বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি) আয়োজিত কালচারাল ফেস্টের আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বাংলাদেশে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় যেসব সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হয় তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়।
১৭ অক্টোবর বিইউপি ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার। এখানে প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিমকে ৩০ মিনিট করে সময় দেয়া হয় দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য। যেখানে অসাধারণ পারফর্ম করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিসহ পাবলিক-প্রাইভেটের মোট ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম অংশ নেয়। বিকালে প্রতিযোগিতা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে চ্যাম্পিয়ন টিম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বিজয়ী দল ক্যাম্পাসে ফিরে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য মূলত বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য। সাংস্কৃতিক দিক থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় এগিয়ে। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় একটি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় ঢাবি’র চ্যাম্পিয়ন হওয়া সত্যিই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আনন্দের খবর। শুভেচ্ছা জানাই টিমের সকল সদস্যকে। ঢাকা ইউনিভার্সিটি কালচারাল সোসাইটিকে ধন্যবাদ এরকম একটি প্রতিযোগিতায় গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসার জন্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের প্রধান সমন্বয়কারী ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি কালচারাল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক আহসান রনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই সাংস্কৃতিক দিক থেকে উন্নত। কিন্তু একটি কমন প্লাটফর্ম না থাকার কারণে বিভিন্ন বড় বড় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় ঢাবি থেকে অনেক সময় কোনো টিমই যায় না বা ভালো টিমওয়ার্কের অভাবে পারফরমেন্স ভালো হয় না। এই অভাব পূরণ করতেই কাজ শুরু করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি কালচারাল সোসাইটি। হঠাৎ করেই খবর পাওয়া যায় এই ফেস্টিভাল সম্পর্কে। এরপর ঢাবি’র বিভিন্ন বিভাগের মেধাবী কিছু ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে তৈরি করা হয় একটি গীতিনাট্য। নিজেদের প্রথম উদ্যোগেই সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে পেছনে ফেলে ঢাবিকে চ্যাম্পিয়ন করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। তিনি অনুষ্ঠানের অন্যতম ব্যবস্থাপক সাহস মুস্তাফিজ ও নানাভাবে সহযোগিতার জন্য গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী ও ডি ইউ টাইমসের প্রতিষ্ঠাতা আবুল হাসনাত সোহাগকে ধন্যবাদ জানান।
ঢাবি টিমকে সার্বিক সহযোগিতা দেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন তাকে এই ধরনের উদ্যোগের কথা জানায় তখন তিনি খুবই খুশি হন, কারণ তিনি নিজে সবসময় এরকম একটি প্লাটফর্ম মনে মনে চাচ্ছিলেন। ফলে ঢাকা ইউনিভার্সিটি কালচারাল সোসাইটি থেকে তাকে যখন এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানানো হয় তিনি সবধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছেন।
বিজয়ী দলের সদস্য সাহস মুস্তাফিজ বলেন, আমার জীবনে অনেক পুরস্কার পেয়েছি, কিন্তু এই পুরস্কারের সাথে অন্য কোনো পুরস্কারের তুলনা করা যায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে সত্যিই গর্বিত। ধন্যবাদ ঢাকা ইউনিভার্সিটি কালচারাল সোসাইটিকে এরকম অসাধারণ একটি উদ্যোগ নেয়ার জন্য।
প্রতিযোগিতায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, সংগীত, মাইক্রো বায়োলজি, ওয়ার্ল্ড রিলিজন এন্ড কালচার, ম্যানেজমেন্ট, ব্যাংকিং, ক্রিমিনোলজি ও বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
বিজয়ী দলকে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই একটি বড় অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়ের হাত দিয়ে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে বলে জানায় আয়োজক বিইউপি কালচারাল ফোরাম।