শোষণ-বঞ্চনার পথ পেরিয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত যে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা নিয়ে শুরু করেছিল যাত্রা; সেই বাংলাদেশ উন্নতির গতিতে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে পূর্ণ করল ৫০ বছর।
উচ্চ প্রবৃদ্ধি, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠা, দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নানা সূচকে অগ্রগতির পর বাংলাদেশের লক্ষ্য এখন উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশের কাতারে পৌঁছানো।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এ দিনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরও। এবার তাই উদযাপনেও যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। এর সাথে আর একটি নতুন পালক যোগ হয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ।
বিজয় অর্জনের পর ৫০ বছরের পথচলায় দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। একাত্তরে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি স্বতন্ত্র দেশ পেয়েছি, আর তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে তুলতে চলেছি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ের মধ্যেই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর আনন্দঘন ক্ষণে সবার কামনা, জাতির পিতার আরাধ্য স্বপ্নের বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যাওয়ার মহতী যাত্রা অব্যাহত রাখবে।
যতটা কম সময়ে আমরা এতদূর এগিয়ে এসেছি, এখন আমরা তার চেয়েও অনেক কম সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে আরো অনেক বেশি এগিয়ে যাব
- হাবিবুন নাহার এমপি; উপমন্ত্রী; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আজীবন জনব্রতী উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন- আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও অপরিসীম গর্বের। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নির্মম ও নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করার পর আমরা একসময় ভাবতেও পারতাম না যে কোনোদিন মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এতো আনন্দ, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করতে পারব। ১৯৯৬ সালে যখন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করলেন, তখন থেকেই আমাদের স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছে। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে নিরলসভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
স্বাধীনতার এই সুবর্ণ জয়ন্তী আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছে। এই সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে আমাদের আনন্দ আরও শতকোটি গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের সুযোগ লাভে। আমি মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সুযোগ পেয়ে উদ্বেলিত, আনন্দিত ও গর্বিত।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে সুদক্ষ উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা ইতোমধ্যে অনেক অগ্রসর হয়েছি। আমাদের উন্নয়ন অগ্রগতির ভিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তৈরি করে দিয়েছেন। উন্নয়ন ও অগ্রগতির এই চলমান প্রক্রিয়া এখন চলতেই থাকবে। যতটা কম সময়ে আমরা এতদূর এগিয়ে এসেছি, এখন আমরা তার চেয়ে কম সময়ে আরো অনেক বেশি এগিয়ে যাব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন উন্নয়ন অগ্রগতির বেগবান ধারায়। তিনি বৃহৎ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত করছেন। পদ্মাসেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের মতো এইসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এদেশ উন্নয়ন অগ্রগতির বেগবান ধারায় দ্রুত এগিয়ে অচিরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রত্যাশা করি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে বাস্তবায়িত হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, পরবর্তীতে তাঁর সুযোগ্য অগ্নিকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে আমরা সেই স্বপ্নকে বিস্তৃত করতে শুরু করেছিলাম। এই মহান মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে ঘিরে আমরা আবার সেই স্বপ্নকে নতুন করে দেখছি। তাই স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে আমি মনে করি, আমাদের মত এরকম একটি দেশ যার অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না, সেই দেশ আজ অনেক এগিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থা থেকে আজ দক্ষিণ এশিয়া, এমনকি সারা বিশ্বের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। যারা একসময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলতো, তারাই আজ বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের রোল মডেল বলে ঘোষণা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে আজ আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। এই অর্জন আমাদের সকল মন্ত্রণালয়ের, বাংলাদেশ সরকারের এবং এদেশের সকল মানুষের।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান ও বিচক্ষণ পরিবেশ উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, আমি মনে করি এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা দরকার এদেশের শিক্ষকদের। আমরা যে বিভিন্ন আলোচনা সভা করি, সেমিনার করি ইত্যাদিতে একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষ আসে, কিন্তু তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-যুবকরা সেখানে থাকে না; তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরা শুধু থাকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাঁরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানার আগ্রহ তৈরি করে দেবেন। তাহলে শিক্ষার্থীরা বড় হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ও অনুসন্ধিৎসু হবে। তখন তারা নিজে নিজেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর লেখা এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিভিন্ন বই পড়ে সবকিছু জানতে পারবে। তাহলেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের সকলেই জানতে সক্ষম হবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র যুবকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র যুবকদের উদ্দেশ্যে আমি বলবো যে, এই দেশ স্বাধীন হয়েছে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে। হাজার বছরের পরাধীন বাঙালি জাতিকে মুক্তির দিশা দেখিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে সবাইকে জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং কারাগারের রোজনামচা এজাতীয় বইগুলো বেশি বেশি পড়তে হবে। দেশকে ভালোবাসতে হবে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জ্ঞানী-গুণী ও গুরুজনদের সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে হবে। আর ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ছাত্রনং অধ্যয়নং তপোঃ অর্থাৎ ছাত্র জীবনের মূল লক্ষ্যই হতে হবে পড়াশোনা। ফেসবুক ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাটিতে অযথা সময় নষ্ট না করে মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। নিজেকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জীবনে সফলকাম হতে হলে বঙ্গবন্ধুর মতো ইতিবাচক চরিত্রের আদর্শবান এবং দেশদরদী সত্যিকারের মহৎপ্রাণ মানুষ হতে হবে।
সত্য তথ্য-উপাত্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরতে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে
- ব্রিঃ জেঃ মোঃ মাহবুবুল ইসলাম,
চেয়ারম্যান, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ডায়নামিক চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাহবুবুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে আমার অনুভূতি অভূতপূর্ব।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি, জানতে চাইলে চৌকস ব্যক্তিত্ব মোঃ মাহবুবুল ইসলাম বলেন, আমাদের আরো অনেক দূর যেতে হবে।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সঠিক দিক-নির্দেশনা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় আমাদের অগ্রসর হতে হবে।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সত্য তথ্য-উপাত্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরতে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র যুবকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র যুবকদের উদ্দেশ্যে আমি বলবো যে, দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
