান্তকারী আবিষ্কার বলে মনে করছেন তারা। গবেষকদের দাবি তারা এমন ঔষধ আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন, যা কোলেস্টেরলের উচ্চমাত্রার কারণে সৃষ্ট হৃদরোগ প্রতিরোধ করবে। গবেষকরা এমন জিন আবিষ্কার করেছেন, যা মানুষের রক্তে পরিমিত ঘনত্ব ও অতিরিক্ত ঘনত্বের লিপোপ্রোটিনের জন্য দায়ী। শরীরে অতিরিক্ত ঘনত্বের লিপোপ্রোটিনের কারণে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল রক্তনালিতে গিয়ে জমাট বাঁধে, যা হার্ট এটাকের অন্যতম কারণ। গবেষকরা বলছেন, অতিরিক্ত ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন নিয়ন্ত্রণ করা গেলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল পরিবাহিত হয়ে রক্তনালিতে জমাট বাঁধতে পারবে না। আবিষ্কৃত জিন অনুযায়ী বিশেষ ঔষধ তৈরির মাধ্যমে অতিরিক্ত ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমানো সম্ভব।
প্রাকৃতিক পেসমেকার
যুক্তরাষ্ট্রের সেডারস-সিনাই হার্ট ইনস্টিটিউটের গবেষকরা এমন গবেষণা করেছেন যেন হৃৎপি- নিজে থেকেই তার স্পন্দনের অসামঞ্জস্য সারিয়ে তুলতে পারে। অর্থাৎ হৃৎপি- যেন নিজেই নিজের ভেতর একটি পেসমেকার তৈরি করে নিতে পারে। মানুষের হৃৎপি-ে থাকে কয়েকশ’ কোটি কোষ। তবে মাত্র হাজার দশেক কোষ (পেসমেকার কোষ) হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রিত হয় বৈদ্যুতিক সিগনালের মাধ্যমে। অসুখ বা বয়স বাড়ার কারণে অনেকের স্পন্দন অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে হৃৎপিন্ডে ব্যাটারিচালিত কৃত্রিম পেসমেকার স্থাপন করা হয়। কিন্তু এবার প্রাকৃতিক উপায়েই পেসমেকার তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা।
-চলবে।


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img