॥ রাইসা হেলাল ॥
স্নাতক (সম্মান), ১ম বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বৈশাখ আসতে না আসতেই অস্বাভাবিক গরম পড়েছে। বাইরে বেরুলেই মনে হয়, কেউ যেন শরীরে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। সূর্যের তাপ দিনে দিনে অসহনীয় মাত্রায় বেড়ে চলেছে।
আবহাওয়ার এরূপ পরিবর্তনে অনেকেই নানা রকম সমস্যায় ভুগছে- কারও বাসায় বিদ্যুৎ বা পানির সমস্যা, আবার কারও নিজের বা পরিবারের সদস্যদের আবহাওয়াজনিত অসুস্থতা। তাই গরমে আমাদের খাদ্যাভ্যাস কি রকম হওয়া উচিত -সে সম্পর্কে শেয়ার করতে চাই। এক্ষেত্রে লেখক এম হেলাল’র ‘উন্নত স্বাস্থ্যচর্চা ও চিকিৎসা এবং শতবর্ষী হবার উপায়’ আর ‘সুস্থতা ও শতায়ুলাভে প্রাকৃতিক চর্চা ও চিকিৎসা’ -এ দুু’টি বইয়ের সাহায্য নিয়েছি আমি।
গ্রীষ্মকালে আমাদের শরীর থেকে ঘামের সাথে অনেক পানি ও খনিজ পদার্থ বেরিয়ে যায়। তাই এ সময়ে যা অবশ্যই সাথে রাখা উচিৎ তা হচ্ছে পানির বোতল। বাসায়, বাইরে, অফিসে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেখানেই থাকুন না কেন, একটু পর পর পানি পান করার চেষ্টা করতে হবে। একবারে অনেক পানি খেতে হবে -এমন কোনো কথা নেই, একটু পর পর অল্প করে পানি পান করলেই চলবে। পানি ছাড়াও গরমের দিনগুলোতে ফলের রস খুব উপকারি। যেমন- ডাবের পানি, কমলা বা মাল্টার রস, পেঁপের জুস, আনারসের জুস, কাঁচা আমের জুস, গাজরের জুস ইত্যাদি। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে এগুলো যেন বাজারের প্যাকেটজাত জুস না হয়, বরং ঘরে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি হয়। এধরনের পানীয় কিংবা তরল খাবার ঘন ঘন পান করতে থাকলে অতিরিক্ত গরমে ঘামের সাথে পানিসহ যে প্রয়োজনীয় পদার্থগুলো বেরিয়ে যায়, সেগুলোর অভাব অনেকটাই দূর হয়। উক্ত বই দুটিতে এম হেলাল বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন- ‘পানি’ কেমন করে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে শরীরকে রোগমুক্ত ও সুস্থ রাখে।
গরমে আমাদের ত্বকের বেশ বড় ক্ষতি হয়ে যায়। রোদে ও তাপে ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, যেমন- ব্রণ, ত্বক পুড়ে যাওয়া ইত্যাদি । ত্বকের সতেজতা নষ্ট হয়ে যায়। ত্বকের সতেজতা ফিরিয়ে আনতে ফল ও সবজির বিকল্প নেই। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় টমেটো, শসা, গাজর, লেবু, লেটুস পাতা ইত্যাদির সমন্বয়ে তৈরি সালাদ রাখতে পারলে খুব ভালো হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি পান করার পর একটি গাজর বা শসা চিবিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও সকালে খালি পেটে হলুদের রস এবং মধু মিশিয়ে খেলে ত্বকের সতেজতা ফিরে আসবে।
আমার মতো যাদের প্রতিদিন স্কুল, কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে কিংবা কর্মস্থলে যেতে হয়, তারা একটি বক্সে কিছু ফল যেমন- বড়ই, আনারস, কমলা, মাল্টা, তরমুজ, আপেল, পেঁপে এগুলো ছোট পিস্ করে কেটে রেখে দিতে পারেন এবং ক্লাসের ব্রেকে খেয়ে নিতে পারেন। অন্য টিফিনের চেয়ে এটি অনেক বেশি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত।
সর্বোপরি, এম হেলাল’র মতে- নিয়মিত মেডিটেশন আমাদেরকে সব অবস্থায় ধীর-স্থির ও স্বস্তিতে থাকতে সাহায্য করে। গরমকে প্রতিহত করতে হলে নিয়মিত মেডিটেশন করে বলতে হবে- আমি যেকোন তাপমাত্রায় স্বাভাবিক থাকতে পারি, গরমে অস্থির হই না, অনেক গরীব মানুষের চেয়ে আমি ভালো আছি ইত্যাদি। দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় এমন অনেক টিপ্স ও অটোসাজেশন জানতে ক্যাম্পাস কার্যালয় থেকে উক্ত বই দু’টি সংগ্রহ করে পড়ে ফেলতে পারেন।