সৎ-নির্ভীক, অধ্যবসায়ী এবং দৃঢ়চেতা মনোভাব নিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির লক্ষ্যে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিরলস কাজ করে যেতে হবে
-প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম,
চেয়ারম্যান, বাঃ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বিএসইসির প্রজ্ঞাবান ও দূরদর্শী চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে সুবর্ণ-এক্সপ্রেসের গতিতে অর্থনীতি এগিয়ে চলছে। সেই অর্থনীতির একটি অংশের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সুযোগলাভে খুব সম্মানিত ও গৌরবান্বিত বোধ করছি। আমি আনন্দিত এবং উদ্বেলিত। আমি মনে করি যে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর ৫০ বছরে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার হয়ে আজকে যে অবস্থায় এসেছে, তাতে এই দেশ উন্নয়ন অগ্রগতির মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির সাথে এই মুহূর্তে অন্য কোনো দেশের তুলনা হয়না বা তুলনা করা যায় না। কারণ, সবরকম ইকোনমিক ইন্ডিকেটরে আমরা এখন খুব ভালো করছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছি। আমাদের এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অচিরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সক্ষম হবো। তাই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও গর্বের।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে আমরা আরও অনেক আগেই স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে সক্ষম হতাম। জাতির পিতাকে হত্যা করার কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে গিয়েছি। আমরা দেখেছি, তিনি স্বাধীনতার পরে যে সময়টুকু পেয়েছেন; ঐ সময় আমাদের যে গ্রোথ মডেল তা ছিলো খুব হাই। কিন্তু পরবর্তীতে ২০/২৫ বছর আমরা সেøা হয়ে গিয়েছিলাম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আবার বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন অগ্রগতির সেই হারানো গতি ফিরে পেয়েছি এবং সেই ইপ্সিত লক্ষ্যে আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা সকলে মিলে দেশকে ভালোবেসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা ও একটি সুউন্নত দেশে পরিণত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে লক্ষ্যে কাজ করছেন, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়িত করতে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
মুজিববর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিএসইসিতে সরকারের পক্ষ হয়েই কাজ করি। বিএসইসি সরকারেরই একটি অংশ। সরকারের সকল উইংস সুন্দরভাবে কাজ করছে। সরকারের সকল উইংস যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করে, সবাই মিলে যদি আমরা একটি টিমওয়ার্ক হিসেবে কাজ করতে পারি; তাহলে অর্থনীতির গতি আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে। আমাদের আরো অনেক নতুন নতুন আইডিয়া এবং ইনোভেটিভ চিন্তাধারা দিয়ে এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে এবং আউট অব দ্য বক্স আমাদের চিন্তা ভাবনা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা তৈরি করার লক্ষ্যে আমাদের অবশ্যই নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে। আর সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণেই আমরা বিনির্মাণ করতে সক্ষম হবো।
বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে কর্মযোগী, নিষ্ঠাবান ও বিচক্ষণ বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা তুলে ধরতে চাই যে, এদেশকে স্বাধীন করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে আজীবন সংগ্রাম করেছেন, ৩০ লক্ষ শহীদ বুকের রক্ত দিয়ে যুদ্ধ করেছেন, দুই লক্ষ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। এ দেশকে স্বাধীন করতে গিয়ে অনেক কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-যুবক জীবন দিয়েছে। এ দেশকে স্বাধীন করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বহু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদসহ শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী জনগোষ্ঠীকে পাকিস্তানিরা হত্যা করেছে তাদের দোসর আল-বদর, রাজাকারদের নিয়ে। এদেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে তারা। তারপরও কিন্তু এই জাতি পিছন ফিরে তাকায়নি। দেশে একটার পর একটা সাফল্য এসেছে এবং এদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্যকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আর পিছনে তাকানোর কোনো অবকাশ নেই। এখন নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে ভালোভাবে শিক্ষিত হয়ে আমাদের এই যুবশক্তি, যারা নতুন প্রজন্মের ছাত্র-যুবক; তাদের এ দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে অবদান রাখতে হবে। তারা এখন যেভাবে বিকশিত হচ্ছে, তাতে সামনের দিনগুলোতে এদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, এমপ্লয়মেন্ট এবং আইটি সেক্টরে তাদেরকে একটি নতুন ভূমিকায় দেখতে পাব বলে আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ হচ্ছে যে, এখন এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের এমপ্লয়মেন্ট অপর্চুনিটিও বাড়ছে; তাই আমাদের তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-যুবকদের অবশ্যই উদ্যোক্তা হতে হবে। এমপ্লয়ি না, এমপ্লয়ার হব- এই এম্বিশন নিয়ে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে যেতে হবে। এসবের মাধ্যমে আমরা যদি এগিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমাদের দেশে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি হবে; তেমনি নতুন নতুন ইনোভেটিভ আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে করতে এদেশ উন্নয়ন অগ্রগতির সুউন্নত শিখরে পৌঁছে যাবে। আমরা জিডিপির সাইজ অনুযায়ী এখন পৃথিবীতে ৪২ তম রাষ্ট্র। ইনশাআল্লাহ, আমরা আগামী ১০ বছরের মধ্যে, ২৫/২৬ তম অবস্থানে চলে আসব। আমরা উন্নয়ন-অগ্রগতির এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে যাব, আজকে আমাদের তরুণ যে ছাত্র-যুবক, আমাদের যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন, আমরা হয়তো সেই বাস্তবায়িত রূপ দেখতে পারবোনা, কিন্তু তারা সেটি দেখতে পারবে। আমাদের তরুণ ছাত্র-যুবকদের সে লক্ষ্য প্রস্তুত করতে হবে। তাই আমি তাদের অনুরোধ করব যে, তাদের সৎ-নির্ভীক, অধ্যবসায়ী এবং দৃঢ়চেতা মনোভাব নিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির লক্ষ্যে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিরলস কাজ করে যেতে হবে।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন ক্যারিশমেটিক দূরদর্শী নেতা
-কবির আল আসাদ,
সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ), রাজউক
