বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে অনিবার্যভাবে জড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। বলার অপেক্ষা রাখে না, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিসংবাদিত নেতা। যাঁর সাথে বাঙালির রয়েছে আত্মার সংযোগ, যাঁর কাছে বাঙালি খুঁজে পেয়েছে আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। ইতিহাস বলে, হাজার বছর ধরে এই জাতি ও জনপদের অস্তিত্ব টিকে থাকলেও তা কখনোই স্বাধীন সার্বভৌম একক রাষ্ট্র ছিল না। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে বাঙালি জাতির স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখার সূচনা। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই জনগণের সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন।
স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার পেছনে স্থপতির ভূমিকায় যিনি ছিলেন এবং আপামর জনগণের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে যিনি শোষক ও স্বেচ্ছাচারী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মুজিববর্ষ বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য ঘোষিত বর্ষ। বাংলাদেশ সরকার ২০২০-২১ সালকে মুজিববর্ষ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়।
করোনাভাইরাসের কারণে মুজিববর্ষের গ্রহণ করা কর্মসূচিগুলো নির্ধারিত সময়ে যথাযথভাবে করতে না পারায় এ ঐতিহাসিক বর্ষের মেয়াদ প্রায় ৯ মাস বাড়ানো হয়েছে। এ সময়কাল ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বাড়িয়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতার অর্ধ-শত বার্ষিকীতে পদার্পণ করবে। তাই সব মিলিয়ে ২০২১ সাল হয়ে উঠেছে অত্যন্ত তাৎপর্য্যপূর্ণ এক বছর।
মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারীদের রক্ত যেন বৃথা না যায়, সেজন্য আগামী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানাতে হবে
-টিপু মুনশি, মন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
মুজিববর্ষ ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জনকল্যাণকামী মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর জন্ম না হলে এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হতো না। বঙ্গবন্ধুর জন্ম এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম এখন তাই সমার্থক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি আজীবন আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিপাগল বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ৩০ লক্ষ বীর বাঙালির রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা। তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ আজ আমাদের মাঝে আনন্দ ও গৌরবের বার্তা নিয়ে এসেছে। মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে তাই আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও অপরিসীম গর্বের।
মুজিববর্ষে তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুজিববর্ষের তাৎপর্য অনেক ব্যাপক ও মহিমান্বিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষই মুজিববর্ষ। বঙ্গবন্ধু ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন। সে হিসেবে ২০২০ সালে তাঁর জন্মগ্রহণের ১০০ বছর পূর্ণ হয়েছে। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য অগ্নিকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই ২০২০ সালকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চ, সে কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কালকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেন। তবে করোনার কারণে সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষ ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছেন। আমরা স্বাধীনতার এই মহানায়কের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের সুযোগ পেয়েছি। আমাদের এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে আগামী প্রজন্মকে উজ্জীবিত করার মধ্য দিয়ে। আগামী বছর আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হবে, আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ ২০২১ সালকে আরও মহিমান্বিত এবং তাৎপর্যমন্ডিত করবে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
মুজিববর্ষ ঘিরে এই করোনাকালে তাঁর পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুজিববর্ষ ঘিরে আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। কিন্তু এই করোনাকালে অনেক পরিকল্পনা আমাদের সংক্ষিপ্ত আকারে করতে হয়েছে। তবে করোনা মহামারী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা আগামীতে সাড়ম্বরে মুজিববর্ষ উদযাপিত করবো বলে আশা রাখি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে। করোনা মহামারী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই মুজিব জন্মশতবর্ষের মধ্যেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আয়োজন করবো ইনশাআল্লাহ। সেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় সারা বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোর বাণিজ্য সংস্থা এবং বিনিয়োগকারীগণ অংশগ্রহণ করবে। এভাবে নানারকম কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করছি এবং সেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান, বিচক্ষণ ও প্রজ্ঞাবান বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা অনেক অগ্রসর হয়েছি বলে আমি মনে করি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে তাঁর সুযোগ্য অগ্নিকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশে বৃহৎ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত করছেন। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করার কাজ আজ সুসম্পন্ন হওয়ার শেষপ্রান্তে। ইতোমধ্যে সবগুলো স্প্যান বসানো হয়েছে। বাকি কাজগুলোও অচিরেই সম্পন্ন হবে। এভাবে মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বৃহৎ মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব বৃহৎ মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে এদেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অচিরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি সুউন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে আগামী প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে আগামী প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে সকলেরই ভূমিকা আছে। এবিষয়ে সকলকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে সে ভূমিকা পালন করতে হবে। রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষকদের ভূমিকা পালন করতে হবে, অভিভাবকদেরও ভূমিকা পালন করতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাদের কর্মীদের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানাবেন। তেমনি শিক্ষকবৃন্দ শিক্ষার্থীদের জানাবেন এবং অভিভাবকবৃন্দ তাদের সন্তানদের জানাবেন, যাতে তারা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে। মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারীদের রক্তদানের ইতিহাস যেন তারা বৃথা যেতে না দেয়। এভাবে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস আগামী প্রজন্মের মাঝে সঞ্চারিত হবে।
বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বজনীন পরিচিতি দিতে আমরা বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী আন্তর্জাতিক পর্ষদ গঠন করেছি
প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী
ভিসি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ
মুজিব শতবর্ষকে ঘিরে অনুভূতি জানতে চাইলে বহুমুখী প্রতিভায় ভাস্বর বর্ণিল গুণাবলির কর্মযোগী প্রফেসর ড. এ মান্নান চৌধুরী বলেন- প্রথমেই মহান আল্লাহকে ধন্যবাদ যে, আমি এত বছর বেঁচে আছি। সাথে সাথে ভাবছি আমার এ বাঁচাটা অর্থহীন। আমাদের মহান জাতির মহান স্থপতি মাত্র ৫৫ বছরের জীবনে যে দুঃসাধ্য অর্জন করেছেন, আমি ৭৫ বছর জীবনে যদি তাঁর শতাংশের একভাগও অর্জন করতে পারতাম, তাহলে এ জীবনকে ধন্য ভাবতাম। তবে আমি সৌভাগ্যবান যে, তাঁর শিক্ষা ও দীক্ষা পেয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নসৌধ নির্মাণে কিছু ইট-বালি টেনেছি। আমার জীবনে বা আমাদের জীবনে এমন একটি বর্ষ আর ফিরে আসবেনা। তবে প্রতিবছরই মুজিব জন্মশতবর্ষ অবশ্যই পালিত হবে। তবে শতবর্ষের চেতনা ও দ্যোৎনা ভিন্নতর। এই বর্ষে করোনা সত্ত্বেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও মহান অর্জনকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জীবন গড়বে, আর দেশ গড়বে। তারা নির্দ্ধিধায় জেনে নেবে বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ।
মুজিববর্ষকে ঘিরে করোনাকালেও পরিকল্পনা জানতে চাইলে বিজ্ঞ এ উপাচার্য বলেন- মুজিববর্ষের কর্মসূচি আমরা ২০১৯ সালের শেষাংশ থেকে শুরু করেছি আলোচনা সভা দিয়ে। তারপরে তরুণ-তরুণীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর কৃতিত্বের পরিধি পরিমাপের জন্য ‘আমার দৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। লেখকদের মাঝে কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের প্রবন্ধকার প্রদান করা হয়েছে। প্রায় ৭০০ লেখা থেকে ৩১টি লেখা নিয়ে অতি শীঘ্র একটি গ্রন্থ প্রকাশ করব। এটা ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে করেছি। শতবর্ষ সমাপ্তির আগে আর কিছু আলোচনা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করব এবং আগামী বিজয় দিবস পর্যন্ত তা চলমান রাখব। লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু কর্ণারের সংযোজন করেছি। বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব পরিষদের পক্ষ থেকে অনুরূপ কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এছাড়া আমরা অপর একটি অসাধারণ কাজে হাত দিয়েছি।
বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার বন্ধুই নন, তিনি বিশ্ববন্ধু। তাই তাকে বিশ্বজনীন পরিচিতি দিতে অর্থাৎ আমাদের নিজস্ব মর্যাদা বিশ্বময় তুলে ধরতে, আমরা বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী আন্তর্জাতিক পর্ষদ গঠন করেছি। আমি তার আহ্বায়ক। দেশে-বিদেশে বিশিষ্টজন বিশেষতঃ বুদ্ধিজীবি, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং সংবেদনশীল মানুষদের নিয়ে এই পর্ষদ গঠিত। করোনার মধ্যে আমরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ভারতের শিলচর, আগরতলা ও কলকাতা বীরভূম, বর্ধমান, চুরুলিয়া, আলোচনা, চিত্রাকরণ ও সেমিনার-সিম্পেজিয়াম করে চলেছি। বিদেশে বিশেষ করে- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, পশ্চিম ইউরোপে কতিপয় অনুষ্ঠানে যুক্ত আছি। দেশের অভ্যন্তরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, ময়মনসিংহ, ভালুকা, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, বিরিসিতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঈশ্বরদী, পাবনা ও রাজশাহীতে বিশিষ্টজন ও সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের নিয়ে আমাদের লোক সংস্কৃতির আবহে বঙ্গবন্ধুকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে শতবর্ষ পার হয়ে গেলেও আমাদের এমনতর কর্মসূচি চলবে। বিদেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরির উদ্যোগ ছাড়াও তার নামে রাস্তা বা এভিনিউ নামকরণ প্রয়াসও আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে সাধারণভাবে আমাদের কর্মসূচির মধ্যে আছে কবিতা, ছড়া আবৃত্তি, সংগীত, র্যালি, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, জারি-সারি গানের আয়োজন। ইতিমধ্যে উৎসবকে ঘিরে বেশ ক’টি স্মরণিকা আমরা প্রকাশ করেছি।
স্বাধীনতা ৪৯ বছর পর এসে জাতির জনকের প্রত্যাশিত সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষাদ্যোক্তা এ মান্নান চৌধুরী বলেন- বঙ্গবন্ধু জীবদ্দশায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা আমাদের উপহার দিয়েছেন। তার প্রত্যাশা ছিল সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, শোষনহীণ ও বৈষম্যহীণ সমাজ প্রতিষ্ঠা। দ্রুত এসব অর্জনের কৌশল হিসেবে এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে নিষ্কণ্ঠ করতে তিনি বাকশাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। তার ব্যবস্থাটাকে মাত্র ১০ বছর চলতে দিলে পঞ্চাশ বছরে আমরা যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি, তা ১০ বছরেই করা সম্ভব হতো। উন্নয়নের সব সূচক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে, কাজগুলো তিনি অসমাপ্ত রেখে গেছেন; সেগুলো তার কন্যা শেখ হাসিনা প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছেন। করোনার প্রার্দূভাব না হলে অনেক সূচকের ঊর্ধ্বগতি অপ্রতিরোধ্য হতো। তবে বঙ্গবন্ধুর কাঙ্খিত শোষণ, বৈষম্যহীণ বাংলা কিন্তু ক্রমশঃ দিক-চক্রচাপের দিকে মিলিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তি ও পাকিস্তানবাদীরা মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে।
মুজিববর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে প্রত্যাশা জানতে চাইলে তিনি বলেন- সরকার যাদেরকে নিয়ে গঠিত হয়েছে, তারা মুষ্টিমেয় তরুণ। বঙ্গবন্ধুর কথা ভাবলে বলতে হবে, তারা তেমন তরুণ নয়। এই সরকারের কাছে আমার প্রত্যাশা হচ্ছে শোষনহীণ, বৈষম্যহীণ সমাজব্যবস্থা। মৌলবাদীদের উত্থান এই সরকার প্রতিহত করবে -তাও আমার প্রত্যাশা। তারা পাকিস্তানের হয়ে ছায়া যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি তার উৎকট চেহারা দেখা যাচ্ছে। ভাস্কর্য ও মূর্তির মাঝে স্পষ্ট ব্যবধান থাকলেও তারা বঙ্গবন্ধুর স্বার্থে ভাস্কর্য হাত দিয়েছে। তারা জানে, ভাস্কর্য নির্মাণের প্রথা এসেছে হযরত সুলায়মান (আঃ) সময় থেকে আর মূর্তি ভাঙ্গা হয়েছে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর কালে। সুলায়মান (আঃ) এর পর মুসলিম বিশ্বে ভাস্কর্য তৈরি হয়েছে এবং হবে বলে ঘোষণাও আসছে। মূর্তি হচ্ছে পূজা অর্চনার জন্যে আর ভাস্কর্য হচ্ছে জন্ম থেকে জন্মান্তরের প্রজন্মকে স্মরণীয়-বরণীয় করে প্রেরণার উৎস হিসেবে। বাংলাদেশে এই যাবত নির্মিত ভাস্কর্যগুলো আমাদের সংগ্রামী ইতিহাসকে তুলে ধরছে। প্রতি মুহুর্তে পাকিস্তানের অপকর্মকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে, যারা ভাস্কর্য চায় না বা ভাস্কর্য ভাঙ্গতে উদ্যত, তারা দেশের মানুষকে তাদের স্মৃতি থেকে পাকিস্তানের হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নি-সংযোগ, শোষণ ও নির্বিচার অত্যাচারকে মুছে ফেলে তাদের পিতৃ-পুরুষের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তৈরি করতে চায়। ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে প্রতিদিনই উপর্যুক্ত অপকর্মকে স্মরণ করে পাকিস্তানের প্রতি তীব্র ঘৃণা ও ক্ষোভ লালন না করে, যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তারা নিজকে এবং স্বদেশকে গড়ে না তুলতে পারে, সেজন্যে এই ভাস্কর্য বিরোধিতা করছে। তা না হলে, তাদের প্রথম টার্গেট হতো জিয়াউর রহমান, যিনি পাকিস্তানের আত্ম-সমর্পণ স্থলকে শিশু পার্ক বানিয়ে পরাজয়ের গ্লানি মুছতে কোটি কোটি টাকা পাকিস্তান থেকে পেয়েছে। ভাস্কর্য যদি হারাম হয়, তাহলে এদ্দিনে জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য কিভাবে অবিকৃত থাকে?
