ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারের তারুণ্যোদ্দীপ্ত জাতি-জাগানিয়া ভিশনারি লিডার, বরেণ্য শিক্ষাদ্যোক্তা, শিক্ষাক্ষেত্রে সৃজনশীল ও ব্যতিক্রম ধারার প্রবর্তক, আধুনিক ও ডিজিটাল শিক্ষার স্বপ্নদ্রষ্টা লায়ন এম কে বাশার। তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিএসবি-ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপ শিক্ষার অত্যুজ্জ্বল আলো ছড়িয়ে গ্রামের মেঠো পথ ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে উন্নত দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পর্যন্ত। গর্ব করে আজ বাংলাদেশ তাঁকে নিয়ে। হাঁটি হাঁটি পা পা করে যাঁর শুরু, কালের পথ ধরে তিনি এখন ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারের মহীরুহে পরিণত হয়েছেন।
নিজের আত্মায় যিনি ধারণ করেছেন দেশের শিক্ষা উন্নয়নের সুমহান পবিত্র দায়িত্ব; তৈরি করেছেন ইতিহাস, সৃষ্টি করে চলেছেন অদম্য মেধাবী প্রজন্ম। শক্ত হাতে শত বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থাকে, গড়ে তুলেছেন অজস্র স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা। অদম্য মেধাবীদের শিকড় থেকে শিখরে তুলে আনার জন্য করছেন নিরন্তর সংগ্রাম। দেশপ্রেমে প্রোজ্জ্বল এই মহীয়ান শিক্ষা-ব্যক্তিত্ব অনেক আগেই বুঝে গিয়েছিলেন শিক্ষার উন্নয়ন মানেই প্রকৃতপক্ষে দেশের উন্নয়ন; শিক্ষায় বিনিয়োগ মানেই দেশের উন্নয়নে বিনিয়োগ।
করোনা মহামারীর সময়েও অনলাইন শিক্ষা বিস্তারে যে প্রতিষ্ঠানের নাম সর্বাগ্রে নিতে হয়, তা হচ্ছে লায়ন এম কে বাশারের ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সরকার কর্তৃক করোনাকালীন লকডাউনের ছুটি ঘোষণা করার শুরু থেকেই লায়ন বাশারের প্রাজ্ঞ দিকনির্দেশনায় অনলাইন ক্লাস চালু রেখে অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে রয়েছে ক্যামব্রিয়ান।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে তাঁর সাথে। সেই সাক্ষাৎকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসঃ করোনার এই অস্থির সময়ে কেমন চলছে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ?
লায়ন এম কে বাশারঃ করোনা লকডাউন পরিস্থিতির সময়ে সরকার কর্তৃক স্কুল-কলেজ ছুটির ঘোষণা দেয়ার পর ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। আমরা ১৮ মার্চ থেকেই অনলাইনে ক্লাস শুরু করে দিয়েছি এবং এখন পর্যন্ত তা অব্যাহত আছে।
এছাড়া সরকার ঘোষণা করেছে অক্টোবর মাসের ৪ তারিখ থেকে কলেজের একাদশ শ্রেণির ক্লাসগুলো অনলাইনে শুরু করতে। আমরা তার আগেই ১ তারিখ থেকে অনলাইনে একাদশের ক্লাস শুরু করেছি। এই মুহুর্তে আমাদের স্কুল-কলেজের সকল শিক্ষার্থীই অনলাইন ক্লাসের সাপোর্ট পেয়ে যাচ্ছে। তাদের এক্সাম হচ্ছে অনলাইনে, রেজাল্টও অনলাইনে পাবলিশ হচ্ছে। ফোন কল, গুগল ডুয়ো, জি-স্যুট বা জুম ক্লাসের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করেছি পড়াশোনার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহটা ধরে রাখতে পারি। তারা যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে কোনোভাবেই পিছিয়ে না পড়ে, তার সবরকম চেষ্টাই আমরা করে যাচ্ছি।
বি ক্যাঃ শিক্ষার্থীদের মহামারী কোভিড-১৯ সম্পর্কে সচেতন করতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ক্যামব্রিয়ান?