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে রাজউকের প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের প্রজ্ঞাবান সদস্য, যুগ্মসচিব কবির আল আসাদ বলেন, আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও অপরিসীম গর্বের। ১৯৭১ সালে তিরিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, ২০২১ সালে তার ৫০ বছর পূর্তিতে আজ এই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। আমাদের জন্য স্বাধীনতার এই সুবর্ণ জয়ন্তী গৌরব ও উৎসবের বার্তা নিয়ে এসেছে। তাই আমি উদ্বেলিত আনন্দিত ও অভিভূত। এই আনন্দ আরও আকাশছোঁয়া হতো যদি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে তারও আজকে শতবর্ষ পূর্ণ হতো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি। পরাধীন বাঙ্গালি জাতির এক অনন্য মুক্তিদাতা। তাঁর বলিষ্ঠ সংগ্রামী নেতৃত্বে এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে মুক্তিপাগল লক্ষ-কোটি বাঙ্গালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার লাল-সবুজ পতাকা! লাল-সবুজ স্বাধীনতার পতাকার স্রষ্টা, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ কোনোকালেই স্বাধীন হতো না, মহাকালের সেই অমোঘ লড়াকু বীরসন্তান, বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ আর মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী মিলে অভূতপূর্ব এক যুগসন্ধিক্ষণের সৃষ্ট হয়েছে, যা এই নশ্বর জীবনে আমার এক পরম প্রাপ্তি।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে চৌকস ব্যক্তিত্ব কবির আল আসাদ বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন ক্যারিশমেটিক দূরদর্শী নেতা। তাঁর অনন্য দূরদর্শীতায় তিনি অনেক আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন যে, বাংলাদেশ একদিন স্বাধীন হবেই হবে।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদর্শিতার এক অনন্য জাদুকর। তাঁর দূরদর্শী স্বপ্নে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশকে নিয়ে তিনি অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন। সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন। সদ্য স্বাধীন দেশে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর একটি অনবদ্য সংবিধান আমাদের উপহার দিয়েছেন। কল-কারখানা ইন্ডাস্ট্রিগুলোসহ অনেক নতুন নতুন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি স্থাপন করেছেন। ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারীকরণ করেছেন। দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত একটি স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তিনি ছিলেন অটল। কিন্তু পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট তাঁর সেই স্বপ্নকে স্তব্ধ করে দিয়েছে ঘাতকের নির্মম বুলেট। কিন্তু নৃশংস ঘাতকেরা জানেনা স্বপ্নের কোনদিন মৃত্যু নেই। স্বপ্নরা বারবার ফিরে আসে জন্ম-জন্মান্তরে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন একুশ বছর পর ফিরে এসেছে এই বাংলায়, বঙ্গবন্ধু যেন একুশ বছর পর ফিরে এসেছেন তাঁর সুযোগ্য অগ্নিকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে এক অলৌকিক পুনর্জন্মের ভেতর দিয়ে। পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তিনি ছুটে চলেছেন দুর্বার গতিতে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা সুনিশ্চিতভাবেই অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে প্রত্যাশা করি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেলসহ মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের জন্য যেভাবে অহর্নিশি দুর্বার গতিতে কাজ করে যাচ্ছেন, তাতে অচিরেই সব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে ইনশাল্লাহ। ইতোমধ্যে পদ্মাসেতুর সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ সুসম্পন্ন হয়ে পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে। এই এক পদ্মাসেতুই বাংলাদেশের জিডিপির গ্রোথ অনেক বাড়িয়ে দেবে, একথা সুনিশ্চিতভাবে বলা যায়। সবগুলো মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের চেহারাই পাল্টে যাবে। বাংলাদেশ উন্নত দেশের অভিলক্ষ্যে আরও অনেক দ্রুত এগিয়ে যাবে। কাজেই মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে আমার প্রত্যাশা, অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বৃহৎ মেগাপ্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এদেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রগতি সাধিত হোক।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সকলেরই ভূমিকা আছে। যার যার অবস্থান থেকে সেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। নতুন প্রজন্মের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম তাঁদের স্বচক্ষে দেখে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হতে পারে। কেননা, একটা সময় আসবে, যখন এই মুক্তিযোদ্ধাদের আর জীবিত পাওয়া যাবে না। তাঁদের ছবি দেখতে জাদুঘরে যেতে হবে। সেদিন আর বেশি দূরে নেই। কাজেই মুজিব জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সেই মাহেন্দ্রক্ষণের সুযোগ নিয়ে এসেছে। এই সুযোগ পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে; যাতে তারা দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার গল্প, বঙ্গবন্ধুর গল্প, মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে পারে, জানতে পারে। এই গল্প তাদের মাধ্যমে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে সঞ্চারিত হবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, আমার চাচা মাহফুজুর রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তাঁর আদর্শের একজন সৈনিক ছিলেন, আমরা তাঁর কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী ইতিহাস এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জেনেছি। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি। তারা খুব আনন্দিত হয়েছে প্রত্যক্ষভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সান্নিধ্যে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী ইতিহাস এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরে। এভাবেই আগামী প্রজন্মের কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে সকলেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। তবেই আগামী প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে সক্ষম হবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র যুবকদের উদ্দেশ্যে আমি বলবো যে, ছাত্রজীবনের মূল লক্ষ্য হবে সঠিকভাবে পড়াশোনা করা। কেননা, ছাত্রজীবনে পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। তাই মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনা করে জ্ঞানার্জন করতে হবে। অর্জিত জ্ঞানকে দেশের কাজে লাগাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। তাই ফেসবুক ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করে অযথা সময় নষ্ট না করে সেই সময়টা পড়াশোনার কাজে লাগাতে হবে। শুধু চাকরির জন্য পড়াশোনা করলে হবে না। সত্যিকারের জ্ঞান আহরণের জন্য পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। চাকরির জন্য জীবনপাত না করে উদ্যোক্তা হয়ে কিভাবে আরও দশজনকে চাকরি দেয়া যায়, সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। আর মনে রাখতে হবে, সবার উপরে দেশ সত্য। তাই দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হবে।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা সুনিশ্চিতভাবে অনেক অগ্রসর হয়েছি
-জহিরুল আলম দোভাষ,
চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সিডিএর জননন্দিত উন্নয়নকামী দূরদর্শী ডায়নামিক চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দ, সৌভাগ্য ও গৌরবের বার্তা বয়ে এনেছে। আনন্দ এজন্য যে, এই ২০২১ সালে আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে মুজিববর্ষ একসাথে মিলে একটা চমৎকার মাহেন্দ্রক্ষণের সৃষ্টি করেছে। আবার সৌভাগ্য এই অর্থে যে, আমরা আমাদের জীবদ্দশায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবছর একইসঙ্গে উদযাপন করতে পারছি, এটা তাই আমাদের জন্য পরম সৌভাগ্য। তাই মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে আমার অনুভূতি একই সঙ্গে অত্যন্ত আনন্দের, পরম সৌভাগ্যের ও অসীম গর্বের বিষয় বলে আমি মনে করি।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে সুদক্ষ সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে অনেক অগ্রসর হয়েছি। আমাদের দেশ এখন সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। সকল অর্থনৈতিক সূচকে আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য অগ্নিকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অসীম সাহসী নেতৃত্বে। কাজেই স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি, একথা সুনিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র প্রকল্প, মাতারবাড়ি প্রকল্প, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নসহ মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন। এসব মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্নকরণে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। আমি মনে করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে আমাদের দেশ অচিরেই একটি সুউন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে, যে সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান ও বিচক্ষণ সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সকলেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা আছে। যার যার অবস্থান থেকে সে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে বলে আমি মনে করি। শিক্ষকগণ মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবেন। আমরা যারা রাজনীতিবিদ, আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরবো। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই যে, এদেশের প্রত্যেকটি আন্দোলনে ছাত্র-যুবকদের অপরিসীম ভূমিকা ছিলো। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয়দফা, উনসত্তুরের অসহযোগ ও গণঅভ্যুত্থান, এমনকি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধেও ছাত্র-যুবকদের অতুলনীয় অনবদ্য অবদান ছিলো। সেই অবদানের কথা আজকের ছাত্র-যুবকদের মনে রাখতে হবে। তাদের আত্মত্যাগের প্রেরণায় উজ্জীবিত হতে হবে। রাজনীতি সচেতন হতে হবে। তবে ছাত্র-যুবকদের সেইসাথে এটাও মনে রাখতে হবে যে, পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। তাই তাদের মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি সাধন করতে হলে সবার আগে দরকার পড়াশোনা। সুউন্নত দেশ গড়তে পড়াশোনা দরকার সবার আগে।
জাতির পিতার লালিত স্বপ্নের স্ফূরণ ঘটেছিল ৭ই মার্চের সেই মহান স্বাধীনতার ভাষণে
-প্রফেসর ড. এএইচএম মোস্তাফিজুর রহমান,
উপাচার্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের এ মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকল্যাণকামী আজীবন শিক্ষাব্রতী উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের এ মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ঘিরে আমার অনুভূতি এক অসাধারণ আনন্দময় অনুভূতি! আমি মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সুযোগলাভে অত্যন্ত আনন্দিত এবং নিজেকে অসীম সৌভাগ্যবান মনে করছি, সেইসাথে ভীষণ গৌরবান্বিত বোধ করছি। কেননা, আমাদের তো স্বাধীন হওয়ার কথা ছিল না। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল মহানায়ক। এই অনন্য গৌরবোজ্জ্বল মহানায়কের সুযোগ্য নেতৃত্বে এবং তাঁর অপরিসীম দূরদর্শীতায় আজকে আমরা স্বাধীন। আবার দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁকে হারিয়েছি আমরা। আমরাইতো তাঁকে মেরে ফেলেছি। আমরা তো আসলে অকৃতজ্ঞ এক জাতি। আমার অনুভূতি প্রকাশে আমি বলতে চাই, এই মহান নেতাকে আমি একটা প্রজ্জ্বলিত দীপশিখার মতো মনে করি, যিনি উদীয়মান জ্বলজ্বলে সূর্যের মতো আমাদের মনের আকাশে চিরঅম্লান থাকবেন। তাঁর আত্মত্যাগের জন্যই আমরা আজ স্বাধীনতার এই মহান সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করতে পারছি।
বঙ্গবন্ধুর সেই অনুপম আদর্শ, সেই অনুপম মূলমন্ত্র ছিল জাতির জন্য বিশাল প্রেরণা। জাতীয়তাবাদী চেতনাতে চারটি মূল বিষয় ছিল তাঁর ধর্মনিরপেক্ষতা তথা অসাম্প্রদায়িকতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র। জাতির পিতার যে অনন্য এই স্পিরিট, সেই অনন্য স্পিরিটের স্ফূরণ ঘটেছিল ৭ই মার্চের সেই মহান স্বাধীনতার ভাষণে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক ভাষণেরও ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে স্বাধীনতার এই মহান সুবর্ণ জয়ন্তীতে। তাই স্বাধীনতার এই মহান সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সুযোগলাভে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গৌরবান্বিত।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তারুণ্যে উজ্জীবিত প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ উপাচার্য ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি মনে করি স্বাধীনতার ৫০ বছরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা ৫০% অগ্রসর হয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য সাহসীকন্যা বঙ্গরত্ন দেশরত্ন মাদার অব হিউম্যানিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার প্রিয় আপা, আমাদের জেনারেশনের মানুষদের প্রিয় আপা; জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নকে অর্ধেক অবশ্যই ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করে ফেলেছেন। অতি সম্প্রতি আমাদের দেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘ কর্তৃক গ্রাজুয়েশন লাভ করেছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অনন্য গতিশীল নেতৃত্বে উন্নয়নশীল দেশের সকল যোগ্যতা অর্জন করে ফেলব ইনশাল্লাহ। আমি মনে করি, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা ইতোমধ্যে ৫০% অগ্রগতি অর্জন করে ফেলেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্বার গতিশীল নেতৃত্বে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বাকিটুকুও অর্জন করতে সক্ষম হবো ইনশাল্লাহ।
মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে শিক্ষানন্দিত উপাচার্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে একজন উপাচার্য এবং দেশের একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে সরকারের কাছে প্রত্যাশার আগে আমি চিন্তা করি যে, আমি দেশকে কি দিতে পেরেছি বা পারব। আমি সরকারকে কতটুকু দিতে পারব। তবুও সরকারের কাছে একটা সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা যে, সরকার দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে এবং গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখবে। সমাজের বৈষম্য দূরীকরণ করবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ থেকে কোনোভাবেই বিচ্যুত হবে না এই সরকার। যদি কোন মহল বা কেউ কোন বিচ্যুতি ঘটায় এবং দেশের মধ্যে অনাচার সৃষ্টি করে, তা যদি আওয়ামী লীগ দলীয়ও হয়; যা বঙ্গবন্ধুর প্রিয় সংগঠন, যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছিল; সেই সংগঠনেরও কেউ যদি তা বিনষ্ট করতে চায়, তবে সে ক্ষেত্রেও সরকারকে খুবই কঠোর হতে হবে বলে আমি মনে করি। তাই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে এসবই আমাদের একান্ত প্রত্যাশা।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আমি মনে করি প্রত্যেকেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে। যার যার নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রত্যেককে সেই ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ আছি, আমাদের শিক্ষার্থীদের নিকট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। প্রত্যেকটি প্রাইভেট এবং পাবলিক, সকল ইউনিভার্সিটিতে একটি কোর্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তা হলো- বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস। এটি একটি অসাধারণ বিষয়। আমি মনে করি, প্রাইমারি স্কুল থেকে হাইস্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সকল ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস -এই কোর্সটি বাধ্যতামূলক থাকতে হবে। জাতীয় দিবসগুলো জাতীয় পর্যায় থেকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত জাতীয়ভাবে উদযাপন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস এ দেশের আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অত্যুজ্জ্বল আলোকবর্তিকার মতো ছড়িয়ে দিতে হবে। স্বাধীনতা কিভাবে হয়েছিল, স্বাধীনতার মহানায়ক কে ছিল, এসব কিছুই নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। তাদের জানাতে হবে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কি ছিল, মুক্তিযোদ্ধারা কোন আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন; এসবকিছুই নতুন প্রজন্মকে আমাদের জানাতে হবে। তাহলে তারাও মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস হৃদয়ে ধারণ করতে সক্ষম হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ ২১ বছর কাউকে শুনতে দেয়া হয়নি। ২১ বছর পর যখন মানুষ এই ভাষণ শুনেছে, তখন মানুষ আবেগে কেঁদেছে। এমনকি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামায়াতের বর্তমান প্রজন্মের তরুণ সন্তানরাও এই মহান ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুনে আবেগে উদ্বেলিত হয়ে পড়েছে। তাই মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সকলেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান পরামর্শ জানতে চাইলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরদর্শী ও ছাত্রবৎসল উপাচার্য প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র যুবকদের উদ্দেশ্যে আমার একটাই পরামর্শ, তা হলো দেশ আমাকে কতটুকু দিচ্ছে সেটা বড় কথা নয়, আমি দেশকে কি দিতে পারছি, বা কি দেব এবং দেশকে কিছু দেয়ার জন্য কিভাবে নিজেকে গড়ে তুলবো, সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে বলেছিলেন, সেই ঐক্যের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ আমাদের হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত
-অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার,
উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকল্যাণকামী শিক্ষানন্দিত উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন- আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিলো, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে মুজিববর্ষ উদযাপন করবো। কিন্তু করোনা মহামারী পরিস্থিতির কারণে আমরা সাড়ম্বরে তা উদযাপন করতে পারিনি। কোভিডের কারণে আমরা অনেক স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারিনি। করোনার ভ্যাকসিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দ্রুত ভারত থেকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছেন। এখন করোনা মহামারী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেই আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ সাড়ম্বরে উদযাপন করবো ইনশাআল্লাহ। কেননা, করোনা মহামারীর কারণে ব্যাপক ভাবে মুজিববর্ষ উদযাপন করতে না পারলেও আংশিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যতটুকু সম্ভব আমরা পালন করেছি। তবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ আমাদের হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির সুবর্ণ জয়ন্তী একসাথে এই ২০২১ সালে আমাদের মধ্যে একটা অভূতপূর্ব উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে নিয়ে সাড়ম্বরে উদযাপন করবো। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে তাই আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও অপরিসীম গর্বের।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে সুদক্ষ উপাচার্য বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন আশ্চর্য স্বপ্নদর্শী মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন দূরদর্শী একজন স্বাপ্নিক মানুষ। হৃদয়ের গভীরে তিনি যেসব স্বপ্ন ধারণ করতেন, সেসব স্বপ্ন ছিলো সুদূরপ্রসারী। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনেক আগেই বলেছিলেন, এই ভূখ-ের নাম একদিন বাংলাদেশ হবে। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই স্বপ্ন বাস্তব হতে দেখেছি। তিনি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন, তাঁর সেই কথা বাস্তবে পরিণত হয়েছে। তবে তিনি যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন, তাঁর সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ আমরা সবক্ষেত্রে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে না পারলেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে আমরা ইতোমধ্যে অনেকদূর এগিয়েছি, একথা সুনিশ্চিতভাবেই বলা যায়। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আমরা তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে অনেক অগ্রসর হয়েছি বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দুর্বার গতির অগ্রযাত্রা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। অনেক ষড়যন্ত্র, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলা করেও আজকে বাংলাদেশের জিডিপির গ্রোথ অনেক ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে বেশি, উন্নয়ন অগ্রগতি থেমে নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেসব রূপকল্প হাতে নিয়েছেন, সেগুলো উদ্ভাবনীমূলক এবং উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য অনেক সুদূরপ্রসারী। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্ভাবনীমূলক রূপকল্প বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছি। আমরা ইতোমধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগে প্রবেশ করেছি। আমরা শিক্ষাক্ষেত্রেও অনেকদূর এগিয়েছি, বিশেষ করে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রোল মডেলে পরিণত হয়েছি। সবমিলিয়ে আমরা ইতোমধ্যে অনেক এগিয়ে গিয়েছি। তারপরও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমাদের আরও কিছু সময় লাগবে। তবে আমরা সবাই মিলে যদি চেষ্টা করি, তাহলে সেদিন সুদূর নয়; যেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে বঙ্গবন্ধুর সে সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা পুরোপুরি সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আসলে জনগণ ইচ্ছে করলেও অনেক কিছু করতে পারে না, কিন্তু সরকার ইচ্ছে করলে অনেক কিছুই করতে পারে। সরকার যদি এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কোনো আদেশ দেয়, তাহলে আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্বে আছি, সে আদেশ পালনে আমরা বাধ্য। যেমন, সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন করার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চেষ্টা করতে পারি, কিন্তু সরকার যদি সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন করার জন্য একটা কার্যকরী আদেশ দেয়, তাহলে সেটা অনেক গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর করার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়। সরকার যদি এই ঘোষণা দেয় যে, দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রতিটি স্কুল-কলেজে একটি বিষয় থাকবে; তাহলো, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাসের রূপকল্প প্রণয়ন। এরকম একটি বিষয় যদি দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং পাঠ্যক্রমে সরকার বাধ্যতামূলক করে, তাহলে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মাঝে ব্যাপকভাবে সঞ্চারিত হবে। আমরা সরকারের কাছ থেকে আশা করি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার স্বপ্ন বিনির্মাণে যা কিছু সরকারের করা দরকার সেটা সরকার করবে, আমরা সরকারকে সহযোগিতা করে এগিয়ে যাব।
মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান ও বিচক্ষণ উপাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। ৭৫ সালের পরে ২১ বছর আমরা অন্ধকার যুগে ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্ম সঠিকভাবে জানতো না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর সে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। নতুন প্রজন্মকে এই ইতিহাসগুলো জানিয়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং পাঠ্যক্রমে এই বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও এখন বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস একটি প্রিয় বিষয়। বঙ্গবন্ধুর মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীও একটি প্রিয় বিষয়। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে শিক্ষাবিদ, গবেষক ও লেখকদের ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি এদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এবিষয়ে ব্যাপক ভূমিকা নিতে সরকারকে সার্বিকভাবে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই যে, বাংলাদেশকে ভালবাসতে হবে। মাটি এবং মাকে ভালবাসতে হবে। নিজেকে আলোকিত হতে হবে এবং চারপাশের সবাইকে আলোকিত করতে হবে। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, মানুষের মত মানুষ হয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। তাহলেই জীবন সফল হবে। শুধু নিজেকে নিয়েই মানুষের জীবন সফল হয় না। সবাইকে নিয়েই মানুষের জীবন সফল হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন সফল মানুষ। তাঁর সুযোগ্য ও সফল নেতৃত্বের গুণে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। তাঁর অসীম সাহসিকতা ও অনুপম ত্যাগ-তিতিক্ষার কারণে আজ আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিক। তাই আমাদের তাঁর মহত্তম জীবন থেকে দীক্ষা গ্রহণ করে সুউন্নত মানুষ হতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো সুউন্নত দেশপ্রেমিক মানুষ হতে পারলে জীবন সুন্দর ও সার্থক হবে।
স্বাধীনতার ৫০ বছরের সুবর্ণ জয়ন্তীতে এদেশ আজ এক অদম্য বাংলাদেশ!
