বিশেষ খবর



Upcoming Event

আইনস্টাইন, নিউটনের চেয়েও আইকিউ বেশি ছিল যার!

ক্যাম্পাস ডেস্ক বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি

আইকিউ বা ইন্টিলিজেন্স কোশেন্ট হচ্ছে মানুষের বুদ্ধির পরিমাপ। এই আইকিউ সব মানুষের সমান হয় না। কারও কম, কারও বেশি। স্বাভাবিক ভাবেই অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, আইজাক নিউটনের মতো বিজ্ঞানীদের সাধারণ মানুষের তুলনায় আইকিউ অনেকটা বেশি।

এমন এক জনের সম্পর্কে বলবো যিনি বড় কোনও বিজ্ঞানী নন। কেরিয়ারও তার খুব সফল না। অনেকেই তার নাম অবধি শোনেননি। কিন্তু তার আইকিউ আইনস্টাইন, নিউটনের মতো বিজ্ঞানীদের থেকেও বেশি। আইকিউ পরিমপের ভিত্তিতে পৃথিবীর সবথেকে বুদ্ধিমান এই ব্যক্তি জন্মেছিলেন আমেরিকার বস্টনে, ১৮৮৯ সালে। তার নাম উইলিয়াম জেমস সাইডিস। ছোট থেকেই তিনি ছিলেন বিস্ময় বালক।

আইনস্টাইনের আইকিউ ছিল ১৬০, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ১৮০, নিউটনের ১৯০। সবাই বিশ্বের খ্যাতনামা ব্যক্তি। কিন্তু জেমসের আইকিউ তাদের থেকেও বেশি, ২৬০! যদিও তার ব্যাপারে জানেন এমন লোক হাতে গোনা।

উইক্রেন থেকে শরণার্থী হিসাবে আমেরিকায় এসেছিলেন তার বাবা-মা। তার বাবা বরিস ছিলেন এক জন মনোবিদ, মা সারা ছিলেন চিকিৎসক। তাই বুদ্ধিমত্তা ছিল তার রক্তে।

শুধু তাই নয়। ছোট বয়সেই একাধিক ভাষা নিজে থেকেই শিখে ফেলেছিলেন উইলিয়াম জেমস সাইডিস। বয়স যখন ছিল আট বছর, তখন তিনি ইংরাজি, ল্যাটিন, ফরাসি, জার্মান, রাশিয়ান, হিব্রু, তুর্কিশ ও আর্মেনিয়ান ভাষা আয়ত্ত করে ফেলেছিলেন।

শিশু বয়স থেকেই বুদ্ধিমত্তা দেখে তার বাবা মাত্র ১১ বছর বয়সে উইলিয়াম জেমস সাইডিসকে ভর্তি করে দেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি হলেন হার্ভার্ডের ইতিহাসে সব থেকে কম বয়সে ভর্তি হওয়া ছাত্র। হার্ভার্ডে ভর্তি হয়েই চমক দেখাতে শুরু করেন জেমস। অল্প দিনের মধ্যেই অঙ্কে তার মুন্সিয়ানা বুঝতে পারেন সেখানকার শিক্ষকরা। ওই বয়সেই বিভিন্ন বিষয়ে লেকচার দিতেন তিনি। তার পরই তার নাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সবাই তাকে বিস্ময় বালক হিসাবে চিহ্নিত করেন।

১৬ বছর বয়সেই আর্টসে স্নাতক কোর্স সম্পূর্ণ করেন তিনি। কিন্তু এর মধ্যেই কলেজে সমস্যা শুরু হয়। এক দল ছাত্র নিয়মিত তাকে নির্যাতন করতে থাকে। সেজন্য কলেজ ছেড়ে তিনি টেক্সাসের রাইস ইনস্টিটিউটে অঙ্কের শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। সেখানকার অধিকাংশ ছাত্র তার থেকে বড় হওয়ায় চাকরি ছেড়ে দেন জেমস। এই সময়কালের মধ্যেই ছদ্মনামে একাধিক বই লিখেছিলেন তিনি।

একটু বড় হতেই তার জীবনে পরিবর্তন আসে। লোকজন ছেড়ে তিনি একাকী জীবনযাপন করতেই বেশি ভালবাসতেন। সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিয়ে না করার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়ে দেন তিনি। ১৯১৯-এ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় বস্টনে যুদ্ধ বিরোধী প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেজন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেশদ্রোহী আইনে উইলিয়াম জেমস সাইডিস বিরুদ্ধে মামলাও করে পুলিশ। এ জন্য ১৮ মাস জেলে থাকতে হয়েছিল তার।

বড় হতেই লোকের নজর ও খ্যাতি-যশ থেকে দূরে থাকতে চাইতেন তিনি। কিন্তু তার বাবা তা চাইতেন না। তিনি চাইতেন ছেলে অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার প্রকাশ ঘটাক দিনে দিনে। কিন্তু তাতে রাজি ছিলেন না জেমস। এই পরিমাণ আইকিউ নিয়েও গবেষণার পথে হাঁটেননি তিনি। সামান্য ক্লার্কের কাজ করে জীবনযাপন করতেন তিনি। তার এই জীবনযাত্রাকে ব্যঙ্গ করে কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ করে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু আদালত তার আবেদন মানেনি। আদালত বলেছিল, যে ব্যক্তি এক বার পাবলিক ফিগার, সে সারাজীবন পাবলিক ফিগার। আবেদনে হেরে হতাশ হয়ে যান তিনি। তারপর আর বেশি দিন বাঁচেননি তিনি। মাত্র ৪৬ বছর বয়সে, ১৯৪৪ সালে মৃত্যু হয় উইলিয়াম জেমস সাইডিসর। তার বুদ্ধিমত্তার এই কাহিনি চলে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে।


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img