লায়ন বাশারঃ করোনা মহামারী চলাকলীন একজন শিক্ষার্থী কীভাবে চললে, কী কী নিয়ম মেনে চললে করোনায় আক্রান্ত হবে না, সে বিষয়ে আমরা তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়েছি অনলাইনে। এজন্যে নিয়মিত বিভিন্ন সেশনের আয়োজন করেছি। বিগত কয়েকমাসে আমাদের কোনো শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, এমন সংবাদ আমরা পাইনি। আল্লাহ্’র প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি যে, এ মহামারিতেও আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে তিনি সুস্থ রেখেছেন। অভিভাবকেরাও অনেক সচেতন ছিলেন এ বিষয়ে। আমরা যখন অনলাইনে ব্রিফিং দেই বা ফেসবুকে লাইভে এসব নিয়ে বলি, তখন শিক্ষার্থীরাও তা শুনে মেনে চলেছে। সবমিলিয়ে বলা যায়, ক্যামব্রিয়ান সময়োপযোগী অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিল সবাইকে সচেতন করার ব্যাপারে, যার সুফল আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পেয়েছে।
বি ক্যাঃ ক্যামব্রিয়ান বাংলাদেশের ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থায় অগ্রদূত। শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান বৈরি সময়ে কিভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে ক্যামব্রিয়ান, জানতে চাই।
লায়ন বাশারঃ বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাকে আধুনিকায়ন বা ডিজিটালাইজ করার অনেক চেষ্টা করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা ও অবদান এক্ষেত্রে সবচাইতে বেশি। সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়তো সমানভাবে ডিজিটালাইজ হওয়ার পথে এগিয়ে যেতে পারে নি। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থীই অনলাইন সাপোর্টগুলো পায়নি।
সম্প্রতি ঢাকা এবং চট্টগ্রামের শহরে বিভিন্ন স্কুলে জরিপ হয়েছে। জরিপের ফলাফলে এ বিষয়ে অনেক কথাই সেখানে উঠে এসেছে। শহরাঞ্চলে হয়তো ৫২% শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সাপোর্ট পেয়েছে, কিন্তু মফস্বল অঞ্চলে ৮০% এর বেশি শিক্ষার্থী কোনো অনলাইন সাপোর্টই পায়নি।
তাই বলতে চাই, ডিজিটাল শিক্ষা-কার্যক্রমকে ক্যামব্রিয়ান থেকে আমরা যেভাবে পরিচালনা করছি, সেটা যদি সরকার গ্রহণ করে, বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীই এ সুবিধার আওতায় আসতে পারবে। এজন্যে সরকারের কোনো বাহ্যিক খরচও লাগবে না।
বি ক্যাঃ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন বর্তমান ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোয়? কী কী অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে শুরু থেকে?
লায়ন বাশারঃ আমরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে যথেষ্ট ভালো সাড়া পেয়েছি শুরু থেকেই। কিন্তু কখনো কখনো ডিভাইস স্বল্পতার জন্য কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। যেমন কোনো শিক্ষার্থী হয়তো বাবার ল্যাপটপ বা ট্যাব দিয়ে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু বাবা যখন অফিসের কাজে বাইরে যাচ্ছেন বা কোনো কাজে বের হচ্ছেন, সে সুযোগটা তারা আর পাচ্ছে না। তখন অনলাইন ক্লাস করা নিয়ে মাঝেমধ্যে শিক্ষার্থীরা ডিভাইস সঙ্কটে পড়েছে। এরকম সমস্যা ৩০% এর মত।
তবে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যায় আমরা পড়েছি, সেটা হচ্ছে আমাদের দেশে নেট স্পিড খুবই কম এবং ইন্টারনেট প্যাকের মূল্য অনেক বেশি। সরকারের কাছে দাবি রইল, নেট স্পিড অনেক বাড়াতে হবে এবং খরচ অনেক কমাতে হবে, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য। যদি এ দুটো সমস্যার সমাধান করা যায় এবং উদ্যোগী হয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে শিক্ষার্থীদের ডিভাইসের সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে, তাহলে সব শিক্ষার্থীই অনলাইন ক্লাসের আওতায় আসতে সক্ষম হবে।
সম্প্রতি সামস্যাং এর সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে ট্যাব দিবে; ট্যাবগুলোর স্পিডও অনেক ভালো হবে। এরকম সুবিধাগুলো পেলে করোনায়ও শিক্ষার্থীরা অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
বি ক্যাঃ শিক্ষকগণ কেমন ভূমিকা রাখছেন ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানে? এভাবে শিক্ষা প্রদানে শিক্ষকগণ কতটুকু সাফল্য অর্জন করতে পারছেন বলে মনে করেন?
