ট্রাফিক পুলিশকে কেউ কখনও নাচতে দেখেছেন? তাও আবার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের মতো কঠিন দায়িত্ব পালনের সময়? বিষয়টি অবাস্তব মনে হলেও ভারতের এক ট্রাফিক পুলিশ ঠিক এ কাজটিই করে যাচ্ছেন ৬ বছর ধরে। ভারতের ইন্দোর শহরের ট্রাফিক পুলিশ কুনওয়ার রণজিৎ সিং নিজেকে দাবি করেন মাইকেল জ্যাকসনের ভক্ত হিসেবে। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে মনোমুগ্ধকর নৃত্যের তালে কাজ করেন এ ট্রাফিক পুলিশ।
রণজিতের একসময় স্বপ্ন ছিল নর্তক হবেন। কিন্তু তার দুই প্রিয় বন্ধু সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর পর তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ট্রাফিক পুলিশে যোগ দেন। সড়ক দুর্ঘটনায় তার প্রিয় বন্ধুরা চলে গেলেন, তাই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে তিনি দায়িত্ব তুলে নেন কাঁধে। আর সেই সঙ্গে তার পেশার মধ্যেই তিনি তার লালিত স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার সিদ্ধান্ত নেন। অর্থাৎ নাচের কাজটি তিনি ট্রাফিক পুলিশের কাজের মধ্যেই সেরে ফেলার কৌশল রপ্ত করেন।
নৃত্যশৈলীর মাধ্যমে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকে তিনি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। সাধারণভাবে পেছনের দিকে হেঁটে যাওয়ার পরিবর্তে তিনি মুনওয়াকের মাধ্যমে কাজটি করেন। ফলে তা ট্রাফিক নিয়ম অনুসরণ করতে সবাইকে আকৃষ্ট করে বলে জানান তিনি।
তার এ নাচ যেমন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বেশ কাজ দেয়, তেমনি এর মাধ্যমে তিনি সব রকমের মানসিক চাপ থেকেও মুক্ত থাকেন। তার এ ব্যতিক্রমী ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কৌশল বেশিরভাগ চালক ও যাত্রীকেই আকৃষ্ট করে থাকে। এটিকে কাজে লাগিয়ে তিনি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে মানুষকে আরও বেশি সচেতন করে তোলেন। তার এ কৌশল অন্য সহকর্মীদেরও অনুপ্রাণিত করছে। ইন্দোরেরই আরও অন্তত ৩ জন ট্রাফিক পুলিশ তার কাছ থেকে এরকম নাচ রপ্ত করছে। ফেসবুকেও রয়েছে তার বিপুলসংখ্যক অনুসারী। একটি টেলিভিশন শোতেও অংশ নেন রণজিৎ।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এরকম কৌশলের কারণে রণজিতের ওপর অবশ্য ক্ষুব্ধ নয় তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। বরং তারাও এটিকে অনুপ্রেরণামূলক হিসেবেই দেখে থাকেন। রণজিৎ ইতোমধ্যে বিভিন্ন রকম ৪২টি পুরস্কার ও ১০টি মানপত্র অর্জন করেছেন।