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আশা করেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- শুধু ইতিহাস নয় ঐতিহ্যকেও সমানভাবে উজ্জ্বল্য দিয়ে দৃশ্যমান করতে হবে। দেশের স্বাধীনতার অংশজন অনেকেই সাধারণ মানুষ থেকে অসাধারণ মানুষ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, ছাত্র, শিক্ষক এমনকি ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে অঙ্গুলীকারীগণও। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে তারা বিদেশ থেকে কাড়ি কাড়ি টাকা পায়। এটা তাদের ব্যবসায়ের পুঁজি, কিছু রাজনীতিবিদ তাদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়, কেউ ক্ষমতায় আসতে চায়। তবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে আমাদের মহাসম্পদ। তাই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার মূল দায়িত্ব মুক্তিযোদ্ধাদের এবং তাদের উত্তরাধিগণের শোষনহীণ সমাজ প্রবক্তাদের, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনাধারীদের। নতুন প্রজন্মের কাছে উপর্যুক্তদের গ্রহণযোগ্যতাও অধিক। ঘাতক দালাল নির্মূল আন্দোলনে আমরা সেটা প্রমাণও করেছি। সেই দুঃসময়ে মানুষ আমাদের বিশ্বাস করে জান দিতে এগিয়ে এসেছিল। এখনও সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, ধর্মপ্রাণ মানুষ বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে নিঃস্বার্থ ভাবে আর্বিভূত হলে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিস্কণ্ঠক হবে। ক্ষুধামুক্ত, অশিক্ষা, কুশিক্ষা মুক্ত, সুস্থ-সবল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ আমাদের কাম্য এবং তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শেই। সে জন্যে অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের হয়ে নিরন্তর লড়তে হবে।
আগামী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারিত করা দেশপ্রেমিক নাগরিকদের অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব
-ড. মোঃ জাফর উদ্দীন
সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাবান সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন বলেন, আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান একটি জাতি। কেননা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো একজন মহান নেতা এদেশে জন্মেছিলেন বলে আজ আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক এই রাষ্ট্র পেয়েছি। আমি আজ একজন সচিব হতে পেরেছি। এই মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপনের সুযোগ আমাদের ঋণ পরিশোধের সুযোগ কিছুটা হলেও এনে দিয়েছে। সেই সৌভাগ্য লাভে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। তাই মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও অপরিসীম গর্বের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনাদর্শ, স্বাধীনতার জন্য আজীবন সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের নতুন করে ভাববার সুযোগ করে দিয়েছে এই মুজিববর্ষ। আমাদের সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে। তাঁর সুমহান আদর্শে আমাদের নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে। তাহলেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মহান স্মৃতির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপনের তাৎপর্য জানতে চাইলে চৌকস সচিব ড. জাফর উদ্দীন বলেন, মুজিব জন্মশতবর্ষ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাঁকে যদি নৃশংস ঘাতকের দল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে হত্যা না করতো, তাহলে আজ তাঁর বয়স ১০০ বছর পূর্ণ হতো। তিনি তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণ করতে পারতেন। আমরা তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে অনেক আগেই একটি সুউন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলার নাগরিক হিসেবে গৌরব লাভ করতাম, উন্নত বিশ্বের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম। কিন্তু ঘাতকের নির্মম বুলেট তাঁকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিয়েছে। আমরা হারিয়েছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, আর দেশ হারিয়েছে তার একজন বীর সন্তানকে। এই হারানোর বেদনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক! অত্যন্ত কষ্টের, অনেক শোকের। কিন্তু শোককে আমাদের শক্তিতে পরিণত করতে হবে। মুজিব জন্মশতবর্ষ আজ আমাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করার সুযোগ এনে দিয়েছে। কাজেই এই সুযোগকে আমাদের মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে কাজে লাগাতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমাদের সেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে হবে। আর এর মধ্যেই নিহিত আছে মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপনের তাৎপর্য।
আগামী প্রজন্মের কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারিত করতে কার কী ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে দূরদর্শী সচিব ড. জাফর বলেন, আগামী প্রজন্মের কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারিত করতে সকলেরই ভূমিকা আছে। প্রত্যেককেই যার যার অবস্থান থেকে সে ভূমিকা পালন করতে হবে। আগামী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারিত করা দেশপ্রেমিক প্রত্যেক নাগরিকের অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে এদেশের প্রত্যেকটি মানুষ ঋণী। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারিত করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’সহ মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা বইসমূহ পাঠের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাদের কর্মীদের এসব গ্রন্থ পড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করবেন। বঙ্গবন্ধু যেমনটি চেয়েছিলেন পেশাজীবিরা তেমনিভাবে দেশ গড়ার লক্ষ্যে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব কর্তব্য নিবিষ্টভাবে পালন করবেন। বুদ্ধিজীবিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে গবেষণা করে গবেষণালব্ধ ফলাফল জাতিকে উপহার দেবেন। তাহলেই আগামী প্রজন্মের কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঠিকভাবে ও পরিপূর্ণরূপে সঞ্চারিত হবে।