লায়ন বাশারঃ ক্যামব্রিয়ানের শিক্ষকগণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তারা অনেক পরিশ্রম করেছেন সিস্টেমগুলো শিখার জন্য, বুঝার জন্য, জানার জন্য। অনেক রিস্ক নিয়ে, অনেকসময় নিজের টাকা ইনভেস্ট করে শিখেছেন, যাতে শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারেন এবং তাদের পড়ালেখা কোনোভাবেই বিঘœ না হয়।
বি ক্যাঃ বাংলাদেশের বেশিরভাগ স্কুল, কলেজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ব্যর্থ, যেখানে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করে দিয়েছে। এর কারণ কী বলে মনে করেন?
লায়ন বাশারঃ এটা নিঃসন্দেহ যে, শহরের শিক্ষার্থীরা মোটামুটি ডিজিটাল শিক্ষার আওতায় আসলেও মফস্বল ও গ্রামের শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই এই সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সরকারের অনেক নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এমনকি বড় বড় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ও এখনো পুরোপুরি ডিজিটালাইজ হতে পারেনি। কিছু প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি হয়তো অনলাইনে ক্লাসগুলো করাতে পেরেছে, কিন্তু অনেক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতেই সেটি সম্ভব হয়নি।
আবার অনেক জায়গায় ইলেকট্রিসিটি ফ্যাসিলিটি নাই, অনেক জায়গায় নেট ফ্যাসিলিটি নাই, কোনো কোনো জায়গায় নেটের অবস্থা খুবই দুর্বল। এসব ক্ষেত্রে নতুন করে ভাবার সুযোগ এসেছে। আমরা যদি এসব ইনফ্রাস্টাকচার সারা বাংলাদেশে সেট করে দিতে না পারি, তাহলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কিন্তু একজন ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়; এটা সরকার দিবে, রাষ্ট্র দিবে। নেট স্পিড বাড়ানোর বিষয়েও সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। ডিভাইসের ক্ষেত্রে ডিভাইসটি যেন সহজলভ্য হয়, শিক্ষার্থীদের নাগালের মধ্যে থাকে, সেদিকে সরকারের সুদৃষ্টি দিতে হবে। করোনাসহ যেকোন দূর্যোগ, এমনকি স্বাভাবিক সময়েও ডিজিটাল ক্লাস নির্বিঘেœ অব্যাহত রাখার সুবিধার্থে শিক্ষার্থীদের জন্য ডিভাইসের ট্যাক্স-ভ্যাট প্রত্যাহার করা উচিত। তাহলে খুব অল্প খরচেই তারা ডিভাইসগুলো পেয়ে যাবে।
এছাড়া, প্রাইভেট এবং পাবলিক ব্যাংকগুলোকে দায়িত্ব দিতে হবে, যাতে তারা স্টুডেন্টদের লোন ফ্যাসিলিটি দেয়, সেটি ৫ বা ১০ বছর মেয়াদী হতে পারে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হয়তো ব্যাংকগুলো এত বড় আকারের লোন দিতে চাইবেনা, সেক্ষেত্রে সরকার উদ্যোগী হলে এসব বিষয় সহজ হয়ে যায়।
বি ক্যাঃ ভবিষ্যতে এরকম দুর্যোগময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্যামব্রিয়ান কী কী শিক্ষা পদ্ধতি সামনে আনছে, জানাবেন কী?
