পছন্দের তালিকায় কোন কলেজ রাখবে এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীর জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ভালো কলেজে ভর্তির আসন পূর্ণ হয়ে যাবে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী দিয়েই। ফলে শিক্ষার্থীদের অন্য কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগও খুঁজতে হবে।
অভিভাবকদের ধারণা, ভালো কলেজে ভর্তি হলেই ভালো ফল করা যায় তাই যে করেই হোক নামিদামি কলেজেই ভর্তি হতে হবে। এটি একটি ভুল ধারণা। ২০১৫ সালে ঢাকা বোর্ডের ঢাকা কমার্স কলেজে ১৩ জন, ঢাকা সিটি কলেজে ১২ জন, আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে ২২ জন, ঢাকা কলেজে ১৬ জন, নটরডেম কলেজে ২১জন, ভিকারুননেসা নূন কলেজে ৯ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বোর্ডের চট্টগ্রাম কলেজে ১৫০ জন, সরকারি হাজী মোঃ মহসীন কলেজে ৮৯ জন, সরকারি কমার্স কলেজে ২১ জন, নৌ-বাহিনী স্কুল এন্ড কজলেজে ১৩ জন, চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ১৭৯ জন, বিএএফ শাহীন কলেজে ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজে ৪৩ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়।
স্বনামধন্য কলেজগুলোতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়, তবু কেন তারা অকৃতকার্য হবে? অথচ এমন অনেক কলেজ রয়েছে যেগুলোতে কেউ অকৃতকার্য হয়নি। যেমন ২০১৫ সালে ঢাকা বোর্ডের শামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ, কাদের মোল্লা কলেজ, ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ এর সবাই কৃতকার্য হয়েছে। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বোর্ডের বন্দর কতৃপক্ষ স্কুল এন্ড কলেজ, বন্দর কতৃপক্ষ বালিকা স্কুল এন্ড কলেজ এর সবাই কৃতকার্য হয়েছে। অনেক কলেজে এসএসসিতে যে এ+ পেয়েছিল, এইচএসসিতে সে এ+ পায়নি। আবার উল্টো ঘটনাও অনেক প্রতিষ্ঠানে ঘটেছে। উদাহরনস্বরুপ বলা যায়, ক্যামব্রিয়ান থেকে ২০১৫ সালে বের হওয়া শিক্ষার্থীর ৭০ শতাংশ জিপিএ-৫ পেয়েছে, অথচ ভর্তির সময় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ছিল মাত্র ৩০ শতাংশ। ফলে এসব বিষয়ও ভালো কলেজ নির্ধারণে বিবেচনায় নেয়া উচিত।
শিক্ষাবিদদের মতে, শিক্ষার্থীদের কলেজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কাছের কলেজটিকে পছন্দের তালিকায় রাখা উচিত। শিক্ষার্থীরা তার নিজ এলাকার ভালো কলেজে ভর্তির হলে তাদের অতিরিক্ত সময় নষ্ট হবে না। যাতায়াতে যে সময় নষ্ট হবে সেই সময়টাতে পড়াশোনায় মন দিলে নিশ্চিতভাবে ফলাফল ভালো হবে। এছাড়া বিভিন্ন কলেজের অতীতের ফলাফল বিশ্লেষণ করতে হবে। শুধু নামে নয় মানের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
বড় কলেজে ভর্তির সংকট ছিল, থাকবে। রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোসহ সারাদেশে জেলা পর্যায়ে ভালো কলেজের সংখ্যা তুলনামূলক কম। তবে ভালো কলেজে ভর্তি হলেই ভালো রেজাল্ট করবে এমন গ্যারান্টি নেই। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে সাফল্য আসবেই। শুধু পাঠ্যপুস্তকের পড়াশোনার মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান শ্রেষ্ঠ হতে পারে না। অনেক প্রতিষ্ঠানে শোনা যায়, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট ও কোচিংয়ে না পড়লে কম নম্বর দেয়া হয়। কোনো ক্লাসে শিক্ষার্থীরা কম নম্বর পেলে ওই বিষয়ের শিক্ষকের বিভিন্ন সুযোগ বন্ধ রাখা হয়।
ভর্তির জন্য ভালো কলেজ হবে সেটি যেখানে খেলার মাঠ থেকে শুরু করে সব সুযোগ সুবিধা আছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে। অনেক শিক্ষার্থী দূরের কলেজে ভর্তি হয়ে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি মানসিক ও শারীরিক চাপে থাকেন। তাই এ বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত। নিজ বাসা থেকে এমন কলেজে ভর্তি হওয়া ঠিক হবে না, যেখানে আসতে যেতেই পুরো সময় পার হয়ে যায়। এ ছাড়া নিজের অর্জন করা জিপিএও বিবেচনায় আনতে হবে। যে শিক্ষার্থী জিপিএ ৪ বা তার নীচে তার এমন কলেজ পছন্দের তালিকায় রাখা ঠিক হবে না, যাতে কোনো কলেজেই প্রথমবারে ভর্তির সুযোগ না পাওয়া যায়।
কলেজ ও বিষয় বাছাইয়ে যে সতর্কতা জরুরি। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কেননা পরবর্তী জীবনে ক্যারিয়ারের ভিত এখানেই রচিত হয়। তাই এ সময়টায় সিদ্ধান্ত নিতে হয় অনেক সতর্ক এবং সচেতনভাবে। উদ্দেশ্য নির্ধারণের আগে নিজের ইচ্ছা ও আগ্রহের বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকাটা জরুরি। তবে শুধু ইচ্ছা বা আগ্রহকে প্রাধান্য দিলেই অনেক সময় লক্ষ্য নির্ধারণ সঠিক হয় না। সাধের সঙ্গে সাধ্যের সমন্বয় ঘটানোটাও গুরুত্বপূর্ণ।
কোন কলেজে ভর্তি হবে এই ব্যাপারে শিক্ষক বা সচেতন অভিভাবকদের কাছ থেকে এসএসসি পাসের পরই পরামর্শ নেয়া দরকার। অথবা কলেজে গিয়ে দেখে, বিস্তারিত জেনে সিট খালি আছে কিনা তথ্য জেনে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ব্যাপারে সঠিক গাইডলাইন দরকার। পছন্দের তালিকায় কয়েকটি কলেজ থাকলে, সেসব কলেজের ব্যাপারে খোঁজখবর রাখতে হবে। এসএসসির ফলাফল, আর্থিক সঙ্গতি, যাতায়াতব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করে কোন কলেজে ভর্তি হওয়া যায়, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত- আগেই নেয়া উচিত।
বর্তমানে অনেক কলেজ গড়ে উঠেছে, যার প্রয়োজনীয় কাঠামো নেই, শিক্ষক নেই, ল্যাবরেটরি নেই, লাইব্রেরি নেই। নামসর্বস্ব এসব কলেজ চলছে পাসের হার আর বিজ্ঞাপন প্রক্রিয়ার শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে। বছর শেষে সাজেশন আর নোট সাপ্লাইয়ের বদৌলতে ভালো রেজাল্টও করছে। কিন্তু এখানে ভেবে দেখতে হবে এদের কতজন শিক্ষার্থী পরবর্তীতে দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তি হতে পারছে। মনে রাখতে হবে, শিক্ষা কেবল বইয়ের পাতায় আর ক্লাস লেকচারে থাকে না। এর জন্য চাই একটি সমন্বিত ব্যবস্থা।
বিভাগ ও বিষয় নির্বাচনে খুব সতর্ক হতে হবে। একটি ভুল সিদ্ধান্তে একটি জীবন ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে পাস করেছ, এখন কলেজে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ভর্তি হবে কিংবা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাস করে ভর্তি হতে চাইছ মানবিক বিভাগে। এ রকম কোনো বিষয় থাকলে খুব বুঝে-শুনে সিদ্ধান্ত নেবে। মা-বাবা কিংবা ভাই-বোন-বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করে, নিজে যে বিভাগে ভর্তি হয়ে ভালো করতে পারবে বলে বিশ্বাস কর, সে বিভাগেই ভর্তি হবে। এইচএসসিতে কোন কোন বিষয় নেবে, তা আগে থেকেই জেনে-বুঝে নাও। শুধু বন্ধু বা বাসার কারো কথা শুনে বিষয় নির্বাচন করবে না। তুমি যা পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ কর তা-ই নির্বাচন কর।
কেউ পছন্দমতো কলেজে ভর্তি হতে না পারলেও মন খারাপের কিছু নেই। কলেজের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিজ মেধা। শিক্ষক একজন সহায় মাত্র। তুমি পড়াশোনায় কতটা মনোযোগী, নিজের চেষ্টায় কতটা ভালো করেছ তা-ই দেখার বিষয়। এ ক্ষেত্রে নিজের একাডেমিক পড়া তো বটেই, সঙ্গে দেশ ও গোটা বিশ্ব সম্পর্কে জানতে নিয়মিত পড়াশোনা কর।
এবারও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে কলেজে ভর্তি করা হবে। এসএমএস এর পাশাপাশি অনলাইনেও আবেদন করা যাবে। তবে এবার প্রার্থী ২০টি কলেজের (এসএমএসে সর্বোচ্চ ১০টি ও অনলাইনে সর্বোচ্চ ১০টি) জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রার্থী নির্বাচনে কোন বাছাই বা ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে না। কেবল শিক্ষার্থীর এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।
কোনো স্কুল অ্যান্ড কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত যোগ্যতা সাপেক্ষে স্ব-স্ব বিভাগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভতির্র সুযোগ পাবে। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করেই অবশিষ্ট শূন্য আসনে ভর্তি করাতে পারবে। ফলে আবেদনে কলেজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এমন কোন কলেজের নাম দেয়া ঠিক হবে না যেখানে চাঞ্চ পেলেও ভর্তি হবে না। অথবা আগেই খোঁজ নিতে হবে নিজস্ব শিক্ষার্থীদের ভর্তির পর সিট শূন্য আছে কী-না? ইচ্ছেখুশি মতো ২০টি কলেজেরই নাম দিতে গিয়ে ভুল করা ঠিক হবে না, কেননা এই ২০টি থেকে যেকোন কলেজেই পড়তে হতে পারে। তাই প্রয়োজনে অনেক কলেজে আবেদন না করে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের আবেদন করাা যেতে পারে। অর্থাৎ যে কয়টিতে আবেদন করা হবে তা জেনে, বুঝে, যাচাই-বাছাই করে করতে হবে। পরে যাতে আফসোস করতে না হয়।
পছন্দের কলেজে ভর্তি হবার জন্য যে কোঠা ভিত্তিক আসন রয়েছে সেগুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে। ভালো হচ্ছে পছন্দের কলেজে আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে ভর্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়া। সিদ্ধান্তহীনতা ভোগান্তিরও কারণ হতে পারে।
কলেজ পরিদর্শক ড. আসফাকুস সালেহীন বলেন, গত বছর ভর্তিতে মহাসঙ্কট তৈরি হয়েছিল। সঙ্কট নিরসনে এবার আবেদনের জন্য কলেজ সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি মাইগ্রেশনের রাস্তা বন্ধ করেছি। কারণ এবার একেকজন অনেক প্রতিষ্ঠানে মেধা তালিকায় আসার সুযোগ পাবে। এরপর সে তার মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ার মধ্যে পছন্দের একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে। এবার আমরা ভর্তির জন্য দুটি তালিকা প্রকাশ করব। একটি মেধাতালিকা, অপরটি অপেক্ষমাণ। দুটি তালিকাই একসঙ্গে প্রকাশিত হবে।
ধরা যাক একটি কলেজে ২০০০ আসন আছে। এই কলেজে আবেদন পড়েছে পাঁচ হাজার। এর মধ্যে প্রথম ২০০০ জন মেধাতালিকায় স্থান পাবে। বাকি ৩০০০ অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকবে। একজন ছাত্র ২০ কলেজে আবেদন করলে ২০ কলেজেই তার অবস্থান একই সময়ে জানতে পারবে। এতে কলেজ এবং শিক্ষার্থী উভয়ের ভোগান্তি কমবে। যদি কোন কলেজ ভর্তিতে মেধাক্রম উপেক্ষা করে, তাহলে কলেজের এমপিও, স্বীকৃতি ও অনুমোদন বন্ধ করার মতো শাস্তি দেয়া হবে।
এসব নিয়ম কানুুন বিবেচনায় এনে এবার যারা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করবে তাদের প্রতি পরামর্শ হচ্ছে- যে কলেজ তুমি ভর্তি হতে বেশি ইচ্ছুুক তা পছন্দ তালিকার প্রথমে রাখবে। যে কলেজে ভর্তি হতে চাও না তা তে আবেদন করার প্রয়োজন নেই এমনকি পছন্দ ক্রমের শেষেও নয়। এমন হয় যদি তুমি ভাবো, পছন্দের কলেজে তোমার চান্স পাবার সম্ভাবনা কম আর তুমি অন্য কলেজেও ভর্তি হতে চাও না সেক্ষেত্রে তোমার করণীয় হবে শুধুমাত্র তোমার পছন্দের কলেজটি সিলেক্ট করে আবেদন করা। তুমি যদি মেধা তালিকায় চান্স না পাও তাহলে অপেক্ষমাণ তালিকা আছে। পছন্দ তালিকায় পর্যায়ক্রমে প্রথমেই তোমার প্রথম পছন্দ, এরপর দ্বিতীয়, তৃতীয় এভাবে তোমার ফলাফল অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে কলেজে আবেদন করবে।
সিদ্ধেশ্বরী কলেজ
১৯৬২ সালে ঢাকার শিক্ষা জোন হিসেবে পরিচিত অভিজাত এলাকা সিদ্ধেশ্বরী-মৌচাক-মগবাজার রোডে প্রতিষ্ঠিত হয় সিদ্ধেশ্বরী কলেজ। শিক্ষার আলো বিস্তার ও জাতিকে উন্নততর আদর্শ নাগরিক উপহারদানে এ কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জাতীয় পর্যায়ে বর্ণাঢ্য ইতিহাসের অধিকারী অত্যন্ত মনোরম পরিবেশ, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, সুবিশাল ক্যাম্পাস, আকর্ষণীয় ফলাফল এ কলেজটিকে করেছে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। কলেজে রয়েছে এক্সট্রা একাডেমিক কার্যক্রম, ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম ও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষা সমাপনি উৎসব, খেলাধুলা, মেধা বিকাশের জন্য সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা, রোভার স্কাউট, গার্লস ইন রোভার এবং শিক্ষাসফরসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক ব্যবস্থা। এ কলেজের ফলাফল বরাবরই ঈর্ষণীয়। এ কলেজে রয়েছে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, প্রতিটি বিভাগে সেমিনার কক্ষ, ল্যাবরেটরি, ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটার ল্যাব, ইন-ডোর ও আউট-ডোর খেলাধুলার ব্যবস্থা। এছাড়া রয়েছে নিজস্ব ক্যান্টিন ও নামাজের স্থান। ছাত্র-ছাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার স্বার্থে কলেজ ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত।
সিদ্ধেশ্বরী কলেজে রয়েছে প্রভাতী শাখা (উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রীদের জন্য), দিবা শাখা (উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রি, অর্নাস ও মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষার্থীদের জন্য)। শতাধিক নিয়মিত শিক্ষক বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান করছেন। কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে বিবিএ (প্রফেসনাল) সহ ১২টি বিষয়ে অনার্স এবং ৮টি বিষয়ে মাস্টার্স ফাইনাল ও ৭টি বিষয়ে মাস্টার্স প্রিলিমিনারী কোর্সে শিক্ষা দেয়া হয়। উল্লেখ্য, কলেজে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এ বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বেসরকারি কলেজগুলোর মধ্যে র্যাংকিয়ে ৮ম এবং ঢাকা মহানগরীতে ৫ম স্থান অধিকার করেছে।
অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ ফয়েজ হোসেনের সুদক্ষ পরিচালনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এবং কলেজ পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ভোলা-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন এর গতিশীল ব্যবস্থাপনায় এ কলেজ আর্থিক উন্নয়ন, একাডেমিক উন্নয়ন, শিক্ষার পরিবেশ ও বোর্ড-বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তরোত্তর ঈর্ষণীয় সাফল্যের পথে এগিয়ে চলছে।
অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ ফয়েজ হোসেন বলেন-
শিক্ষাক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের সাফল্য ঈর্ষণীয়। এ সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। এ সরকারের সাফল্যের বিশেষ দিক হলো, একটি যুগোপযোগী ও বিজ্ঞানভিত্তিক জাতীয় শিক্ষানীতি জাতিকে উপহার দিতে পেরেছেন। তারা এ যুগোপযোগী শিক্ষানীতি বাস্তবায়নও শুরু করেছেন।
শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন নিজেদের মেয়াদকালের মধ্যে সম্পন্ন করতে হলে সরকারকে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ হাতে নিতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষার স্তর সংস্কার হয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। এছাড়া নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হলে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে সময়ের যেমন প্রয়োজন, তেমনটি প্রয়োজন আর্থিক ব্যবস্থারও।
শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য আমরা কিছু বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এবারের পরীক্ষায় আমাদের কলেজের সাফল্য প্রায় শতভাগ। শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক ও মাসিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। এদের তত্ত্বাবধান এবং পড়ালেখার উন্নয়নের জন্য গাইড টিচার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গাইড টিচারগণ শিক্ষার্থীদের ক্লাস-টেস্ট পরীক্ষাগুলোর ওপর নজর রাখেন, কোনো বিষয়ে নম্বর কম পেলে বা দুর্বল থাকলে তাদের নিয়ে বিশেষ তত্ত্বাবধানে ক্লাস নেয়া হয়। শিক্ষার্থীদেরকে সঠিক পরামর্শ দেয়া হয়। এসব কারণে সিদ্ধেশ্বরী কলেজের সুনাম সর্বমহলে ব্যাপকভাবে প্রসারিত। ২০১৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল ঈর্ষণীয়; পাসের হার প্রায় শতভাগ। আমাদের কলেজের শিক্ষার পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা, দায়িত্বশীলতা, সর্বোপরি পরীক্ষায় উত্তম ফলাফল অভিভাবকদেরকে তাদের সন্তানদের এ কলেজে ভর্তির ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করে থাকে। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক তথ্য প্রেরণের জন্য Help Desk ব্যবহার করে অভিভাবকদের Update তথ্য প্রদান করে সহযোগিতা করা হয়। প্রতি শিক্ষাবর্ষে একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পাঠদান ও পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে আপনার কলেজ কী ভূমিকা পালন করে থাকে এমন জিজ্ঞাসায় প্রফেসর মোঃ ফয়েজ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের উন্নত মানবিক নৈতিক গুণাবলি বিকাশে বিশেষ কর্মসূচি পালন করা হয়। ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে রচনা প্রতিযোগিতা ও হামদ-নাত ও ইসলামী গজল পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার জন্য জাতীয় দিবসসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ও শাহাদাৎ বার্ষিকী শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। বিভিন্ন মনীষীদের জীবন ও কর্ম পাঠ এবং নিজ নিজ ধর্মপালনে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। কলেজ ক্যাম্পাসে পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা নামাজ ঘরে নিয়মিত নামাজের ব্যবস্থা আছে, যা শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
আমাদের কলেজে যেসব ছাত্র-ছাত্রী ভাল ফলাফল করে, তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা। অনার্সে যারা ফার্স্ট ক্লাস পায়, মাস্টার্সে তারা বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পায়। শিক্ষার্থীদের কল্যাণার্থে পৃথক একটি ফান্ড গঠন করা হয়েছে। অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সের মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এ ফান্ড থেকে বৃত্তি দেয়া হবে। এছাড়া এসএসসি-তে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ২ সেট বই বিতরণ ও বিনাবেতনে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়া হয়।
কলেজের একাডেমিক উন্নয়নসহ সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য আমরা কিছু বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। কলেজের নিজস্ব অর্থায়নে অত্যাধুনিক ১২ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে, যা গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব রাশেদ খান মেনন এমপি শুভ উদ্বোধন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মাননীয় সাংসদ জনাব নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন শিক্ষকরা যাতে আর্থিক দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে নিশ্চিন্তে পাঠদান করতে পারেন, সেজন্য প্রথমেই আমরা তাদেরকে নতুন জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করেছি। কতগুলো বিষয়ে পূর্ণকালীন নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নতুন শিক্ষকদেরকে (নন-এমপিও) আর্থিক সুবিধাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য দু’টি জেনারেটর ক্রয় করা হয়েছে। কলেজের জন্য একটি গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে।
পরীক্ষা ব্যবস্থায় অভ্যন্তরীণ অনেক সমস্যা ছিল। সেসব দূর করে কেন্দ্রীয়ভাবে সকল ধরনের পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এ কলেজকে বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা আয়োজনের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে একই তারিখে ১২টি বিষয়ের পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে। আমি আমার সহকর্মীদের কাছ থেকে আন্তরিক সহযোগিতা পাচ্ছি, যার জন্য আমি সফল হতে পেরেছি। আমরা কলেজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি, আমরা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি, প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থেই তা করেছি।
খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালে। খিলগাঁও চৌ-রাস্তার পাশে এর অবস্থান। খিলগাঁও, মতিঝিল, সবুজবাগ তথা পূর্ব ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সর্ববৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এটি।
খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সবুজবাগ থানায় অবস্থিত হলেও এর প্রভাব মতিঝিল থানা পর্যন্ত বিস্তৃত।
কলেজের গভর্নিং বডি’র সভাপতি হলেন ঢাকা-৯ আসনের এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি এ কলেজের সার্বিক উন্নয়নে আন্তরিক সুদৃষ্টি রেখে চলেছেন। এর আগে এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাবেক এমপি মির্জা আব্বাসও এ কলেজের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। তিনিও গভর্নিং বডি এর অন্যতম সদস্য। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ কলেজ গভর্নিং বডি এর সদস্য থাকায় খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ছাত্র সংগঠনগুলোও এ কলেজে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করছে; এজন্য এখানে সংঘর্ষ, হানাহানি নেই। সর্বোপরি অধ্যক্ষ কানাই লাল সরকারের দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং তারুণ্যদীপ্ত পরিচালনায় খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সাফল্যের চমক সৃষ্টি করে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে।
কলেজের বৈশিষ্ট্য
সুবিশাল ক্যাম্পাস; সমৃদ্ধ লাইব্রেরি; রুটিন মোতাবেক দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলীর মাধ্যমে শতভাগ ক্লাস এবং গ্রেড উন্নয়নে নিশ্চয়তা; এ+ প্রাপ্তদের জন্য রয়েছে বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা; সুবিশাল ক্যাম্পাসের অধিকারী হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এ কলেজটিকে প্রথম দর্শনে পছন্দ করে নেয়।
অধ্যক্ষ কানাই লাল সরকার যা বললেন-
বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। সম্পূর্ন নকলমুক্ত পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার বিষয়েও জোড়ালো পদক্ষেপ গ্রহণ বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর আরেকটি সফলতা। এ ছাড়াও অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ সালের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক।
প্রিন্সিপাল কানাই লাল সরকার বলেন, আমার যোগদানের পর খিলগাঁও কলেজের আমূল পরিবর্তন হয়েছে, গভর্নিং বডির সহযোগিতা পাচ্ছি, স্থানীয় ছাত্রনেতা-কর্মীরা সহযোগিতা করছেন। সবার আশা ও আকাঙ্খা এ কলেজটি একটি ভালো কলেজে পরিণত হোক। শিক্ষা কাউন্সিল গঠন করেছি, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য। একে সামনে রেখে আমরা শিক্ষক পরিষদ গঠন করেছি। আশা করছি, শিক্ষাপরিষদকে ভিত্তি করে আমরা আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাডেমিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারবো।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ব্যাপারে আপনার কলেজকে কেন শিক্ষার্থীরা বেছে নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ কানাই লাল সরকার বলেন, নিয়মিত ক্লাস, শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ আমরা গড়ে তুলতে পেরেছি এটি শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করবে। আমরা গর্ব করে বলি আমাদের মতো এত বড় ক্যাম্পাস রাজধানীর বুকে নেই। কলেজে শিক্ষাপদ্ধতির উত্তরোত্তর উন্নতির ফলে রেজাল্ট ভালো হচ্ছে। এজন্য শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য খিলগাঁও মডেল কলেজকেই বেছে নেবে।
শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য কী কী পদক্ষেপ আপনারা নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, ক্লাস-পরীক্ষার ওপর আমরা বিশেষ জোর দিই, এছাড়া নেয়া হয় সাপ্তাহিক পরীক্ষা ও মাসিক পরীক্ষা। এ ফলাফল পরবর্তী পরীক্ষার সময় মূল্যায়ন করা হয়। অভ্যন্তরীণ এ পরীক্ষায় কেউ যদি ভালো রেজাল্ট করে এবং যারা ক্লাসে ৮০% দিন উপস্থিত থাকবে তাদেরকে ২০০ টাকা করে বিশেষ পুরস্কৃত করা হয়। আর যারা ৯০% দিন উপস্থিত থাকবে তাদেরকে এককালীন আলাদাভাবে পুরস্কৃত করা হবে। দু’হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কেউ কেউ পাচ্ছে। শুধু ক্লাসে উপস্থিতির জন্য এ পুরস্কার, পরীক্ষায় ভালো নম্বরের জন্য পুরস্কারতো রয়েছেই। গত বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি প্রাপ্ত আড়াই’শ ছাত্র-ছাত্রীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আমাদের কলেজ প্রাণিবিজ্ঞান বিষয়ে সারাদেশের মধ্যে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছে এবং স্বর্ণপদক লাভ করেছে। তিনি বলেন অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষায়ও আমাদের ফলাফল ঈর্ষণীয় ও উল্লেখ করার মতো। মেধাতালিকায় স্থানসহ গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি সমতূল্য ফলাফলসহ পাশের হার শতভাগ।
যেমন মাস্টার্স শেষপর্বে প্রাণিবিজ্ঞানে ৩০ জন পরীক্ষার্থীর ১ম শ্রেণিতে ১ম, ৫ম, ১০ম ও ১৫তম স্থানসহ ৩০ জনই প্রথম শ্রেণিতে পাস করেছে। হিসাব বিজ্ঞানে ৪৮ জন পরীক্ষার্থীর ৩৫ জন প্রথম শ্রেণি, বাকি সকলেই দ্বিতীয় শ্রেণি। ব্যবস্থাপনায় ২৩ জনের মধ্যে ৫ জন প্রথম শ্রেণি, বাকি সকলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়।
দায়িত্ব গ্রহণের পর এ কলেজে শিক্ষার গুণগত মান এবং শিক্ষার উন্নতি-অগ্রগতি কেমন হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ কানাই লাল সরকার বলেন, আমার যোগদানের পর আমি এ কলেজে ২৫ জন নিয়মিত শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছি, কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৩২ জন। তিনি বলেন বিবিএ সম্মান (প্রফেশনাল) সহ ১০টি বিষয়ে সম্মান এবং ৬টি বিষয়ে মাস্টার্স শেষ পর্ব এবং ২টি বিষয়ে মাস্টার্স প্রথম পর্ব চালু আছে। এছাড়াও একটি বিষয়ে অনার্স প্রক্রিয়াধীন এবং আরো ২টি বিষয়ে মাস্টার্স প্রথম পর্ব প্রক্রিয়াধীন আছে। অবকাঠামোগত যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। ১০৪ ফুট লম্বা ১টি ৩ তলা ভবন, ১টি সুন্দর ও সুবৃহৎ শহীদ মিনার এবং কলেজের মাঠ সংস্কারের ফলে এটি দৃষ্টিনন্দন কলেজে পরিণত হয়েছে।
মাইলস্টোন কলেজ
