॥ ওয়াসির হেলাল ॥
৫ম শ্রেণি, সহজপাঠ স্কুল, ঢাকা
খুব ভালো একটি স্কুলে আমি পড়ি; স্কুলের নাম সহজপাঠ। আমাদের এই স্কুলটি অন্যসব স্কুল থেকে একেবারেই আলাদা। পুরোপুরি ভিন্ন ধরনের এবং চমৎকার ও সহজ লেখাপড়ার একটি স্কুল এটি। পড়াশোনার পাশাপাশি আমাদের স্কুলে অনেক রকম অনুষ্ঠান ও উৎসব হয়। করোনা মহামারি শুরুর আগে এসব অনুষ্ঠান ও উৎসবগুলোয় আমরা স্কুলেই আগ্রহের সাথে অংশগ্রহণ করেছি এবং দারুণভাবে উপভোগ করেছি।
আমাদের স্কুলে যেসব উৎসব হয়, তার মধ্যে একটি মজার ইভেন্ট হচ্ছে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতাটা আমার খুবই পছন্দের। অনুষ্ঠানে প্রায়ই মজার মজার সব সাজতে হয়। কখনো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কখনো বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, আবার কখনো অন্য বিখ্যাত সব মানুষ সাজতে হয়।
একবার বিজ্ঞান উৎসবে যেমন খুশি সাজো প্রতিযোগিতায় প্রিয় বিজ্ঞানী সেজে আসতে বলা হলো। আমি আমার প্রিয় মহাবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন সেজেছিলাম। তার আগে একবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং একবার কাজী নজরুল ইসলাম সেজেছিলাম। তবে মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইন সেজে আমি খুব মজা পেয়েছি। নিজেকে তখন মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইন মনে হয়েছিল।
গতবছর করোনাভাইরাস আসার পর আমি ভেবেছিলাম আর হয়তো এসব উৎসব করা হবে না; আর মজা করা হবে না বন্ধুদের সাথে। কিন্তু করোনাকালের লকডাউনেও আমাদের সহজপাঠ স্কুল এই উৎসবগুলো চালিয়ে নিয়েছে অনলাইনে। ইন্টারনেটে জুম অ্যাপের মাধ্যমেই হয়েছে সব উৎসব। ইউটিউব থেকে আইডিয়া নিয়ে বাসায় বসে আমরা উৎসবের ব্যানার বানিয়েছি।
৩ অক্টোবর ২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিত ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ উৎসবের ভিডিওতে আমরা সবাই সবাইকে জুম অ্যাপে দেখেছি। এটা খুবই আনন্দের অভিজ্ঞতা ছিল আমার জন্য। ঘরের আরামের মধ্যেই স্কুলের উৎসবের অনুষ্ঠান উপভোগ করেছি। বাসার মধ্যে অন্যরকম মজা হয়েছিল একেকদিন একেকটা ড্রেস পরে যেমন খুশি তেমন সেজে আনন্দ করতে।
এত আনন্দের মধ্যেও আমার কিন্তু স্কুলে গিয়ে আনন্দ করতে মন চায়। বাসায় হয়তো আরাম বেশি, কিন্তু স্কুলে মজা বেশি। করোনা মহামারির কারণে স্কুলে যেতে পারছি না বলে মাঝেমধ্যে মনটা ভীষণ খারাপ হয়। স্কুলে বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে আনন্দ করার মজাটাই আলাদা। তাই আমি চাই এদেশ থেকে করোনা তাড়াতাড়ি দূর হয়ে যাক; পৃথিবী থেকে দূর হয়ে যাক। যাতে খুব তাড়াতাড়ি স্কুল খুলে যায়, আর আমরা সবাই মিলে স্কুলে খুব আনন্দ ও মজা করে পড়াশোনা এবং খেলাধূলা করতে পারি।