লায়ন বাশারঃ করোনা আরো দীর্ঘসময় ধরে থাকতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে, হয়ত অন্য কোনোভাবেও থেকে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন, আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে আমরা এ থেকে বেরিয়ে যাবো, এমনটা আশা করা যাচ্ছে না।
সেজন্যে আমাদের প্ল্যানে রয়েছে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করা। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদেরকে অনুমতি দেন, তাহলে প্রাইমারি থেকে শুরু করে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত সকল ডিজিটাল ক্লাসের ডিজিটাল কন্টেন্ট আমরা রেডি করে দিতে সক্ষম। এতে সরকারের কোনো পয়সা লাগবে না। পড়ানোর ক্ষেত্রে, বোঝানোর ক্ষেত্রে শিক্ষকদের যে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যাপার থাকে, এ কাজগুলোও দ্রুততম সময়ে আমরা করে দিতে পারব। ৩ মাসের সময় দিয়ে সরকার যদি আমাদের এ পারমিশনটুকু দেয়, এটুকু সময়ের মধ্যেই আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ শেষ করব। লেকচার প্ল্যানগুলো ডিজিটালাইজ (অডিও-ভিজ্যুয়াল) করব। এরপর স্পেশাল সাইটে সেগুলো আপলোড করে রেখে দিব, যাতে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনমত তাদের শিক্ষা গ্রহণের অংশগুলো ব্যবহার করতে পারে। সবধরণের প্রশ্নের সমাধানই সে এখান থেকে পেয়ে যাবে।
সম্প্রতি বিটিভিতে আমরা দেখেছি, তারা কিছু ক্লাস রেকর্ড করে অন এয়ারে দিয়েছে। এর বেশিরভাগ রেকর্ডই হয়েছে আমাদের স্মার্ট ক্যাম্পাসে। ক্লাসের ভিডিওগুলো খেয়াল করলে দেখবেন, কৃতজ্ঞতা স্বীকারে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ আছে।
ব্যাপারটি হচ্ছে ধরুন, যখন ক্লাস ৫ এর কোনো লেকচার দেখানো হয়, তখন ক্লাস ৫ ছাড়া অন্য ক্লাসের স্টুডেন্টরা সেখানে অনুপস্থিত থাকে। অর্থাৎ খুব অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী সেখানে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু আমরা যে সিস্টেমে করে দিয়েছি, প্লে থেকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত সবগুলো ডিজিটাল কনটেন্ট তুলে দিয়েছি সিস্টেমে। তারপর অনলাইন সিস্টেম থেকে যার যেটা প্রয়োজন, সেখান থেকে তারা তা রিসিভ করতে পারবে। এ পদ্ধতিতে যদি অনলাইন ক্লাস করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীই কিন্তু ক্লাসগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
প্রচলিত অনলাইন ক্লাসগুলোর সমস্যা হচ্ছে, স্টুডেন্ট কোনো কারণে, যেমন ইলেকট্রিসিটি নেই বা সেøা ইন্টারনেট প্রভৃতি নানা সমস্যার কারণে যদি ক্লাসের সময়ে অনুপস্থিত থাকে, তাহলে সে পুরো ক্লাসটাই মিস করবে। কিন্তু আমাদের সিস্টেমে সে কোনো ক্লাসই মিস করবে না, যখন খুশি এসে ক্লাস করে নিতে পারবে।