ঢাকার উত্তরা মডেল টাউনে এমএনআরএস ট্রাস্ট কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এবং সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত আধুনিক শিক্ষার ব্যতিক্রমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাইলস্টোন কলেজ। ২০০১ সালে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ কর্নেল নুরন্ নবী (অবঃ) -এর সাথে কয়েকজন বিদ্যোৎসাহী, শিক্ষাদ্যোক্তার সম্মিলিত প্রয়াসে উত্তরা মডেল টাউন গরীবে নেওয়াজ এভিনিউর ১১নং সেক্টরে সূচনা হয় মাইলস্টোন কলেজের। এ কলেজে বাংলা এবং ইংলিশ মিডিয়ামে শিক্ষা প্রদান করা হয়। ২০০২ সালের মে মাসে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড -এর অনুমোদন লাভ করে।
উত্তরার দিয়াবাড়িতে ১০ বিঘা জমি এ কলেজের নামে ক্রয় করা হয়ছে। সেখানে স্থায়ীভাবে কলেজ ক্যাম্পাস স্থাপিত হবে। বর্তমানে এখানে কলেজ হোস্টেল নির্মাণ করে ছাত্রদের আবাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ফৌজদারহাট ও ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ এবং রাজউক মডেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ কর্নেল (অবঃ) নুরন্ নবী মাইলস্টোন কলেজের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বরিশাল ক্যাডেট কলেজ এবং মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ সহিদুল ইসলাম।
কলেজের সাফল্য
মাইলস্টোন কলেজ পরীক্ষার ফলাফলে সাফল্যের মাইলস্টোন স্থাপন করে চলেছে। ঢাকা বোর্ডে ২০০৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ৫ম এবং এইচএসসি পরীক্ষায় ১০ম স্থান অর্জন করে। ২০১২ সালে এসএসসি পরীক্ষা (সকল শাখায়) ৭০৬ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করে, পাসের হার শতভাগ। ৩৩৮ জন এ+ এবং ৩২৯ জন এ গ্রেড পায়। ২০১১ সালে বাংলা ও ইংরেজী মাধ্যমে ৮০৭ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করে এবং সবাই পাস করে। ৩৫৩ জন ছাত্র-ছাত্রী এ+ অর্জনসহ মেধার ভিত্তিতে সারাদেশে ৪র্থ স্থান অর্জন করে। ২০১৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ১০ম স্থান অধিকার করে। ২০১৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় সারাদেশে ৪র্থ স্থান লাভ করে।
অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ সহিদুল ইসলাম বললেন-
মাইলস্টোন কলেজে শিক্ষার পরিবেশ, অভিজ্ঞ শিক্ষকের পাঠদান, ছাত্র-শিক্ষক মধুর সম্পর্ক, অভিভাবকগণের সাথে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, কলেজের নিয়ম-শৃঙ্খলা, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় চমৎকার ফলাফলের ধারাবাহিকতা দেখে অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের এ বছরের এইচএসসি-তেও ভর্তি হবার জন্য পাঠাবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।
এ কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো ফলাফলের জন্য ক্লাস-উপস্থিতির ওপর আমরা বিশেষ জোর দিই, শিক্ষার্থীদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রেখে ক্লাসে বিভিন্ন বিষয়ের পড়া পড়িয়ে দেয়া হয় এবং পড়া আদায় করে নেয়া হয়। কলেজের নিয়ম-নীতি-শৃঙ্খলা কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয় বলে শিক্ষার্থীরা অন্যকোনো বিষয়ে জড়াতে পারে না; ক্লাস টেস্ট, সাপ্তাহিক টেস্ট, মাসিক টেস্টসহ বিভিন্ন পরীক্ষা পদ্ধতি চালু রেখে তাদের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে উন্নয়নের ব্যবস্থা নেয়া হয়। অভিভাবকগণের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। ফলে কোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে অভিভাবকদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে তার সমাধান করা যায়। আমাদের এ পদক্ষেপগুলো নেয়ার ফলে মাইলস্টোন কলেজে বরাবর পরীক্ষার ফলাফল ভালো হচ্ছে এবং কলেজ সামনের কাতারে চলে এসেছে।
ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজ
ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজ দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রমধর্মী আইডিয়াল বা আদর্শ কলেজ। রাজধানী ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় ২০০১ সালে আইডিয়াল ফাউন্ডেশন কর্তৃক কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সুশৃঙ্খল শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অধ্যক্ষ মোঃ মাকছুদ উদ্দিন এবং উপাধ্যক্ষ মোঃ বোরহান উদ্দিন ভূঁইয়ার সুদক্ষ পরিচালনা, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক-শিক্ষিকাগণের নিষ্ঠা ও ত্যাগের ফলে কলেজটি ইতোমধ্যেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সময়োপযোগী অত্যাধুনিক পাঠদানপদ্ধতি, অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী, সুপরিসর ক্লাসরুম, ছাত্র-ছাত্রীদের পৃথক ক্লাসের ব্যবস্থা এবং কর্তৃপক্ষের সুদক্ষ পরিচালনায় কলেজটির উত্তরোত্তর সাফল্য সুধীমহলে আশার সঞ্চার করেছে। সূচনালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ১২ বার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আশাতীত ফলাফল অর্জন করেছে।
বৈশিষ্ট্য
শ্রেণি পরীক্ষা, মাসিক পরীক্ষা ও প্রতি ৩ মাস অন্তর পর্ব পরীক্ষার ব্যবস্থা; একাডেমিক ক্যালেন্ডার নিখুঁতভাবে অনুসরণ; সুপরিসর শ্র্রেণিকক্ষ; সুসজ্জিত বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব ও সাচিবিক বিদ্যা ল্যাব; ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা ক্লাসের ব্যবস্থা; দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা পাঠদান; বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মেধা বিকাশে সহায়ক কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ; সুনিয়ন্ত্রিত শৃঙ্খলাপদ্ধতি ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
অধ্যক্ষ মোঃ মাকছুদ উদ্দিন বললেন-
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য তাঁর কলেজকে শিক্ষার্থীরা কেন বেছে নেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ মাকছুদ বলেন পড়া দেয়া, আদায় করা এবং যথাযথ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদেরকে সক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছি। তাছাড়া আমাদের কলেজে শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন তথা ভালো ফলাফল করার ব্যাপারে আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়ে থাকি, যেমন দু’বছরের জন্য একটা একাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করি, যা শিক্ষার্থীর ভর্তির দিনই তার হাতে ধরিয়ে দেয়া হয়। এতে একটি ছক তৈরি থাকে সে ছক অনুসারে নিজেদের তৈরি করবে। ফাইনাল পরীক্ষার আগে টিচারদের নিয়ে আমরা বসি, তখন বেরিয়ে আসে কোন্ কোন্ শিক্ষার্থী কলেজ পরীক্ষায় ভালো করেছে আর কারা খারাপ করেছে। যারা পরীক্ষায় খারাপ করেছে তাদের অভিভাবকদের সাথে বসে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হয়। শিক্ষার্থীর দুর্বল দিকগুলো খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি, যাতে তারা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারে। এভাবে আমরা সারাবছর কাজ করি যার জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা পিছিয়ে থাকতে পারে না। আর এসব কারণেই শিক্ষার্থীরা আমাদের কলেজে ভর্তি হতে আগ্রহী হয়।
শিক্ষার্থীদের শিক্ষান্নোয়নে গৃহীত ব্যবস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে এ কলেজে শ্রেণি পরীক্ষা, মাসিক পরীক্ষা ও প্রতি ৩ মাস অন্তর পর্বপরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এসব পরীক্ষায় কোনো শিক্ষার্থীর আশানুরূপ ফল না হলে তার পড়ালেখার উন্নয়নের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বিগত বছরগুলোতে ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজ কৃতিত্বপূর্ণ ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছে। ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫ ও ২০০৬ সালে এইচএসসিতে পাসের হার ছিল ১০০%। ২০০৭ সালে পাসের হার ছিল ৯৮.৬৪% আর ২০০৮ সালে ৯৯.৮৩%। ২০০৯, ২০১০ ও ২০১১ সালে এইচএসসিতে পাসের হার ছিল শতভাগ। ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজ ২০০৯ সালে টপ টেনে ২য়, ২০০৫ ও ২০০৬ সালে ২য়, ২০০৩ ও ২০০৪ সালে ৪র্থ স্থান অধিকার করে। ২০১০ সালে টপ টুয়েন্টিতে হয় ১৩তম, ২০১১ সালে ১২তম, ২০১২ সালে ৯ম এবং ২০১৩ সালে ১১তম স্থান দখল করে। ২০১৪ সালেও এই কলেজ ঢাকা বোর্ডে ৪র্থ স্থান দখল করে সারাদেশে সকলের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ২০১৫ সালে বোর্ড মেধা তালিকা প্রনয়ণ করেনি।
নর্দান কলেজ বাংলাদেশ
দেশের স্বনামধন্য কলেজগুলোর অন্যতম ‘নর্দান কলেজ বাংলাদেশ’। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে জাতীয় সংসদ ভবনের পাশেই আসাদগেটে অত্যন্ত চমৎকার লোকেশনে ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি পরিচালনা করছে নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ট্রাস্ট। কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নিরবিচ্ছিন্ন তত্ত্বাবধান ও নিরলস প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীরা এখন ভালো ফলাফল করছে।
এ কলেজের এইচএসসি উত্তীর্ণ বেশ কিছু শিক্ষার্থী বুয়েট, ঢাবি, রুয়েট, ঢাকা মেডিকেল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী মেডিকেল এবং নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করছে। এছাড়াও বর্তমানে মেরিন একাডেমী ও নেভাল একাডেমীতে বেশ ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীতে ইতোমধ্যে বেশকিছু শিক্ষার্থী অফিসার হিসেবে যোগদান করে কলেজের সুনাম বৃদ্ধি করেছে। SSC যে রেজাল্ট নিয়ে শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তি হয়; সে তুলনায় HSC পরীক্ষায় GPA এর উন্নয়ন ঘটে বহুলাংশে।
চেয়ারম্যান ড. এ ওয়াই এম আব্দুল্লাহ বললেন-
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা কেন আপনার কলেজকে বেছে নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে নর্দান কলেজের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মোঃ আব্দুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি গড়ে ওঠে কলেজ জীবনে। কৈশোরে পদার্পণ করা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মনোজাগতিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নর্দান কলেজে পাঠদান করানো হয়। দেশের আবহমান সংস্কৃতি লালন ও ধারণের নিমিত্তে ক্যাম্পাসে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি চর্চা থাকে বছর জুড়ে। নর্দান কলেজের অবস্থান এবং যোগাযোগের জন্য সহজ হওয়ায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করে চলছে।
তিনি আরও বলেন, এ কলেজে অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকম-লী পাঠদান করেন; শিক্ষা উপযোগী পরিবেশ; কলেজের সুসজ্জিত কম্পিউটার ল্যাব, সাইন্স ল্যাব এবং সুপরিসর লাইব্রেরি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এছাড়া SSC -তে গোল্ডেন অ+ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কলেজ থেকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হয়।
আর পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য কলেজে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়; প্রয়োজনীয় সংখ্যক গড়ফবষ ঞবংঃ এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য প্রস্তুত করা হয়। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবং পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত মতবিনিময় করা হয়; দুর্বল শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং এবং রিমেডিয়াল ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়।
HSC পরীক্ষার ফলাফলে ধারাবাহিক সাফল্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসার জবাবে প্রফেসর আব্দুল্লাহ বলেন, বিগত বছরগুলোতে এখানে ভর্তি হওয়া শতকরা ৯৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ উন্নয়ন করতে পেরেছে; পাসের হার ১০০%। HSC ব্যতীত ফলাফলের দিক থেকে বিবিএ প্রফেশনালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নর্দান কলেজ দ্বিতীয় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত।
নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ঐতিহ্য অবিসংবাদিত। এর সূচনাই স্নাতক শ্রেণি দিয়ে। পরবর্তী সময়ে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শ্রেণি প্রবর্তন করা হয়।
ঢাকাস্থ নোয়াখালী সমিতি এ কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। ঢাকার ২৬ নং গ্রীণ রোডের একটি ভাড়া বাড়িতে নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৮ সালে। স্বাধীনতা-উত্তরকালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত ধানমন্ডি ৮নং সড়কের ৫০০/জে, নং পরিত্যক্ত বাড়িতে কলেজটি স্থানান্তরিত হয়। কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে থাকে, শিক্ষকমন্ডলী নিবেদিত হয়ে পাঠদান পরিচালনা করতে থাকেন। পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য কলেজটি শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরফলে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ সুপরিসর স্থানে কলেজটি স্থাপনের জন্য সরকারের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কামনা করেন। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৮ সালে ধানমন্ডি ৩২নং সড়কের বিপরীতে শুক্রাবাদে এক বিঘা জমি বরাদ্দ করেন। সেই থেকে কলেজটি ঢাকা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র ধানমন্ডি লেক সংলগ্ন মিরপুর রোডের পূর্ব পার্শ্বে এক মনোরম পরিবেশে স্থান লাভ করে। বর্তমানে বহুতল বিশিষ্ট বিশাল ভবনে কলেজ পরিচালিত হচ্ছে।
