দেশের স্কুল পাঠ্যবইয়ের ইতিহাসের পাতা থেকে দেশটির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ সময় নির্বাসিত ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তার ভূমিকাকে নতুন প্রজন্মের কাছে ১৯৭৫ সালের পর আড়াল করার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এখন বাংলা মাধ্যমে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী। তবে, ইংরেজি মাধ্যম এবং মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের পাঠ্যক্রমে এখনো তা অনুপস্থিত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, আজকের কিশোর-কিশোরীরা কতটা জানে দেশটির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে। ঢাকার কলাবাগানের একটি কোচিং সেন্টারে পড়তে আসা কয়েকজন কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল।
তাদের কথা শুনে বোঝা গেল বাংলা মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীরা পঞ্চম শ্রেণি থেকেই শেখ মুজিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনী পড়ে, তার জন্ম থেকে শুরু করে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া, উনিশ শো একাত্তরের সাতই মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া এবং তারপর গ্রেপ্তার হয়ে পাকিস্তানের কারাগারে প্রেরণের মত তথ্য মোটামুটি জানে।
বাংলাদেশের ইংরেজি মাধ্যম ও মাদ্রাসা বোর্ডের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কিন্তু ঢাকার ইংরেজি মাধ্যম স্কুল এক্সেল এ্যাকাডেমীর ছাত্র ইফাস বলছে, স্কুলের রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নেবার জন্য তাকে এ বিষয়ে জানতে হয়েছে।
‘আমাদের স্কুলের টিচাররা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক কিছু বলে। আমাদের বইয়ে নেই। কিন্তু স্কুলে আমাদের প্রবন্ধ লিখতে দিয়েছিল। আমরা দুই তিনবার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা লিখেছি।’
একই ভাবে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কোনো পাঠ্যসূচিতেও অর্ন্তভুক্ত নেই এ বিষয়টি। ফলে এ মাধ্যমের ছাত্র-ছাত্রীরাও এ বিষয়ে জানেন পরিবার ও গণমাধ্যম থেকে পাওয়া কিছু তথ্যই। বলছিলেন ঢাকার এ্যালিফ্যান্ট রোডের নুরানী গার্ডেন মাদ্রাসার নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী।
‘উনার অনেক অবদান আছে। উনার কথা আমরা বইয়ে অনেক পড়েছি। উনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন’, বললেন একজন শিক্ষার্থী।
এই শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ জানালেন, প্রাথমিকভাবে পরিবারের কাছে এবং পরে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদনের মাধ্যমেই তারা মূলত শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জেনেছেন। আর যারা জানেন না, তাদের অনেকেই বলেছেন, পরিবারের কাছেও এ বিষয়ে তারা কিছু শোনেননি।- বিবিসি