ইউটিউবে বহু আগের প্রোগামও কিন্তু থাকে। আপনি চাইলে আগের যেকোনো নিউজ বা টিউটোরিয়াল ইউটিউবে দেখতে পারবেন। আমরা কিছুটা ইউটিউবের মতই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছি, যেখানে সবকিছুই থাকবে। ফেসবুক, ইউটিউবের মতই আরেকটি প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে বাংলাদেশ ইন্টারএকটিভ অনলাইন নেটওয়ার্ক (বিয়ন)। বিয়ন’র মধ্যে সবকিছু দেয়া থাকবে। যখনই আপনি সাবস্ক্রাইব করবেন, তখন আপনি যে ক্লাস দেখতে চাচ্ছেন, সাথে সাথে সেটা চলে আসবে। আমরা ক্যামব্রিয়ান থেকে এরকম সিস্টেম করতে যাচ্ছি, এজন্যে সফটওয়্যারও রেডি করছি। বাংলাদেশের সকল প্রাইমারি, সেকেন্ডারি, হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুল ও কলেজ এখানে যুক্ত হতে পারে। তারা এই প্ল্যাটফর্মে এক্সাম দিতে চাইলে এক্সাম দিতে পারবে, রেজাল্ট দেখতে চাইলে তাও পারবে। অর্থাৎ আমরা ক্যামব্রিয়ানের জন্য যে সিস্টেমটা ডেভেলপ করছি, তা বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীর জন্যই ডেভেলপ করা সম্ভব। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা নিয়ে এ কাজটিতে আমরা অগ্রসর হয়েছি।
বি ক্যাঃ বাংলাদেশে স্মার্ট ডিজিটাল ক্যাম্পাসের মানদ- কী হওয়া উচিত?
লায়ন বাশারঃ আমরা মনে করি, একটি স্মার্ট ক্যাম্পাস সবদিকে থেকে স্মার্ট হবে। যেমন সম্প্রতি আমরা নতুন একটা ক্যাম্পাসের ডিজাইন করেছি। করোনার পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য রাজউক’র যে ডিজাইন গাইডলাইন দিয়েছে, সেটার আলোকেই আমাদের ক্যাম্পাসের এই ডিজাইনটা করা হয়েছে।
জাপান এবং চাইনাতে এখন শিক্ষার্থীদের জন্য অটোমেটিক স্যানিটাইজ করার সিস্টেম করা হয়েছে। আমরা যে ক্যাম্পাসটি করতে যাচ্ছি, সেখানে ১০০ স্টুডেন্ট একইসময়ে স্যানিটাইজড হতে পারবে। আমরা ইতিমধ্যে প্ল্যান জমা দিয়েছি এবং ডিসেম্বরের মধ্যে বিল্ডিং কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু করে দিব। আশা করছি, একবছরের মধ্যে স্মার্ট ক্যাম্পাসটির কাজ শেষ হবে।
এখন ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের যেভাবে ডেকে ডেকে রোল কল করা হয়, স্মার্ট ক্যাম্পাসে কিন্তু এটেনডেন্স কল করাই হবে না। স্টুডেন্টরা যখন ক্লাসরুমে ঢুকবে, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই এটেনডেন্স কাউন্ট হয়ে যাবে অটোম্যাটিকলি। তারা যা পড়াশুনা করবে তা সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজ থাকবে, ক্লাসরুম সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজ হবে এবং তাকে বই ক্যারি করে আসতে হবে না। এরকম অনেক সিস্টেমই স্মার্ট ক্যাম্পাসে থাকবে।
বাংলাদেশের একমাত্র স্মার্ট ক্যাম্পাস হচ্ছে ক্যামব্রিয়ানের মোহাম্মদপুর ক্যাম্পাস। তবে আমাদের কনসেপ্ট অনুযায়ী সেটি হচ্ছে সেমি-স্মার্ট। বসুন্ধরায় আমরা যে ক্যাম্পাসটি করতে যাচ্ছি, তা হবে ঋঁষষু ঝসধৎঃ। আমাদের মোহাম্মদপুর ক্যাম্পাস ভিজিট করলে কিছুটা আইডিয়া পাওয়া যাবে স্মার্ট ক্যাম্পাস সম্পর্কে।
বি ক্যাঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পড়াশোনা থেকে দূরেই আছে গ্রামাঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থীরা। সেখানে নেই ন্যূনতম মাত্রার ইন্টারনেট, এমনকী বিদ্যুৎ সংযোগও। দেশের এই বড় অংশের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে কী ভাবছেন? ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা তাদের জন্য কীভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব?