ঐতিহ্যবাহী নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা পরিচালিত। অভিজ্ঞ শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য অধ্যাপকদের সহযোগিতা নেয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় সর্বোচ্চ আসনপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। উৎকৃষ্ট মেধা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে গঠিত অধ্যাপকমন্ডলী শিক্ষা বিস্তার ও ছাত্র-ছাত্রীদের চরিত্র গঠনে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট।
ছাত্র-শিক্ষক পারস্পরিক সুসম্পর্ক, ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মানুবর্তিতা, সহনশীলতা, সহযোগিতা, সম্প্রীতি সব মিলিয়ে কলেজটির সার্বিক পরিবেশ শিক্ষাবান্ধব করে তুলেছে যা শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি উন্নত জীবন গঠনেরও উপযোগী। গড়ে তোলা হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের সহায়ক শক্তি।
অধ্যক্ষ মোঃ রুহুল আমিন যা বললেন-
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীরা কেন আপনার কলেজকে বেছে নেবে বলে মনে করেন এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত, যেকোনো দিক থেকেই কলেজের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা সহজ, ভেতরে অবকাঠামো অত্যন্ত চমৎকার, পরিবেশ চিত্তাকর্ষক এবং শিক্ষা সহায়ক।
তিনি বলেন, উপরোক্ত সুবিধা ছাড়াও আমার কলেজে রয়েছে ৩০টি কম্পিউটার নিয়ে একটি বিশাল ল্যাব। একাদশ শ্রেণিতেই আমরা শিক্ষার্থীদের গ্রুপ করে নিই মেধা অনুসারে। গ্রুপে ভাগ করার পর গ্রুপ লিডার হিসেবে টিচার নিয়োগদান করি। ক্লাস নিয়মিত পরিচালিত হয় এবং প্রতিমাসে টেস্ট পরীক্ষা নেয়া হয়। এসব করার পরও আমরা প্রতিটি ব্যাচ থেকে দুর্বল শিক্ষার্থী বের করে তাদের জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করি দ্রুত দুর্বলতা কাটিয়ে তোলার জন্য।
শিক্ষার্থীদের বিনোদন চাহিদা মেটানোর জন্য এখানে একটা মিউজিক ক্লাব ও একটি স্পোর্টস ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত হবার জন্য মিউজিক ক্লাবে তাদেরকে যুক্ত হবার জন্য উৎসাহিত করা হয়ে থাকে। কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে তাদের মেধার বিকাশ ঘটাতে পারে।
প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে মূল্যবান পরামর্শদান প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, একাদশে কোনো কলেজে ভর্তি হবার আগে তাদের অবশ্যই দেখতে হবে কলেজটির পরিবেশ, পড়ানোর পদ্ধতি, দক্ষ ও গুণগত মানসম্পন্ন যোগ্য শিক্ষক আছেন কিনা ইত্যাদি। সার্বিক বিবেচনায় যে কলেজটিকে উত্তম মনে হবে, শিক্ষার্থীরা যেন সে কলেজেই ভর্তি হয়।
ঢাকা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ঢাকার ৩৪/১, উত্তর যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত ঢাকা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। কলেজের অধ্যক্ষ আবু হাসান মোঃ বেনি আমিন এবং তার সহকর্মী শিক্ষকগণের আন্তরিক চেষ্টায় কলেজটি দ্রুত উন্নতি লাভ করছে। ১৯৯৬ সালে কলেজটি এমপিওভূক্ত হয়। বিগত ৫ বছরে এ কলেজের গড় ফলাফল ৯৮% থেকে ১০০%। এ ঈষর্ণীয় সাফল্যের জন্য ছাত্র/ছাত্রী ও অভিভাবকগন এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি খুবই আন্তরিক ও আগ্রহশীল। এ কলেজে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (বিএম) ও ব্যবসায় শিক্ষা এ দুটি বিভাগ রয়েছে। ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধীনে কম্পিউটার অপারেশন, হিসাবরক্ষণ, সাচিবিক বিদ্যা এবং ব্যাংকিং নামে রয়েছে ৪ টি ট্রেড। কলেজের বৈশিষ্ট্যসমূহ হলো -ক্লাসের পড়া ক্লাসেই শেষ করা, কম্পিউটার বিজ্ঞান বাধ্যতামূলক; ধূমপান ও রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ; বিষয়ভিত্তিক বইয়ের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার; ক্লাসে ৮০% উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব এ এম এম রেজা-ই-রাব্বী।
অধ্যক্ষ আবুল হাসান মোঃ বেনি আমিন বললেন-
এ কলেজটি প্রকৃত অর্থেই একটি শিক্ষাবান্ধব কলেজ। ২০১৫ সালে এ কলেজ থেকে জিপিএ-৫, এ+ সহ ১০০% পাস করেছে। এর পূর্বেও কয়েকবার এ কলেজের শতভাগ পাসের রেকর্ড আছে। আমাদের কলেজে ছাত্রদের পড়ালেখা ক্লাসেই শেষ করা হয়। এজন্য তাদের প্রাইভেট পড়ার প্রয়োজন হয় না। কোচিং সেন্টারের দরজায় কড়া নাড়তে হয় না। এ কলেজের ছাত্র/ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়া নিষেধ, শিক্ষকরাও প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। এ কলেজের এ+ প্রাপ্ত ছাত্র/ছাত্রীদের পড়ালেখার খরচ ৭৫% ফ্রি। তাছাড়া গরিব-মেধাবী, কম মেধাসম্পন্ন ছাত্র/ছাত্রীদের সম্পূর্ণ অথবা অর্ধবেতনে পড়ালেখার সুয়োগ রয়েছে। কলেজের শিক্ষকমন্ডলী সবাই অভিজ্ঞ, সবাই বোর্ডের পরীক্ষক ও নিরীক্ষক। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক খুব মধুর পরিবারের সদস্যদের মতই আন্তরিক। শিক্ষকগণ ছাত্রদের আর্থিক, পারিবারিক, শারীরিক-মানসিক সব বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। আমি নিজেই বিভিন্ন ক্লাস মনিটরিং করি। এসব বিবেচনা করে ছাত্র/ছাত্রীরা এ কলেজে ভর্তি হচ্ছে। আশা করি এবারও ছাত্র/ছাত্রীরা আগ্রহ সহকারে ভর্তি হবে।
শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য আমরা অনেকগুলো পদ্ধতি অবলম্বন করি। প্রথমে আমরা সারাবছরের ক্লাস প্ল্যান করি, নিয়মিত ক্লাসে আসে ছাত্র/ছাত্রীরা, শিক্ষকরাও নিয়মিত ক্লাস নেন। ক্লাসের পড়া ক্লাসে শেষ হয়, ক্লাসেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পড়া আদায় করা হয়। এ কলেজে নিয়মিত ইনকোর্স টিউটোরিয়াল কুইজ পরীক্ষা হয়; এছাড়া হয় বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা। ভালো ফলাফলকারীদের জন্য পুরষ্কারের ব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা বৈঠক হয় শিক্ষামান ও শিক্ষার্থীদের উন্নতির জন্য। অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে, তাদেরকে পরামর্শ দেয়া হয় এবং তাদের কাছ থেকেও পরামর্শ নেয়া হয়। ছাত্র/ছাত্রীরা পড়ালেখার নিয়মিত কিনা, তারা কতঘন্টা পড়ালেখা করে তা অভিভাবকদের কাছ থেকে জেনে ব্যবস্থা নেয়া হয়। অধ্যক্ষ মহোদয় শিক্ষকদের পাঠদানের উপর মনিটরিং করেন এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।
লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি কলেজ
১৯৬২ সালে লালমাটিয়া হাউজিং কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং এলাকার শিক্ষানুরাগীদের আন্তরিক সহযোগিতায় লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ১৯৯৬ সালে স্কুলটি কলেজ পর্যায়ে উন্নীত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কলেজটি শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র জাতীয় সংসদ ভবনের সন্নিকটে আড়ং এর পশ্চিম পার্শ্বে নিজস্ব ১২ বিঘা জমির ওপর প্রাচীর ঘেরা সবুজ ছায়াঘন মনোরম ও কোলাহলমুুক্ত পরিবেশে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি কলেজ অবস্থিত (ব্লক-বি, লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭)। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ৫০ আসন বিশিষ্ট ছাত্রাবাস, সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান, ৪৫ জন এমপিওভুক্ত অভিজ্ঞ নিবেদিত শিক্ষকম-লী, সমৃদ্ধ পাঠাগার ও আধুনিক ল্যাব, গরিব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান এ কলেজের বৈশিষ্ট্য।
গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান, সমাজকর্মী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও বর্তমানে নির্বাচিত কাউন্সিলর আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মিজান এবং অধ্যক্ষ মোঃ আকমল হোসেন এর গতিশীল পরিচালনায় কলেজটি উত্তরোত্তর সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে।
অধ্যক্ষ মোঃ আকমল হোসেন বললেন-
বর্তমান শিক্ষাবান্ধক সরকারের আমলে শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার অনেক সূচকে পরিবর্তন হয়েছে। শিক্ষার হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, বয়স্ক শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা সবার জন্য বাধ্যতামূলক, মেয়েদের ক্ষেত্রে ৪০% এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ১০% হারে উপবৃত্তি চালু করা, শিক্ষাকে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে বর্তমান বিশ্বের সাথে সময়োপযোগী করে প্রতিযোগীতায় স্থান করে নেয়া, সর্বশেষ শিক্ষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীরা এ কলেজকে বেছে নেবে কারণ, আমরা শিক্ষার পরিমাণগত মানের চেয়ে গুণগত মানের দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সমাজের ধনী-গরিব নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের জন্য শিক্ষার দ্বার খুলতে শিক্ষার ব্যয় হ্রাস জরুরি। আমাদের এখানে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত ঘরের ছেলেরা স্বল্প খরচে লেখাপড়ার সুযোগ পায়। ঢাকা শহরের জন্য একটি দুর্লভ প্রাপ্তি আমাদের কলেজে রয়েছে, সেটি হলো বৃহৎ পরিসরের ক্যাম্পাস, খেলার মাঠ এবং মাঠের চারদিক দিয়ে গাছের সবুজ বেষ্টনী। একই সাথে শিক্ষার্থীর পড়াশোনা এবং মানসিক তৃপ্তির একটি জায়গা দু’টি জিনিসই এখান থেকে পেয়ে থাকে।
ভালো ফলাফলের জন্য আপনারা কী পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন এমন জিজ্ঞাসায় অধ্যক্ষ আকমল হোসেন বলেন, ভালো ফলাফল বলতে একাডেমিক বা পড়াশোনার মান উন্নত করাকে বোঝায়। সেই জন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে সমন্বয় জরুরি। আমাদের এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নিয়মিত ও সময়মতো শ্রেণিতে উপস্থিত নিশ্চিত করা হয়। পাঠটিকা অনুযায়ী পাঠ দেয়া, বুঝিয়ে দেয়া এবং পরের দিন সেই পাঠটি গ্রহণ করা হয়। অভিভাবকদের সাথে শিক্ষার্থীর পাঠের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণকৃত ডায়রি অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সমভাবে অনুসরণ করতে হবে। ক্লাস টেস্টসহ পরীক্ষাগুলো যথাযথভাবে গ্রহণ ও সঠিকভাবে ফলাফল মূল্যায়ন করা হয়। দুর্বল ও পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের একটু বেশি সময়ে পাঠ বুঝিয়ে দেয়া এবং ধারাবাহিক মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখা হয়।
মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
ঢাকার শাহজাহানপুরে ১৯৮০ সালে মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজটি নারী শিক্ষার উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখে আসছে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এবং চমৎকার লোকেশনের কারণে সবুজবাগ, খিলগাঁও, মতিঝিল ও শাহাজাহানপুর থানা ছাড়াও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ছাত্রী ও অভিভাবকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করছে কলেজটি।
শুধুমাত্র অভিজ্ঞ মহিলা শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এ কলেজ। এইচএসসি-তে জিপিএ-৫ সহ পাসের হার ৯০%, শতভাগ পাস করেছে ডিগ্রি ও অনার্স পরীক্ষায়। ছাত্রীদের জন্য রয়েছে আবাসিক সুবিধা, যেখানে ২০০ জন ছাত্রী অবস্থান করতে পারে।
সবুজ ঘাসাচ্ছাদিত বিশাল মাঠ, যাতে ছাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলা অনুশীলন করতে পারে। এ কলেজে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। কলেজ গভর্ণিং বডির সভাপতি জনাব মোঃ হুমায়ুন কবিরের ঐকান্তিক চেষ্টা, কলেজের শিক্ষা উপদেষ্টা ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য নটরডেম কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ফাদার বেঞ্জামিন কস্তার দিক নির্দেশনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং অধ্যক্ষ লুৎফুন নেছার দক্ষ ও সুযোগ্য পরিচালনায় উত্তরোত্তর সাফল্য অর্জন করে চলেছে মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজটি।
অধ্যক্ষ লুৎফুন নেছা বললেন-
বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। সম্পূর্ন নকলমুক্ত পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার বিষয়েও জোড়ালো পদক্ষেপ গ্রহণ বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর আরেকটি সফলতা। এ ছাড়াও অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ সালের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে একটি মাইল ফলক।
অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়াকে আমি বর্তমান সরকারের একটি সফল উদ্যোগ বলে মনে করি। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নততর প্রযুক্তির সুযোগ পাচ্ছে। অসুবিধা ও রয়েছে যেমন একজন অশিক্ষিত অভিভাবক এর ব্যবহার করতে পারছে না। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির এ ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রয়েছে। তদুপরি অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানাই।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীরা এ কলেজকে বেছে নেবে কারণ বাসাবো-সবুজবাগ এলাকায় নারীদের একমাত্র উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। নারী সমাজের মাঝে কলেজটি জ্ঞানের আলো বিতরণ করে চলেছে অকাতরে। এলাকাবাসীর মধ্যে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনেক পরিচিত এবং জনপ্রিয়। শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে এ প্রতিষ্ঠানে। এ কলেজের সব শিক্ষক মহিলা; কলেজের মেয়েদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আপনার কলেজে ভালো ফলাফল অর্জন এবং শিক্ষার গুণগত মান প্রতিষ্ঠার জন্য কী ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাইলে অধ্যক্ষ লৎফুন নেছা বলেন, ভালো ফলাফল করার জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রতিটি ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হয়; শিক্ষকদের ক্লাস মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয়। কলেজে ক্লাসে সর্বোচ্চ উপস্থিতির জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় পুরস্কার।
মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নারীশিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বিগত কয়েক বছরে এ কলেজের ফলাফলও ভালো। কলেজটি অদূর ভবিষ্যতে শতভাগ সাফল্যের সোনার কাঠির স্পর্শলাভ করবে এ প্রত্যাশা কলেজ কর্তৃপক্ষের।
গুলশান কমার্স কলেজ
রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র গুলশান-বাড্ডা এলাকার গ-৯৭ এবং গ-১০৯ সরণিতে গুলশান কমার্স কলেজের অবস্থান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ ডিপার্টমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর মোঃ মঈনউদ্দিন খানসহ দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও মেধাবী ব্যক্তিত্বের দিকনির্দেশনা এবং বাংলাদেশ কমার্স বিষয়ক বহু গ্রন্থ প্রণেতা এম এ কালামের নেতৃত্বে এম এ কালাম শিক্ষা ফাউন্ডেশনের অধীনে গুলশান কমার্স কলেজের যাত্রা শুরু। বর্তমানে ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য পৃথক ভবনে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি ছাত্রদের জন্য আবাসিক সুবিধাও রয়েছে।
কলেজের বৈশিষ্ট্য
চব্যবসায় শিক্ষায় অবদানকারী সেরা ব্যক্তিত্ব দ্বারা পরিচালিত চসেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান চক্লাসে পড়া আদায়ের ব্যবস্থা চপ্রতি সপ্তাহে ২টি টিউটোরিয়াল পরীক্ষা চপ্রতি শাখায় সর্বোচ্চ ৫০জন শিক্ষার্থী চমেধারভিত্তিতে সেকশন গঠন চঅভিভাবকদের সমন্বয়ে মতবিনিময় সভা চগোল্ডেন অ+ প্রাপ্তদের ভর্তি ফি ৫০% ছাড় চকোনো শিক্ষার্থী পরপর ২ দিন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকলে অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ করা হয়।
কলেজের সাফল্য
গুলশান কমার্স কলেজ ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো বোর্ডের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে শতভাগ পাস করে। ২০০৮ সালে শতভাগ পাসসহ ঢাকা বোর্ডে ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করে। ২০১১ সালে এইচএসসি-তে এ কলেজ থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৫১ জনের মধ্যে ৫ জন ছিল এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত। ২০১২ সালে ৯৮.৯৫% পাস করে; উল্লেখ্য, ২০১২ সালের এইচএসসি-তে যে ৭০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে তাদের মধ্যে এসএসসিতে জিপিএ-৫ ছিল মাত্র ১২ জনের। ২০১৪ সালের এইচএসসি-তে ৯৯% পাস সহ জিপিএ-৫ পায় ৮৪ জন; যাদের মধ্যে এসএসসি-তে জিপিএ-৫ ছিল মাত্র ৯ জনের। অর্থাৎ প্রতিবছর এসএসসি’র তুলনায় এইচএসসি-তে ১০/১২ গুণ জিপিএ-৫ পায়। গুলশান কমার্স কলেজে উন্নত পাঠদান পদ্ধতি অবলম্বনের ফলেই এ অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
অধ্যক্ষ এম এ কালাম বললেন-
সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথে পরিচালিত হওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষা। শিক্ষা অর্জন একটি চলমান প্রক্রিয়া ও সময়সাপেক্ষ। সামাজিক মিথষ্ক্রিয়ায় মানুষ তার পারিপার্শিক অবস্থা থেকে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের নেপথ্যে এর উপযোগের বিষয়টি বিবেচিত। প্রতিযোগিতায় নিজেকে যোগ্য, দক্ষ, প্রজ্ঞাবান হিসেবে প্রমাণ করার ইতিবাচক প্রবণতা বর্তমানে লক্ষণীয়। বিশেষায়নের এ যুগে বিশেষজ্ঞের কদর সর্বত্র। বিশ্বায়নের কারণে মুক্তবাজার অর্থনীতির কর্পোরেট কালচারে ব্যবসায় শিক্ষায় ডিগ্রি অর্জন এ প্রজন্মের প্রথম পছন্দ। শুধু চাকরি নয়, উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে হলেও ব্যবসায় শিক্ষা জ্ঞান অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। সময়ের দাবি মেটানোর তাগিদে বিশেষায়িত কলেজ হিসেবে গুলশান কর্মাস কলেজ (প্রতিষ্ঠিত ২০০৪) দেশের মানব সম্পদ উন্নয়নে খানিকটা হলেও ভূমিকা রেখে চলেছে।
প্রথম বছর থেকেই প্রায় প্রত্যেকের জিপিএ’র তুলনামূলক বৃদ্ধি পাওয়া কলেজটির অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মেধাস্তর অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে মানোন্নয়নের প্রচেষ্টার স্বার্থকতা এরই মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। আমরা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেই যতটা সম্ভব উচ্চতর শিক্ষা ও কর্মজীবন সম্পর্কে ধারণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সচেতন করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। যার সুফল শিক্ষার্থী ও অভিভাবক দীর্ঘ মেয়াদে ভোগ করবে। নৈতিক অবক্ষয় রোধ ও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে আদর্শ জীবনের নির্দেশনা প্রদান আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, সাংবাদিক পেশাজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের অসংখ্য গুণগ্রাহীর পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা আমাদের চলার পথকে করেছে সুগম ও গতিশীল। পেশাদারিত্বে আপোষহীন, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক-শিক্ষিকা কলেজটির উৎকর্ষ সাধনে তাদের মেধা ও শ্রম বিনিয়োগ করে চলেছে। কলেজটির পরিচালনা পর্ষদ অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সাথে প্রশাসনিক ও একাডেমিক বিষয়ে মনিটরিং করছে। প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল বিষয় সম্পর্কে আমাদের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে; যাতে শিক্ষার্থীরা নিত্য নতুন জ্ঞানের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়।
উদ্দীপনামূলক প্রেষণার মাধ্যমে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, মাসিক মূল্যায়ন পরীক্ষা, পাঠোন্নতি সম্পর্কে অভিভাবককে অবহিতকরণ, ঝরেপড়া রোধসহ অসংখ্য সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা বান্ধব পরিবেশের নিশ্চয়তা বিধানে আমরা বদ্ধপরিকর।
ব্যবসায় শিক্ষার একটি অনুকরণীয় ও আদর্শস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে গুলশান কমার্স কলেজকে সমুন্নত রাখার প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকার করছি, ইন্শাআল্লাহ।
তেজগাঁও মহিলা কলেজ
তেজগাঁও মহিলা কলেজ ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ অনুপ্রেরণায় প্রতিষ্ঠিত হয়। তেজগাঁও এবং আশেপাশের এলাকার সাধারণ মানুষের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করার লক্ষ্যে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আত্মপ্রকাশ। সূচনালগ্ন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অত্যন্ত সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক (পাস) কোর্সের অধিভুক্তি হয়। বর্তমানে কলেজটিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্সসহ আরও ৪টি বিষয়ে বিবিএ (সম্মান) কোর্স চালু রয়েছে। গত কয়েক বছর যাবৎ কলেজের ফলাফল শতভাগ হওয়ায় কলেজটিতে ছাত্রীসংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরও কয়েকটি বিষয়ে অনার্স খোলার প্রস্তুতি চলছে।
কলেজ উন্নয়নের পুরোধা, শিক্ষা ও শিক্ষা আন্দোলনের সংগ্রামী নেতা, কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আসাদুল হক এবং তাঁর ৬০ জন শিক্ষাক্ষেত্রে নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকসহকর্মীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
তেজগাঁও মহিলা কলেজ বর্তমানে নারীদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মেয়েরা উচ্চশিক্ষার জন্য এ কলেজে আসছে। হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং এবং ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিংয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। এছাড়াও বিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্স নারী শিক্ষার কলেজগুলোর মধ্যে একমাত্র এ কলেজেই চালু রয়েছে।
অধ্যক্ষ প্রফেসর আসাদুল হক বলেন-
বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সরকার একটা শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। সৃজনশীল পদ্ধতিতে পাঠদানের ফলে সম্পূর্ন নকলমুক্ত পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার বিষয়েও জোড়ালো পদক্ষেপ গ্রহণ বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর আরেকটি সফলতা। এ ছাড়াও অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ সালের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে একটি মাইল ফলক।
ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রীরা তেজগাঁও মহিলা কলেজকে বেছে নেয়, কারণ কলেজটি ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত; যে কোনো দিক থেকে এখানে আসা যায়। কলেজের শিক্ষকমন্ডলী অনেক দক্ষ ও অভিজ্ঞ। ক্লাসের পড়া ক্লাসেই পড়িয়ে দেয়া হয় এবং আদায় করা হয়, কোনো পড়া পেন্ডিং থাকে না। এজন্য কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়তে হয় না, টিচাররা ক্লাস শেষে বিশেষ কোচিং দিয়ে গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে অসমাপ্ত পাঠ পড়িয়ে দেন। এজন্য তেজগাঁও মহিলা কলেজের পরীক্ষার ফলাফল বরাবরই ভালো। তাছাড়া শুধুমাত্র মেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য এ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এবং তেজগাঁও কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর আশেপাশে থাকায় তেজগাঁও মহিলা কলেজের প্রতি অভিভাবকদের দৃষ্টি প্রথমেই আকৃষ্ট হয়।
ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যে লেকচার পায় তা তারা বাসায় পড়ে কিনা তা পরবর্তী ক্লাসে শিক্ষকগণ যাচাই করেন। এতেও ছাত্রীরা তাদের ভুল-ত্রুটিগুলো শোধরানোর সুযোগ পায়, তাদের পড়া-লেখার মানের উন্নয়ন হয়।
সর্বোপরি ফলাফলের ক্রমধারার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্য লাভের কারণে তেজগাঁও মহিলা কলেজ একটি আলোকিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সকলের আন্তরিকতা লাভে সক্ষম হয়েছে।
গুলশান কলেজ
গুলশান ডিগ্রি কলেজ রাজধানী ঢাকার ভাটারা থানার জোয়ার সাহারায় (লিচু বাগান) অবস্থিত। ১৯৯২ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মিসেস সোফিয়া মেহেদী একজন বিশিষ্ট সমাজসেবক। কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আলতাফ হোসেন ফারুকের সুদক্ষ নেতৃত্বে কলেজটি উত্তরোত্তর সাফল্যের দিকে এগিয়ে চলেছে।
কলেজের কর্মসূচি
গরিব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দরিদ্র তহবিলের সুব্যবস্থা। অ+ প্রাপ্তদের হোস্টেল চার্জ ফ্রি এবং বার্ষিক বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা। ২০০০ এর অধিক মূল্যবান পুস্তকসমৃদ্ধ কলেজ লাইব্রেরি, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত কম্পিউটার ল্যাব। কলেজে পড়ালেখার অবসরে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বনভোজন, নবীনবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
কলেজের বৈশিষ্ট্য
নিষ্ঠার সাথে শিক্ষার্থীদের পাঠদান; বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের নিয়ে অভিজ্ঞ ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন গভর্নিং বডি; সাপ্তাহিক, মাসিক ও সেমিস্টার পদ্ধতিতে মেধার মূল্যায়ন ও ফলাফল বিবরণী প্রদান; সকল বিভাগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বাধ্যতামূলক; মেয়েদের জন্য গার্হস্থ্য অর্থনীতি অন্তর্ভুক্ত; পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদিসহ ল্যাবরেটরী; প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর তদারকির জন্য ১ জন গাইড টিচারের ব্যবস্থা; ঝঢ়ড়শবহ ঊহমষরংয ক্লাসের ব্যবস্থা; দাতাদের নামে বিভিন্ন বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তাদানের ব্যবস্থা ইত্যাদি।
এ কলেজের একটি বিশেষ দিক হচ্ছে কারিগরি বোর্ডের অধীনে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখায় কম্পিউটার ও সেক্রেট্যারিয়াল কোর্সে ৭০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ আছে। উক্ত শাখায় প্রতিবছর গড়ে প্রায় ২৫ জন প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। বাংলাদেশে বধির ছাত্র-ছাত্রীদের সাধারণ কলেজে পড়াশোনার সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে গুলশান ডিগ্রি কলেজের বিএম শাখায় বধির ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দেয়ার জন্য এ কলেজের অধ্যক্ষ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া ২০১৪-’১৫ শিক্ষাবর্ষে এ কলেজে ডিগ্রি শ্রেণিতে বিবিএস (পাস) কোর্সে রিলিজ সিøপের মাধ্যমে ভর্তি চলছে।
অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন বললেন
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা এ কলেজকে বেছে নেবার কারণ আমাদের কলেজে সেমিস্টার পদ্ধতিতে ক্লাস হয়; ক্লাস টেস্ট, মাসিক ও সেমিস্টার টেস্ট, নৈতিক শিক্ষার জন্য বিশেষ কাউন্সেলিং এবং মডেল টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়া হয় বলে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর মেধা, পড়ালেখায় অগ্রগতি, বিশেষ বিষয়ে তাদের দুর্বলতা চিহ্নিত করতে পারি। দুর্বল ছাত্রদের জন্য আলাদা ক্লাসের ব্যবস্থা আছে ফলে দুর্বল শিক্ষার্থীরাও দ্রুত ঘাটতি পূরণ করে ভালো ফললাভের যোগ্য হয়ে ওঠে। ক্লাস টিচাররা শুধু লেকচার দিয়েই চলে আসেন না, ছাত্র-ছাত্রীরা তা কতটুকু গ্রহণ করতে পারছে তা যাচাইয়ের ব্যবস্থা নেন। গুলশান ডিগ্রি কলেজ নিজস্ব ভবনে নিরিবিলি পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো, এ কলেজের পরিবেশ শিক্ষাবান্ধব, ধূমপান ও রাজনীতিমুক্ত। এসব সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষণপদ্ধতি, শিক্ষামান উন্নয়নের নিরন্তর চেষ্টা, শিক্ষার্থীদেরকে পাঠগ্রহণে সর্বাত্মক সহযোগিতা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকমহল জানেন বলে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আমাদের কলেজে ভর্তি হতে আগ্রহী হবে।
গতবছর ১০০% ছাত্র-ছাত্রী সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়। এসএসসি পাস করে যারা গুলশান ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে ৮০% জিপিএ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে এবং প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী ন্যূনতম জিপিএ-৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে শনির আখড়ার সন্নিকটে ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। প্রথম যাত্রা শুরু ইন্টারমিডিয়েট শাখা নিয়ে। দনিয়া কলেজে সম্পূর্ণ রাজনীতি, সন্ত্রাস ও ধূমপানমুক্ত পরিবেশে প্রাতঃ ও দিবা শাখায় পাঠদান করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের সাধারণ পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ব্যবস্থা আছে।
অধ্যাপক সাহাদাত হুসাইন রানা এর সুদক্ষ পরিচালনায় দনিয়া কলেজ উত্তরোত্তর সাফল্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে। স্থানীয় এমপি আলহাজ হাবিবুর রহমান মোল্লা কলেজ গভর্নিং বডি এর সভাপতি। কলেজে মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগে পড়ানো হয়। মোট শিক্ষক সংখ্যা ৯৮ জন, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষা সহায়ক কর্মী মিলে মোট ৪৮ জন কর্মরত। কলেজের কোনো ছাত্র-ছাত্রী কলেজের নিয়ম-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজে জড়িত থাকলে তার ভর্তি বাতিলসহ কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
অধ্যক্ষ সাহাদাত হুসাইন রানা বললেন-
বর্তমান সরকার বিগত ৭ বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। সরকারের বিনামূল্যে পুস্তক বিতরণ কার্যক্রম এর অন্যতম। নতুন বছরে ক্লাস শুরুর আগেই শিশু শিক্ষার্থীরা নতুন ঝকঝকে পুরো সেট বই পেয়ে যাচ্ছে। এজন্য পহেলা জানুয়ারিকে পাঠ্যপুস্তক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সরকারের শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাফল্যের আরেক উদাহরণ।
তিনি আরও বলেন, পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি ইত্যাদি পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে হচ্ছে, ছাত্রদেরকে বই পড়েই পরীক্ষার হলে যেতে হচ্ছে। নকলের সুযোগ আর নেই। পরীক্ষায় নকলের পরিবেশ এখন অতীতের বিষয়। ছাত্র-ছাত্রীরা এখন আর পরীক্ষাকে ভীতির চোখে দেখে না, আনন্দপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারের সবচেয়ে বড় এচিভমেন্ট হলো সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা।
আমাদের এখানে ইন্টারমিডিয়েটকে স্ট্যান্ডার্ড ধরলে দেখবো এখানে গত বছর ১৮০০ ছেলেমেয়ে ভর্তি হয়েছে, ১৭৮৮ জন শিক্ষার্থী সেন্টআপ করা হয় ফাইনাল পরীক্ষায়, পাসের হার প্রায় শতভাগ।
তিনি বলেন, আমাদের কলেজে ভর্তির ব্যাপারে বলতে হয় আমরা যাদের ভর্তি করি তাদেরকে ঘষে-মেজে জিপিএ-৫ কিংবা গোল্ডেন জিপিএ-তে নিতে হয়। আমরা গতবার একশ’ ছাত্র-ছাত্রীকে জিপিএ-৫ নিয়ে পাস করিয়েছি। আমরা ২.৫ কিংবা ৩.৫ ছাত্র ভর্তি করে তাদেরকে জিপিএ-৫ নিয়ে উত্তীর্ণ করিয়েছি।
আমরা আমাদের ছাত্রদের সাফল্যে গর্বিত, আনন্দিত। বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আমাদের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করে সফল হচ্ছে এর কারণ আমরা তাদের ভিত্তিটা মজবুত করে দিয়েছি, তারা আমাদের কলেজের গৌরব বৃদ্ধি করেছে। আমরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে শুধু পুস্তকের পড়াই শিখাই না, তাদেরকে নৈতিক ও মানবিক গুণাবলী অর্জনেও সহায়তা করি।
শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য আমরা শিক্ষকরা গভর্নিং বডির সদস্যদের সাথে বৈঠক করে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। প্রাথমিকভাবে কুইজ, সাপ্তাহিক পরীক্ষা, মাসিক পরীক্ষা ইত্যাদি বিভিন্ন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ফাইনাল পরীক্ষার দিকে নিয়ে যাই এবং ফাইনালে ভালো ফলাফলের জন্য তাদেরকে প্রস্তুত করতে থাকি। সেমিস্টার সিস্টেম হওয়ায় সারাবছরই একজন শিক্ষার্থীকে কোনো না কোনো পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। এজন্য পড়ালেখার বাইরে অন্যদিকে মন দেয়ার সময় বা সুযোগ থাকে না। আমরা মেধা উন্নয়নের যে কর্মসূচি নিয়েছি, আশা করি সামনের বছর থেকে আমরা এর সুফল পাবো। এছাড়া অনার্সেও আমাদের ১৩টি বিষয়ে পাসের হার শতভাগ এবং এখানে প্রথম শ্রেণিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীও অনেক। বর্তমানে আমাদের বিবিএ প্রোফেশনাল কোর্সও চালু আছে।
আমরা অত্যন্ত গর্বের সাথে বলতে পারি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ র্যাংকিং-২০১৫ এর ৩১টি সূচকে অত্র কলেজ সমগ্র বাংলাদেশের বেসরকারি কলেজের মধ্যে ৪র্থ স্থান, ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত সকল সরকারি বেসরকারি কলেজের মধ্যে নবম স্থান এবং জাতীয় পর্যায়ে ২২০০ সরকারি, বেসরকারি কলেজের মধ্যে ২২তম স্থান অর্জন করেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং প্রতিযোগিতায় এই সাফল্য ও অর্জন অবশ্যই এই কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমকে ভবিষ্যতে আরো জোরদার করবে। এছাড়া এ বছর অনার্স পর্যায়ে ফিন্যান্স বিভাগের একজন ছাত্রী সারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। অত্র কলেজের সকল শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী, গভর্ণিং বডি এর সভাপতি ও সকল সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় এ সাফল্য উত্তরোত্তর ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে।
ঢাকা কমার্স কলেজ
১৯৮৯ সালে বাণিজ্য বিষয়ক তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক শিক্ষার সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা কমার্স কলেজ। ১৯৯৫ সালের ২২ জানুয়ারি মিরপুরে নিজস্ব ভবনে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ে কলেজটি বিস্ময়কর সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়। অত্যন্ত আধুনিক ও সময়োপযোগী তত্ত্বীয় শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাকে এ কলেজ প্রাধান্য দিয়ে থাকে। শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে অত্যন্ত আন্তরিক এবং ক্লাসের পড়া ক্লাসেই আদায় করে নেন। শিক্ষার্থীদের ৯০% ক্লাসে থাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়া নিয়মিত, সাপ্তাহিক, মাসিক, টার্ম এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। এই কলেজের মূলনীতি হলো ভর্তি হলেই পাস করতে হবে। তাই প্রতিবছর ইন্টারমিডিয়েট, ডিগ্রি, অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষায় এ প্রতিষ্ঠানের ফলাফল ঈর্ষণীয়।
একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি এ কলেজে রয়েছে নানারকম সহশিক্ষা কার্যক্রম। যেমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাধারণ জ্ঞানের আগ্রহ স্থাপনের লক্ষ্যে রয়েছে সাধারণ জ্ঞান ক্লাব; ছাত্র-ছাত্রীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় উৎসাহী করে তুলতে রয়েছে বিতর্ক ক্লাব; এছাড়া রয়েছে আবৃত্তি পরিষদ, সঙ্গীত ক্লাব, নাট্য পরিষদ, বিএনসিসি ও রোবার স্কাউটসহ অন্যান্য কার্যক্রম। নিয়ম-শৃঙ্খলার দিক থেকেও ঢাকা কমার্স কলেজ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কলেজের রয়েছে নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম, যা পরা ছাড়া শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারে না এবং সকাল ৮টা থেকে ক্লাস শুরু হয়ে শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসেই অবস্থান করতে হয়।
অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবু সাঈদ বললেন-
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীরা ঢাকা কমার্স কলেজকে বেছে নেবে কারণ এ কলেজের নিয়ম-শৃঙ্খলা অন্য যে কোনো কলেজের চেয়ে উন্নত; প্রতি বছরের ঈর্ষণীয় ফলাফল; এটি ধূমপান ও রাজনীতিমুক্ত একটি কলেজ; এখানে বাংলা ও ইংরেজি উভয় মাধ্যমে পড়াশোনার ব্যবস্থা আছে; নিরাপদ সহশিক্ষা, সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্লাস, দক্ষ শিক্ষক, সুবৃহৎ লাইব্রেরি এবং ল্যাব, শিক্ষা সম্পূরক কার্যক্রম বিশেষত নৌভ্রমণ ও সুন্দরবন ভ্রমণের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও আমাদের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ, সেমিনার, লাইব্রেরি এমনকি সাংস্কৃতিক ক্লাবগুলোতেও রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা। প্রতিটি সেকশনে ৪০-৫০ জনকে বসানো হয়, ফলে একজন শিক্ষক খুব সহজেই শিক্ষার্থীদের সমস্যা অনুধাবন ও সমাধান করতে পারেন। অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাগুলো নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবার ফলে এবং প্রতিটি পর্ব পরীক্ষার পর সেকশন পরিবর্তিত হয় বলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো সেকশনে যাওয়ার তুমুল প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। ফলে সহজেই একজন শিক্ষার্থীর গুণগত মান বৃদ্ধি পায়।
আপনার কলেজের শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন বা নেয়ার পরিকল্পনা করছেন এমন জিজ্ঞাসায় প্রফেসর আবু সাঈদ বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ঢাকা বোর্ডে এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈর্ষণীয় ফলাফলের পেছনে যা সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে তা এখানকার পরীক্ষা পদ্ধতি। যেকোনো শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর জন্য প্রতি চার মাস অন্তর একটি করে পর্ব পরীক্ষা, প্রতি মাসে একটি মাসিক পরীক্ষা ও ক্লাসে সাপ্তাহিক পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থী সবসময় লেখাপড়ার মধ্যে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে বাধ্য হয়। ভর্তির শুরুতে আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে যে কোর্স প্লান তুলে দেই তার যথাযথ অনুসরণ করা হয়, তাছাড়া অপেক্ষাকৃত কম মেধারী শিক্ষার্থীর জন্য আমরা বিশেষ ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি।
নবকুমার ইনস্টিটিউশন ও ড.শহীদুল্লাহ কলেজ
দেশের প্রাচীন এবং পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নবকুমার ইনস্টিটিউশন ও ড. শহীদুল্লাহ কলেজ। ১৬ উমেশ দত্ত রোড, বক্শী বাজার, ঢাকা-এ ঠিকানায় অবস্থিত এ কলেজটি পুরান ঢাকার বুকে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে যাচ্ছে ১৯৭৩ সাল থেকে। ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে বহুভাষাবিদ, পন্ডিত ব্যক্তিত্ব ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর স্মৃতি চির জাগরুক রাখার জন্য তাঁরই নামে এ কলেজের নাম রাখা হয় ড. শহীদুল্লাহ কলেজ।
বিশেষ বৈশিষ্ট্যসমূহ
- ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার জন্য ২৪ ঘন্টা ইন্টারনেট সুবিধাসহ অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব - বাৎসরিক বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন - বিষয়ভিত্তিক ল্যাবরেটরি Equipment সমৃদ্ধ সুসজ্জিত ল্যাবরেটরি - ইংরেজিতে অধিক গুরুত্ব দিয়ে ইংরেজি ভাষার প্রয়োগ ও ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা - পড়ালেখা সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা ক্লাসটাইম ছাড়াও সমাধানের ব্যবস্থা - এ+ প্রাপ্ত ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা - রাজনৈতিক কর্মকা- ও ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ - পরিচয়পত্র বহন বাধ্যতামূলক - সেমিস্টার সিস্টেমে পাঠদান।
অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম বললেন-
শিক্ষা কার্যক্রমসহ সামগ্রিক কাজকর্ম সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম বলেন, কলেজের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ ও মনোরম পরিবেশে পাঠগ্রহণ করে জীবন গড়ার কাজে ব্যস্ত থাকে। তাই তারা নোংরা রাজনীতির সাথে জড়িত হবার সুযোগ পায় না। তাদেরকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত করার জন্যে এখানকার শিক্ষকরা সর্বদা নিয়োজিত রয়েছেন।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীরা আপনার কলেজকে কেন বেছে নেবে এমন জিজ্ঞাসায় আশাবাদী শিক্ষাব্রতী অধ্যাপক আব্দুল হালিম বলেন, আমাদের কলেজে সেমিস্টার সিস্টেমে পড়ানো হয়; এ কলেজ রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত। তাই এখানে বিরাজ করে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ। এখানে কোনো সংঘাত, হানাহানি না থাকার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা অধ্যয়নে বেশি মনোযোগী হতে পারে। এজন্য তাদের পরীক্ষার ফলাফলও ভালো। এসব কারণে অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের আমাদের কলেজে ভর্তি হতে পাঠান।
আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষামান উন্নয়নে কী ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন- এ প্রশ্নে নিবেদিত শিক্ষা প্রশাসক অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম বলেন, ক্লাস-টিচাররা খুব যতœ ও দায়িত্বশীলতার সাথে পাঠদান করেন। পড়ার বিষয় ক্লাসে পড়িয়ে দেয়া হয়। কোনো শিক্ষার্থী ক্লাসে কোনো কিছু বুঝে না উঠতে পারলে ক্লাস শেষে টিচার তা বলে দেন। অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছাত্রদের জন্য ছুটির পর বিশেষ ক্লাস নেয়া হয়।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান পরামর্শের কথা জানতে চাইলে ছাত্রপ্রিয় শিক্ষক অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম বলেন তোমরা মূল বই পড়বে। যে যত পড়বে, যত বেশি ক্লাস ফলো করবে -তার রেজাল্ট তত ভালো হবে। খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অবশ্যই অংশগ্রহণ করবে, তবে আসল উদ্দেশ্য পড়ালেখা করা -তা খেয়ালে রাখতে হবে। পড়ার সময় এটেনশন দেয়া অপরিহার্য। আমরা যেমন ভাত খাওয়ার সময় কথা বলি না, টেলিভিশন দেখার সময় আলাপ করি না -তেমনি পড়ালেখার সময় অন্যদিকে মনোনিবেশ করা চলবে না। মনোযোগ ব্যাহত হলে পড়ালেখা ভালো হবে না, ভালো ফলাফল আসবে না। তাই মন যখন ভালো থাকবে, তখনই পড়তে বসবে। তবেই তোমার সাফল্য আসবে।
ওয়েসিস কলেজ
বিশ্বায়নের তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে ছাত্র-তরুণদের শুধু টিকে থাকা নয়, যোগ্যতা ও দক্ষতার সাথে দেশে-বিদেশে নিজ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারে সে লক্ষ্যে স্থাপিত হয়েছে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ওয়েসিস কলেজ তাদের অন্যতম। উত্তরা মডেল টাউনের ৯ নং সেক্টরে ২০০৬ সালে স্থাপিত ওয়েসিস কলেজ শুরু থেকেই সাফল্যের চমক দেখিয়ে চলেছে। সূচনা লগ্নেই এইচএসসি পরীক্ষায় ওয়েসিস কলেজ জিপিএ-৫ সহ শতভাগ সাফল্য অর্জন করেছে। পরবর্তীতেও এ সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকে। কলেজ কর্তৃপক্ষ আশা করেন, আগামীতেও সাফল্য ও গৌরবের এ ধারা বজায় থাকবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, এ কলেজ থেকে যেসব ছাত্র-ছাত্রী ইন্টারমিডিয়েট পাস করেছে তারা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বিভিন্ন টেকনিক্যাল কলেজসমূহ, প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ পেয়েছে। সর্বশেষ ২০১২ সালেও এ প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে হাবিবা আক্তার রাজশাহী মেডিকেল কলেজে, আরও ২ জন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১ জন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। এছাড়া এখান থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে যা আমাদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদান নিশ্চিতকরণ, উন্নততর শিক্ষা পদ্ধতি একাডেমিক কার্যক্রমের ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের প্রতি যতœশীলতা এবং সামগ্রিকভাবে কলেজের প্রশাসনিক ও একাডেমিক বিষয়ে দক্ষ ব্যবস্থাপনার ফলেই সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য
চযোগ্যতাসম্পন্ন দক্ষ শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ চগ্রুপভিত্তিক শিক্ষক কর্তৃক গাইড প্রদান ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান চপ্রাইভেট পড়ার বিকল্প হিসেবে সেমিস্টার পদ্ধতিতে শিক্ষাগ্রহণ চসকল ছাত্র-ছাত্রীর স্পোকেন ইংলিশ ও কম্পিউটার শিক্ষার সুযোগ চসমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরির সুবিধা চশিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক দুর্বলতা দূরীকরণে শিক্ষক-অভিভাবক সমন্বিত উদ্যোগ চদরিদ্র-মেধাবী ও কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষ সুবিধা প্রদান চআবাসিক হোস্টেল।
অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মোঃ হাফিজ উদ্দিনের যোগ্য ও সুদক্ষ পরিচালনায় ওয়েসিস কলেজ ধারাবাহিক সাফল্যের রেকর্ড স্থাপন করে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
অধ্যক্ষ মোঃ হাফিজ উদ্দিন বললেন-
বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সরকার একটা শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। সৃজনশীল পদ্ধতিতে পাঠদানের ফলে সম্পূর্ন নকলমুক্ত পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারছে। ওয়েসিস কলেজ পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। আমরা পুরো সিলেবাস পড়িয়ে দিই গুরুত্বপূর্ণ বা কম গুরুত্বপূর্ণ বাছাবাছি করি না। পুরো সিলেবাস পড়া থাকলে যেভাবেই প্রশ্ন আসুক, শিক্ষার্থীকে ভাবনায় পড়তে হয় না।
ক্লাসে দু’দিন অনুপস্থিত থাকলে শিক্ষার্থীর খোঁজ নেয়া হয়, অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হয়। ক্যাডেট কলেজে যে রকম আইন-শৃংখলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়, তেমনি আমাদের কলেজেও অনুরূপ রীতি-নীতি অনুসরণ করা হয়। এজন্য এ কলেজে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজমান।
গরিব-মেধাবী এবং পরীক্ষায় কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তিপ্রদান ও বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়। আমরা অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে থাকি, যাতে আইন-শৃংখলা সমস্যা সৃষ্টি হলে বা শিক্ষার্থী কোনো বিষয়ে কম মার্ক পেলে তাতে তার উন্নতি ঘটানো সম্ভব হয়।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা একজন শিক্ষার্থীর জীবন গড়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর। জীবনে সাফল্যলাভ করতে হলে এ সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে খুবই সিরিয়াস হতে হবে। এক্সট্রা কারিকুলার কিছু একটিভিটি অবশ্য থাকবে, কিন্তু তার বাইরে তাদেরকে সর্বোচ্চ সময় এবং সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে পড়ার প্রতি। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যাতে ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষায় চান্স পায় এবং সর্বোপরি একজন সুনাগরিক হিসেবে জীবন গড়ে নিতে পারে, তার জন্যই আমাদের এই নিরলস প্রচেষ্টা। আমাদের শিক্ষকমন্ডলী এ লক্ষ্যে নিবেদিতপ্রাণ।
স্টামফোর্ড কলেজ
মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবে বাংলাদেশে শিক্ষাব্যবস্থা যখন নাজুক, তখন মেধার সর্বোত্তম বিকাশের অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৯৫ সালে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র ধানমন্ডির কোলাহলমুক্ত পরিবেশে স্টামফোর্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. এম এ হান্নান ফিরোজ কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি স্টামফোর্ড ট্রাস্টের চেয়ারম্যান। মোঃ গোলাম মোস্তফা সারোয়ার স্টামফোর্ড কলেজের অধ্যক্ষ।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ও স্টামফোর্ড কলেজ দু’টি প্রতিষ্ঠানই স্টামফোর্ড ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত। কলেজটি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ও বিশেষ গভর্নিং বডি দ্বারা পরিচালিত।
স্টামফোর্ড কলেজ বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ কলেজে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে পাঠদান করা হয়। দক্ষ, অভিজ্ঞ ও সুযোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা দ্বারা শিক্ষাদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষাক্ষেত্রে গৌরবোজ্জ্বল অবদান রেখে আসছে।
স্টামফোর্ড কলেজে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। প্রতিদিন গড়ে ৫টি ক্লাস হিসেবে সপ্তাহে ৬ দিন ক্লাস পরিচালিত হয়। প্রতিটি ক্লাসের কার্যকাল ৪৫ মিনিট। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকগণ সপ্তাহে প্রতিদিন ছুটির পরে পরামর্শ ক্লাসের ব্যবস্থা করে থাকেন। এরফলে ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। কলেজে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিজ্ঞানাগার এবং সমৃদ্ধ ল্যাব রয়েছে।
কলেজের বৈশিষ্ট্য
শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস; শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা; অভিজ্ঞ, দক্ষ ও মেধাবী শিক্ষকম-লী; সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও অত্যাধুনিক বিজ্ঞানাগার; সুসজ্জিত ৩টি ক্যাম্পাস; ডিজিটাল ক্লাসরুম ইন্টারনেটসহ কম্পিউটার ল্যাব; প্রাইভেট পড়া নিষ্প্রয়োজন; হ্যান্ডনোট (কম্পিউটারাইজড); ক্যাফেটিরিয়া ও খেলাধুলার ব্যবস্থা; সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান; সকল ছাত্র-ছাত্রীর বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ইত্যাদি।
জিপিএ-৪ প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে মেধাবৃত্তি প্রদান।
ভাইস-চেয়ারম্যান ফাতিনাজ ফিরোজ বললেন-
শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য আপনারা কী পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন এমন জিজ্ঞাসায় ভাইস-চেয়ার্যান ফাতিনাজ ফিরোজ বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ যতœ নিয়ে থাকি। আমরা অভিজ্ঞ, দক্ষ ও মেধাবী শিক্ষকম-লীর মাধ্যমে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদানের পাশাপাশি স্পেশাল ক্লাস এবং হ্যান্ডনোট প্রদানের ব্যবস্থা করে ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশে সহায়তা করে থাকি। যে ছাত্রটি যে বিষয়ে ভালো মার্ক পায়, আমরা আরও বিশেষ যত্ন নিয়ে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করি যাতে ফাইনাল পরীক্ষায় উক্ত বিষয়ে আরও ভালো নম্বর পেতে পারে। সেজন্য আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের নিয়ে প্রায়ই মতবিনিময় করে থাকি।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্যে ছাত্র-ছাত্রীরা স্টামফোর্ড কলেজকে কেন বেছে নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে ফাতিনাজ ফিরোজ বলেন, স্টামফোর্ড কলেজ সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্টামফোর্ড ট্রাস্ট কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানব কল্যাণের লক্ষ্যে পরিচালিত। গরীব-মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকি আমরা। অন্যান্য কলেজের তুলনায় আমাদের কলেজে ছাত্র-ছাত্রীরা কম ব্যয়ে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে অভিজ্ঞ এবং মেধাবী শিক্ষকদের কাছ থেকে পাঠগ্রহণের সুযোগ লাভ করে। বাংলাদেশের অন্যকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এত স্বল্পমূল্যে এরূপ উন্নত সেবা দেয় কি-না আমার জানা নেই।
অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম মোস্তফা সারোয়ার বললেন-
আমাদের কলেজের সুস্পষ্ট বৈশিষ্ট্য, সুযোগ-সুবিধা, গুণগত শিক্ষা ও শিক্ষকের মান, মনোরম শিক্ষা-পরিবেশ ও কলেজের অবস্থান ইত্যাদি বিবেচনায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ব্যাপারে অভিভাবকগণ এ কলেজেকে বেছে নেন তাদের সন্তানদের জন্য।
ভালো ফলাফলের জন্য স্টামফোর্ড কলেজে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয় তার মধ্যে অন্যতম বাৎসরিক, মাসিক ও সাপ্তাহিক পাঠ পরিকল্পনা প্রণয়ন, স্পেশাল ইংরেজি ক্লাস, স্পেশাল ইংরেজি ল্যাব ক্লাস, দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য মেকআপ ক্লাসের ব্যবস্থা, অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ইত্যাদি।
আইডিয়াল কমার্স কলেজ (আইসিসি)
ডিজিটাল ক্যাম্পাসে ব্যবসায় শিক্ষায় আধুনিকতার ছোঁয়া
বিশ্বায়নের যুগে মুক্তবাজার অর্থনীতি বিশ্ববাসীকে করেছে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি। বিশ্ব একটি গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাব আমরা এড়িয়ে চলতে পারি না, সেই কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদেরকে যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে হবে।