স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এসে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নপূরণে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি জানতে চাইলে কর্মকুশলতায় নিষ্ঠাবান ও বিচক্ষণ সচিব ড. জাফর উদ্দীন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্মলালিত স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত একটি স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার। তাঁর সুযোগ্য অগ্নিকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুর্বার গতিতে কাজ করে চলেছেন। দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির বেগবান ধারায় এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে দেশে আজ পদ্মাসেতু, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ইত্যাদি বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে দ্রুতগতিতে। এসব মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হবে, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের উত্তরাধিকারী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে এদেশ আজ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। তাঁর দূরদর্শী পরিকল্পনায় এদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুউন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন ছিলো।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে আমি বলতে পারি, রপ্তানি বাণিজ্যে আমাদের ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। আগামীতে আরও অগ্রগতি সাধিত হবে। এই করোনা মহামারীর মধ্যেও আমাদের প্রবৃদ্ধি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। তাই আমি মনে করি, স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এসে আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার স্বপ্নপূরণে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। উন্নয়ন অগ্রগতির এই অব্যাহত ধারায় তাঁর গতিশীল নেতৃত্বে এদেশ অচিরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে।
মুজিববর্ষে ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নবজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে
প্রফেসর ড. এএইচএম মুস্তাফিজুর রহমান
উপাচার্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
মুজিববর্ষ ঘিরে অনুভূতি ও মুজিববর্ষের তাৎপর্য সম্পর্কে ছাত্র-যুবকদের প্রিয় শিক্ষক প্রফেসর ড. এএইচএম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন- মুজিববর্ষ ঘিরে আমার অনুভূতি অসাধারণ আনন্দের। আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি এজন্য যে, মুজিববর্ষ পালন করার সুযোগ আমি পেয়েছি। মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি। বিশ্বের নিপীড়িত গণতন্ত্রমনা মানুষের মুক্তির বার্তা নিয়ে পৃথিবীতে তাঁর জন্ম হয়েছিল। একটি স্বাধীন ভূখন্ড, একটি স্বাধীন লাল-সবুজের পতাকা তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন। জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি কারাগারের প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন। নিজের জীবন, পারিবারিক জীবন সবকিছু বাদ দিয়ে বাঙালি জাতির জন্য তিনি ভেবেছিলেন। বাঙালি জাতির মুক্তির ত্রাতা এই অনন্য মহামানব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশে জনসংখ্যার ৬৩% তরুণ-যুবক। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট অর্থাৎ জন্মসংখ্যাগত একটা সুবিধাজনক অবস্থানে আমরা আছি। এদেশের জনসংখ্যার সিংহভাগ অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি তরুণ প্রজন্ম। বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ মুজিববর্ষ সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবে; বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম। তারা বঙ্গবন্ধুকে দেখেননি, অথচ তাদের মধ্যে বিশাল কৌতুহলী একটা মন আছে। তারা যখন মুজিব জন্মশতবর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং কর্মসূচি দেখবে, তখন তাদের মধ্যে অভূতপূর্ব একটা অনুভূতির সৃষ্টি হবে আমাদের মহান নেতা শেখ মুজিব সম্পর্কে। তারা জানতে আগ্রহী হবে, তাদের মধ্যে একটা নবজাগরণের সৃষ্টি হবে, একটা রেনেসাঁ ঘটবে। এই জানার মাধ্যমে তাঁর জীবন, কর্ম, আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং অসাম্প্রদায়িকতা -যে চারটি মূলনীতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন করেছেন, তা নিয়ে সম্যক ধারণা পাবে। মুজিববর্ষে ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নবজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে।
মুজিববর্ষ ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন- মুজিববর্ষ ঘিরে আমাদের বর্ষব্যাপী বিশেষ পরিকল্পনা আছে। আমরা ইতোমধ্যে মুজিববর্ষের কর্মসূচির বিশাল প্ল্যান করে ফেলেছি। আমরা স্মরণিকা প্রকাশ করবো। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মুজিববর্ষ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ-নিবন্ধ থাকবে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা সেমিনার করবো, ক্রীড়া টুর্নামেন্টের আয়োজন করবো। এছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমাদের শিল্পীগোষ্ঠী সারা বছর সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করবে। চারুকলা বিভাগ চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করবে, বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন অধ্যায় নিয়ে নানান চিত্র থাকবে এই প্রদর্শনীতে।
গোটাজাতির কাছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মেসেজ যাবে- এ মহামানবকে আমরা কতটা শ্রদ্ধা করি, তাঁর আদর্শকে আমরা কতটা ধারণ করি, তাঁকে আমরা কতটা ভালোবাসি। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের এই ভালোবাসা প্রকাশ করে যে, তাঁর আদর্শ আমরা তা বাস্তবায়ন করতে চাই।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরে এসে জাতির পিতার সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে মনে করেন, এ প্রশ্নের জবাবে বিজ্ঞ এ শিক্ষাবিদ বলেন, আমি খুব আশাবাদী মানুষ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের স্বপ্নের রাজকুমারী। আজকে তিনি বিশ্বনেত্রী, মাদার অব হিউমিনিটি। তাঁর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অনেকদূর এগিয়েছে।
এখন দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ব্রীজ-কালভার্ট হয়েছে, বিদ্যুৎ পৌঁছেছে ঘরে ঘরে। চর এলাকায়ও যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়েছে, মানুষ গাড়ি নিয়ে চলে যেতে পারে, বিস্ময়কর ব্যাপার!