লায়ন বাশারঃ বাস্তবতা হচ্ছে, অনলাইন সিস্টেমে পড়াশোনার জন্য যেসব রিকোয়ারমেন্ট দরকার, অনেকক্ষেত্রেই তা আমাদের শিক্ষার্থীদের নেই। কারণ তারা এবং অভিভাবকরা এরকম সিস্টেমের সাথে অভ্যস্ত ছিল না। করোনা দুর্যোগের সময় যখন ঘনিয়ে আসলো, তখন রাতারাতি তারা ডিভাইস নিতে পারেনি বা সিস্টেমের সাথে অভ্যস্থ হয়ে উঠতে পারেনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সবচাইতে বেশি। সরকার যদি এদিকে দৃষ্টি না দেয়, তাহলে শহর এবং গ্রামাঞ্চলের শিক্ষায় অনেক বড় ধরনের বৈষম্য তৈরি হবে নিকট ভবিষ্যতে।
বি ক্যাঃ বর্তমান বাজেট ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থার প্রসারে কতটুকু ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন?
লায়ন বাশারঃ বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থায় যে বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, ভবিষ্যতে তা আশানুরূপ বাড়াতে না পারলেও বাজেট ডিস্ট্রিবিউশনের ক্ষেত্রে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
আমি সম্প্রতি শুনেছি, সরকার স্কুল-কলেজগুলো খোলার ব্যাপারে যখন ঘোষণা দিবে, তখন নাকি ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে স্কুল-কলেজ পরিষ্কার করার জন্য। মাঠে ঘাস উঠে গেছে, ল্যাব-লাইব্রেরি সব ড্যামেজ হয়ে গেছে এসব সংস্কারের জন্য। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার তো সরকারি টিচারদের বেতন, বোনাস সব নিয়মিত দিয়ে দিয়েছে। তারা সে কাজগুলো কেন করলেন না? এই টাকাটা আমাদের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেখেন। যেকোনো প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে যেকোনো মূহুর্তে কোনো নোটিশ ছাড়াই গিয়ে দেখেন, ১০০% নিট এন্ড ক্লিন পাবেন। তাহলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেন এত পরিমাণ বাজেট দিতে হবে! সরকারি শিক্ষকরা ঠিকমতো স্কুলে যাচ্ছেন না, ঠিকভাবে পড়াচ্ছেন না, সব সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও দায়িত্ব পালন করছেন না।
বি ক্যাঃ বর্তমান পরিস্থিতি থেকে শিক্ষাব্যবস্থার উত্তরণে কী পদক্ষেপ কাম্য বলে মনে করেন?