উচ্চশিক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষা একটি বিশেষায়িত শাখা যা কর্মমুখী, জীবনমুখী ও বাস্তবমুখী শিক্ষার অপর নাম। জীবন থেকে আলাদা করা যায় না বলে ব্যবসায় শিক্ষা আজ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
শিক্ষার হার বেড়েছে, বেড়েছে শিক্ষিতের সংখ্যা। কিন্তু সাধারণ শিক্ষা দিয়ে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে না, যদি না কোয়ালিটি বা গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রচলন করা যায়। তাই কোয়ালিটি এডুকেশন এখন সময়ের দাবি। কিন্তু সে কোয়ালিটি এডুকেশন সব কলেজে প্রদান করা সম্ভব হয় না। এরজন্য চাই শিক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণ, দক্ষ শিক্ষক ও সেইসাথে মানসিক প্রস্তুতি। যুগের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজন যুগোপযোগী শিক্ষা। আজকের তরুণরা শুধু দেশের নয়, তারা আজ বিশ্ব-সম্পদ। তাই তরুণদেরকে আধুনিক, বাস্তবসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। তাদের জ্ঞানভান্ডার এমনভাবে সমৃদ্ধ করতে হবে, যাতে তারা যে কোনো পরিবেশ-পরিস্থিতির মোকাবিলা করে শুধু টিকে থাকাই নয়, গাইতে পারে জীবনের জয়গান।
ব্যবসায় শিক্ষা এখন বাজারমুখী শিক্ষা, জীবনমুখী যুগোপযোগী শিক্ষা। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বিধায় ‘ব্যবসায় শিক্ষায় আধুনিকতার ছোঁয়া’ সেøাগান নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আইডিয়াল কমার্স কলেজ। এ কলেজ সুদক্ষ শিক্ষকমন্ডলির নিরলস পরিশ্রম এবং কলেজ গভর্নিং বডির অকৃত্রিম প্রয়াসে পরিচালিত হচ্ছে। আধুনিক, মানোন্নত শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত, আলোচিত, কর্মোদ্যোগী জাতি গঠনই আইডিয়াল কমার্স কলেজের লক্ষ্য।
এক নজরে আইডিয়াল কমার্স কলেজ
আইডিয়াল কমার্স কলেজের নিজস্ব ক্যাম্পাস ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেট এলাকায় অবস্থিত। অত্যন্ত সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে শিক্ষার্থীদের মেধা ও মনন বিকাশের জন্য রয়েছে-ঝকঝকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ক্লাসরুম, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, অডিটোরিয়াম, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব ও ইন্টারনেটসহ প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ-সুবিধা। ডিবেটিং, উপস্থিত বক্তৃতা, ইনডোর গেমস্ ও আউটডোর কার্যক্রম থাকছে যুগ-চাহিদা অনুযায়ী। সর্বোপরি রাজনীতিমুক্ত ও ধূমপানমুক্ত সুশৃঙ্খল একটি অনন্যসাধারণ ক্যাম্পাসের নিশ্চয়তাসহ উন্নত ও যুগোপযোগী শিক্ষাক্ষেত্রের একটি গর্বিত ও ব্যতিক্রমী আশাজাগানিয়া নাম আইডিয়াল কমার্স কলেজ।
এ কলেজের পাঠ্যবিষয়সমূহ হচ্ছে বাংলা, ইংরেজি, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বীমা, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন এবং পরিসংখ্যান।
উন্নত বিশ্বের আধুনিকতা এদেশের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া এবং বিশ্বায়ন প্রতিযোগিতায় যোগ্য নাগরিক তৈরি করার উদ্দেশ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আইডিয়াল কমার্স কলেজ।
ডিজিটাল ক্যাম্পাস
- CCTV সমন্বিত সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা; - আধুনিক অডিও ভিজুয়াল কমিউনিকেশন ব্যবস্থা; - সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসে Wi-Fi প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেট সুবিধা; - ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা; - চমৎকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উন্নত পরিবেশ; - সার্বক্ষণিক লিফ্ট ও জেনারেটর সুবিধা; - শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব ও অডিটোরিয়াম; - সিমেস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান; - পরীক্ষার ফলাফল ও যাবতীয় তথ্যসমূহ ওয়েবসাইটে প্রকাশ।
কলেজের বৈশিষ্ট্য
- আদর্শবান, পরিশ্রমী, মেধাবী ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়; - ক্যাম্পাসে অবস্থিত অত্যাধুনিক সার্ভার নেটওয়ার্ক সমৃদ্ধ ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধাসহ কম্পিউটার ল্যাবে ছাত্র-ছাত্রীদের কম্পিউটার শিক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কোর্স প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; - দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী স্টাইপেন্ড ও আর্থিক সাহায্য দেয়া হয়। ভালো ফলাফলকারীদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা; - কলেজে ছাত্রীদের জন্য পৃথক শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ব্যবস্থা; - শিক্ষার্থীদের মেধা, মনন, প্রজ্ঞা ও সৃজনশীলতার পরিপূর্ণ বিকাশের লক্ষ্যে প্রতিবছর নির্ধারিত সময়ে কলেজ বার্ষিকী ‘উত্তরণ’ প্রকাশ করা হয়; - উপস্থিত বক্তৃতা, ডিবেটিং, ইনডোর গেম্সসহ সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও আউটডোর কার্যক্রম সময়ের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হয়।
এছাড়া সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু রাখতে নিজস্ব বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি সুবিধা, ছাত্রীদের জন্যে পৃথক শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ব্যবস্থা, লিফ্ট ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটোরিয়াম রয়েছে।
পাবলিক পরীক্ষার সাফল্য
কলেজের নির্বাচনি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়। নির্ধারিত গ্রেড পয়েন্ট না পেলে কিংবা শ্রেণি-উপস্থিতি ৯০% না থাকলে কোনোক্রমেই এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয় না। কঠোর নিয়মানুবর্তিতার কারণে কম মেধাসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীরাও চূড়ান্ত পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল লাভে সক্ষম হচ্ছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ২০০৬ সালে শতভাগ পাস করেছে এবং ৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে; ২০০৭ সালে ২১৮ জনের মধ্যে ২১৭ জন পাস করে, ১১ জন জিপিএ-৫ পায়; ২০০৮ সালে ৩০১ জনের মধ্যে ৩০০ জন পাস করে, ৩৬ জন জিপিএ-৫ পায়; ২০০৯ সালে ২৩৪ জনের মধ্যে ২২৯ জন পাস করে, ৪ জন জিপিএ-৫ পায়; ২০১০ সালে ৪২৫ জনের মধ্যে ৪২০ জন পাস করে, ২২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে; ২০১১ সালে ২৮০ জনের মধ্যে ২৭৯ জন পাস করে, ২৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে; ২০১২ সালে ৩২৯ জনের মধ্যে ৩২৮ জন পাস করে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩০ জন; ২০১৩ সালে ৩৬১ জনের মধ্যে ৩৫৮ জন পাস করে, জিপিএ-৫ পায় ৩৭ জন; ২০১৪ সালে ৩১৫ জনের মধ্যে ৩১৩ জন পাস করে, জিপিএ-৫ পায় ৩৭ জন।
ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা
ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির নূন্যতম যোগ্যতা ৩.৩৩।
যুগের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন যুগোপযোগী গুণগত শিক্ষা। আজকের তরুণ প্রজন্ম শুধু দেশের সম্পদ নয় বিশ্বসম্পদও বটে। তাদের জন্যে প্রয়োজন আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা। শিক্ষাক্ষেত্রে অব্যাহত গবেষনার মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরে পাঠক্রমে গুণগত, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত পরিবর্তন আনতে হবে। শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত সুদীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমি এই যথার্থ বাস্তবতাকে অনুধাবন করি। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, জাতিকে সমৃদ্ধ করতে হবে আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী। উন্নত, আধুনিক, বাস্তবসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে আমাদের তরুণদের। জ্ঞানভা-ার সমৃদ্ধ করতে হবে এমনভাবে যেন যেকোনো পরিস্থিতিতে, যেকোনো পরিবেশে, বিশ্বের যেকোনো সীমানায় তারা গাইতে পারে জীবনের জয়গান, পবিত্র মাতৃভূমির জয়গান। তাদেরকে স্বপ্ন দেখাতে হবে অগ্রগতির, সমৃদ্ধির এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজের। আমি নিজের অন্তরের গহিনে লালন করি এ সুমহান স্বপ্ন। সমগ্র সত্তায়, সমগ্র জীবনে আমি উন্নত শিক্ষার জন্যে, গুণগত শিক্ষার জন্যে নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই।
ব্যবসায় শিক্ষা এখন বাজারমুখী শিক্ষা; বিশ্বায়নের যুগে শিক্ষাক্ষেত্রে একটি বুমিং এরিয়া। বর্তমানে আমাদের দেশে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে উন্নত ও চাহিদানুগ শিক্ষা খানিকটা নিশ্চিত হলেও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এখনও সঙ্কট আছে, আছে সীমাবদ্ধতা। এ সঙ্কট ও সীমাবদ্ধতা হতে উত্তরণের জন্য চলছে আমাদের একান্ত প্রচেষ্টা। সুদক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকম-লীর অব্যাহত প্রয়াসে আর কলেজের গভর্নিং বডির আন্তরিক প্রচেষ্টায় পরিচালিত হচ্ছে আইডিয়াল কমার্স কলেজ। ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণই আইডিয়াল কমার্স কলেজের অঙ্গীকার।
‘বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী’ পুরাকালের জনপ্রিয় এই প্রবাদ আজ জীবনের সর্বসত্য বাস্তবতা। অবাধ বিশ্ববাণিজ্যের বর্তমান দুনিয়ায় ‘ব্যবসায় শিক্ষা’ একটি সাধারণ শিক্ষা নয় একটি কর্মমুখী ও বাজারমুখী শিক্ষার নাম। রক্ত দিয়ে অর্জিত প্রিয় এই স্বদেশে গর্বভরে টিকে থাকার প্রয়োজনেই নিশ্চিত করা প্রয়োজন ‘কোয়ালিটি এডুকেশন’। বিশ্বায়ন প্রতিযোগিতায় টিকে থেকে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে কোয়ালিটি এডুকেশনের কোনো বিকল্প নেই।
মুক্তবাজার অর্থনীতির গ্লোবাল ভিলেজের সর্বত্রই আমরা প্রতিযোগিতার মুখোমুখি। এই প্রতিযোগিতায় টিকতে চাই দক্ষ জনশক্তি; চাই মুক্তচিন্তার উদার মানসিকতা; দেশপ্রেমের পতাকাবাহী, আদর্শিক চিন্তা-চেতনায় সমৃদ্ধ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে সুশিক্ষিত আগামী দিনের সুন্দর ও সুশৃঙ্খল মানুষ। এসব গুণে গুণান্বিত যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ তৈরি করার দায়িত্ব আমাদের বর্তমান প্রজন্মের।
‘কোয়ালিটি এডুকেশন আজ একটি জনপ্রিয় শ্লোগান; নানাবিধ বাস্তবতায় যা অধিকাংশ শিক্ষাঙ্গনে প্রায় অনুপস্থিত। সেøাগানে নয়, বাস্তবে আমরা নিশ্চিত করতে চাই গুণগত শিক্ষা ‘কোয়ালিটি এডুকেশন’।
আদর্শ শিক্ষা-পরিবেশের সব নিয়ামক মাথায় রেখে আমরা সাজিয়েছি আইডিয়াল কমার্স কলেজের পরিপাটি ক্যাম্পাস; রাজধানীর ব্যস্ততম ঐতিহ্যবাহী ফার্মগেট এলাকায়। আদর্শ শিক্ষার মাধ্যমে আদর্শিক নেতৃত্ব তৈরি করার দৃঢ় অঙ্গীকার আমাদের। ইতোমধ্যে ৯টি পাবলিক পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা তা প্রমাণ করতেও সক্ষম হয়েছি; ভবিষ্যতেও এ ধারা বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকব। আমাদের উদ্দেশ্য মহৎ, চিন্তা স্বচ্ছ এবং সৎ। প্রত্যাশা করি এই মহতী উদ্যোগে সবার সহযোগিতা পাব, সহমর্মিতা পাব, সৎ পরামর্শ পাব। আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাব। কোয়ালিটি এডুকেশন শুধু স্বপ্ন নয়, এর বাস্তবরূপ দেশবাসী প্রত্যক্ষ করবে।
শিক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে আইডিয়াল কলেজকে বেছে নেবে বলে আমি মনে করি। কেননা আমাদের অতীত রেকর্ডই তাদেরকে এ কলেজে ভর্তি হতে উৎসাহিত করবে। এখানে যারা ভর্তি হবে তারা অবশ্যই ভালো ফল নিয়ে বেরুতে পারবে। কারণ আমরা মুখস্থ নির্ভর পড়া না শিখিয়ে শিক্ষার্থীকে বাস্তব জীবনে পরিবেশ-পরিস্থিতি মোকাবেলা করার উপযুক্ত করে গড়ে তুলি। যেকোনো বৈরী পরিবেশের মোকাবেলা করে তারা সফল হতে পারে আইসিসি থেকে ইতিপূর্বে পাস করা ছাত্র-ছাত্রীরা তার প্রমাণ।
বিগত বছরের সাফল্যের স্মৃতি নিয়ে আমরা বিভোর থাকি না, আমরা এর ধারাবাহিকতা রক্ষার নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। একে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য। এখানে কলেজের কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হয় সেখানে দেশের সেরা শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবীদের আমন্ত্রণ করে আনা হয়, শিক্ষার্থীদের আগামীর পথে যাতে এসব সফল মানুষদের সাফল্য তাদের জীবনেও অনুকরণীয় হয়ে উঠতে পারে। আইডিয়াল কমার্স কলেজ দেশসেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি পেতে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সকলে একযোগে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। কমার্স শিক্ষার ক্ষেত্রে আইডিয়াল কমার্স কলেজ একটি আইডিয়াল বা আদর্শ কলেজের রূপলাভ করবে এবং এ কলেজটি মডেল হিসেবে পরিচিতিলাভ করবে এ বিশ্বাস আমাদের আছে।
এবার আমি লায়ন ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর নির্বাচিত হয়ে অন্য গভর্নরদের নিয়ে কল দিয়েছি Education for Excellence প্রতিষ্ঠায় কাজ করব। আমার মনে হয় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা পুঁথিগত শিক্ষায় ভালো করলেও তাদের নৈতিক শিক্ষায় উন্নতির যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। তাই আমার ডিস্ট্রিক্ট এর মাধ্যমে আমি নৈতিক শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।