সেতু বিভাগের বৈপ্লবিক কর্মকান্ডের প্রেক্ষাপটে
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা! বিশ্বের বিষ্ময়!!
কোটি মানুষের স্বপ্ন পূরণে তথা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মানে উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। আমরা ২০১৫ সালেই নি¤œ আয়ের দেশ হতে নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। ২০২১ সালের শেষে আমাদের মাথাপিছু আয় ২৫০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। দেশে শিক্ষার হার বেড়েছে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এগুলো উচ্চ শিক্ষার সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করে চলেছি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে আমরা বিশ্ব পরমাণু ক্লাবে প্রবেশ করেছি। নারীর শিক্ষা, বাল্য বিবাহ বন্ধ এবং নারীর ক্ষমতায়নে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পোশাক খাতের পর সবচেয়ে বেশি আয় আসছে রেমিট্যান্স খাত থেকে। বিদেশে বর্তমানে প্রায় ৮০ লক্ষ বাংলাদেশি কর্মরত আছে। চামড়া শিল্পেও আমরা এগিয়ে চলছি। ঔষধ শিল্পে আমাদের সফলতা ঈর্ষণীয়। ঔষধের আভ্যন্তরীন বাজারমূল্য ১৫০০০ কোটি টাকা। এর ৯৮ শতাংশই আমরা নিজেরা পূরণ করছি। বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর প্রায় ১২৭টি দেশে ঔষধ রফতানি করে। বাইসাইকেল, প্লাস্টিক পণ্য এবং শিশুর খেলনা রফতানিতেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
সরকারের গৃহীত বেশ কিছু মেগাপ্রজেক্ট বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নকে আরো ত্বরান্বিত, গতিশীল ও বেগবান করবে বলে আশা করা যায়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্প, পদ্মাসেতু, ঢাকায় মেট্রো রেল, মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল, কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইকোনমিক জোন, মহেশখালীতে গভীর সমুদ্র বন্দর, মহেশখালী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, চট্টগ্রাম হতে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন প্রকল্প, কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে উন্নতিকরণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম বন্দর বে-টার্মিনাল প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা যায়। এসব মেগা প্রকল্পের মধ্যে পদ্মাসেতু, মেট্রো রেল এবং টানেলের নির্মাণ ২০২২ সালে মধ্যেই স¤পন্ন হবে এবং এগুলো দিয়ে যান চলাচল শুরু হবে। ২০৪১ সাল লাগাদ বাংলাদেশ যে উন্নত দেশে পরিণত হবে এবং এর যে স্বপ্ন আমরা দেখছি, তা কিন্তু মোটেই অবাস্তব এবং অসম্ভব নয়। যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা অপরিহার্য। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল এবং টানেল চালু হলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার পুরো চিত্রটাই বদলে যাবে এবং আমরা যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন এবং উন্নত এক যুগে প্রবেশ করব।
ফেনীর সোনাগাজী, চট্টগ্রামের মিরসরাই এবং সিতাকুন্ড উপজেলার সাগর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে গড়ে উঠছে বাংলাদেশের বৃহত্তম ইকোনমিক জোন বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর। প্রায় ৩০,০০০ একর জমি নিয়ে ধাপে ধাপে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া এই ইকোনমিক জোনে ইতিমধ্যেই দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা শিল্প প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর হবে আধুনিক বিশ্বের নতুন শিল্পাঞ্চল, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।