-প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্ত্তী,
চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রামের শিক্ষাব্রতী ডায়নামিক চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্ত্তী বলেন, এই ২০২১ সালের বছরটি আমাদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একসাথে উদযাপন করার বিরল সৌভাগ্য লাভে আমরা ধন্য হয়েছি। এই ৫০ বছরের সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ একটি অদম্য বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দীপ্ত নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে আমার অনুভূতি খুবই আনন্দ ও গর্বের।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে সুদক্ষ, প্রাজ্ঞ ও ন্যায়নিষ্ঠ চেয়ারম্যান বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমাদের আরো অনেক বেশি অগ্রসর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিরা একুশ বছর সামরিক শক্তির আড়ালে নামে-বেনামে আমাদের দেশটি পরিচালনা করেছে এবং দেশকে পিছনের দিকে নিয়ে গেছে। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছে। আমি মনে করি, বর্তমান পদক্ষেপগুলো পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হলে ২০৩০ সালে এসডিজির যে লক্ষ্যমাত্রা- মানসম্মত শিক্ষা, তা অর্জনে আমরা সক্ষম হবো। মানসম্মত শিক্ষা যদি আমরা অর্জন করতে পারি, তাহলে ২০৪১ সালে যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন, যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন, সে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নপূরণ সম্ভব হবে। যদি শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করতে পারি, সেক্ষেত্রে এসডিজির অন্যান্য এজেন্ডাগুলো, সেগুলোও আমরা সহজেই বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে করোনা অতিমারীর কারণে আমরা সবাই একটু স্তিমিত হয়ে গিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার কারণে আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এই করোনাকালেও অনেক বেশি উন্নয়ন ও অগ্রগতি করতে সক্ষম হয়েছি। করোনা মহামারী পরিস্থিতির কারণে যেখানে সারাবিশ্বের অনেক দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল, সেখানে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের ২০টি দেশের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শীতায় অনন্য একটি দেশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। যেখানে আমরা অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক অবস্থা বজায় রাখতে পেরেছি। তাই আমি মনে করি, সরকারের এই পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় আমরা অনেক দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছি।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান ও বিচক্ষণ চেয়ারম্যান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আমি মনে করি, সবারই দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে। আমাদের যারা ইতিহাসবিদ, তাদেরকে এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই এজন্য যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনার্স এবং পাসকোর্সে, এমনকি মাস্টার্সেও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার কারণে আমি মনে করি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পারবে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। বর্তমান সরকারও পাঠ্যক্রমের পরিবর্তন করেছে, যেখানে বিকৃত ইতিহাস সঠিক করা হয়েছে এবং প্রকৃত ইতিহাস আগামী প্রজন্মের সামনে তুলে ধরে তাদেরকে সত্যিকারের ইতিহাস সম্পর্কে জানানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে আমার একান্ত অনুরোধ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষায় আমাদের আগ্রহ বাড়াতে হবে, কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। আগামীতে ফোর্থ জেনারেশনের যে টেকনোলজি আসছে, সেটার জন্য এখন থেকেই এগিয়ে থাকতে হবে, কেননা এর আগে তৃতীয় জেনারেশনে আমরা অনেক পিছিয়ে ছিলাম। এখন আমাদের একটা চমৎকার সুযোগ এসেছে, প্রযুক্তির সঙ্গে আমরা যদি খাপ খাওয়াতে পারি, তাহলে আমাদের মানব-সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা দেশকে আরো অনেক উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। সুতরাং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমার আকুল আবেদন হলো, প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে মানসম্মত লেখাপড়া করে সুউন্নত মানবসম্পদে পরিণত হয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে হবে।
তৃণমূল পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সকলকেই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে
-ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত, উপাচার্য, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে শিক্ষাব্রতী উপাচার্য ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনে আমি খুবই আনন্দিত। দীর্ঘ ৫০ বছরের পথ পরিক্রমায় আমরা অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। সবই হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য ও দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে। উন্নয়নের এ ধারা বিশ্বে আজ রোল মডেল। এত উন্নয়নের পরও আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে।
দুর্নীতি দূরীকরণে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে আমরা অতি দ্রুত উন্নত দেশে উন্নীত হতে পারব। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। জ্ঞান-গরিমা, শিক্ষা-দীক্ষা, সততা, দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট দিনে, জাতীয় দিবসে, মিছিল সেøাগান দিয়ে বঙ্গবন্ধু তথা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়ন করা যাবে না। এজন্য তৃণমূল পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি দিবসেই আমাদের সকলেরই কাজ করতে হবে, বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও আদর্শ তুলে ধরতে হবে এবং শিশু-কিশোর-ছাত্র-ছাত্রীদের মনোজগতে তা ঢুকাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কতিপয় ভাইস-চ্যান্সেলরকে নিয়ে সরকারকে মাঝে মধ্যে বিব্রত হতে হয়। এজন্য ভিসি নিয়োগের জন্য সৎ, যোগ্য ও আদর্শবান পন্ডিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠন করে ভিসি নিয়োগ দিতে হবে। পরিশেষে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।
বঙ্গবন্ধুর জন্য আমরা আজ একটি স্বাধীন দেশ ও লাল সবুজের পতাকা পেয়েছি
-প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ,
উপাচার্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজ্ঞাবান শিক্ষাকল্যাণকামী উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সুযোগলাভ করতে পেরেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য আমরা আজ একটি স্বাধীন দেশ ও লাল সবুজের পতাকা পেয়েছি। আমরা আত্মপরিচয়ের সুযোগলাভে ধন্য হয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি তাই গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি। সেই সাথে এই দেশমাতৃকার জন্য যাঁরা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের সকলকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই। করোনা মহামারীর কারণে আমরা যেরকম জাঁকজমকের সাথে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব পালন করার কথা সেভাবে হয়তো পালন করতে পারছিনা, তারপরও আমরা স্বাস্থ্যসুরক্ষা মেনে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব পালন করেছি। আমরা প্রতিজ্ঞা করব, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই সোনার বাংলা আমরা সকলে মিলে অবশ্যই বিনির্মাণ করতে সক্ষম হবো। এই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও গর্বের।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতি সম্প্রতি জাতিসংঘ আমাদের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অনন্য স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধন করেছি। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, জাতীয় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। দারিদ্রসীমার নিচের মানুষের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। হতদরিদ্র যারা ছিল, তাদের সংখ্যা এখন মাত্র ১০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। মাত্র ২০ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে, মুজিববর্ষে এদেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে আমাদের সকল উৎপাদন বেড়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা উন্নয়ন অগ্রগতির প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভালো করেছি। আমরা সামাজিক সকল সূচকে অনেক উন্নয়ন করেছি। আমাদের সকল উন্নয়ন কাজ অগ্রগতির সাথে দ্রুত চলছে। সেইসাথে আমাদের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রও চলছে। সকল ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই আমরা প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য গতিশীল নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।
