প্রেসিডেন্ট স্কাউট এওয়ার্ড ২০১৭ লাভ করে মেধাবী ও চৌকস স্কাউট মাহীর হেলাল। এটি স্কাউটিংয়ের সর্বোচ্চ এওয়ার্ড। ১৩ জুলাই ঢাকার ওসমানি মিলনায়তনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে এই এওয়ার্ড গ্রহণ করে মাহীর। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতি এডভোকেট মোঃ আবদুল হামিদ। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কাউটস এর প্রধান জাতীয় কমিশনার মোজাম্মেল হক খান, সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
প্রেসিডেন্ট এওয়ার্ড অর্জন করে মাহীর হেলাল তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলে আমি ২০১০ সাল থেকে স্কাউটিং আন্দোলনের সাথে যুক্ত। প্রথমে ছিলাম কাব-স্কাউট, তারপর ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে হলাম স্কাউট। এ বছর আমি প্রেসিডেন্ট স্কাউট এওয়ার্ড লাভ করেছি। এজন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। কারণ এটি একজন স্কাউটের জন্য সর্বোচ্চ সম্মাননা। এই এওয়ার্ড অর্জন করতে হলে প্রায় ১ বছর বিভিন্ন স্তরে পরীক্ষা দিতে হয় সারাদেশের অন্য স্কাউটদের সাথে। ২০১৬ সাল থেকে আমি সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অবশেষে এই এওয়ার্ড অর্জন করি।
অনুষ্ঠানের দিন এওয়ার্ড অর্জনকারী আমরা সকল স্কাউট ওসমানী মিলনায়তনে একত্রিত হই। আমি মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়েছি। এতে আমি গর্বিত। নিজের ইউনিফর্মে যখন এওয়ার্ডের ব্যাজ দেখলাম, তখন এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যেন আমার এত বছরের সাধনা ও কষ্ট সফল হয়েছে। এই এওয়ার্ড ছাড়াও স্কাউটিং থেকে আমি আরও অনেক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান লাভ করেছি। স্কাউটিংয়ের কারণেই জাপানের ইয়ামাগুচি শহরে অনুষ্ঠিত ২৩তম বিশ্ব স্কাউট জাম্বুরিতে আমি অংশ নিয়েছি। এছাড়াও বাংলাদেশের অনেক জেলায় ক্যাম্প করেছি।
স্কাউটিংয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে আমি লেখালেখি করি। আমার নিজের লেখা একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। আমার বাবাও একজন লেখক, গ্রন্থকার ও সাংবাদিক; তাঁর অনুপ্রেরণা ও উৎসাহে শিশুকাল থেকেই আমি লেখালেখি করছি। ক্যাম্পাস পত্রিকা ও লক্ষ্মীপুর বার্তাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় আমার নিয়মিত লেখা ও কলাম প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া কম্পিউটার ট্রেনিং, মেডিটেশন কোর্স, প্রোএকটিভ ও পজিটিভ এটিচিউডসহ বিভিন্ন স্মার্টনেস কোর্স আমার বাবা ড. এম হেলাল-এর অনুপ্রেরণায় ও সাহচর্যে ক্যাম্পাস থেকে আমি সম্পন্ন করেছি।
মাহীর হেলাল এর পরিচিতি
মাহীর হেলাল এর জন্ম ২০০১ সালের ২৬ জুন, ঢাকায়। পিতা কলামিস্ট, সমাজসেবী, গবেষক; ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র এর মহাসচিব এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক ড. এম হেলাল। মাতা অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ। উইল্স লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র মাহীর পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করে।
সৃজনশীল পরিবারের সন্তান মাহীরের লেখালেখির সূচনা হয় মাত্র ৭ বছর বয়সে। পিতার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকা আয়োজিত বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও অনুষ্ঠানে সে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে। এসব অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা বাবাকে লিখে দেখানোর চর্চা থেকেই তার লেখালেখির হাতেখড়ি। তাছাড়া যেকোন স্থানে ভ্রমণ শেষে সেই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বাবার কাছে বাংলায় ও ইংরেজিতে বক্তৃতারূপে শেয়ার করা এবং লেখার মাধ্যমে উপস্থাপন করার মধ্যদিয়ে শিশুকাল থেকে সৃজনশীলতা ও স্মার্টনেস চর্চার অভ্যাস গড়ে উঠে তার মধ্যে। শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনের একমাত্র নিয়মিত পত্রিকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস’র শিশু ক্যাম্পাস বিভাগে এবং লক্ষ্মীপুর বার্তা পত্রিকার ক্ষুদে লেখক কলামের নিয়মিত লেখক মাহীর। এ দু’পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যায় এ পর্যন্ত তার বহু লেখা ছাপা হয়েছে। তার প্রিয় লেখক বাবা ড. এম হেলাল বলে সে জানায় ।
একাডেমিক বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বই পড়ায় মাহীরের খুব আগ্রহ। অবসরে সে কম্পিউটারে গেম খেলে, খড়মরপধষ ঢ়ুুঁষব ংড়ষাব করে। কিশোর মাহীর নিজের মধ্যে প্রোএকটিভ ও পজিটিভ এটিচিউড জাগ্রত করতে সচেষ্ট। যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজকে স্বতঃস্ফূর্ত, ধীর-স্থির রাখার পারিবারিক শিক্ষা লালনে এ বয়সেই তার প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। সে নিয়মিত আকুপ্রেশার, ইয়োগা ও ধ্যানচর্চা করে থাকে; গাছের পরিচর্যা করা তার অন্যতম শখ।
নতুন নতুন স্থান ভ্রমণে আগ্রহী মাহীর ভারতের দিল্লী, আগ্রা, এলাহাবাদ, কোলকাতা, ইতালির রোম, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও জাপান ভ্রমণ করেছে।
এছাড়াও সে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা কয়েকবার করে ভ্রমণ করেছে। মাহীর বড় হয়ে বিজ্ঞানী হতে চায় এবং মানুষের উপকারে অনেক কিছু আবিষ্কার করতে চায়। সে সকলের দোয়াপ্রার্থী।