বর্ণিল আয়োজন আর বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ১৪তম বর্ষপূর্তি, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান এবং সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। দিনটিকে স্মরণীয় করতে সেজেছিল পুরো বিশ্ববিদ্যালয়, সর্বত্রই ছিল সাজ-সাজ রব। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি সমাবেশ। এরপর জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা। পতাকা উত্তোলন শেষে প্রধান অতিথি বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি’র একটি চৌকস দল প্রধান অতিথিকে গর্ড অব অনার প্রদান করে।
এসময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইউজিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞান ও গবেষনায় আরো মনোযোগী হতে হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে যে স্বপ্নের বীজ বপন করেছিলেন, তা আজকের কুয়েট। কুয়েট গ্রাজুয়েটদের বেকার হিসেবে বসে থাকতে হয়না, বিষয়টি আমাদের আনন্দ দেয়। সভাপতির বক্তৃতায় কুয়েট ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং এ প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থীরা কুয়েটকে আজ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে।
এছাড়া অনুষ্ঠিত হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, আমন্ত্রিত অতিথিসহ বাহারী সাজে সজ্জিত হয়ে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ফুলবাড়ীগেট এলাকা প্রদক্ষীণ শেষে স্টুডেন্ট’স ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে এসে শেষ হয়। স্টুডেন্ট’স ওয়েলফেয়ার সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজেক্ট ও পোষ্টার প্রদর্শনী, টেকনিক্যাল পেপার প্রেজেন্টেশন, কুয়েট’র উপর নির্মিত প্রামান্য চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘দুর্বার বাংলা’ চত্বরে তিনি গাছের চারা রোপন করেন। প্রধান অতিথি সম্প্রসারিত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন এবং প্রশাসনিক ভবনের শুভ উদ্বোধন করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন বিভাগের ল্যাবসমূহ উম্মুক্তকরণ, ছাত্র-শিক্ষক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, দোয়া মাহফিল, বঙ্গবন্ধু রচিত ‘অসমাপ্তÍ আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোচনামচা’ গ্রন্থের উপর শিক্ষার্থীদের পাঠ প্রতিযোগিতা এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা লাভ করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। এবছর ১৫তম বর্ষে পদার্পন করছে নবীন এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিবছর ০১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হলেও পবিত্র ঈদের ছুটি থাকায় এবছর দিবসটি পালনের কর্মসূচি পালিত হয় আজ ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার।