গত ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় ক্যাম্পাস পরিচালিত ডায়নামিক কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের ১৪৫তম ব্যাচের উদ্বোধন অনুষ্ঠান। ক্যাম্পাস অডিটোরিয়ামে আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংক-বীমা-অর্থ ব্যবস্থাপনায় সুদক্ষ ব্যক্তিত্ব; সরকারের অতিরিক্ত সচিবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনকারী, বর্তমানে জীবন বীমা কর্পোরেশনের ডায়নামিক ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ আলী নূর। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সরকারের সাবেক যুগ্মসচিব, খাজা ইউনুস আলী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার আবদুর রশিদ খান; অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক ও ক্যাম্পাস সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ঈঝউঈ) এর মহাসচিব ড. এম হেলাল এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্যাম্পাস’র ফ্রি ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পার্সন এডভোকেট এম জি কিবরিয়া।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথিকে পুষ্পমাল্যে বরণ করে নেয়া হয় এবং তাঁকে উপহার হিসেবে অর্পণ করা হয় ক্যাম্পাস’র জ্ঞানমেলা সিরিজে প্রকাশিত সৃজনশীলতা বৃদ্ধি, আত্মোন্নয়ন ও জাতি জাগরণমূলক বিভিন্ন বইয়ের সেট; ক্যাম্পাস’র নিজস্ব গবেষণায় প্রকাশিত ২টি মডেল, বিভিন্ন সিডির সেট ও স্যুভেনির।
বহুমুখী প্রতিভার বর্ণিল গুণাবলির কর্মযোগী, ন্যায়নিষ্ঠ, দায়িত্বশীল, দেশপ্রেমী ও কল্যাণকামী ব্যক্তিত্ব, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোঃ আলী নূরকে ক্যাম্পাস’র সম্মাননা ক্রেস্ট অর্পণের মাধ্যমে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন সিএসডিসি’র মহাসচিব ড. এম হেলাল।
ভালো কাজে পুরস্কার ও মন্দ কাজে তিরস্কার ক্যাম্পাস’র চিরায়ত রীতি। সে ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির মাধ্যমে ক্যাম্পাস’র এক সদস্যকে বিশেষ পুরস্কার দেয়া হয়। জিনিসপত্র যথাস্থানে রেখে কীভাবে সুশৃঙ্খল জীবন ও কর্মদক্ষতা অর্জন করা যায় এরূপ ব্যতিক্রমী এক আর্টিকেল লেখার জন্য ক্যাম্পাস’র সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামানকে পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড দেয়া হয়।
কম্পিউটার কোর্সে অংশগ্রহণকারীরা যেন স্মার্ট এন্ড গ্লোবাল ইয়থ জেনারেশনরূপে দেশ ও জাতির অন্ধকার দূরীকরণে তাদের অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে, সে কামনায় প্রধান অতিথির হাতে আশা-জাগানিয়া মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়। এরপর কম্পিউটার কোর্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় এবং শুরু হয় বক্তৃতা পর্ব।
শিক্ষার্থীর ভেতরের সুপ্ত প্রতিভা জাগিয়ে তোলা এবং তাদের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেয় ক্যাম্পাস
-মোঃ আলী নূর
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, প্রদীপ্ত পাবনা গড়ার কারিগর মোঃ আলী নূর বলেন মানুষ মহৎ কিছু করতে চাইলে, ভালো কিছু করার ইচ্ছা থাকলে কোনো বাধাই তাকে থামিয়ে রাখতে পারে না। ছাত্র-জীবনে বহু ছাত্রনেতা অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখালেও কর্মজীবনে গেলে তার বিপরীত চিত্রটিই দেখা যায়। কিন্তু ক্যাম্পাস’র কর্ণধার ড. এম হেলাল দেশ-উন্নয়ন ও জাতি গঠনের মহৎ কর্মযজ্ঞকে জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়ে সেই স্বপ্নকে আজ মহীরূহ করে গড়ে তুলেছেন। বহু বাধা এসেছে কিন্তু একবারও তাঁর আদর্শ থেকে তিনি বিচ্যুত হননি।
আলী নূর বলেন শুধুমাত্র এক প্রজন্ম নয়, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে সৎ-যোগ্য-দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার কারিগর হচ্ছেন ড. এম হেলাল এবং তাঁর ডায়নামিক প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস। এক কথায়, তিনি হচ্ছেন আলোকিত দেশ গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা। মানুষ চাইলে পারে না এমন কিছুই নেই, সেটিই তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন এবং ছাত্র-যুবকদের মনে সেই বীজ বপণ করে চলেছেন। এটি সম্ভব হয়েছে তিনটি গুণের কারণে প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি, গভীর মনোযোগ ও সংকল্প। এই তিনটি গুণ যার মাঝে থাকবে, তিনি সফল হবেনই -এতে সন্দেহ নেই।
তিনি আরও বলেন আমাদের সন্তানদের মাঝে সম্ভাবনা আছে, মেধা আছে সেটাই জাগিয়ে তুলছে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীর ভেতরে সুপ্ত অবস্থায় থাকা গুণ-মেধা-প্রতিভা জাগিয়ে তোলা এবং তাদের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেয় ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের ভেতর অনুপ্রেরণা জাগিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখায় ক্যাম্পাস। এভাবে ড. এম হেলালের নেতৃত্বে ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র আমাদের ছাত্র-যুবকদেরকে আধুনিক বিশ্বের উপযোগী করে গড়ে তুলছে। তাই ক্যাম্পাস’র প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
মোঃ আলী নূর ক্যাম্পাস’র আতিথেয়তায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। তিনি ক্যাম্পাস’র কম্পিউটার ট্রেনিং কর্মসূচিতে একটি কম্পিউটার দানের ঘোষণা দেন এবং ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোকপাত করে সব ধরনের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
এম এ রশিদ খান
সরকারের সাবেক যুগ্মসচিব, খাজা ইউনুস আলী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার এম এ রশিদ খান বলেন ক্যাম্পাস এ আসলে শান্তি পাই, তাই সুযোগ পেলেই আসি। তিনি বলেন এখানে নানা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ছাত্র-যুবকদেরকে যোগ্য করে গড়ে তোলা হয়। এসব ছাত্র-যুবকরাই সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশকে। ক্যাম্পাস’র প্রতিটি উদ্যোগ দেশের কল্যাণে। সে কারণেই ক্যাম্পাস সরকারিভাবে স্বীকৃত। সরকার থেকে সামান্য বাজেটও পায় তারা, কিন্তু যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। তাই ছাত্র-যুব উন্নয়নে তথা দেশের উন্নয়নে ক্যাম্পাস’র কল্যাণকর কর্মসূচিতে সহযোগিতা করার জন্য আমি দেশপ্রেমী, উদার, দানশীল ব্যক্তিত্বদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
এডভোকেট এম জি কিবরিয়া
ক্যাম্পাস পরিচালিত ইংলিশ এন্ড স্মার্টনেস কোর্স ফর লিডারশিপ এর রিসোর্স পার্সন এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোঃ আলী নূরকে পেয়ে আমাদের ছাত্র-যুবকদের স্বপ্ন বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। কারণ তিনি শুধু সরকারি কর্মকর্তা নন, বিশাল এক জ্ঞানের ভান্ডার। তাঁর ভেতর আছে নেতৃত্বগুণ/নেতৃত্বের ক্ষমতা, সামনে এগিয়ে যাওয়ার কঠিন স্পৃহা। তাঁর এসব গুণের কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার থেকে যাত্রা শুরু করে আজ তিনি এ পর্যায়ে এসেছেন; সামনে এগিয়ে যাবেন আরও অনেক দূর। তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের ছাত্র-যুবকরা যাতে নিজেদের জীবনকে সাফল্যমন্ডিত করতে পারে, সেজন্যই তাঁর মতো ব্যক্তিত্বদের ক্যাম্পাস’র অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ জানানো হয়।
এডভোকেট কিবরিয়া বলেন, আজ ক্যাম্পাস’র ডায়নামিক কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের ১৪৫ তম ব্যাচের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এ পর্যন্ত ৪ হাজারের অধিক ছাত্র-যুবক ক্যাম্পাস থেকে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। এছাড়াও ক্যাম্পাস ছাত্র-যুব উন্নয়নে যুগোপযোগী নানা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে উত্তরায় ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার নির্মাণের বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ক্যাম্পাস’র গ্রহণযোগ্যতা দেশের গ-ি পেরিয়ে বিশ্ব দরবারে পৌঁছাবে। তাই স্টাডি সেন্টার প্রকল্প বাস্তবায়নে আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ তাঁর সার্কেলের উদার দানশীল ব্যক্তিত্বগণের সহযোগিতা কামনা করছি।
ড. এম হেলাল
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং সিএসডিসি’র মহাসচিব ড. এম হেলাল বলেন ক্যাম্পাস’র ডায়নামিক কম্পিউটার কোর্স অন্যান্য কর্মসূচির মতো একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এই কোর্সের মাধ্যমে ছাত্র-যুবকদের শুধু কম্পিউটারই শেখানো হয় না; তাদের মস্তিষ্কে সেট হওয়া নেতিবাচক চিন্তা ডিএক্ট করে ইতিবাচক চিন্তার সন্নিবেশ ঘটানো হয়। এখানে প্রশিক্ষিত ছাত্র-যুবকরা শুধু দক্ষ জনশক্তি হয়েই গড়ে ওঠে না; তারা সৎ-আদর্শ-ন্যায়নিষ্ঠ মানুষ হওয়ারও দীক্ষা পায় এখান থেকে। এজন্যই ক্যাম্পাস এর প্রক্ষিণার্থীরা যেখানেই যাবে আলো ছড়াবে। আলোকিত করবে শুধু দেশ নয়, পুরো বিশ্বকে।
তিনি বলেন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিকে অবলম্বন করে জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও আলোকিত জাতি গঠন ক্যাম্পাস’র লক্ষ্য। আর এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সকলের সহযোগিতা পেলে এ মহৎ উদ্দেশ্য সফল হবেই। ক্যাম্পাস’র কল্যাণ-কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি আমাদের পাশে থাকবেন বলে বিশ্বাস।