ঢাকার কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা ঈয়াদ আলী দুই বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ঈয়াদ আলী দুই ছেলে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইমরান হোসেন ও অনলাইন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ অপূর্ব চান তাদের মা ডলি আক্তারের (৪২) সুন্দর জীবন হোক। তার মায়ের সঙ্গী দরকার। সেই চিন্তা থেকে অপূর্ব ৩০ জুলাই রাত পৌনে ১০টার দিকে “বিসিসিবি মেট্রিমনিয়াল: হেভেনলি ম্যাচ” নামের ফেসবুক গ্রুপে মায়ের জন্য পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন।
সেই বিজ্ঞাপন ঘিরে তৈরি হয়েছে আলোচনা। অনলাইন জুড়ে এমন সন্তানের জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছেন অনেকে। এমন উদ্যোগকে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের বড় একটা পদক্ষেপ বলে মনে করেন সমাজ বিশ্লেষকেরা।
বাবার মৃত্যুর পর মায়ের একা সময়ে সময় দিতে না পারা, মায়ের বিষণœতা কাটিয়ে উঠতে এবং বাকিটা জীবন ভালো করে যেন কাটাতে পারেন সেই আকাক্সক্ষা থেকেই এমন বিজ্ঞাপন দেন অপূর্ব।
মায়ের পারিবারিক ও একার ছবি যুক্ত করে বিজ্ঞপ্তিতে অপূর্ব লিখেছেন, “বাবা মারা গেছেন। তাই আম্মুর জন্য পাত্র খুঁজছি। পাত্র ঢাকার আশপাশের হলে ভালো হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতা কম হলে সমস্যা নেই। পাত্রের পেশা চাকরি বা ব্যবসা- যেকোনোটা হতে পারে। ধর্মকর্ম করার পাশাপাশি পাত্রকে সাদামাটা হতে হবে। যিনি মায়ের জীবনের বাকি চলার পথের সঙ্গী হতে পারবেন। পাত্রের বয়স ৪২ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে হলে ভালো হয়। পারিবারিকভাবেই মায়ের বিয়ে দিতে ইচ্ছুক।”
মা এবং ভাইয়ের সম্মতি নিয়েই এই বিজ্ঞাপন দিয়েছেন অপূর্ব। তিনি বলেন, “বাবা মারা যাওয়ার পর মা তার অনেক কথাই আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন না। অনেক কথা বলতে গেলে তিনি একটু দ্বিধায় পড়ে যান। আমরা বড় হয়েছি। আমাদের ব্যস্ততা আছে। এ কারণে আমরা মাকে যথেষ্ট সময় দিতে পারি না। বড় ভাইয়ের সংসার আছে। আমিও ভবিষ্যতে বিয়ে করব। তখন মা আরও একা হয়ে যাবেন। তাই আমরা সবাই চাচ্ছি, মায়ের একটা সুন্দর জীবন হোক। তার একজন ভালো জীবনসঙ্গী দরকার।”
অপূর্বের মা ডলি আক্তার সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, “আমার এক ছেলে বিয়ে করেছে। আরেক ছেলে এখনো বিয়ে করেনি। জীবনে চলতে গেলে একজন সঙ্গীর প্রয়োজন হয়। আমার স্বামী মারা গেছেন। এখন ছেলেরা আমার কথা ভাবছে। আমি সম্মতি দিয়েছি। আমি ভালো মনের একজন জীবনসঙ্গী আশা করছি। যিনি তার দুই ছেলে, ছেলেবউসহ পরিবারের সবাইকে আপন করে নিতে পারবেন।”