গ্রাম এখন শহর হয়ে গেছে। গ্রামের মোড়ে মোড়ে দোকানপাঠ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- গ্রাম হবে শহরের মতো।
আমরা আশা করি এবং বিশ্বাস করি, ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা পুরোপুরি মধ্যম আয়ের দেশে আর ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবো।
মুজিববর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে আপনার প্রত্যাশা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শ ধারণ করবে তরুণ প্রজন্ম, সে লক্ষ্যে তাদেরকে পরিচালিত করতে হবে। মুজিব জন্মশতবর্ষের কর্মসূচি ঘিরে যে উৎসাহ উদ্দীপনা, তা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশিত সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্সের যে ঘোষণা- মাদকমুক্ত, জঙ্গিমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণে সরকার সহায়তা দেবে এবং তা পূরণে আমরা দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলেমিশে কাজ করবো। এই তিনটি বিষয় এই মুজিববর্ষে দেশ থেকে নির্মূল করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না -আমরা তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে এটাই আশা করি।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরার ব্যাপারে ড. মুস্তাফিজ বলেন- প্রত্যেকে যার যে ভূমিকা, তা পালন করবে। আমি শিক্ষক; আমি যখন ক্লাসে পড়াবো, তখন শিক্ষার্থীদের শিখাব বাংলাদেশ কি করে সৃষ্টি হলো, আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কী ভূমিকা ছিল, যাতে করে এদেশটি আমরা পেয়েছি।
বঙ্গবন্ধু শিখিয়েছেন কীভাবে ত্যাগ করতে হয়। শিক্ষার্থীদের ত্যাগ করাটা শেখাতে হবে, শেখাতে হবে মুক্তিযুদ্ধের মুল্যবাধ। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাদেরকে কাজে লাগাতে হবে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ, সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে মিলেমিশে একত্রে কাজ করতে হবে প্রত্যেক সেক্টরে। মুজিববর্ষের স্পিরিট ছড়িয়ে দিয়ে, সকলকে উজ্জ্বীবিত করে কাজ করে যেতে হবে।
উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে মুক্তির লক্ষ্যে জাগ্রত করেছেন বঙ্গবন্ধু
মোঃ হাসানুল ইসলাম এনডিসি
অতিরিক্ত সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মুজিববর্ষ ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ হাসানুল ইসলাম বলেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তাঁর উদ্বুদ্ধকরণের যে অভাবনীয় ক্ষমতা, সেই ক্ষমতায় তিনি বাঙালি জাতিকে জাগ্রত করেছেন। আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান, বঙ্গবন্ধুর এই স্পিরিট পালন ও ধারণ করতে পারছি আমাদের জীবদ্দশায়। তাই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের।
মুজিববর্ষে তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন- মুজিববর্ষের তাৎপর্য হচ্ছে, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে হবে ও আগামী প্রজন্মকে জানাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে জানার জন্য এই মুজিববর্ষই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ সময়। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে ত্যাগ, নেতৃত্ব দানের অপরিসীম ক্ষমতা ও দক্ষতার গুণে বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা, তা আগামী প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত করে দেয়ার মধ্যেই এই মুজিববর্ষের তাৎপর্য নিহিত।
মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে পরিকল্পনা প্রসঙ্গে অতিরিক্ত সচিব হাসানুল ইসলাম বলেন, মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। কিছু কিছু পরিকল্পনা আমরা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করেছি। করোনার কারণে অনেক কর্মসূচিই সরকারি নির্দেশে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছোটো আকারে করতে হয়েছে। তবে আমাদের ইচ্ছে আছে, যদি করোনা মহামারী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তাহলে আমরা আগামীতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় গৃহীত কাজের সকল বিষয় বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই মুজিববর্ষ উদযাপন করবো।
স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। তাঁর উন্নয়ন চিন্তাধারার প্রতিফলন বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রাগ্রসর বাংলাদেশের রুপকল্প। অগ্রগতির এ বেগবান ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আমরা অচিরেই একটি উন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সক্ষম হব। মূলতঃ সকল সূচকে প্রতিবেশী দেশগুলো অপেক্ষা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন বঙ্গবন্ধু আজন্ম লালিত স্বপ্নের অগ্রসরমান রূপ।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আমাদের সকলেরই ভূমিকা আছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে পাঠ্যক্রম আছে, তা যেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের যে স্পিরিট, সেই স্পিরিটের সাথেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আগামী প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত করে দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস। সরকারি/বেসরকারি সকল পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মের নিকট জনসচেতনা সৃষ্টি সহায়ক হবে। কেউ যেন মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে না পারে সেজন্য সকলকে সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী ও প্রাসংগিক।
মুজিব প্রেরণা বক্ষে ধরি, ব্যাংকের সেবা প্রসার করি
মোসাদ্দেক-উল-আলম
এমডি, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক
মুজিববর্ষ ঘিরে নিজ অনুভূতি ও মুজিব বর্ষের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের ডায়নামিক এমডি মোসাদ্দেক-উল-আলম বলেন, বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর নেতৃত্বে আমরা একটি স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। মেধাবী শিক্ষার্থীদের আমরা বৃত্তি প্রদান করেছি। এছাড়া ডিপোজিট প্রোডাক্ট অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু সঞ্চয়ী স্কিম চালু করা হয়েছে। আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের যারা সদস্য আছে, তারা যেন সঞ্চয়ে উৎসাহিত হয়, সে কারণে আমরা প্রিমিয়াম রেটে ডিপোজিট স্কিম চালু করেছি। আমরা খুব ভাগ্যবান যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৮তম জাতীয় সমাবেশে সফিপুরস্থ আনসার একাডেমীতে ব্যাংকের স্টলে এ প্রোডাক্টটির শুভ উদ্ভোধন করেন। আমরা এই ডিপোজিট স্কিমে যথেষ্ট সাড়া পেয়েছি। যদি করোনা প্রাদুর্ভাব না থাকত, তাহলে হয়তো আমরা আরো সাড়া পেতাম।
যদিও মার্কেট রেট এখন কমে গেছে, তারপরও আমরা বঙ্গবন্ধুর এই জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে সুদ হার না কমিয়ে ৬.৫% করে দিচ্ছি। আমরা চাই যে, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের যারা সদস্য, তারা সঞ্চয়মুখী হোক। নিজস্ব মূলধন, সদস্যদের আমানত এবং অন্য ব্যাংক এর আমানত গ্রহণ করে তা আনসার-ভিডিপির সদস্যগণের কাছে ঋণ দেয়া হয়। আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্যই এই ডিপোজিট প্রোডাক্টটির কথা চিন্তা করা হয়। সেপ্টেম্বর ২০’ পর্যন্ত ৭১৫৩টি ডিপোজিট স্কিমের হিসাব খোলা হয়েছে যাতে জমার পরিমান প্রায় ১৮ কোটি টাকা। আর দিনে দিনে এ আমানতের প্রবৃদ্ধি ঘটছে। এছাড়া, ৪২জনকে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে, যার পরিমাণ ২লক্ষ ১০হাজার টাকা। তাই এই মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে আমাদের অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও গর্বের।
মুজিববর্ষকে ঘিরে এই করোনাকালে পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সুদক্ষ ব্যাংকার আলম বলেন- বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন’ বিষয়ে আমরা আলোচনাসভা করেছি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আমাদের কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে উদ্বুদ্ধ করছি। ‘মুজিব প্রেরণা বক্ষে ধরি, ব্যাংকের সেবা প্রসার করি’ সেøাগানটি ব্যাংক থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের এই সেøাগানটি আমরা ফেস্টুনের মাধ্যমে প্রতিটি শাখা ও কার্যালয়ে প্রচার করেছি।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা কাজ করে যাচ্ছে
প্রফেসর কায়সার আহমেদ
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা
মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে অনুভূতি ও তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কায়সার আহমেদ বলেন- যে বাঙালি জন্মগ্রহণ না করলে আমরা আজ এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক এই ভূখ- পেতাম না, বাঙালি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে জায়গা পেত না, আজকে আমরা যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছি, তাও সম্ভব হতো না, সেই মহান বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের সুযোগ আজ আমাদের সামনে এসেছে। আমরা জাতীয় জীবনে আজ পর্যন্ত যা কিছু পেয়েছি, সবকিছুর সাথেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে তাঁর অগ্রগতিকে কেউ কিন্তু থামাতে পারেনি। আজ তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশের যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি করেছেন, তাও কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সেই সাড়ে তিন বছরের কর্মপরিকল্পনার ফসল। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত নানা আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে এদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের সুযোগ লাভে আগ্রহ-উদ্দীপনায় আমরা উদগ্রীব। আর সকলের এই আগ্রহ-উদ্দীপনার মধ্যেই নিহিত মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপনের তাৎপর্য।
মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে এই করোনাকালেও বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে বিএমইবি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর কায়সার আহমেদ বলেন, মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। এদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর জীবন-যৌবন সবকিছুই উৎসর্গ করেছেন। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ঘিরে আমাদের অনেক পরিকল্পনার মধ্যে হচ্ছে- মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু কর্ণার এবং গ্যালারি স্থাপন, ডিজিটাল ডিসপ্লে ও মনিটর স্থাপন, এপিএ-তে বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও অবদান সংশ্লিষ্ট কর্মসূচী সংযোজন, দ্রুততম সময়ে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ‘বিশেষ সেবা কার্যক্রম’ পালন, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, অভিযোগ বক্স স্থাপন, রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ ও রক্তদান কার্যক্রম, নাম ও বয়স সংশোধনী কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে অনলাইনে সম্পন্নকরণ, মুজিববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে টি-শার্ট, ক্যাপ, মগ, কলম, কোট পিন প্রস্তুত ও বিতরণসহ আরো বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে বোর্ডের অন্যান্য সকল সেবা অন-লাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি এমন প্রশ্নের জবাবে বিএমইবি’র চেয়ারম্যান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন এদেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা, একটি সুউন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা বারবার হোঁচট খেয়েছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমাদের দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব হয়েছে। বৃহৎ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে আমরা সার্কভুক্ত দেশগুলোকে অতিক্রম করেছি। কাজেই স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এখন আমাদের দরকার স্বপ্নের সোনার মানুষ। আর সেই সোনার মানুষ তৈরির লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে প্রত্যাশা জানতে চাইলে প্রফেসর কায়সার আহমেদ বলেন- মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে আমার প্রত্যাশা, বাংলাদেশের এখন যে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড আছে, এটা কিন্তু বেশি দিন থাকবে না, ১০-১৫ বছর পরে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডটা থাকবে না, এখন আমাদের জনসংখ্যার মধ্যে যুবক শ্রেণি বেশি, ১০-১৫ বছর পর তারা প্রৌঢ় এবং একপর্যায়ে যখন তারা বৃদ্ধ হয়ে যাবে, তখন জনসংখ্যা বোঝা হয়ে দাঁড়াবে আমাদের দেশের জন্য। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে যা যা করা দরকার, তা এই ১০-১৫ বছরের মধ্যেই যুবসমাজকে নিয়ে করতে হবে। একইসাথে সরকারের কাছে আমার আর একটা আবেদন, টারশিয়ারি এডুকেশনের দিকে আরও বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ, আমরা যদি দেশের প্রতি সত্যিকার মমত্ববোধসম্পন্ন গ্রাজুয়েট তৈরি করতে পারি, তাহলেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা সক্ষম হবো।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে জানতে চাইলে প্রফেসর কায়সার আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সকলেরই ভূমিকা আছে। প্রত্যেক মা-বাবাকে সন্তান ছোটো থাকতেই বঙ্গবন্ধুর জীবন ও সংগ্রামী চেতনা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলতে হবে। কিভাবে আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশ নামক এই দেশটির সৃষ্টি হলো, বঙ্গবন্ধুর এতে কী অবদান তা বলতে হবে। আবার যখন তারা স্কুল, কলেজে যাবে; তখন শ্রেণি শিক্ষকদের দায়িত্ব হবে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে জানিয়ে দেয়া। শিক্ষার্থীদের প্রথম ১২ বছরের যে শিক্ষা, সে শিক্ষাতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে জানিয়ে দেয়া খুবই প্রয়োজন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তারা পড়াশোনা করে নিজে নিজেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। একারণেই শৈশবে বাবা-মায়ের কাছে এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানা একান্ত আবশ্যক। সেজন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ শিক্ষা ব্যবস্থার সকল ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে আগামী প্রজন্মের মধ্যে মূল্যবোধ তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে।
মুজিববর্ষ আমাদের জন্য গৌরব এবং আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছে
সৈয়দ মোঃ তাজুল ইসলাম
চেয়ারম্যান, বিআইডব্লিউটিসি
মুজিববর্ষ ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন, বিআইডব্লিউটিসি’র সুদক্ষ, চৌকস ও প্রজ্ঞাবান চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, মুজিববর্ষ ঘিরে আমার অনুভূতি অসাধারণ আনন্দের। এই মুজিববর্ষ আমাদের জন্য গৌরব এবং আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছে। মুজিবকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির বেগবান ধারায় এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করার জন্য। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সুউন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। আর আজ এ সবকিছু সম্ভব হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্য। তিনি আমাদের একটি স্বাধীন বাংলাদেশে দিয়েছেন, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই এই মুজিববর্ষ ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের ও গর্বের।
মুজিববর্ষের তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুজিববর্ষের তাৎপর্য অসামান্য। এই মুজিববর্ষে পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান এক বাস্তবতা। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার কোটি কোটি মানুষের স্বপ্ন পদ্মাসেতু আজ বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। পদ্মা সেতুর সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজগুলোও খুব দ্রুত সম্পন্ন হয়ে যাবে। দেশ-বিদেশের অনেক বড় বড় অর্থনীতিবিদ বলেছেন, এই পদ্মা সেতু নির্মাণ হওয়ার ফলে আমাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় ২.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের সাথে সমান্তরালভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি বাকরি ও উন্নয়ন-অগ্রগতি করতে সক্ষম হবে। পদ্মা সেতু স্থাপনের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়ন সাধন হবে।
