সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছেন সার্কভুক্ত আট দেশের শিক্ষার্থীরা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বাংলাদেশের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। আপনিও ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করতে পারেন এখানে। ভর্তির নানা তথ্য নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, সার্কের সকল সদস্য দেশের সমন্বিত সহযোগিতায় স্থাপিত একটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৫ সালে ১৩তম সার্ক সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সার্ক সদস্য দেশের শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্বমানের শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ করে দেয়ার লক্ষ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব পেশ করেন। এরপর ১৪তম সার্ক সম্মেলনে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে আন্ত:সরকারি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এর শ্লোগান নির্ধারিত হয় ‘সীমানাহীন জ্ঞান’। ২০১০ সালের আগস্ট মাসে ইকোনমিক্স আর কম্পিউটার সাইন্স, এই দুই বিষয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রাম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক যাত্রা শুরু করে। এখন পর্যন্ত বায়োটেকনোলজি, কম্পিউটার এপ্লিকেশনস, ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস, আইন, সমাজবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক মোট ৮ বিষয়ে মাস্টার্স অ্যান্ড পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু হয়েছে। মূল ক্যাম্পাস এখনো আন্ডার কনস্ট্রাকশনে রয়েছে। তাই ২০১০ থেকে দিল্লির চাণক্যপুরীতে অবস্থিত আকবর ভবনকে অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দিল্লিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ক্যাম্পাস স্থানান্তরিত হলে ৮ সার্ক দেশে পর্যায়ক্রমে ৮টি স্টাডি সেন্টার গড়ে তোলা হবে। ভর্তি প্রক্রিয়া: ২০১৮-১৯ জানুয়ারি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইট WWW.SAU.INT সহ সার্কের ৮ দেশেই রিজিওনাল অফিস ও পত্রিকার মাধ্যমে ভর্তির বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত ফি ১০ ইউএস ডলার বা ৮০০ বাংলাদেশি টাকা দিয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফরম পূরণ করে নির্দিষ্ট তারিখে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতোই অনলাইনে ভর্তি ফরম পূরণ করা যায়। অ্যাডমিশন ফি ১০ ডলার অনলাইনে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অথবা ব্যাংক ড্রাফট করে পাঠাতে পারেন এবং পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট দিনে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পূর্ব মূহুর্তে পরীক্ষা কেন্দ্রে ও ফি পরিশোধ করা যায়। কর্তৃপক্ষ দুই ক্যাটাগরিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়। সামাজিক বিজ্ঞান এর বিষয় সমূহের (সমাজবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অর্থনীতি, আইন) জন্য ৩/৪ বছরের অনার্স ডিগ্রিতে ৫০% মার্কস। অর্থাৎ সিজিপিএ ২.৫০ আর বিজ্ঞান এর বিষয় সমূহের (ম্যাথ, কম্পিউটার সাইন্স, কম্পিউটার অ্যাপ্লিশন, বায়োটেক) ক্ষেত্রে ৫৫% মার্কস। অর্থাৎ সিজিপিএ ২.৬০ থাকলে আপনি ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য বিবেচিত হবেন। মাস্টার্স কোর্সে প্রতিটা বিভাগে আসন সংখ্যা মাত্র ৩০; কারণ বিশ্ববিদ্যালয় এখন পর্যন্ত অস্থায়ী ক্যাম্পাস থেকে পরিচালিত হচ্ছে। স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি সম্পন্ন হলে বাড়ানো হবে আসন সংখ্যা। এই ৩০ আসনের মধ্যে ১৫টি আবার শুধুমাত্র ভারতের জন্য বরাদ্দ। ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি: মোট ১০০ মার্কস এর উপর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সময় ৩ ঘণ্টা। ১০০ মার্কস ভাগ করা থাকে ২ ভাগে প্রথম ভাগে থাকে ৫০ মার্কসের অবজেক্টিভ, যেখানে আবার ২৫-২৫ করে দুটি বিভাগ। একটি দক্ষিণ এশিয়া সম্পর্কিত সাধারণ জ্ঞান আর অপরটি বিষয় ভিত্তিক। আর বাকি ৫০ মার্কস হলো লিখিত, যেখানে ৪/৫টি বর্ণনামূলক প্রশ্নের মধ্য থেকে মাত্র ২টির উত্তর দিতে হয়। একেকটি উত্তর ১২০০/১৫০০ শব্দের বেশি হওয়া যাবে না। আর লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নগুলো ফ্রি-হ্যান্ড রাইটিং টাইপ, আবার বিষয়ভিত্তিকও হতে পারে। আন্তর্জাতিক আইনে এলএলএম ও Phd প্রার্থীকে শুধু মাত্র ১০০ মার্কের MCQ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে হয়। ভর্তি পরীক্ষা একই দিনে ৮টি সার্ক দেশে লোকাল টাইম অনুযায়ী একই প্রশ্নের মাধ্যমে নেয়া হয়। বাংলাদেশে পরীক্ষা সেন্টার দুটি। একটি ঢাকার শেরে-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, অপরটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রতিটি দেশ থেকে বিষয় অনুযায়ী চান্স প্রাপ্তদের এবং অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশ করা হয়। জেনে নিতে পারেন আপনিও www.sau.int স্কলারশিপ এখানে সবচেয়ে বড় স্কলারশিপ হলো প্রেসিডেন্ট স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপ প্রাপ্তদের খরচ বলতে ভর্তির সময় ১১ হাজার ভারতীয় রুপি, যার অর্ধেক পরে ফেরত দেয়া, ভারতে যাতায়াত খরচ, ব্যক্তিগত খরচ। এই স্কলারশিপ প্রাপ্তদের (মাস্টার্স) সুবিধাসমূহ হলো, পড়ার কোন খরচ নেই, হোস্টেলে থাকা ফ্রি ও খরচের জন্য প্রতি মাসে ৭ হাজার রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯০০০ দেওয়া হয়। পিএইচডির জন্য মনোনিত শিক্ষার্থীকে প্রতিমাসে হাত খরচের জন্য ২৫০০০ রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৪০০০ সাথে ফুল ফ্রি টিউশন ও হোস্টেল ফ্রি। বিস্তারিত জানতে: www.sau.int