লায়ন বাশারঃ বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার উত্তরণে সরকারের সদিচ্ছাই যথেষ্ট। যেমন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ৫ লাখ শিক্ষকের প্রশিক্ষণ ব্যয় বাবদ ৪৩১ কোটি টাকা বাজেটে বরাদ্দের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। প্রতি ব্যাচে ৩০ জন করে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে; ৯৬ ঘন্টা বা ১২ দিনের প্রশিক্ষণ। যদি এই প্রশিক্ষণ দিতে হয়, ১৬,৬৬৬ টা ব্যাচ হবে। সরকারি টিচার্স ট্রেনিংগুলোর যে ক্যাপাসিটি আছে, তারা যদি ১০০% ক্যাপাসিটি ইউজ করে, তাহলে ২১ টি ব্যাচের প্রশিক্ষণ দিতে পারবে। তাতে মাসে ৪২ টি ব্যাচের প্রশিক্ষণ হবে। এতে করে ৩বছরের বেশি সময় লেগে যাবে প্রথম রাউন্ডের প্রশিক্ষণ দিতে গিয়েই।
আমরা বলেছিলাম, এই ৩০ জন শিক্ষককে একটা স্মার্টরুমে বসিয়ে প্রশিক্ষণ দেব টপ লেভেলের মাস্টার ট্রেনারদের দিয়ে। এতে প্রতি ঘন্টায় যদি ট্রেনারদের ৫০০০ টাকা করেও অনারিয়াম দিই, তাহলে ৪লাখ ৮০ হাজার টাকা অনারিয়াম আসবে। আমরা যদি ট্রেনিং সেশনগুলো রেকর্ড করি এবং তা ভালোমতো ইডিট করি, তাহলে ক্যামেরা-লাইট-ক্যামেরাম্যান ও অন্যান্য সবকিছু মিলিয়ে হয়তো ২০-২৫লাখ টাকা খরচ হতে পারে। এখন এ ৯৬ ঘণ্টার প্রশিক্ষণকে যখন রেকর্ড করে কাস্টমাইজ করবো, সেটা সর্বোচ্চ ৪০ ঘন্টা হবে। প্রতিদিন ৮ঘন্টার প্রশিক্ষণ মানে তো ট্রেনাররা প্রতিদিন টানা ৮ঘন্টা পড়াচ্ছেন না। এই ৪০ ঘন্টা নিয়ে যখন আমরা অন এয়ারে যাবো, তখন ডেইলি ১ ঘন্টা করে প্রচার করলে, যেমন সংসদ টিভিতে দিলে পয়সাও লাগবে না। তবে প্রাইভেট টিভিতে দিলে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা যাবে ১ ঘন্টার স্পন্সরে। তাহলে ৪০ ঘণ্টার জন্য ৪০ লাখ টাকা। অন্যদিকে কোয়ালিটি কনটেন্ট তৈরিতে হয়ত সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা খরচ হবে। এসব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৮০ লাখ টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা না। এখন যদি প্রেস কনফারেন্স করেন বা পার্টি দেন এ উপলক্ষ্যে, তাও ১ কোটি টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়।
আমরা বলতে চাইছি, সরকার যদি এই ১ কোটি টাকা আমাদের দেন বা পরেও দেন বা যদি নাও দেন, আমরা স্পন্সর করলাম সেটা, তাতেও সরকারের ৪৩০ কোটি টাকা সেভ হবে। সবচাইতে বড় কথা, ৩ বছর সময় সেভ হবে। এটি ৪ বছর আগের পরিকল্পনা ছিল সরকারের। ৪ বছরে ১% কাজও হয়েছে কিনা সন্দেহ। আবার ১ বছর এক্সটেনশন করা হয়েছে প্রজেক্টের সময়সীমা। এসময়ের মধ্যেও তাদের তেমন কোনো কাজ হবেনা। সুতরাং এ প্রজেক্টটি এমনিতেই বাদ হয়ে যাবে।
আমার কথা হচ্ছে, এই কাজটি যদি আমাদের করতে দেয়া হয়, তবে মাত্র ১ কোটি টাকা খরচ হবে। ৩ মাসের মধ্যে রেকর্ডিং, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সব শেষ। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু প্রজ্ঞাপন জারি করে দিবে, এই চ্যানেলে এতটা থেকে এতটায় প্রোগ্রাম হবে। আপনার সবাই অংশগ্রহণ করবেন।
যখন ৩০জন করে ব্যাচে অংশগ্রহণ করল, তখন শুধু পার্টিকুলার কিছু শিক্ষক শিখলেন। কিন্তু আমাদের সিস্টেমে বাংলাদেশের সব শিক্ষকই প্রশিক্ষণের আওতায় আসতে পারবেন। এমনকি শিক্ষার্থীরাও জানতে পারবে, শিখতে পারবে। শিক্ষকদের আমরা প্রশিক্ষণ দিই শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য। এখন শিক্ষার্থীরাও যদি একই জিনিসটা শিখতে পারে, তাহলেতো তাদেরই সুবিধা।
অন্যদিকে, ৪৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে যদি ৫ লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, আমাদের পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণের আওতায় আসবে ১০-১৫ লাখ শিক্ষক। অর্থাৎ যারা প্রশিক্ষণের আওতায় আসেনি, তারাও এ সুযোগটা নিতে পারবে। ফলে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বেনিফিট আসবে, কোয়ালিটিও ভালো হবে।
বি ক্যাঃ শিক্ষার্থীদের মনোবল বৃদ্ধিতে এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে কী পরামর্শ দিবেন?