মুজিববর্ষকে ঘিরে এই করোনাকালেও আপনার বা আপনাদের বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিসি’র নিষ্ঠাবান চেয়ারম্যান বলেন, মুজিববর্ষকে ঘিরে এই করোনাকালেও আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সেই পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়ন করবো। করোনাকালে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধিও অনেক ব্যাহত হয়েছে, সেই তুলনায় বাংলাদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রবৃদ্ধির তেমন মারাত্মক ক্ষতি হয়নি। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সামান্য কিছু ক্ষতি হয়েছে। এই করোনাকালেও আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ব্যাপকভাবে সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই করোনাকালেও বিভিন্ন উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্পের কাজ অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হচ্ছে। মেগাপ্রকল্পগুলির কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে এ দেশ সুউন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে অনেক দূর এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নপূরণে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নপূরণে আমরা অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই তিনি এ স্বপ্ন পূরণে সক্ষম হতেন। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির দোসরদের ষড়যন্ত্রে সামরিক বাহিনীর উচ্ছৃঙ্খল সেনাসদস্যরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। এর ফলে আমাদের অগ্রগতি স্তিমিত হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু যদি আজকে বেঁচে থাকতেন, তাহলে অনেক আগেই আমরা একটি স্বপ্নের সোনার বাংলা পেতাম। উন্নয়ন অগ্রগতির শিখরে উঠতে পারতাম। অবশ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য অগ্নিকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে এদেশ আজ উন্নয়ন-অগ্রগতির বেগবান ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের মত বৃহৎ বৃহৎ মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। উন্নয়ন অগ্রগতির এই বেগবান ধারায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে অচিরেই একটি সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।
মুজিববর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়ে নবীন-প্রবীণের মেলবন্ধনে একটি চমৎকার তারুণ্যোজ্জ্বল মন্ত্রিসভার সরকার গঠন করেছেন। তাঁর এই তারুণ্যোজ্জ্বল মন্ত্রিসভার অধিকাংশই বয়সে নবীন, তরুণ। তারুণ্যের একটা আলাদা প্রাণচাঞ্চল্য রয়েছে। তারুণ্যের বেগবান নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যায়। তারা সবসময় প্রাণচঞ্চল থাকেন। তাই তারা দেশকে অনেক কিছু দিতে পারেন। তারা নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা করতে পারেন। তাদের নতুন নতুন চিন্তা ভাবনায় দেশ অনেক এগিয়ে যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁর নতুন মন্ত্রিপরিষদের সরকার গঠন করেছেন, সে উদ্দেশ্য ইতোমধ্যে অনেকাংশে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে কার কি ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে আমরা যে যেখানে আছি, আমাদের প্রত্যেকের অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করে যেতে হবে। আমরা যে যেখান থেকে যে কাজ করছি, সেই কাজের মাধ্যমে আমাদের দেশকে তুলে ধরতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে, বঙ্গবন্ধুর সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস যদি আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিক ভাবে তুলে ধরতে না পারি, তাহলে আমরা তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব না। প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারব না। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের ঋণ শোধ করাও হবে না। বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে আমরা এদেশের স্বাধীনতা পেয়েছি। তিনি আমাদের উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আমরা ধাবিত হয়েছি। তাঁর সুযোগ্য অগ্নিকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা একটি সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে তারুণ্যোজ্জ্বল মন্ত্রী পরিষদ নিয়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহজাহান
চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ, লক্ষ্মীপুর
মুজিববর্ষ ঘিরে অনুভূতির কথা জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সুদক্ষ, চৌকস ও প্রজ্ঞাবান চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা পৃথিবীর বুকে এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র এবং মানচিত্র পেতাম না। বঙ্গবন্ধুর জন্ম হওয়াতে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য অগ্নিকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত এই সময়টাকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করে সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। এজন্য আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য অগ্নিকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। মুজিববর্ষ ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের।
মুজিববর্ষের তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিভাবে জীবনভর আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম এই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, তা আগামী প্রজন্মকে জানানোর জন্য মুজিববর্ষ উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাই মুজিববর্ষের তাৎপর্য অত্যন্ত ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী। মুজিববর্ষ উদযাপনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পারবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হবে, অনুপ্রাণিত হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে তারাই হবে আগামী দিনের দেশ গড়ার কান্ডারী। তাদের হাতেই এদেশ একদিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে। তাই আগামী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে তুলতে মুজিববর্ষ উদযাপনের তাৎপর্য অত্যন্ত ব্যাপক, মহিমান্বিত ও সুদূরপ্রসারি।
মুজিববর্ষ ঘিরে এই করোনাকালেও আপনার বা আপনাদের বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান ও বিচক্ষণ লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, মুজিববর্ষ ঘিরে এই করোনাকালেও আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। করোনাকালের শুরু থেকেই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায় অনুযায়ী লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পনের হাজারেরও বেশি অসহায়, দুঃস্থ মানুষের ঘরে ঘরে খাবার ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। সংকট সময়ে আমরা জেলা পরিষদের সকল সদস্য এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সবাইকে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় বাস্তবায়নে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সবধরণের সাহায্য সহযোগিতা করেছি এবং আশা করি করোনাকালের আগামী দিনগুলোতেও আমাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি জানতে চাইলে তিনি বলেন- বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে তাঁর সুযোগ্য অগ্নিকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা, আমরা যারা একাত্তরের রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে এদেশকে স্বাধীন করেছি, আজ আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে সুযোগ্য অগ্নিকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি।
মুজিববর্ষে সবাই যার যার অবস্থান থেকে সৃজনশীলতা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে আবিষ্কার করবে
মোঃ সাইফুল হাসান রনি
চেয়ারম্যান, ১৭নং ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন, লক্ষ্মীপুর
মুজিববর্ষের অনুভূতি জানতে চাইলে ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের জননন্দিত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল হাসান রনি বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। মুজিববর্ষ সরকারের অতি সুন্দর এবং একটি চমৎকার উদ্যোগ। এই মুজিববর্ষে সবাই যার যার অবস্থান থেকে সৃজনশীলতা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে আবিষ্কার করবে এবং তা জাতির কাছে তুলে ধরবে। মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি এই করোনাকালেও আমরা মুজিবপ্রেমীরা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছি নানা আলোচনা ও কর্মকা-ের মাধ্যমে। নতুন করে বঙ্গবন্ধুকে জানার এবং বুঝার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে এই মুজিববর্ষ। তাই এই মুজিববর্ষে ঘিরে আমার অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের।
