জঙ্গিবাদের সমাধান সামনে রেখে শিক্ষায় সংস্কার হচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উগ্রবাদ ও সশস্ত্র সংঘাত বিশ্বে মানবাধিকার, শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। উদ্ভাবন, সমঝোতা এবং দূরদর্শী নীতির দ্বারা এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সমাধান সামনে রেখে বাংলাদেশের শিক্ষাক্রম ও শিক্ষা উপকরণ সংস্কার করা হচ্ছে। সম্প্রতি হোটেল রেডিসনে নয়টি দেশের শিক্ষা ও উন্নয়ন বিষয়ক ‘ই-নাইন’ ফোরামের তিন দিনব্যাপী মন্ত্রী পর্যায়ের ১১তম সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দেশে শিক্ষানীতি প্রণয়নের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে সবার সঙ্গে বিশদ আলোচনার মাধ্যমে ২০১০ সালে একটি নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। আমরা বেশকিছু কৌশলগত নীতি এবং উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি কর্মসূচি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন গোষ্ঠী এবং অন্যান্য পশ্চাদপদ শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সম্পদ বরাদ্দ, সামাজিকভাবে অনগ্রসরদের অন্তর্ভুক্তির জন্য ব্যক্তিখাত/ বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব জোরদারকরণ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষায় অধিকতর সুবিধা নিশ্চিত করতে বৃত্তি কর্মসূচির সম্প্রসারণ, দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং সর্বজনীনতা নিশ্চিতকরণ।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষা সামাজিক অন্তর্ভুক্তি সমর্থন করে, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হ্রাস এবং তাদের ক্ষমতায়নে সাহায্য করে। আমাদের স্যানিটেশন, পানি, পরিষ্কার-পরিছন্নতা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য এবং শিখন ফলাফলের ওপর এর একটা ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। বিদ্যালয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পঠন শিক্ষাকে সহজ করবে, শিক্ষার্থীদের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাবে এবং নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাদের খাপ খাওয়াতে সাহায্য করবে।
শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। শিক্ষকতা পেশায় যোগ্য ব্যক্তিদের আকৃষ্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পেশার জন্য একটি দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে নীতিগত উপায় উদ্ভাবন এবং বিশেষ প্রণোদনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে। স্বাধীনতার পর থেকে শিক্ষা আমাদের কাছে একটি জাতীয় অগ্রাধিকারের বিষয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নতুন দেশের জন্য সর্বজনীন শিক্ষাসহ বেশকিছু বলিষ্ঠ এবং দূরদর্শী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ওইসব দূরদর্শী উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমতাভিত্তিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ও জীবনব্যাপী শিখনের লক্ষ্য অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত। আমাদের সরকারের বাজেট বরাদ্দে শিক্ষা খাত সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়ে থাকে।