মুজিববর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে, যে বৃহৎ মেগাপ্রকল্পগুলোর কাজ চলমান রয়েছে; সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা। দেশে সত্যিকারের একটা সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। দুর্নীতিবাজদের পরিচয় না দেখে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দুর্নীতি করে কেউ যেন পার না পায়, সে ব্যবস্থা করা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ে তোলা। সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুর্নীতিমুক্ত উন্নত স্বপ্নের স্বদেশ গড়ে তোলা। শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করতে না পারলে সেই শিক্ষা দেশের বোঝা হবে। তথাকথিত সেইসব শিক্ষিত শ্রেণি দেশের কোন কাজেই আসবে না। সেজন্য উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা না বাড়িয়ে শিক্ষার গুণগতমান অবশ্যই বাড়াতে হবে। এসব কিছুই সরকারের কাছে আমার একান্ত প্রত্যাশা।
বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান ও বিচক্ষণ উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্মম নৃশংস হত্যাকা-ের পর সামরিক সরকার ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর নাম-নিশানা মুছে ফেলতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে বিকৃতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা সেই জায়গাটা থেকে বেরিয়ে এসেছি। সেই জায়গাটায় আরো অনেক জোর দিতে হবে। স্কুল, পাঠ্যপুস্তক, মিডিয়াতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার বিষয়ে আরো অনেক উদ্যোগী হতে হবে। আগের সামরিক শাসকদের ইতিহাস বিকৃতির ন্যাক্কারজনক ভূমিকা সম্পর্কেও নতুন প্রজন্মকে অবহিত করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ হলো, তাদেরকে ভালোমতো পড়াশোনা করতে হবে। আর চাকরির পিছনে না দৌড়ে তাদেরকে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে, উদ্যোক্তা হওয়ার মন মানসিকতা তৈরি করতে হবে। উদ্যোক্তা হয়ে অন্যদের চাকরি দিতে হবে। তাই পড়াশোনায় আরও অধিক মনোযোগী হতে হবে। অযথা ফেইসবুক, ইউটিউব ঘাটাঘাটি না করে গঠনমূলক কাজে মনোযোগী হতে হবে। ফেইসবুক, ইউটিউব ঘাটাঘাটি মূল্যবান সময় নষ্ট করে। মনে রাখতে হবে, ছাত্রজীবনে সময় অত্যন্ত মূল্যবান। তাই কোনভাবেই সময় অপচয় করা যাবে না। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো গুজবে কান দেওয়া যাবে না। দেশের স্বার্থ পরিপন্থী কোনো কাজে লিপ্ত হওয়া যাবে না। তারা যেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে ভালোবেসে দেশের জন্য কাজ করে। যে যেখানেই থাকুক, সেখান থেকেই যেন তার ভূমিকা পালন করে। এদেশ আছে বলেই আজ আমরা এদেশ থেকে এত সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি। এদেশে থেকেই যদি আমরা এ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করি, দেশের ষড়যন্ত্রকারীদের কথা শুনে যদি দেশকে পেছানোর চেষ্টা করি, তাহলে এ দেশ অনেক পিছিয়ে যাবে। তাই এসব থেকে তাদের দূরে থাকতে হবে। সরকার ছাত্র-যুবকদের জন্য সহজ শর্তে বিভিন্ন ধরনের আত্মকর্মসংস্থানমূলক ঋণ কর্মসূচী প্রণয়ন করেছে। এসব আত্মকর্মসংস্থানমূলক ঋণ সহায়তা গ্রহণ করে ছাত্র-যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তুলতে হবে, নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে অন্যদেরকেও চাকরি দিতে হবে। এভাবেই ছাত্র-যুবকদের নিজেদের জীবন সফল করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই জীবন সার্থক ও সুন্দর হবে।
বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন বলেই আমি আজ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান
-সাইফুজ্জামান পিকুল,
চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ, যশোর
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ঘিরে অনুভুতির কথা জানতে চাইলে যশোর জেলা পরিষদের জননন্দিত ও জনকল্যাণকামী চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন- আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা তখন যে ভয়াবহ অবস্থায় পড়েছিলাম, আমাদের আজকে বেঁচে থাকারই কথা ছিল না। মহান স্বাধীনতার আজ ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে, স্বাধীনতার এই সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমরা যে আজ বেঁচে আছি, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করতে পারছি, এটা আমাদের জন্য মহাসৌভাগ্যের বিষয়, অত্যন্ত গৌরবের বিষয়, অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। কেননা, আমরা যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি, বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি; সেই স্বাধীন বাংলাদেশের আজ ৫০ বছর পূর্তি, আমাদের প্রাণপ্রিয় সেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আজ আমরা পালন করার সৌভাগ্যলাভ করেছি। তাই আমাদের মহান এই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের এবং অপরিসীম গর্বের।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান ও কর্মযোগী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন- স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা এখনো কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পুরোপুরি পৌঁছাতে পারিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তিনি যে সোনার বাংলা বিনির্মাণের ডাক দিয়েছিলেন, আজকে আমরা অনেক আগেই সেই সোনার বাংলায় পরিণত হয়ে যেতাম। পরপর দুটো সামরিক সরকার আমাদের অগ্রগতি পেছনের দিকে নিয়ে গেছে। তারপরও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্যকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দুর্বার গতিশীল নেতৃত্বে আমাদের দেশ গত ১০/১২ বছরে অনেকদূর এগিয়ে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেনÑ আগে আমরা সারাদিনে ও রাতে ২/৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎও ঠিকমতো পেতাম না। সেখানে বিদ্যুৎ আজকে এত নিরবচ্ছিন্ন হয়েছে যে, বিদ্যুৎচার্জে চালিত ৬০/৭০ লক্ষ ইজিবাইক অনায়াসে চলছে। এভাবে বিদ্যুৎচার্জে চালিত ইজিবাইকের মতো যানবাহনগুলো পরিবহনের কাজে, কর্মসংস্থানে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। এর মূলে রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এই কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্র্র্রক্ষণে সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে সুদক্ষ এ চেয়ারম্যান বলেন- এই করোনাকালীন সময়ে আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। তাই এবিষয়ে সরকারকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। এদেশের অগ্রগতির জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করা। তাই কারিগরি শিক্ষার ওপর বিশেষভাবে জোর দিতে হবে।
বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন- বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস ২১ বছর ধরে সামরিক সরকাররা চাপা দিয়ে রেখেছিল। তারা বলেছে, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। অনেকে বলে, রেডিওর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এছাড়া ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। স্বাধীনতার পরিপূর্ণ রূপরেখা তিনি ৭ই মার্চের ভাষণেই দিয়েছেন। একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তানের দোসররা পরবর্তীতে এসব তথ্য বিকৃত করার অপপ্রয়াস চালিয়েছে।