মুজিববর্ষ ঘিরে এই করোনা মহামারীকালেও পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা মহামারী পরিস্থিতি এখন সারাবিশ্বের সমস্যা। আমাদের দেশেও করোনা মহামারী পরিস্থিতি সংকট সৃষ্টি করেছে। আমি আমার এলাকায় মাইকিং করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করেছি। এলাকায় মাস্ক বিতরণ করেছি। মানুষ যাতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে, নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলে, সে বিষয়ে আমরা প্রতিনিয়ত মানুষকে সচেতন করে চলেছি। এছাড়া ‘মুজিববর্ষ বঙ্গবন্ধু এলইডি ফুটবল কাপ’ আমরা বিজয় দিবসে ফাইনাল খেলা সম্পন্ন করেছি। মুজিববর্ষ ঘিরে এই করোনা মহামারীকালে আমাদের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা আছে। আমরা তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করবো।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিষ্ঠাবান ও জনকল্যাণকামী চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি বলেন, বর্তমান সরকারের ভিশন একটা স্টেবল ও খুব দূরদর্শী ভিশন। আমাদের সরকার স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। আমরা এখন সুউন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানের স্বপ্ন দেখতে শিখেছি। আগামী ৩০ বছরে আমার এলাকায় কী পরিবর্তন হবে সে স্বপ্ন আমি দেখি এবং সে লক্ষ্যেই আমি নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গ্রাম হবে শহর। সেই রূপান্তরই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, তা আমরা সকলে মিলে বাস্তবায়ন করবো এবং অচিরেই একটি সুউন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে পারবো। তাই আমি মনে করি, স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি এবং তাঁঁর অব্যাহত নেতৃত্বে আরও অনেক বেশি অগ্রসর হব।
মুজিববর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে আপনার প্রত্যাশা কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুজিববর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে আমার প্রত্যাশা হচ্ছে, আমরা সরকারের দিক নির্দেশনায় মুজিববর্ষের চেতনাকে লালন করে আরও সামনে এগিয়ে উন্নত বিশ্বের দিকে নিয়ে যাবো। মুজিববর্ষের প্রতিটি দিনকে আমরা মহিমান্বিত করার লক্ষ্যে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছি। তাই মুজিববর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকার এই দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উদ্যোক্তা সৃষ্টি করবে, যারা আমাদের দেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা।
মুজিব জন্মশতবর্ষে সর্বক্ষেত্রে সুশাসন ও জবাবদিহিতা সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে
আহমেদ ইয়ূসুফ আব্বাস
সিইও, অগ্রণী ইক্যুইটি এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড
মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে অনুভূতি এবং তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাইলে অগ্রণী ইক্যুইটি এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিঃ এর ডায়নামিক চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) আহমদ ইয়ূসুফ আব্বাস বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির গৌরব এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। বাঙালি জাতির জন্য তাঁর যে অবদান, তা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। কেউ এটা ভুলতে চেষ্টা করলেও কোনোদিন ভুলতে পারবে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইতিহাসের শাশ্বত সত্য। শুধু এই জন্মশতবর্ষ কেন, আরও লক্ষ কোটি জন্মশতবর্ষ পালন হবে। এই বাংলাদেশে যতোদিন একজনও বাঙালি থাকবে, ততোদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মধ্যে চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন। তিনি অমর, অক্ষয়, শাশ্বত, সুমহান!
মুজিব জন্মশতবর্ষ ঘিরে এই করোনাকালে আপনার বা আপনাদের কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে কি? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে অগ্রণী ইক্যুইটি এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিঃ এর নিষ্ঠাবান সিইও আহমদ ইয়ূসুফ আব্বাস বলেন, আমরা অগ্রণী ব্যাংকের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে মাননীয় চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত্ এবং ডায়নামিক এমডি মোহম্মদ শামস-উল ইসলাম ঘোষিত মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপনের সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে একাত্মতা ঘোষণা করেছি।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য অগ্নিকন্যা জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আমরা ইতোমধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতির এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আমরা অচিরেই একটি সুউন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।
মুজিব জন্মশতবর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে প্রত্যাশা জানতে চাইলে প্রাজ্ঞ এই ব্যক্তিত্ব বলেন, মুজিব জন্মশতবর্ষে তারুণ্যোজ্জ্বল সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে, বৃহৎ মেগা প্রকল্প যেমন- পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল ইত্যাদি দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করতে হবে। তাহলে এদেশ দ্রুত উন্নত দেশের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে। এছাড়া দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হতে হবে। সর্বক্ষেত্রে সুশাসন ও জবাবদিহিতা সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তাহলেই এদেশ সত্যি সত্যি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সকলেরই ভূমিকা রাখতে হবে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে বইপত্র দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করতে হবে, পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে -যাতে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে। জাদুঘর, লাইব্রেরি, মিডিয়াসহ সকল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত করে দিতে হবে।
কোয়ালিটি এডুকেশন সুনিশ্চিত করা সম্ভব হলে মুজিববর্ষের যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে
সৈয়দ জাফর আলী
অধ্যক্ষ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
মুজিববর্ষ ঘিরে অনুভূতি জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের আজীবন শিক্ষাব্রতী অধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর আলী বলেন, মুজিববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনে একটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বছর। হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালি কখনোই প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন ছিল না। কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র আমাদের ছিল না। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভূখ- লাভ করি। একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আমরা আত্মপ্রকাশ করি। মুজিব শতবর্ষে আমাদের গর্বের বিষয় হলো, এই বাঙালি জাতীয়তাবাদ, এই স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশের কারণে আমরা পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছি আজ। উন্নয়ন অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যেতে পারছি স্বাধীনভাবে। আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের গুণে। এই মুজিববর্ষে আমরা বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে লালন করছি। বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এই বাংলাদেশকে স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করার জন্য বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন ছিল, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের অঙ্গীকারকে এই মুজিববর্ষ শাণিত করবে।
মুজিববর্ষ ঘিরে আপনার বা আপনাদের কোনো পরিকল্পনা আছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রবৎসল অধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর আলী বলেন, আমরা মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য একটি কমিটি করেছি। মুজিববর্ষের বিভিন্ন বিষয়ে আমরা আলোচনা অনুষ্ঠান করছি। আমরা বিভিন্ন সভা-সেমিনারের মাধ্যমে মুজিববর্ষের তাৎপর্য তুলে ধরে কিভাবে সঠিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়, সেলক্ষ্যে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের কলেজে মানসম্মত শিক্ষা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছি। কোয়ালিটি এডুকেশন সুনিশ্চিত করা সম্ভব হলে আমাদের মুজিববর্ষের যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে প্রজ্ঞাবান অধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর আলী বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণে আমরা অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে। একটা সময় আমাদের কাক্সিক্ষত গতি ছিল না, আমাদের গতি রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা লক্ষ্যচ্যুত হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন হওয়ার পর থেকে আমরা সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। আমাদের দেশ এখন বিশ্বের সেরা প্রবৃদ্ধি অর্জনের একটি দেশে পরিণত হয়েছে। সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ইত্যাদি সকল ধরনের উন্নয়নে আমরা সার্কভুক্ত দেশসমূহ; যেমন- ভারত, পাকিস্তানসহ আরো অন্যান্য দেশসমূহকে আমরা পিছনে ফেলে সামনে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। এসবকিছুই আমাদের অগ্রসরতার প্রমাণ।