জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষার স্তর প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এবং প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু করা হয়েছে। সে হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষার শ্রেণি বৃদ্ধি পেয়েছে চারটি। যার শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। ২০১৩ সাল থেকে বিদ্যমান প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম ক্রমান্বয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা হচ্ছে। এর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন শুরু হলেও এর জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। ফলে জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন কোনো না কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জাতীয় বাজেট ২০১৫-১৬ সামনে রেখে ‘মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় বরাদ্দ প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারের বক্তারা এসব কথা বলেন। ওই সেমিনারের আয়োজন করে ‘ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স’ এবং ‘আমার অধিকার ফাউন্ডেশন’ নামের দুটি সংগঠন।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. খলীকুজ্জমান আহম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। কিন্তু তা বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। আর প্রতি বছরই আমাদের শিক্ষার্থী বাড়লেও সেই অনুযায়ী বরাদ্দ বাড়ছে না। এক সময় জাতীয় বাজেটের ১৪ শতাংশ বরাদ্দ শিক্ষাক্ষেত্রে থাকলেও এখন তা থেকে কমে এসেছে। ফলে শিক্ষার্থীসহ সামগ্রিকভাবে শিক্ষানীতিই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
অর্থনীতিবিদ খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘চুরির জন্য বাজেটের আকার বাড়াতে হবে বলে মনে করি না। বাজেট বাড়াতে হবে সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য। শিক্ষকতা শুধু পেশা নয়, ব্রত- এই বিষয়টি শিক্ষকদের মনে রাখতে হবে। শিক্ষকদের মান বাড়ানোটাও জরুরি হয়ে পড়েছে। শিক্ষকদের অধিকারের পাশাপাশি তাঁদের দায়িত্ব নিয়েও কথা বলতে হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মেছবাহ উল আলম বলেন, হঠাৎ করেই বাজেট বাড়ানো সম্ভব নয়, বরাদ্দের পরিমাণ আগের মতোই থাকবে। তবে এর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি।
মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, ১ জুলাই ২০১৫ থেকে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হবে। ফলে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাবদই বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়ে যাবে। বাকি অর্থ দ্বারা নতুন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা কষ্টকর হয়ে পড়বে। কিন্তু নতুন শিক্ষক নিয়োগসহ অবকাঠামো খাতে অবশ্যই অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন। এ জন্য প্রাথমিক শিক্ষায় বাজেট বাড়ানো উচিত।