তাই বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এসব তথ্য তাদের জানানোর উদ্যোগ গ্রহণ করার লক্ষ্যে সকলকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে বলে আমি মনে করি।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান পরামর্শ জানতে চাইলে প্রাজ্ঞ চেয়ারম্যান বলেন- আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রেখেই ছাত্ররাজনীতি করেছি। কেননা, ছাত্ররাজনীতির সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করলে তখন ছাত্ররাজনীতি কলুষিত হয়। তাই আমরা ছাত্ররাজনীতির সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে চির সমুন্নত রেখেছি। তাই আজ এপর্যন্ত আসতে পেরেছি। সে কারণে নতুন প্রজন্মের ছাত্র যুবকদের আমি বলবো যে, আদর্শ খুব বড় ব্যাপার। আদর্শকে যে কোনো মূল্যে সমুন্নত রাখতে হবে। জীবনে সফলকাম হতে এটা খুবই জরুরি।
তিনি বলেন- পাকিস্তান আমলে সাধারণ মানুষের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। ৯৫% মানুষের বুকের হাড় দেখা যেত অপুষ্টির কারণে। তখন মানুষের পোশাক-আশাক বলতে ছিল লং ক্লথের মলিন সব জামা-কাপড়। এমনই হতদরিদ্র ছিল সাধারণ মানুষের অবস্থা। সেই অবস্থান থেকে আমরা আজ এখানে এসে পৌঁছেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশ স্বাধীন করে দিয়েছিলেন বলেই। একবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি হিসেবে এই লিস্টে তোর নাম নেই কেন? তখন আমি হেসে বলেছিলাম- আপা, আমার নামের দরকার নেই। আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি করে দিয়েছিলেন বলেই আজ আমি পিকুল যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি করে না দিলে আজ আমার কোনো অস্তিত্ব থাকত না। আমাকে পাশের গ্রামের লোকও চিনত না। হয়তো আমি কোনো মুদি দোকানের কর্মচারী হতাম। বঙ্গবন্ধু এদেশ স্বাধীন করে না দিলে এর চেয়ে বড় কিছু হতে পারতাম না। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি পাকিস্তানের দোসররা ৭৫ এর ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুর জন্য কিছু করা উচিত মনে করেই আমি এই দল করি। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। এজন্যই আমি মনে করি, ছাত্রদেরকে অবশ্যই রাজনীতি সচেতন হতে হবে। পড়াশোনার পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে সচেতন থেকে অবশ্যই রাজনীতি করতে হবে।
তরুণ ছাত্রযুবকদের জন্য আমার পরামর্শ হলো, ভালোমতো পড়াশোনা করতে হবে, সেই সাথে রাজনীতি সচেতন হতে হবে। দেশকে ভালবাসতে হবে। দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে। দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সম্মিলিতভাবে আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ আর মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী মিলে অভূতপূর্ব এক যুগসন্ধিক্ষণের সৃষ্টি হয়েছে
-প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন, উপাচার্য, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে অনুভুতির কথা জানতে চাইলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়নামিক উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও অপরিসীম গর্বের। ১৯৭১ সালে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, ২০২১ সালে তার ৫০ বছর পূর্তিতে আজ এই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। আমাদের জন্য স্বাধীনতার এই সুবর্ণ জয়ন্তী গৌরব ও উৎসবের বার্তা নিয়ে এসেছে। তাই আমি উদ্বেলিত আনন্দিত ও অভিভূত। এই আনন্দ আরও আকাশছোঁয়া হতো যদি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে তারও আজকে শতবর্ষ পূর্ণ হতো। যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ কোনোকালেই স্বাধীন হতো না, মহাকালের সেই অমোঘ লড়াকু বীরসন্তান বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ আর মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী মিলে অভূতপূর্ব এক যুগসন্ধিক্ষণের সৃষ্ট হয়েছে, যা এই নশ্বর জীবনে আমার এক পরম প্রাপ্তি।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। স্বপ্নরা বারবার ফিরে আসে জন্ম-জন্মান্তরে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন একুশ বছর পর ফিরে এসেছে এই বাংলায়, বঙ্গবন্ধু যেন একুশ বছর পর ফিরে এসেছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে এক অলৌকিক পুনর্জন্মের ভেতর দিয়ে। পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তিনি ছুটে চলেছেন দুর্বার গতিতে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তিনি উন্নয়ন অগ্রগতির বেগবান ধারায় দেশকে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সকলেরই ভূমিকা আছে। যার যার অবস্থান থেকে সেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। নতুন প্রজন্মের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম তাঁদের স্বচক্ষে দেখে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হতে পারে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে; যাতে তারা দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার গল্প, বঙ্গবন্ধুর গল্প, মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে পারে, জানতে পারে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র যুবকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ জানতে চাইলে ড. আনোয়ার বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র যুবকদের উদ্দেশ্যে আমি বলবো যে, ছাত্রজীবনের মূল লক্ষ্য হবে সঠিকভাবে পড়াশোনা করা। কেননা, ছাত্রজীবনে পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। তাই মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনা করে জ্ঞানার্জন করতে হবে। অর্জিত জ্ঞানকে দেশের কাজে লাগাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সবারই দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে
- প্রফেসর ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিন,
উপাচার্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে অনুভুতির কথা জানতে চাইলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকল্যাণকামী প্রজ্ঞাবান উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন (আরেফিন মাতিন) বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সুযোগ এক বিরল সৌভাগ্য। সেই সৌভাগ্যের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ মুজিববর্ষ যোগ হয়ে এক অনন্য অনুপম মাহেন্দ্রক্ষণের সৃষ্টি করেছে এই ২০২১ সালে। একশো বছরের আগে আর এই বিরল মাহেন্দ্রক্ষণের সৌভাগ্য আসবে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের মহান এই মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর সম্মিলনে এক অভূতপূর্ব উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে জাতীয় জীবনে।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে সুদক্ষ, প্রাজ্ঞ ও ন্যায়নিষ্ঠ উপাচার্য বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। আমরা আজ জাতিসংঘ ঘোষিত উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছি। আমরা আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী সত্যিই এক অনুপম মাহেন্দ্রক্ষণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের একটিই প্রত্যাশা, করোনায় শিক্ষাক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে, সে সমস্যাগুলোয় যদি তিনি একটু সুদৃষ্টি দেন তাহলে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি। কেননা, তিনি সত্যিই এক ম্যাজিক লেডি। একমাত্র তাঁর পক্ষেই সম্ভব সকল সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধান করা। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে আমাদের প্রত্যাশা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি তাঁর মঙ্গলময় হাত প্রসারিত করবেন।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান ও বিচক্ষণ উপাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আমি মনে করি, সবারই দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে। আমাদের শিক্ষকদের এক্ষেত্রে ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। শিক্ষকরাই মানুষ গড়ার কারিগর। বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকদের ভূমিকা বেশি। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে আমার একান্ত অনুরোধ, তারা যেন মন দিয়ে পড়াশোনা করে। মনে রাখতে হবে, পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে মানসম্মত লেখাপড়া করে সুউন্নত মানবসম্পদে পরিণত হয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে হবে।