লায়ন বাশারঃ শিক্ষার্থীদের শুধু এটুকুই বলব, এসময় তাদের মনোবল ঠিক রেখে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। যারা পড়াশোনা ঠিকভাবে চালিয়ে যাবে, তারাই কিন্তু এগিয়ে থাকবে। যারা এখন পিছিয়ে যাবে, তারা অনেক বেশি পিছিয়ে যাবে।
সাধারণ অভিভাবকদের জানাতে চাই, আপনারা যদি ভাবেন এবছর তো তেমন ক্লাস হয়নি, বছরের আর ক’টি দিন যদি পার করে দিতে পারি বাচ্চাদের স্কুলে না পাঠিয়ে, তাহলে ১ বছরের টিউশন ফি যা পাওনা আছে, তা হয়তো স্কুলকে দিতে হবেনা। এজন্যই অনেকসময় তারা শিক্ষার্থীদেরকে নিরুৎসাহিত করে থাকেন। এটা একটা বড়রকম ভুল সিদ্ধান্ত। অভিভাবকদের চেষ্টা করত হবে, এই সিস্টেমের সাথে ছেলেমেয়েদের অভ্যস্ত করে দেয়া এবং তাদেরকে সাপোর্ট দেয়া। এটি যদি না করা হয়, তাহলে তাদের সন্তানরা অনেক পিছিয়ে পড়বে।
শিক্ষকদের সাথেও এই সময়টায় একটু কো-অপারেশন করতে হবে। কারণ সবারই আতঙ্ক ছিল, ভয় ছিল; সবারই আর্থিক সঙ্কট আছে। যদি অভিভাবকরা কিছুটা শিক্ষকদের সাপোর্ট দেন, প্রতিষ্ঠানকে সাপোর্ট দেন আর শিক্ষকও যদি অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের দিকে সুদৃষ্টি দেন, তাহলে উভয়ের সমন্বয়ে একটি চমৎকার শিক্ষার পরিবেশ তৈরি হবে। এতে করে সবাই বেনিফিটেড হবে। কেউ কাউকে ঠকানোর চেষ্টা মানে নিজেকেই ঠকনো। এখন আমরা লাভের চিন্তা করছি না, প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় এটাচ রাখার চেষ্টা করছি। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে করোনা উপযোগী করে গড়ে তুলতে চেষ্টা করছি, যাতে আমরা কোনোভাবেই পিছিয়ে না থাকি। এদিকে জনগণের, সরকারের, মন্ত্রণালয়ের সকলের সুদৃষ্টি কামনা করি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন শিক্ষাবান্ধব প্রধানমন্ত্রী। যে দৃষ্টিভঙ্গিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষকদেরকে দেখছে, এর সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তারাও যদি একটু সদয় হন, তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। যে পরিবর্তন আসবে, সেটা যদি আমরা গ্রাম এবং শহর উভয়কেই সাথে নিয়ে পরিচালিত করতে না পারি, তাহলে যতটা না অগ্রসর হয়েছিল বাংলাদেশ শিক্ষাক্ষেত্রে, ততটাই পিছিয়ে পড়বে। অনেক শিক্ষার্থীই ছিটকে পড়বে শিক্ষার গ-ি থেকে। এটা যেন নাহয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে সকলকে।